সেদিনের সেই রবিবারের বিকেল
ঐদিন বিকেল বেলার দিকে ঘুম থেকে উঠে যখন দেখলাম পুরো আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে, তখন ইচ্ছে করেই বেলকুনিতে অনেকটা সময় বসে ছিলাম। সদ্য ফোটা ঘাসফুল গুলোর দিকে যখন তাকিয়ে ছিলাম তখন যেন আলাদা প্রশান্তিবোধ কাজ করছিল নিজের মাঝে। যখন এই লেখাটা লিখছি তখন কিন্তু আমি এই বাসাতে আর নেই।
এটা সম্ভবত ঐ বাসা থেকে চলে আসার আগের দিনের মুহূর্ত। বাসাটার সবথেকে প্রিয় জায়গা ছিল আমার কাছে এই ছোট্ট বেলকুনিটা। আমার গিন্নি তাতে নিজের হাতে সেখানে বাগান করেছিল। জায়গাটা আমার কাছে এতটাই পছন্দের ছিল যে, আমি সময় পেলেই সেখানে গিয়ে নিজের মতো করে সময় কাটাতাম। মাঝে মাঝে একাকীত্ব দূর করার জন্য অথবা বাবুকে কোলে নিয়ে নতুবা অবসরে আমি, বাবু আর গিন্নি মিলে নিজেদের মতো করে বসে থাকতাম আর চারিপাশটা দেখতাম।
যেহেতু অনেকটা উপরে থাকতাম, তাই আশেপাশের সৌন্দর্যটা বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করা যেত। এমনও হয়েছে যে, গরমের সময় ছোট বেলকুনিতেই তিনজন মিলে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়েছি। ফুরফুরে হাওয়ায় গা ভাসিয়েছি নিজেরা । তবে আজ তা সবই অতীত। কখনো কখনো অলস দুপুরে বা সন্ধ্যের আগ মুহূর্তে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেখানে পায়চারি করেছি আর চায়ে চুমুক দিয়েছি।
সেদিন মেঘাচ্ছন্ন আকাশ দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম, একটু পরেই বৃষ্টি নামবে। শখের দোতারাটা হাতে নিয়ে অনেকটা সময় একাকী সেখানে গুনগুন করার চেষ্টা করলাম। একটা অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করেছিল সেদিন। হালকা ঝড়ো হওয়া, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর সঙ্গে আমার দোতারার টুংটাং শব্দ, বাহ এ যেন এক ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা।
সবকিছুই ছাড়তে হয় নতুবা পরিস্থিতি বাধ্য করে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তবে সেদিনের সেই বিকেল বেলার মুহূর্তটি ছিল, নিজের কাছে নিজেকে পরিতৃপ্ত করার মতো। নিজের সঙ্গে নিজেকে বোঝাপড়ার মত অবস্থায় সম্মুখীন করেছিলাম। নিজেকে বুঝিয়েছিলাম আরো পরিপক্ক হতে হবে। সামনে এখনো অনেক কিছুই বাকি আছে, এগিয়ে চলতে হবে।
হয়তো অন্য কেউ নিজের মতো করে এরপর থেকে এখানে সময় কাটাবে, তার আপনজনকে পাশে নিয়ে নিজের মতো করে গল্পে মেতে উঠবে। কেউ হয়তো এখানে বসে গাণিতিক হিসাব নিকাশ করবে জীবনের সঙ্গে। আবার কেউ হয়তো চাতক পাখির মত চেয়ে থাকবে পারিপার্শ্বিক অবস্থাটা বোঝার জন্য । কার দখলে যে বেলকুনিটা চলে যায় তা বোঝা মুশকিল ।
বড্ড এলোমেল ভাবনায় নিজেকে গুলিয়ে ফেলেছি। অহেতুক মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই। আমার প্রস্থানে কি হবে সেটা আগাম জানতে চাওয়াটা নিতান্তই বোকামি। তার থেকে যতটা সময় ছিলাম এখানে সেই সুখস্মৃতিকে ডায়েরিতে তুলে রাখাই তো শ্রেয়।
