জমিদারি||পর্ব-১
হনুমান সিং।অরণ্যকুট গ্রামে জমিদার।নাম শুনেই মনে হয় মানুষটা বীর বাহাদুর হবে।আদপেই তাই,বিশাল সাহসী তিনি।তার ভয়ে এলাকায় ডাকাত পড়তে পারে না।কথিত আছে একবার এক দল ডাকাত নাকি ভুলে তার বাড়িতে ঢুকে পড়ে।হনুমান সিং ও তাদের বন্দুক নিয়ে তাড়া করে এবং একপর্যায়ে এক ব্যাটা কে বন্দীও বানান।
এখন ডাকাত ধরা পড়েছে তাকে পুলিশে দিতে হবে।হনুমান সিং ভাবলেন, এতো সাধারণ মানুষ করে। পুলিশে দেওয়া হলে কয়দিন জেল খাটবে,তারপর বেরিয়ে আবার ডাকাতি করবে।তাই এমন কিছু করতে হবে যাতে বেচারা জন্মের শিক্ষা পায়।
তাই তিনি জব্বর এক ফন্দি বের করলেন।হনুমান সিংয়ের দাড়োয়ান রাম ভরসা।তার বিশাল বপু।তিনি রামভরসা কে নির্দেশ দিলেন সেই ডাকাতের পিঠের উপর বসে থাকার৷ এই রায় ঘোষণা হবার পর থেকেই ডাকাত বাবা মা বলে চ্যাচাতে লাগল।কি হাসছেন যে বড়? রামভরসার চেহারা খানা দেখলে আপনার মুখ থেকেও হাসির বদলে বাবারে-মারে বেরিয়ে যে। এমনই দশাসই তার শরীর।
যাই হোক হাকিম নড়ে, তবু হুকুম নড়ে না। ফলাফল রামভরসা ডাকাতের পিঠে আয়েস করে বসে সারা রাত কাটিয়ে দিল। এদিকে ডাকাত বেচারার জান বের হবার দশা।তার উপর সে যখনই ব্যাথায় একটু চিৎকার করে তখনই রামভরসা তার মাথায় বিশাল এক গাট্টা হাকিয়ে দেয়।
বেচারা পড়ে উভয় সংকটে না পারছে সহ্য করতে,না পারছে চিল্লাতে।এভাবে সে কোন মতে আধমরা হয়ে বাকি রাতটুকু কাটিয়ে দিল। তারপর সকাল হলে জমিদার মশায় বেচারা ডাকাত কে আনতে বললেন।ডাকাত বেচারা আবার নতুন শাস্তির ভয়ে একদম জরোসরো হয়ে হাজির হল।তখন তিনি ডাকাত টিকে জিজ্ঞেস করলেন,"তোর নাম কি?তুই ডাকাতি করিস কেন?দেখ সত্যি বলবি,নইলে আবার নতুন শাস্তির ব্যবস্থা করব।
এই শুনে ডাকাতের মুখ তো আরো শুকিয়ে গেল। সে বলা শুরু করল,"হুজুর আমার নাম ভোলা। আমরা ডাকাতি করি ঠিক,কিন্তু কেউ কি ইচ্ছা করে ডাকাত হয়? আমার বাড়ি পাশের এলাকায়। আমাদের জমিদার মশায় ভীষণ অত্যাচারী। তিনি আমাদের থেকে শুধু খাজনা আদায় করেন।আমাদের সুখ সুবিধা কিছু দেখেন না।গত বছর খরা ছিল জমিতে একফোটা ফসল হয়নি।বউ বাচ্চা নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।
অথচ জমিদার সাহেবের সেদিকে কোন নজর নেই।তিনি প্রজাদের পাশে দাড়াবেন কি? উনি খাজনা আদায়ের জন্য অত্যাচার শুরু করেছেন।আজ এর বাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন,তো কাল কাউকে তুলে নিয়ে গিয়ে গারদে বন্দী করে রাখছেন।তাই তার খাজনার টাকা জোগাড় করার জন্যই আমরা ডাকাতি করতে বেরিয়েছিলাম।
এই শুনে হনুমান সিং এর মন গেল গেল। তিনি হুকুম করলেন আপাতত ডাকাত টাকে ভালমন্দ কিছু খাইয়ে তাকে বন্দী রাখা হোক। পরে তার বিচার করা যাবে।এই বলে তিনি উঠে গেলেন।আর গোপনে এক গুপ্তচর কে পাঠালেন ভোলার এলাকায়।তার কথার সত্য মিথ্যা যাচাই করতে।কারন ভোলা যদি সত্য বলে থাকে তাহলে এর একটা বিহিত করা দরকার।
রামভরসার চেহেরা সত্যি ভয়ানক ছিল। রামভরসা ঠিক করেছে ডাকাতের পিঠে আয়াস করে বসে রাত কাটিয়ে দিয়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হলো।সত্যি অনেকেই বাধ্য হয়ে ডাকাতি করে। ভোলার অত্যাচারে হয়তো সে ডাকাতি করতে এসেছে। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
ডাকাতের শাস্তিটা বড়ই কঠিন ছিল। তার উপরে আবার চেচামেচি করলেও দেখছি শাস্তি পেতে হচ্ছে। শুরু থেকে গল্পটা পড়তে ভীষণ ভালোই লাগতেছিল। কিন্তু ডাকাতের মুখ থেকে তাদের রাজ্যের রাজার অত্যাচার শুনে খুবই খারাপ লাগলো। কিন্তু আমার মনে হয় ডাকাত ভোলার কথা শুনে যখন ওদের এলাকায় গুপ্তচর কে পাঠিয়ে ভালোই করেছেন। পরের পর্বটা নিশ্চয়ই আরো আকর্ষণীয় হবে। দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
