বিন্দুর ফোন কেনা
পরিবারের ছোট ভাই বোন সবসময়েই আদরের হয়। তাদের কপালেই অধিকাংশ আদর জোটে।ছোট ভাই বোন হবার পর বড় ভাইবোনের আদরের কিছুই অবশিষ্ট থাকে না।আর ছোট গুলো বেশি চালাক ও হয়,কিন্তু বড়রা হয় কলুর বলদ।যারা খালি খেটেই যায় কিন্তু ফল ভোগ করতে পারে না।
তবে ছোটদের কপাল যে সব ক্ষেত্রেই ভাল তা বলা যায় না।বিশেষ করে ফোন জাতীয় গ্যাজেট গুলোর জন্য এদের কপালে সাধারণত নতুন জোটে না। বড়দের ইউজ করা ডিভাইস গুলোই এদের কপালে জোটে। আমাদের সম্মানীত ফাউন্ডার বড়দাদার প্রথম ফোনটাও ছিল কিন্তু দাদার বপড় ভাইয়ের থেকে পাওয়া।
বিন্দুও এর ব্যতিক্রম নয়৷ আমি ছোট থেকেই বেশ দায়িত্বজ্ঞান সম্পন্ন ছিলাম।নিজের প্রশংসা নিজে করছি কিছু মনে করবেন না,কিন্তু পরিস্থিতিই ওভাবে তৈরি করে নিয়েছিল। তাই বেশ ছোট থেকেই আমার কাছে ফোন ছিল।ক্লাস এইটেই আমার হাতে অ্যান্ড্রয়েড ফোন।কিন্তু ফোনটা বেশিদিন চলে নি। এসএসসির আগেই নষ্ট হয়,তখন ব্যবহার করতে থাকি বাটন ফোন।
এরপর এসএসসির পর ঢাকায় বিমান বাহিনীর পরীক্ষা দিতে গিয়ে খুব কমদামে একটি স্যামসাং ট্যাব কিনে ফেলি। ট্যাবটা যার সে ভেবেছিল আমাকে খুব ঠকিয়েছে,কারন ট্যাব টা ওপেন হত না। কিন্তু একটু নেড়েচেড়ে বুঝলাম যে এটার খুব মাইনর একটা সমস্যা। মাত্র ১০০০টাকায় কিনেছিলাম। পরে বাসায় এসে শুধুমাত্র পাওয়ার কি টা ঠিক করেনিয়েছিলাম ৫০টাকা দিয়ে।
এই ঘটনা প্রায় ২০১৬ সালের। এরপর থেকে সে জান প্রান দিয়ে আমাকে সার্ভিস দিয়ে গেছে।অবশেষে ২০২১ সালে আমি ফোন কিনি,আমি একটু স্বাধিনচেতা তাই নিজের টাকা জমা না হওয়া না পর্যন্ত ফোন কিনি নি। যাই হোক আমার পরে ট্যাব টা উত্তরাধিকারী সূত্রে হস্তান্তর হয় বিন্দুর কাছে।কিন্তু ট্যাব টা ততদিনে বুড়ো হয়ে গেছে।তার পার্ফমেন্স ও অনেক ড্রপ করেছিল।বিন্দু এ নিয়ে হাজারবার অভিযোগ জানিয়েও কোন উপকার পায়নি।
অবশেষে এই কয়দিন আগে ট্যাবটি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করে। তাকে ঠিক করতে নিয়ে গেলে টেকনিশিয়ান বলল,"দাদা এবার তো একে শান্তি দিন।কতদিন আর খাটাবেন।"আমি বললাম হক কথা।কিন্তু বিন্দু মানতে নারাজ, তাকে নতুন ফোন দিতে হবে।কিন্তু আমার পকেট প্রায় গড়ের মাঠ।তাই অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওকে রাজি করিয়ে একটি বাটন ফোন কিনে দিলাম।যদিও ও একটু বেজার হল,কিন্তু ওকে বুঝালাম পকেট একটু গরম হলেই আমি ফোন কিনব আর ওকে আমার বর্তমান ফোনটা দেব।এতে ওর মুখ আরো বেজার হয়ে গেল।হাহাহা।
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
বড়রা বোকা হলেও তারা নতুন অনেক কিছুই সহজে পেয়ে যায়। আর ছোটরা তাদের ব্যবহার করা জিনিসই ব্যবহার করে বড় হতে থাকে। বোনটি ভালো বলেই বাটন ফোন নিয়েই সন্তুষ্ট ছিল। পকেট ভারি হলে একটি এ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে দিয়েন।যা বর্তমানে লেখাপড়ায় বেশ জ্রুরী।ওনেক ধন্যবাদ অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
হ্যা আপু অবশ্যই কিনে দিব৷ তবে দেখুন ছোটরা বিনা পরিশ্রমে পায়,অথচ বড়দের কিন্তু নিজের পয়সায় কিনতে হয়। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
বুঝেশুনে আবারও তো বিন্দুকে ঠকিয়ে দিলেন । এতদিন এক হাজার টাকা দামের ট্যাবটি ওর হাতে ধরিয়ে ওকে দিয়ে ব্যবহার করিয়েছেন । এখন ট্যাবটি শেষ ত্যাগ করার পরে আবার বাটন ফোন কিনে দিলেন এটা কিন্তু ঠিক করলেন না ভাইয়া । ছোট মানুষ বলে কথা তাই বলে এটা করবেন ।
পকেট এখন গড়ের মাঠ আপু তাই কিনে দিতে পারিনি। পকেটে টাকা আসলেই একটা নতুন ফোন কিনে দেব। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
লাস্ট মোমেন্টের টুইস্টটা বেশি ভালো ছিলো... আসলে ভাই-বোনের সম্পর্কে এমন টুকটাক ঝগড়াঝাটি না থাকলে জমে নাকি! বেশ ভালো লাগলো তোমার পোস্ট টি পড়ে। তবে এখন ডিজিটাল যুগে পড়াশুনার অনেক কিছুও তো সার্চ করতে হয়, তাই স্মার্ট ফোনের ও প্রয়োজন হয়। পকেটের অবস্থা দ্রুত উন্নতি হোক.. তবে নতুন বাজেটের পর থেকে স্মার্ট ফোনেরও দাম বাড়তি!