এই ঘাসফুলের সৌন্দর্য, নির্মল বাতাস, দোতারার টুংটাং শব্দ আর আমার ভাঙ্গা গলার গান, আপাতত এসবের মাঝেই যেন বাড়তি ভালোলাগা কাজ করছে, এসবই থাক স্মৃতি হয়ে। সত্যিই ভালো ছিল সেদিনের সেই রবিবারের বিকেল।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1669659315379240962?t=94X7RU9Rc2DkTi9dvUy0wQ&s=19
অনেক সময় পরিস্থিতি আমাদেরকে অনেক কিছু করতে বাধ্য করে। হয়তো পরিস্থিতি আমাদেরকে প্রিয় জায়গা গুলো ছেড়ে আসতে বাধ্য করে। জানিনা আপনি কেন আপনার সেই প্রিয় জায়গাটি ছেড়ে চলে এসেছেন। তবে কেন জানি জানতে খুব ইচ্ছে করে। কারণ আপন মানুষগুলোর প্রতি কৌতূহল অনেক বেশি থাকে।
এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে সব মিলিয়ে আরকি অনেকটাই হিমশিম খেতে হচ্ছে আপু।
পরিস্থিতিতে মানুষকে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয় ।সত্যি জীবন বড়ই অদ্ভুত , মানুষ আজ এক জায়গা কাল অন্য জায়গা এটাই স্বাভাবিক। তবে কেনো আপনি আপনার প্রিয় জায়গা ছেড়ে চলে গেলাম এতো তাড়াতাড়ি বুঝতে পারলাম না। যাইহোক আপনি নতুন জায়গায় আবার নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
জীবন বড্ড অদ্ভুত কখন কি যে হয়, তা তো বলা যায় না। যাইহোক দেখি নতুন পরিবেশে গিয়ে কি অবস্থা হয়।
জায়গা বদল হয়েছে আপুর পোস্টে জানতে পেরেছি।কিন্তু কেন এতো সুন্দর প্রিয় জায়গাটি ছেড়ে গেলেন তা অজানাই রয়ে গেলো। তবে পরিস্থিতির কারনে আমাদেরকে অনেক কিছু সয়ে যেতে হয়।তবে নতুন জায়গাটিও এক সময় প্রিয় হয়ে উঠবে সময়ের সাথে সাথে। ভালো থাকুন,যেখানেই থাকুন এই কামনাই করি।অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য। ব্লগটি পড়ে মনের মধ্যে আমার ও একটা কষ্ট অনুভব হলো।
দেখি কি অপেক্ষা করছে সামনে আপু। ধন্যবাদ সুন্দর সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কিছু সুন্দর অতীতের স্মৃতি থাকে।পুরোনো স্মৃতি গুলো আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয় যে কোনো কিছুই চিরদিন স্থায়ী হয় না। একটা সময় সবই চলে যায়।তাই পুরোনো দিনের স্মৃতি গুলো মনে না করে আগামী দিনের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলা ভালো।আপনার আগামী দিনগুলো সুখের স্মৃতি হয়ে কাটুক এই প্রার্থনা করি।ফুলের অসাধারণ ফটোগ্রাফি এবং অনুভূতির কথা গুলো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন তার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই ভাইয়া।
আমার অনুভূতি বুঝতে পেরে মন্তব্য করার জন্য, ধন্যবাদ 🙏
ভাইয়া সেদিনের রবিবারের বিকেলের মুহূর্তটুকু আপনি খুবই চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছে। আসলে আপনার গিন্নির হাতে তৈরি ঘরের বেলকুনির বাগানের পরিবেশটা খুবই সৌন্দর্য ছিল। আর এই বেলকুনির খুবই মধুর স্মৃতি গুলো আপনাকে মাঝেমধ্যেই ভাবিয়ে তুলবে। অত্যন্ত সুন্দর একটি স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ ভাই আপনার সাবলীল মতামতের জন্য।