হনুমান সিং বাবা রে বাবা নাম শুনে তো বুক কেপে উঠে ৷ যা গল্পে যে টুকু বুঝলাম যে ডাকাত চুরি করতে এসেছে তার বাড়ি অন্য রাজ্যে ৷ কিন্তু ওই রাজ্যের জমিদার খাজনা আদায় করে আর সাধারন প্রজা খাজনা দেওয়ার জন্য ডাকাতি করে ৷
যা হোক এমন রাজা বা জমিদার দরকার নেই ৷ যে জমিদার তার প্রজাদের শান্তি সুখ দিতে পারে না ৷ যা হোক যেহেতু ডাকাত ভোলা সব কিছু বলেছে ৷ তাহলে হয়তো তাকে মুক্তি দেওয়া হবে ৷ তবে তার আগে গুপত্বচর খবর পাওয়ার অপেক্ষা ৷ যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
সম্পূর্ণ গল্প পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।
আপনি বরাবরই সুন্দর গল্প লিখেন। আজ জমিদারি নামক গল্পের প্রথম পর্ব পড়ে খুব ভাল লেগেছে। হনুমান সিং নিজেই ডাকাত ধরে ফেলেছে এটা বিশাল ব্যাপার। ডাকাতের শাস্তিটা আমার কাছে দারুন লেগেছে। তবে ডাকাতের জমিদার কি অত্যাচার করছে সেটা গুপ্তচর আসলেই বোঝা যাবে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনাদের এমন উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্যই জেনারেল পোস্ট লেখার উৎসাহ পাই।
এমনিতে কিন্তু হনুমান সিং বেশ ভালোই একটা কাজ করেছেন। আসলে ডাকাত টিকে যদি পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হতো তাহলে কয়েকদিন জেল খাটার পরে বেরিয়ে যেত। কিন্তু হনুমান সিং মানে জমিদার মশাই বেশ ভালোই একটা শাস্তির ব্যবস্থা করেছে ডাকাতের জন্য। ভোলা বাধ্য হয়ে ডাকাতি করে কারণ তাদের গ্রামের জমিদার তাদের উপর ভীষণ অত্যাচার করে। যাইহোক পরের পর্বে কি হবে তা দেখারই অপেক্ষায় থাকলাম এখন। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্ব শেয়ার করবেন।
হ্যা পরের পর্ব খুব তারাতারি আসবে।ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনার গল্পে হনুমান সিং এর বৈশিষ্ট্যে বোঝা গেল সে একজন একরোখা মানুষ যা বলে তা করেই ছাড়ে। আর তার পাশাপাশি যেহেতু ডাকাত ধরেছে এবং তাকে শাস্তির ব্যবস্থা করেছে তা তো কমার নয়। সর্বশেষ তাকে শাস্তি দেয়ার পর নাম জানল এবং ডাকাতি করার কারণটাও জানলো। পরে আবার সে সত্য বলছে কিনা সেটা যাচাই করার জন্য গুপ্তচর পাঠিয়েছে। যাই হোক প্রথম পর্ব পড়ে ভালো লাগলো।
রাজার বিচার শুনে আমি হতভাগ হয়ে গেলাম। ডাকাতের শাস্তি অনেক বেশি হয়ে গেল। এত মোটা পাহারাদার তার গায়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে। সকাল বেলা রাজা যখন ডাকাতকে জিজ্ঞেস করলো ডাকাত তার রাজ্যের অত্যাচারের কথা বলল শুনে খুব খারাপ লাগলো। রাজার এক লোককে যখন তার খোঁজ নিতে বললেন কথাটি কতটুকু সত্যি। মনে হয় সামনের পর্ব আরো মজার ঘটনা জানতে পারব। আশা রইলাম খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।
বাহ,গল্পটি বেশ মজার লিখেছেন দাদা।আসলে ডাকাতকে সারারাত শাস্তি দিয়ে ও বন্দী করে রাখা হলো জেনে মন খারাপ হয়ে গেল।যাইহোক দেখা যাক ভোলার কথায় কতটা সত্য মিথ্যা আছে।পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম, ধন্যবাদ আপনাকে।
ওয়াও আপনার গল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। হনুমান সিং রাজার বিচার মনে হয় অনেক কড়া।ডাকাত কে পুলিশের হাতে না দিয়ে সে নিজেই বিচার করলেন। আসলে রাজা ঠিক বলেছেন কয়েক দিন জেল খেটে ডাকাত আবার বের হয়ে যাবে। ডাকাতের মুখ থেকে শুনলো তাদের রাজ্যে রাজার অত্যাচারের কথা। আমার মনে হয় হনুমান সিং রাজা অনেক ভালো। দেখি আপনার পরের পর্বে কি ঘটে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন পরে পর্বটি।