দ্যা ফ্ল্যাশ মুভি রিভিউ||(মিডিয়াম স্পয়লার)
মুভির নাম | দ্যা ফ্ল্যাশ |
---|---|
জনরা | সুপার হিরো,অ্যাকশন |
ভাষা | ইংরেজি |
প্রোডাকশন | মার্ভেল |
অভিনয়ে | মাইকেল কিটন,এজরা মিলার,বেন অ্যাফ্লেক,সাশা কাল্লে |
মুভির প্লট:
প্রথমেই আমাদের মুভির হিরো ফ্ল্যাশ সম্পর্কে কিছু বলে নেই। ফ্ল্যাশ এমন একজন সুপার হিরো যে খুব জোরে দৌড়াতে পারে,খুব জোরে বলতে আলোর বেগে দৌড়াতে পারে। সে সুপার হিরোদের গ্রুপ জাস্টিস লীগের সদস্য। জাস্টিস লীগে ফ্ল্যাশ ছাড়াও আছে ব্যাটম্যান, সুপার ম্যান,ওয়ান্ডার ওম্যান,অ্যাকোয়াম্যান। ব্যাটম্যান ছাড়া প্রত্যেকেরই কোন না কোন সুপার পাওয়ার আছেই।কিন্তু ব্যাটম্যান এর ব্রেইন এতটাই ভাল যে সে এই গ্রুপের লিডার।
ব্যাটম্যান ফ্ল্যাশের মেন্টর ও।
এখন আসি ফ্ল্যাশের বাস্তব জীবনে। ফ্ল্যাশের বাস্তব না ব্যারি অ্যালেন। সে একজন টিনেজার,পড়াশুনার পাশাপাশি একটি পুলিশল্যাবে কাজ করে। কিন্তু ফ্ল্যাশের ব্যক্তিজীবন খুবই দু:খপূর্ণ। ব্যারি যখন ছোট তখনই তার মাকে এক অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী হত্যা করে।কিন্তু আইনের মারপ্যাচে তার মায়ের হত্যার দায় চাপে তার বাবার উপর।
নিজের বাবাকে বাচাতেই ব্যারি কাজ নেয় পুলশল্যাবে আর সেখানে কাজ করতে করতেই একদিন বজ্রপাত হয়ে কেমিক্যাল ব্যারির গায়ে পড়ে আর ব্যারি নিজের সুপার পাওয়ার পায়।
যাই হোক এবার আসি মুভির কথায়। মুভির প্রথমেই দেখি ফ্ল্যাশ একটি রেস্টুরেন্ট এ যায়। তার এই দ্রুত দৌড়ানোর জন্য প্রচুর শক্তির প্রয়োজন,আর সেই শক্তি আসে খাবার থেকে।সেই খাবার খেতে যায়,কিন্তু ওয়েটার এত স্লো যে সে খাবার দেওয়া বাদ দিয়ে গল্প করা শুরু করে। এর মাঝেই ব্যাটম্যান ফোনে জানায় যে গোথাম জেনারেল হাসপাতালে একটি ভাইরাসের নমুন চুরির জন্য হামলা করেছে।কিন্তু ভুল জায়গায় বোমা ফেলার কারনে হাসপাতালটি ভেঙ্গে পড়তে থাকে।
তখন ব্যাটম্যান ব্যারি কে সেখানে যাইতে বলে।সে সেখানে গিয়ে সবাইকে বাচিয়ে নেয়।তারপর সে অফিসে গেলে তার তাকে বসের ঝাড়ি খাইতে হয়। এরপর সে অফিস থেকে বের হবার সময় তার স্কুল দিনের এক বান্ধবীর সাথে দেখা হয়,যে আবার ব্যারির ক্রাশ। বর্তমানে মেয়েটি সাংবাদিক।সে ব্যারিকে তার বাবার কেস নিয়ে জিজ্ঞেস করলে সে বলে তার বাবা নির্দোষ।কিন্তু তার বান্ধবী তাকে খোচা দিয়ে কিছু কথা বলে যা তার খুবই খারাপ লাগে। সে এই দু:খ ভোলার জন্য প্রচন্ড বেগে দৌড়াতে থাকে।
এভাবে দৌড়াতে দৌড়াতে সে অতীতে চলে যায়।কিন্তু পুরোপুরি অতীতে পৌছার আগেই সে দৌড়ানো থামায় এবং আবার বর্তমানে চলে আসে। পরদিন রাতে সেই তার সেই বান্ধবী আসে তাকে সরি বলতে, এসে বলে আবার যদি অতীতে গিয়ে সব ঠিক করা যেত তাইলে কতই না ভাল হত।এখানে থেকেই সে অতীতে যাবার আইডিয়া পায়। তখন সে ব্যাটম্যান কে বিষয়টা জানায়। তখন ব্যাটম্যান বলে কিছু বিষয় থাকে যা নিয়তি, তুমি কোন ভাবেই তা পাল্টাতে পারবে না।আর অতীতে কিছু চেঞ্জ করলে পুরো বর্তমান অতীত সব পালটে যাবে। এমনকি বর্তমানের সব ধ্বংস ও হতে পারে।
