বিদেশি ভূতের গল্প
গত পর্বে:
তখন পা টিপে টিপে দোতালায় গেলাম।কিন্তু মনে হল চোর কোনভাবে বুঝতে পেরেছিল আমি আসছি।তাই সে দৌড়ে একটি ঘরে চলে যায়,আমি পায়ের আওয়াজ আর দরজা বন্ধ হবার আওয়াজ থেকে বুঝতে পারি।
বর্তমান পর্বে:
তখন আমি মনে মনে ভাবলাম, "বার বার ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান,এভাবে বধিব আমি তোমার পরাণ"। এই ভেবে আমি খুজতে লাগলাম চোর কে। ভেবেছিলাম কোন ঘর সেটা বুঝতে পারলে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিয়ে তোমাদের ডাকব। খুজতে খুজতে একটা ঘরের সামনে গিয়ে শুনতে পেলাম ভেতর থেকে কেমন যেন একটা শব্দ হচ্ছে।
শব্দটা শুনে আমার কৌতুহল যেন বেড়ে গেল। আমি ভুলেই গেলাম ঘরে যদি চোর থাকে তাইলে আমি একা হয়ত মোকাবিলা নাও করতে পারি আবার চোর ভয় পেয়ে আমাকে খুনও করে ফেলতে পারে। দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়লাম। প্রথম ঘরটিতে কিছুই পেলাম না। ডাইনিং পেরিয়ে পরের ঘরে যেতেই দেখলাম একটা পুতুল পড়ে আছে।
তবে পুতুলটা দেখতে কেমন জানি বেশ ভয়ংকর।পুতুলটির একটি হাত ছেড়া আর শরীরে অসংখ্য সুই ফুটানো। পুতুলটি দেখেই আমার শরীর কেপে ওঠে আর কেমন যেন একটু ভয় পাওয়া শুরু করলাম।এরপর আমি বের হয়ে আসতে নিলাম কিন্তু দরজা টা খুলতে পারছিলামনা।তারপর হঠাৎ কে যেন আমার কাধে একটা হাত রাখল।আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম।গুরুজন দের থেকে শুনেছি এমন পরিস্থিতে পড়লে নাকি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে নাই।তাই আমি খুব কষ্টে পেছনে তাকানো থেকে বিরত থাকলাম।
কিন্তু তা যেন পেছনের সেই জিনিসটির পছন্দ হল না,সে আমাকে প্রচন্ড শক্তিতে ঘরের অপর পাশে ছুড়ে দিল। তখন আমি সেই হাতের অধিকারীকে দেখতে পেলাম। সেই বিভৎস রূপ কখনোই ভুলতে পারব না। মুখ টা একদম থেতলানো,মাথাটা এক পাশে হালানো,গা থেকে যেন মাংস খুলে পড়ছে।আমি মনে মনে চাচ্ছিলাম অজ্ঞান হয়ে যেতে।কিন্তু চেয়েও পারছিলাম না।
তখন সেই অশরিরী গর্জে উঠল,কি যেন বলছিল বার বার।আর দরজা দিকে আঙ্গুল তাক করে রেখেছিল।আমি তার ভাষা বুঝতে না পারলেও তার ইশারা বুঝতে পারলাম।বুঝেই দরজার দিকে দৌড় দিলাম,কিন্তু বেশি দূর যাবার আগেই আবার তার গর্জন।এবার আর যেন আমার ব্রেইন নিতে পারল না।সাথে সাথেই অজ্ঞান হয়ে গেলাম।তারপর কি হয়েছে আমার আর কিছু মনে নাই।
এরপর কি কি হয়েছে আমরা তাকে বললাম।এর মাঝেই আমাদের সুপার ভাইজার চলে আসল।তাকে সব খুলে বললাম। তখন উনি জানালেন যে যেখানে আমরা ডিউটিতে ছিলাম আগে সেখানে আরেকটি বিল্ডিং ছিল। সেই বিল্ডিং ভেঙ্গে বর্তমান এর সাইট টা বানানো হয়েছে। আগের বিল্ডিং এ থাকত এক মহিলা, সেই মহিলা নানা রকম কালো জাদু করত।একবার তার ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসা তে লোকজন তার ঘরের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করতে শুরু করল,কিন্তু তার কোন সারাশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে।
ভেতরে ঢুকে লোকজন সেই মহিলার পচা গলা মৃতদেহ আবিষ্কার করে।পুলিশে খবর দেওয়া হয়,পুলিশ এসে লাশ নিয়ে যায়। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এ পাওয়া যায় কে যেন তার ঘাড় টা সম্পূর্ণ উলটে দিয়ে খুন করেছে।কিন্তু কে খুন করেছে তার আর খুজে পাওয়া যায়নি। এরপর থেকে সেই বিল্ডিং টিতে নানারকম ভয়ানক ঘটনা ঘটতে শুরু করে।ফলে ভাড়াটিয়ারা এক এক করে সবাই চলে যায় এবং বাড়টা পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। এরপর একসময় বর্তমান কোম্পানী কিনে নিয়ে আগের বিল্ডিং ভেঙ্গে নতুন বিল্ডিং করা শুরু করে।আমি ভেবেছিলাম এখন আর সেসব সমস্যা নাই,তাই তোমাদের অনুমতি দিয়েছিলাম।যাই হোক আর তোমাদের ওখানে যাওয়ার দরকার নাই।
সমাপ্ত
আমি বৃত্ত মোহন্ত (শ্যামসুন্দর)। বর্তমানে ছাত্র। নতুন কিছু শিখতে, নতুন মানুষের সাথে মিশতে আমার খুব ভাল লাগে। তেমনি বই পড়া আর ঘুরে বেড়ানো আমার পছন্দের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম। মুক্তমনে সব কিছু গ্রহণ করার চেষ্টা করি আর মনে প্রাণে বিশ্বাস করি,"বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর, সবার আমি ছাত্র"।
ভাইয়া আপনার বিদেশি ভূতের গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগল।আসলে আগের পর্ব যদিও আমার পড়া হয়নি, তবে আজকের পর্ব পড়ে সত্যি ভয়ংকর মনে হচ্ছে। ঘরের ভিতরে এভাবে মানুষ খুন করে রেখেছে, তারপর পুলিশ এসে লাশ বের করল।যাইহোক অবশেষে বাড়িটা পরিত্যক্ত হয়ে গেল। সত্যি ভূতের গল্পটা অনেক ভয়ংকার ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।