ভগাবান আপনার কথা টা জলদি বাস্তবায়ন করুক এই প্রার্থনা করি। হ্যা মাসি মূলত ওর ক্লাসের জন্যই ফোনটা দরকার। আর ওকেও এখন থেকেই টুকটাক লেখালেখি শেখাব।আশীর্বাদ করবেন মাসি আমাদের জন্য
যেই না পরিবারের ছোটরাই খেঁটে খুঁটে মরতে হয়, কারণ তারা বড়দের কাজ করতে করতেই শেষ হয়ে যায়। একজন বলে পানি দিয়ে একজন বলে ফ্যান ছাড় এটা সেটা। ছোটদের কাজ কারো চোখেই লাগে না। এটা নিয়ে সারাদিন আমার বড় ভাইয়ের ফোনের সাথে ঝগড়া হয়।
১০০০ টাকার মোবাইল দিয়ে বেশ ভালোই চলেছে। অনেকদিন আগেই শুনেছিলাম বিন্দুর এসএসসি পরীক্ষার পর ওকে ফোন কিনে দিবেন।
রেজাল্ট এর পর থেকে একের পর এক ঝামেলা।তাই আর কিনে দেওয়া হয়নি। ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।
এটা ঠিক পরিবারের বড়রা একটু বোকাই হয়।নিজেদের কথা কখনো তারা ভাবে না।বোনকে বাটন মোবাইল দিলেন ঠিক আছে।কিন্তু টাকা হলে একটি এ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে দিয়েন।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
হ্যা আপু তা তো কিনে দিতেই হবে। চেষ্টা করতেছি কিন্তু একের পর এক ঝামেলা এসে হাজির হচ্ছে। দোয়া করবেন যাতে জলদি দিতে পারি।
দেখেই বোঝা যাচ্ছে একদিকে খুশি আবার আরেক দিকে নারাজ, নতুন ফোন পেয়েছে এতে খুশি কিন্তু তার এর থেকে একটু ভালোটা চাই তার জন্য বোঝা যাচ্ছে একটু মন খারাপ, খুব ভালো লাগলো একটা আবেগের অনুভূতি পেলাম কারন ফোন নিয়ে মোটামুটি সবারই একটা আবেগ থাকে প্রথম ফোন, আপনার প্রথম ফোন ট্যাব পরবর্তীতে সেটার মালিকানা ছোট বোন ভালোই লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
বোনের জন্য মোবাইল কিনে দিয়েছে জেনে বেশ ভালো লাগলো। মোবাইল কেনার অনুভূতি গুলো সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে ভাই বোনের সম্পর্ক খুবই মধুর। বোনকে আপনি কিন্তু ভাই ঠকিয়ে দিয়েছেন। যাই হোক বোনের জন্য ভবিষ্যতে অনেক ভালো কিছু উপহার দিবেন।
না না ঠকালাম আর কোথায়৷ টাকা আসলেই কিনে দেব। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য
আপনার পোস্ট লেখার মধ্যে বেশ আনন্দদায়ক কথাবাত্রা খুঁজে পেয়েছি। আর যাই হোক পড়তে বেশ ভালোই লেগেছে আপনার হাস্যরস মেশানো প্রত্যেকটা লাইন। মোবাইল থেকে শুরু করে ট্যাব এর ঘটনা পর্যন্ত জানতে পারলাম।
অনেক উৎসাহিত হলাম ভাইয়া৷ ধন্যবাদ।
আসলে পরিবারের বড় সন্তানরা কিন্তু অনেক কিছুই পায় যতই তারা কলুর বলদ হোক না কেন। আর ছোটদেরকে সব সময় বড়দের ইউজ করা জিনিসপত্রই দেওয়া হয়। আশা করছি আপনার যখন পকেট একটু বেশি গরম থাকবে তখন তাকে ভালো মানের একটা মোবাইল কিনে দিবেন। যাইহোক ওর যেহেতু ফোন এখন দরকার তাই অবশ্যই কিনে দেওয়ার চেষ্টা করবেন খুব তাড়াতাড়ি। এখন কোনমতে বুঝিয়ে সুজিয়ে একটা বাটন ফোন কিনে দিয়েছেন ভালোই করেছেন। পরবর্তীতে তাহলে ওর জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে।