দীর্ঘদিন পর প্রিন্সের সঙ্গে কথোপকথন
মাধ্যমিকের পর থেকে প্রিন্সের সঙ্গে আমার আর সেভাবে দেখা হয়নি। কারণ ওরা এ শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল। ওরা এসেছিল মূলত এই শহরে ওর বাবার চাকরির সূত্রে। কুটিবাড়ীর সরকারি কোয়ার্টারে ওদের বসবাস ছিল।
ওর সঙ্গে সেই সময় জীবনের প্রায় পাঁচটি বছর অতিবাহিত করেছিলাম। অল্প সময়ের মাঝেই বেশ ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে গিয়েছিল। মাধ্যমিকের পরে ওর সঙ্গে আর দেখা হয়নি বললেই চলে। এরপরের দেখাটা হয়েছিল বহু বছর পর। অর্থাৎ যখন আমি রাজশাহীতে ইন্টার্ন করতে গিয়েছিলাম ঠিক সেই সময় গিয়ে আমাদের আবারও দেখা হয়ে গিয়েছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে মাঝে মাঝে কথা হতো ওর সঙ্গে। যদিও এখনো অবশ্য কথা হয়, এই তো সেদিন অনেকটা সময় কথা হলো ওর সঙ্গে।
মোটামুটি পড়াশোনা শেষ ওর অনেক আগেই হয়ে গিয়েছে। একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিও করছে দীর্ঘদিন ধরে। বিয়ে-শাদির জন্য বাড়ি থেকেই পাত্রী দেখছে প্রিন্সের জন্য, কারণ বয়সটা তো ত্রিশ পেরিয়ে গেল। যদিও প্রিন্সের অবশ্যই এদিক থেকে তেমন কোন আহামরি চিন্তা নেই। কারণ বাড়ি থেকে যা বলবে মানে বাড়ির পছন্দই তার নিজের পছন্দ।
তবে সেদিন যখন ওর সঙ্গে কথা হল, তখন বেশ অনেকটাই ওকে চিন্তিত মনে হল। মনে হল, ও যেন ভীষণ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। তবে যে ঘটনাটা ঘটেছে, সেটা অবশ্য একদিক থেকে আমি বলব ভালই হয়েছে। কারণ শুরুতেই যেটার সমাধান হয়ে যায়, সেটাই মূলত ভালো।
পার্শ্ববর্তী এলাকার এক ব্যবসায়ি ভদ্রলোকের মেয়ের সঙ্গে প্রিন্সের পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছিল। মোটামুটি দিন তারিখ সব পাকাপোক্ত। সেই অনুযায়ী কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা, আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত দেওয়া, সবকিছুই নিয়ম মেনেই হয়েছে। তবে বিপত্তিটা হয়েছিল বিয়ের ঠিক দুই থেকে তিন দিন আগে।
আসলে এখানে কারো দোষ নেই বললেই চলে। আমি মনেকরি প্রিন্সের ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল বিধায় ঘটনাটা বিয়ের আগেই ঘটেছিল । প্রিন্সের যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল, সেই মেয়ের অন্যত্র একটা দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। যদিও মেয়েটা শুরুতেই পারিবারিকভাবে চাপের কারণে অনেকটাই বাধ্য হয়ে রাজি হয়ে গিয়েছিল প্রিন্সের সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে, তবে ভিতরে ভিতরে পুড়ে যাচ্ছিল সে ।
তবে দিন যত ঘনিয়ে আসছিল ব্যাপারটা যেন ততই ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছিল। মেয়েটার যে জায়গাটায় সম্পর্ক ছিল, সেই দিকটা থেকেও তখন বেশ ভালোই সাড়া পাচ্ছিল। অবশেষে মেয়ের প্রস্থান। আসলে একটা মানুষ যেখানে মানসিক শান্তি পাবে, যেখানে নিজের মতো করে থাকতে পারবে, সেখানেই তো তার ঠিকানা হওয়া উচিত। আমার মতে মেয়েটা কোন দোষ করে নি ।
আর যদি এখানে দোষ খোঁজাই হয়, তাহলে বলবো মেয়েটার পরিবারের কিছুটা ত্রুটি ছিল। কারণ তারা হয়তো তার মেয়ের কাছ থেকে ভালোভাবে জানতে চায় নি আসলে তার মেয়ে কি চায়। মেয়েরা আসলে মাঝে মাঝে সবকিছু বিসর্জন দিয়ে হলেও, তার আপন মানুষের কাছে যেতে সর্বদাই প্রস্তুত থাকে । এক্ষেত্রে বিষয়টা হয়তো তেমনি ঘটেছিল।
যদিও মেয়েটার পারিপার্শ্বিক চাপে প্রিন্সের সাথে কিছু একটা হয়েই যেত, তাহলে পরবর্তীতে যদি ভিন্ন কোন ঘটনা ঘটত, তাহলে সেটা মোটেও সুখকর হতো না প্রিন্সের জন্য। সেদিন ফোনের অপর প্রান্ত থেকে কথাগুলো বলছিল প্রিন্স, এমন সময় বেশ হেসেছিলাম আমি এবং বললাম তুই বেঁচে গিয়েছিস। এখন তুই নতুন মানুষ খোঁজ, তবে আগে থেকেই তার সঙ্গে কথাবার্তা বলে নিস, তার অতীত কিছু আছে কিনা, এটা আগেই জেনে নেওয়া ভালো ।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
এতো দেখছি বাংলা সিনেমার গল্প হয়ে গেল। আহারে প্রিন্স বেচারার জন্য বেশ কষ্টই লাগছে। তবে একদিক থেকে যা হয়েছে বেশ ভালই হয়েছে। তানা হলে এ ঘটনা বিয়ের পড়ে হলে প্রিন্স বেচারার অবস্থা তো আরও খারাপ হতে পারতো। আর আজ কালকের মেয়েরাও যাবি তো যাবি আগে আগে যা। অন্য ছেলের সাথে মজা মারার দরকার কি?
