হলুদের রাজ্যে কিছু সময়
এ শহরের কমবেশি বহু রিক্সাওয়ালার সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আমার আসলে সাধারণ মানুষগুলোর কাছাকাছি থাকতে ভীষণ ভালো লাগে । সাধারণ মানুষ গুলোর জন্য অদ্ভুত একটা পিছুটান কাজ করে। কারণ তারা অল্পে তুষ্ট এবং তাদের মাঝে আকাশচুম্বী কোন চাহিদা নেই। এই একটা ব্যাপারটাই হয়তো তাদের কাছে আমাকে নিয়ে যেতে বারবার সহযোগিতা করে ।
এদিকে এখনো শীতের প্রকোপ কমে নি। হয়তো আরো কিছুটা সময় লাগবে। তবে কতদিন সময় লাগবে, এটা সঠিক করে বলা বেশ কষ্টসাধ্য। তবে এবার যে বেশ ভালই ঠান্ডা যাচ্ছে তা এখনো সবাই বুঝতে পারছে। তৌফিক এসেছিল সেদিন আমার বাসায়। হয়তো সেই সুবাদেই হালকা এদিক-সেদিক খানিকটা ঘুরে বেড়ানো হয়েছিল।
অনেকটা দিন হলো তেমন বাহিরে যাওয়া হয় না । আমার বাহির বলতে বাসার আশেপাশেই হয়তো মাঝে মাঝে টুকটাক হাঁটাহাঁটি। দূরে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে । তবে হুটহাট যদি সুযোগ এসেই যায় তাহলে সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে বড্ড নারাজ আমি।
তৌফিকটাও আজকাল বড্ড ব্যস্ত হয়ে গিয়েছে। ও আসলে আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু। তবে ও খুব দ্রুত সময়ে ওর বাবার ব্যবসায় হাল ধরেছে, যার কারণেই ব্যস্ততা ওর বেড়ে গিয়েছে। তাই হয়তো চাইলেও আর আগের মতো করে দেখা করা, কারো পক্ষেই সম্ভব হয় না। যেহেতু দীর্ঘদিন পরে আমাদের দেখা, তাই হয়তো সময়টাকে কাজে লাগানোর চেষ্টায় আমাদের কোন কমতি ছিল না ।
বাসা থেকে বের হওয়ার আগেই, আহমেদ ভাইকে ফোন দিয়ে রেখেছিলাম। আমি গল্পের মানুষ,গল্প করতে যেমন পছন্দ করি, ঠিক তেমন মানুষের কথা শুনতেও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আহমেদ ভাইকে দেখেই বুঝতে পেরেছি, ঠান্ডার পরিমাণটা এখনো কমে নি। বাহিরে আসলেই বেশ ঠান্ডা, যদিও বাসায় ভিতরে তেমন একটা বোঝার কোন উপায় নেই বললেই চলে।
যাইহোক, কথা না বাড়িয়েই রিক্সায় উঠে গেলাম। আহমেদ ভাইকে শুধু বললাম, শহর থেকে কিছুটা অদূরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করো। মাঝে কোন একটা টংয়ের চায়ের দোকান দেখলে খানিকটা বিরতি দিও। সবাই মিলে চা খাব আর মন খুলে গল্প করবো। আহমেদ ভাইয়ের বয়স হয়ে গিয়েছে, তবে তারপরেও ভদ্রলোক বেশ পরিশ্রমী।
অতঃপর খোলা রিক্সায় আমি, তৌফিক আর সঙ্গে আহমেদ ভাই। বেশ ভালই গল্প হচ্ছিলো, কারো যেন কোন তাড়াহুড়ো নেই। মনে হচ্ছিল সেদিনের সেই সময়টা ছিল শুধুই আমাদের।
আবহাওয়া দেখে বোঝার কোন উপায় নেই যে, এখন পড়ন্ত বিকেল। মনে হচ্ছে যে, কেবলমাত্র সকাল হয়েছে। এমন আবহাওয়াতেও গ্রামীণ পরিবেশে চতুর্দিকে হঠাৎ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্য মুহূর্তেই আমার নজর কেড়েছিল।
বুঝলে আহমেদ ভাই, এবাবের এই শীতে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্যটাই ঠিক সেভাবে দেখা হয়নি আর তাছাড়া এই যাত্রায় তৌফিক কে ধন্যবাদ দিতেই হয়। হয়তো ও আজ বাসায় না আসলে, এই ঘোরাফেরাটা হতোই না আর এই সৌন্দর্য্যটাও হয়তো অদেখাই থেকে যেত। দয়াকরে রিক্সাটা থামিয়ে দাও, আমি একটু বিচরণ করে আসি।
দ্রুত নেমে পড়লাম, আমি আর তৌফিক। এগিয়ে গেলাম সরিষা ক্ষেতের দিকে। অনেকটা শিশুসুলভ ভাব ভিতরে চলে এসেছে। যেদিকেই তাকাই শুধু হলুদ আর হলুদ। নিজের মতো ছুঁয়ে দেখছিলাম, কত সতেজ, ইচ্ছে করেই দাঁড়িয়ে গেলাম আর নিজেকে মিশিয়ে ফেলার চেষ্টা করলাম হলুদের মাঝে। সত্যিই এই সৌন্দর্য্য আসলে কাছ থেকে না দেখলে, মুখে বলে বোঝানো বেশ কঠিন।