কিন্তু কেউ যদি তার মৃত মা কে বাচানোর একটা সুযোগ পায় তবে তাকে কি আর আটকানো যায়? ফ্ল্যাশ সেদিন রাতেই টাইম ট্রাভেল করে তার মায়ের মৃত্যুর সেই দিনে পৌছে যায়।সে কাউকে কিছু বলে না।শুধু একটা কেচাপ এর বোতল এর জায়গা পালটে দেয়।যে কেচাপ সেদিন ব্যারির মা বাজার থেকে আনতে ভুলে যায়,আর তার বাবা সেটা আনতে যায় আর তখনই তার মা খুন হয়। সে সেই কেচাপ টা শুধু তার মায়ের বাজারের ব্যাগে রেখে দিয়ে আবার ফিরে আসতে নেয়। কিন্ত সে আর ফিরতে পারেনা।ফ্ল্যাশের মতই একটি প্রাণী তাকে ধাক্কা দেয় ফলে সে একটি রিয়ালিটি তে চলে যায়,যেখানে তার মা বেচে আছে আর তারা সুখেই আছে।
সে গিয়ে তার বাবা মার সাথে কথা বলতে থাকে,একসাথে ডিনার করে।ঠিক তখনই সেই রিয়ালিটির ব্যারি চলে আসে।তখন আমাদের ব্যারি তাকে গিয়ে আটকায় এবং তাকে সব খুলে বলে। এই রিয়ালিটির যে ব্যারি আছে সে একটু বোকা টাইপের।কিন্তু এর কাছে সুপার পাওয়ার নেই। ভবিষ্যত এর ব্যারি যখন আবার ফিরে যেতে চায় তখন তার মনে পড়ে যে আগামীকাল সে সুপার পাওয়ার পাবে।যার জন্য তার ঐ ল্যাবে থাকা দরকার। কিন্তু এই ব্যারি কোন তদন্ত করছে না।যার ফলে সে ল্যাবেও যাবে না।আর ল্যাবে না গেলে সে পাওয়ার পাবে না।আর অতীতের ব্যারি পাওয়ার না পেলে ভবিষ্যত এর ব্যারিও পাওয়ার পাবে না।
তখন সে আর একদিন থাকার সিদ্ধান্ত নেয় এবং পরের দিন সে বর্তমান ব্যারিকে নিয়ে ঐ ল্যাবে যায়। কিন্তু বর্তমান ব্যারি যখন শোনে তার উপর বজ্রপাত হবে তখন সে কিছুতেই সেখানে থাকতে চায়না,আর ভবিষ্যত এর ব্যারি তাকে জোর করতে থাকে।এভাবে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি করার সময় ব্রজ্রপাত দুজনের উপরেই হয়৷ ফলে অতীতের ব্যারি ক্ষমতা পায় ঠিকই কিন্তু ভবিষ্যত এর ব্যারি ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
এর ফলে সে অতীতেই আটকা পড়ে যায়।কারন দ্রুত দৌড়াতে না পারলে সে আর তার বর্তমানে ফিরে যেতে পারবে না।এর ফলে তার অতীতের সব পাল্টানো শুরু করে। এর মাঝেই এক এলিয়েন সুপার পাওয়ার পৃথিবীকে আক্রমন করে।যার ফলাফল ভবিষ্যত ফ্ল্যাশ জানে।ফলে যে জাস্টিস লীগের মেম্বার দের খোজা শুরু করে।কিন্তু সে দেখে এই রিয়ালিটিতে কোন জাস্টিস লীগ।এদিকে জাস্টিস লীগ ছাড়া পৃথিবীকে বাচানোও সম্ভব না,আবার তাও কাছেও পাওয়ার নেই।
তবে কি ব্যারি নিজের চোখের সামনে পৃথিবীকে ধ্বংস হতে দেখবে? সে যে বাবা মাকে বাচানোর এত চেষ্টা করল তাদের এভাবে মারা যেতে দেখবে? শুধু তারা নয়,এই রিয়ালটির সব মানুষ মারা যাবে ব্যারির ভুলে। ব্যারি কি পারবে এই ধ্বংস আটকাতে? জানতে দেখে ফেলুন মুভিটি।
আমার মতামত:
আমার কাছে দারুন লেগেছে মুভিটি। যদিও মুভিটি ফোনের পর্দায় দেখার থেকে মাল্টিপ্লেক্স এ দেখলে বেশি মজা পাওয়া যাবে। তবে মুভিটি আমি যথেস্ট উপভোগ করেছি। অ্যাকশন বলতে কিন্তু খালি যে ধুন্ধুমার একশন তা না। যথেস্ট ইমোশন আছে,কমেডি আছে। আর আছে একজন ছেলের মাকে সেই সাথে দুনিয়া কে বাচানোর চিন্তা। মুভিতে কোন ১৮+ সিন নেই তাই ছোট ভাইবোনদের সাথেও দেখতে পারবেন।তারাও যথেস্ট উপভোগ করবে মুভিটি। ছুটির দিনে সময় কাটানোর জন্য এমন মুভিই দরকার। আমি হিন্দি ডাবিং টা সাজেস্ট করব। কারন ওটা বেশি মজার। রেটিং দেব ৮/১০।