আসলে এখানে ব্যাপারটা একটু আলাদা ছিল আপু। কারণ বাংলা সিনেমার কাউকে আমি বাস্তবে চিনতাম না আর এখানে প্রিন্স আমার বাল্যবন্ধু তাই হয়তো ঘটনাটা আমাকে স্পর্শ করেছিল। ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
প্রিন্স ভাইয়ের ভাগ্য ভালো যে মেয়েটি বিয়ের আগেই চলে গিয়েছে। বিয়ের পর যদি এই ঘটনা ঘটতো তাহলে দুটি জীবন নষ্ট হয়ে যেত। আর সারা জীবন দুজন মানুষ কখনোই সুখী হতে পারত না। হয়তো মেয়েটির কোন দোষ নেই। কিংবা প্রিন্স ভাইয়ার। আসলে পরিবারের চাপের মুখে হয়তো মেয়েটি বাধ্য হয়েছিল বিয়েতে রাজি হতে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত যা হয়েছে ভালোর জন্যই হয়েছে। সৃষ্টিকর্তা হয়তো উনার জন্য অন্য কাউকে রেখেছেন।
ঐ যে বলেছিলাম গল্পের শুরুতে, কিছু বিষয় শুরুতে সমাধান হলেই ভালো। এ যাত্রায় হয়তো প্রিন্স বেশ ভালোই ভাগ্যবান ছিল।
তা অবশ্য ঠিক বলেছেন ভাইয়া প্রিন্স আসলেই বেঁচে গিয়েছে। মেয়েটি যদি বিয়ের পর এভাবে চলে যেত তাহলে তো আরো বেশি সমস্যা হতো। এক্ষেত্রে মেয়েটির দোষ একেবারে নেই বললে ভুল হবে। যে মেয়ের এভাবে বিয়ের দুই তিন দিন আগে পালিয়ে যাওয়ার মত সাহস থাকে তার তো এই বিয়ে ভেঙ্গে দেয়ার সাহস আরো অনেক আগেই যোগানোর কথা। কেন সে আরো আগে পালায়নি। সবকিছু যখন ঠিকঠাক হয়ে গেল তখন পরিবারের মুখ কোথায় থাকল এই মেয়ের জন্য। যাই হোক প্রিন্স আসলেই বেঁচে গিয়েছে।
পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক চাপে হয়তো সেভাবে কিছুই করতে পারে নি। ধন্যবাদ আপু আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
আজকে আপনার বলা ঘটনাটা আমরা অনেকেই হয়তো বিভিন্ন সিনেমাতে দেখেছি, কিন্তু বাস্তবে যদি এইরকম ঘটনা কারো সাথে ঘটে তবে তার তাৎপর্য সম্পূর্ণরূপে আলাদা হয়। যেখানে সে আপনার অত্যন্ত প্রিয় বন্ধু ,স্বভাবতই ঘটনাটি আপনাকেও হয়তো নাড়া দিয়েছে। তবে এ কথা সত্যি যে আপনার বন্ধু এবং তার পরিবারের মান সম্মান সবকিছুই রক্ষা পেয়েছে। এই ঘটনাটাই যদি বিবাহের পর ঘটতো, তাহলে তা এক অন্যরকম মোড় নিতো।
আসলে প্রত্যেকের উচিত বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রী সহ প্রত্যেকটি পরিবারের লোকজনের এক পক্ষ আরেক পক্ষকে সাহায্য করা, তা না হলে এখনকার দিনেই বিবাহ পরবর্তী জীবনে কেউই সুখে থাকবে না।