শীত এখনো চলছে আর এমন সৌন্দর্য্য যদি হাতছাড়া হয়ে যায়, তাহলে তো মনে হয় নিজের কাছে নিজেই দোষী হয়ে যাব। ভাগ্য বেশ সহায় থাকায়, তাই হয়তো দোষী হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছি। চেষ্টা করেছি, মুঠোফোনে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য্যটাকে বন্দি করে রাখার জন্য।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আহা ভাইয়া হলুদের রাজ্যের ছবি দেখে আমার নিজেরও যেতে ইচ্ছে করছে,ভাইয়াকে হিরো হিরো লাগছে একটা হিরোইন থাকলেই ব্যাপারটা বেশ জমে যেত, হা হা।আপনি বরাবরই প্রান খুলে গল্প জমিয়ে দিতে পারেন সবার সাথে।আসলেই এবার শীতটা একটু বেশিই পরেছে।যাক ছোট ভাইয়ের বন্ধু আর আহমেদ ভাইকে নিয়ে ভালোই একটা সময় কাটিয়েছেন। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
আসলে ঐদিন হুট করেই ঐ দিকটাতে যাওয়া হয়েছিল, তাই আপনার ভাবিকে নিয়ে যাওয়া হয় নি আপু। তবে ইচ্ছে আছে পরবর্তী সময়ে কখনও গেলে অবশ্যই পুরো পরিবার নিয়ে যাবো।
জি ভাইয়া একদম ঠিক বলেছেন সাধারণ মানুষগুলোর চাহিদা অনেক কম।তারা অল্পতেই তুষ্ট থাকেন।আপনার ছোট ভাইয়ের বন্ধুর তৌফিক এবং আপনি,সরিষার ক্ষেতে বেশ ভালো একটি সময় কাটিয়েছেন।আর ফটোগ্রাফি গুলো কিন্তু দারুন ছিল।সরিষার ক্ষেতে ফটোগ্রাফি দারুন হয় এমনিতেই।শীতের সময় একবার সরিষা ক্ষেতে না গেলে আসলেই নিজের কাছে নিজে একপ্রকার দোষী হয়ে যাওয়া।ধন্যবাদ সুন্দর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য ভাইয়া।
আসলে সত্যি বলতে কি আপু, এই জন্যই সাধারণ মানুষদের ভীষণ ভালো লাগে আর বারবার ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করি তাদের কাছে। ধন্যবাদ আপনার সাবলীল মন্তব্যের জন্য।
শীত কালে এই হলুদের রাজ্যে অন্য রকম একটা আনন্দ। আসলে ভাইয়া এই হলুদ ফুলের রাজ্যে ভাবিকে নিয়ে গেলে হয়তো আরো অনেক ভালো লাগতো হা হা হা। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার শীত হয়তো একটু বেশি। আপনি তৌফিক আহমেদ ভাই মিলে বেশ ভালোই গল্প করছিলেন। আপনার পোস্ট পড়ে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
এটা একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া স্বল্প আয়ের মানুষগুলো অল্প কিছু পেলে তারা সন্তুষ্ট থাকে। আপনার ছোট ভাইয়ের বন্ধু এবং আপনি খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন। সরিষা ক্ষেতের ফটোগ্রাফি গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। এরকম সরিষা ক্ষেতের কাছে গিয়ে যদি আমিও সময় কাটাতে পারতাম। আমার কাছেও খুবই ভালো লাগতো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। হলুদের রাজ্যে কিছু সময় উপভোগ করার মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আসলেই শীতের প্রকোপ টা এখনো কমেনি ৷ বাইরে বের হলেই বোঝা যায় শীতের প্রকোপ কতটা ৷ তবে এটা ঠিক যে সাধারণ মানুষগুলো চাহিদা সব সময় সাধারণই , তাদের ওতো চাওয়া পাওয়া থাকেনা ৷ যাই হোক তৌফিক ভাইরে সাথে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো বেশ চমৎকার ছিলো বোঝা যাচ্ছে ৷ আসলে এমন পরিবেশ ঘোরাঘুরি চায়ের আড্ডা বেশ ভালোই জমে ৷
আপনি যেমন মানুষকে নিয়ে ভাবেন তেমনি প্রকৃতিরও প্রেমিক। শহর থেকে দূরে কোথাও গিয়ে বেশ ভাল করেছেন তা না হলে এত সুন্দর সড়িষা খেতের মাঝে বিচরণ হত না। আহমেদ ভাইকে দেখতে ত হিরোর মত লাগছে অনেকটা হলিউডের বেন আ ফ্লেক এর মত। সুন্দর কিছু মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন তৌফিক ভাইয়ের সাথে। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে আহমেদ ভাইয়ের সহযোগিতাতেই জায়গাটা দেখার সুযোগ হয়েছিল। নতুবা এবার এই সৌন্দর্য্য অদেখা থেকে যেত ভাই।
প্রথমেই বলবো আপনাকে সত্যি অনেক প্রান বন্দর লাগছে ৷ আর গ্রামের দিকে এখনো শীত টা বেশ ভালোই লাগে ৷ আপনি অবসর সময়ে আপনার ভাইয়ের বন্ধু তৌসিফের সাথে বেশ ভালোই একটা সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ সেই ফুল ঝরা সরিষার ফুল ৷অনেক ভালো লাগলো ভাই ধন্যবাদ ৷