হঠাৎ ছোটাছুটি
ঘড়িতে তখন সন্ধ্যে সাড়ে আটটার মত বাজে, আজ আমার লম্বা কাজের সিডিউল আছে। মূলত ৯ টা থেকে নিজেদের ইন্টারনাল মিটিং আছে তারপর আবার ফিচার্ড পোস্ট তৈরি করতে হবে, সব মিলিয়ে অনেকটা কাজের চাপ মাথার ভিতরে ঘুরপাক করছে।
ল্যাপটপ আমার আয় রুজি-রোজগারের একটা মাধ্যম। এটা দিয়েই কোনরকমে এই ঊর্ধ্বগতির দ্রব্যমূল্যের বাজারে আমার জীবন চলে যাচ্ছে ও খেয়ে পড়ে বেঁচে আছি। বিকেলটা মোটামুটি ভালই কেটেছে তবে সন্ধ্যে বেলার দিকে যখন ল্যাপটপটা ওপেন করেছি, তারপরেই হঠাৎই টেকনিক্যাল কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে। কোন কিছুতেই আমার ল্যাপটপটা চালু হচ্ছিল না। অনেকটা মানসিক চাপ কাজ করছিল নিজের ভিতরে।
বারবার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছিলাম কারণ একটু পরেই মিটিং শুরু হবে। গুনে গুনে আর ৩০ মিনিট বাকি আছে, কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মুঠোফোন আর মানিব্যাগ দুটোই ঘেঁটেঘুঁটে দেখলাম, যে দোকান থেকে ল্যাপটপ কিনেছিলাম সেখানকার ভিজিটিং কার্ড বা কোন ফোন নাম্বার আছে কিনা। তবে নিরাশ হয়ে গেলাম, দুটোর কোনটাই আমার কাছে নেই।
আরিফ ভাইকে ভিডিও কলে ল্যাপটপের বর্তমান অবস্থা দেখানোর চেষ্টা করলাম, আরিফ ভাইও তাৎক্ষণিক ভাবে ব্যাপারটা তেমন বুঝে উঠতে পারলো না,তবে মানসিকভাবে সান্ত্বনা দিয়েছিল, বললো ধীরে সুস্থে আগামীকাল সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে দেখিয়ে নিয়েন। তবে তাও যেন আমার মনের ভিতরের অস্থিরতা কিছুতেই কমছিল না। কারণ যে জিনিসটা দিয়ে আয় রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা হয়, সেটার আসলে কোন ঝামেলা হলে তখন সত্যিই মাথা ঠিক থাকে না।
মোবাইলের মাধ্যমে ডিসকর্ডে একটা মেসেজ দিয়ে সবাইকে বললাম, ভাই আমার কিছুটা দেরি হবে, আমি ল্যাপটপটা নিয়ে সার্ভিস সেন্টারে যাচ্ছি।এদিক থেকে বলা যায়, আমার সকল কলিগরা বেশ আন্তরিক। তারা আমার ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করেছে। যাইহোক অবশেষে রাত্রি বেলায় বেরিয়ে গেলাম সার্ভিস সেন্টারের উদ্দেশ্যে। যখন গিয়ে পৌঁছলাম তখন দেখি কেবল তারা দোকান বন্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারপরেও তাদেরকে অনুরোধ করে আমার সমস্যাটা বোঝানোর চেষ্টা করলাম এবং তারাও শেষে আমার ব্যাপারটা একটু মানবিকভাবে দেখার চেষ্টা করেছে।
ওখানে বসে থেকেই মুঠোফোনের মাধ্যমে নিজেদের ভিতরে যে ইন্টারনাল মিটিং ছিল সেটা শেষ করে নিলাম এবং এরপর যখন ল্যাপটপের টেকনিক্যাল ত্রুটি দূর হয়েছিল তারপরে বাসায় ফিরে এলাম। ঘড়িতে তখন বারোটার মতো বাজে, গিন্নি আমার রেগে আগুন হয়ে আছে। কোনভাবে পরিবারের সবাইকে মানসিকভাবে আশ্বস্ত করে, অবশেষে জমে থাকা কাজগুলো শেষ করে, এখন যেন কিছুটা হলেও নিজের ভিতরে স্বস্তি ফিরে পেলাম।
সন্ধ্যেবেলা থেকে হঠাৎ করেই বড্ড ছোটাছুটি হয়েছে। তারপরেও যে সবকিছু এখন আপাতত ঠিকঠাক আছে, এটা ভেবেই ভালো লাগছে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1678011399027716098?t=xyNATT63yW7Yk-09vSyqng&s=19
আসলে হঠাৎ করে যদি এরকম পরিস্থিতির মধ্যে আমরা পরি তাহলে মানসিকভাবে সত্যিই অনেক খারাপ লাগে। আর যেটার মাধ্যমে আমরা আয়রোজগার করি সেটা যদি নষ্ট হয় কিংবা কোন ত্রুটি হয় তাহলে সত্যিই মাথা ঠিক থাকে না। ভাইয়া আপনার কলিগরা সবাই অনেক আন্তরিক এবং সবকিছুই ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। শেষ পর্যন্ত ল্যাপটপ ঠিক হয়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো ।
হ্যাঁ আপু আসলেই ব্যাপারটা একটু জটিলতা সম্পন্ন হয়েছিল, তবে যাইহোক অবশেষে সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া গিয়েছে এটাই অনেক।
আসলে ভাইয়া ল্যাপটপে হঠাৎ করে এরকম সমস্যা দেখা দিলে এমনিতে মানসিক চাপ তৈরি হয়। তারপর আপনার সামনে ছিল অনেকগুলো কাজ। আর সে কারণে আপনার ল্যাপটপে সমস্যা দেখার সাথে সাথে আপনি অস্থির হয়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাত্রে বেলা হলেও আপনি ল্যাপটপটি ঠিক করে এনে আপনার জমে থাকা কাজগুলো করতে পেরেছেন এটা জেনে আমার খুবই ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া এগুলো হলো আমাদের জীবনের একটি অংশ, আর এগুলো মোকাবেলা করেই আমাদের চলতে হবে।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর সাবলীল মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য।