গ্রে-৪
গত পর্বে
উনাকে আমি বললাম এলাকার লোক কে ফেলে আমি কোথাও যাব না।উনারা আমার মুখ চেয়ে আছে। তখন উনি বললেন,তুমি বাচ্চা।তুমি রাজনীতীর কিছুই বোঝো না।তুমি কাদের কথা ভাবছ? এলাকাবাসী? এই বলে উনি হাসলেন।তারপর বললেন তোমার বাবার পরিণতি দেখে সবাই ভয় পেয়ে গেছে,এখন প্রায় সবাই জমি দেওয়ার পক্ষে।সবার কাছেই তো নিজের প্রাণ প্রিয় তাইনা? আমি প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।
বর্তমান পর্বে
আমি বললাম,"তা কিভাবে হবে? ওদের জন্যই তো বাবার আজ এই অবস্থা।ওরা এমনটা করতেই পারে না।"তখন উনি বললেন,"শোনো, তোমার বাবাকে মারা উদ্দেশ্য কিন্তু এটা নয় যে উনি বিরোধীতা করেছেন।উদ্দেশ্য এটা যাতে তোমার বাবার সাথে থাকা জনগনের একতা ভাঙ্গা যায়।বাকি সবার মনে ভয় ঢুকানো যায়।ব্রিটিশদের ডিভাইড এন্ড রুল পলিসির কথা তো জানোই।এখানেও একই পলিসি কাজে লাগানো হয়েছে।আর তারা সফল বলা যায়। কারন একদল লোক ঠিকই ভয় পেয়ে জমি দিতে রাজি হচ্ছে।আর জানোই তো ভয় সংক্রামক।"
আমি বললাম,"আমি আবার তাদের একত্রিত করব।এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াবো।আমার বাবার মৃত্যুর বদলা নিব।"তখন উনি কিছুটা হতাশ হলেন। বললেন ঠিক আছে তোমার যা করতে মন চায় তুমি করতে পারো। তুমি যথেস্ট বড় হয়েছো। নিজের ভাল মন্দ বোঝার ক্ষমতা তোমার আছে।তবে যেটাই করো নিজের পরিবারের নিরাপত্তা আগে নিশ্চিত করে তারপর করো। তোমার বাবা আমার আইডল ছিল,অনেক উপকার পেয়েছি উনার থেকে তাই তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে তোমাকে এগুলো বললাম।
আমি সেদিন বাসায় ফিরলাম।এরপর দুই একদিন পার হল।এর মাঝে এলাকার কেউ আসল না শান্তনা দিতে বা দেখা করতে। বাইরে বের হলেও লোকজন খুব বেশি কথা বলত না। কেমন যেন এড়িয়ে চলতে চাইছে আমাদের বোঝাই যাচ্ছে।কারো সাথে কথা বলতে গেলে সে বিরক্ত হত। তখন মনে মনে ভাবছিলাম,"এই বেইমান দের জন্য আমার আব্বুর জীবন দিতে হল।হায়রে মানুষ!তোদের মাঝে কি নূন্যতম কৃতজ্ঞতাও নেই।আব্বু তো তোদের জন্যই লড়াই করতে গিয়েছিল।"এলাকাবাসীর জন্য প্রচন্ড অভিমান জমল। তখন সেই পুলিশ কাকার কথা মনে পড়ল।বুঝতে পারলাম দুনিয়ার বাস্তবতা। দুনিয়াটাই স্বার্থের।
যাই হোক,"এলাকার লোকদের প্রতি অভিমান থেকে আস্তে আস্তে ঘৃণা জমতে শুরু করল।মনে হচ্ছিল আমার চারপাশের বাতাস যেন ঘন হয়ে এসেছে,নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসত। আমি ঢাকায় চলে আসলাম।কিন্তু খোজ থামাইনি। কার নির্দেশে আমার বাবার প্রাণ গেল তা খুজে বের করার পণ করেছিলাম।ভার্সিটির রাজনীতী তে যোগ দিলাম।তবে আমার বাবার মত আদর্শবান নেতা হলাম না।হলাম সুবিধাবাদী নেতা।এতে দুইটা সুবিধা হল,প্রথমত পরিবারের জন্য টাকার চিন্তা থাকল না,দ্বিতীয়ত কানেকশন তৈরি হচ্ছিল।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
গ্রে-৪ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দাদা। ভিলেজ পলিটিক্সের বাস্তবতা সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে আপনার আজকের লেখায়। বেশ ভাল লেগেছে। আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। শুভ কামনা আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপু উৎসাহিত করার জন্য।