নতুন অতিথির আগমন
শুক্রবারের দিন খুব একটা সকাল বেলা দ্রুত ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না। ছুটির দিনে মনে হয় বিছানার সঙ্গে সম্পর্কটা আরো নিবিড় হয়ে যায়। এটা যে শুধু আমার একার ক্ষেত্রে হয়, আমি মনেকরি তেমনটা কিন্তু না। মোটামুটি প্রত্যেকটা কর্মজীবী মানুষের ক্ষেত্রেই কমবেশি এমনটা হয়ে থাকে।
তখনো বিছানাতে শুয়েই ছিলাম এবং অনেকটা গভীর ঘুমের মাঝেই। আজ অবশ্য ছোট ফোনটা বেজে ওঠেনি। বড় ফোনটাতেই মেসেঞ্জারে কল এসেছে। গতরাতে নেট বন্ধ করে ঘুমাতে ভুলে গিয়েছিলাম। যার কারণে মেসেঞ্জারে কল বাজছে অনেকটা উচ্চস্বরে।
কোন রকমে ফোন ধরতেই, ফোনের অপর প্রান্ত থেকে আমার বাল্যবন্ধু শহীদ বলছে, শুভ কই তুই। দ্রুত হসপিটালে চলে আয়। তোর ভাতিজি হয়েছে। মানে শহীদ নিজেই চাচু হয়ে গিয়েছে আর সাইফুল ভাই হয়েছে বাবা। তাছাড়া সাইফুল ভাই আমাদের সকলের কাছে অনেকটাই প্রিয়। এজন্যই সকলের কাছে খুশির বার্তাটা শহীদ পাঠিয়ে দিচ্ছে ।
এই আনন্দের অনুভূতি আসলে প্রকাশ করা যায় না। কারণ এইরকম অনুভূতির শিকার আমি নিজেও হয়েছি, যেটা আসলেই বলে বোঝানো মুশকিল। এই আনন্দ এতটাই পরিমাণ গভীর ও উত্তেজনাপূর্ণ থাকে যে, চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে । ছুটির দিনে সকালবেলা ফোনটা ধরেই, এই খবরটা শুনে যেন হালকা প্রশান্তির জোয়ার মনে ঝাপটা দিয়ে গেল ।
যাইহোক মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ফেললাম দ্রুত ঘুম থেকে ওঠার জন্য এবং উঠেই শহীদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী হসপিটালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি সেরে ফেললাম। কারণ শহীদ চাচু হয়েছে আর আমিও চাচু হয়েছি আর আমাদের সকলের প্রিয় সাইফুল ভাই হয়েছে বাবা। ব্যাপারটা আসলেই গর্বের ।
সাইফুল ভাইকে নিয়ে দুটো কথা বলি, যেহেতু শহীদ আমার খুব কাছের বন্ধু আর তার বড় ভাই হচ্ছে সাইফুল । তাছাড়া সেই ছোটবেলা থেকেই দেখছি, সাইফুল ভাই আমাদেরকে সেই রকম স্নেহ করত, যেমন সে তার ছোট ভাই শহীদ কে স্নেহ করতো তেমনটা ঠিক আমাদেরকেও। যদিও বৈবাহিক সম্পর্কে সে খুবই দেরিতে আবদ্ধ হয়েছিল আর সেই যাত্রায় আমি অনেক দ্রুত বিয়ে করে ফেলেছিলাম। যার কারণে তার আগে আমি বাবা হয়ে গিয়েছি আর সে বাবা হওয়ার স্বাদ গ্রহণ করলো, দীর্ঘ সময় পড়ে ।
তাদের বংশে দীর্ঘসময় পরে নতুন অতিথির আগমন। পুরো বাড়িটাতে যেন একটা ছোট মানুষের আগমন, অনেকটাই খুশির জোয়ার বয়ে নিয়ে এসেছে। যাইহোক দ্রুত নিজেকে তৈরি করে ফেললাম, হসপিটালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কারণ নতুন মানুষকে তো দেখতে হবে ।
তবে রিক্সায় উঠে যখন হসপিটালের উদ্দেশ্যে যাবো, মাঝপথেই সাইফুল ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। নতুন মানুষ দেখার আগেই, নতুন মানুষের জন্য মিষ্টি কিনে নিয়ে সর্বত্র সাইফুল ভাই আর আমি তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যেয়ে যেয়ে, মিষ্টি দেওয়ার ব্যবস্থা করলাম ।
ভাই বলল সমস্যা নেই, হসপিটালে শহীদ ও তোমার আন্টি আছে এবং তোমার ভাবি ও বাবু বেশ সুস্থ আছে। এ যাত্রায় নতুন মানুষের মুখখানা আমার তখনো দেখতে কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেল। তবে নতুন মানুষকে কেন্দ্র করে যে সকলের কাছে মিষ্টি বিতরণ করছি, এটাও কিন্তু একটা আনন্দের ব্যাপার ।
মিষ্টি বিতরণ যখন শেষ হলো, তখন যেন আমার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে এলো। এবার সাইফুল ভাইকে বলে, আমি দ্রুত ভাতিজি কে দেখতে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলাম। দুপুরবেলার ঐদিকে মোটামুটি নতুন মানুষকে দেখার জন্য হসপিটালে চলে গেলাম এবং বেশ ভালো একটা সময় কাটালাম।
যদিও কিছু নিয়ম কানুনের কারণে ছবিগুলো উঠিয়ে রাখতে পারিনি। তবে নতুন মানুষ দেখতে হয়েছে একদম শহীদের আম্মুর মতো। বেশ ভালো লাগলো নতুন মানুষকে দেখে। ভাতিজি আমাকে দেখে যেন, চোখ খুলে মিটমিট করে তাকাচ্ছিল। ভাতিজির দীর্ঘায়ু কামনা করছি, সে বেড়ে উঠুক এই ধরণীতে, মানুষের মতো মানুষ হয়ে।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাইয়া ছুটির দিনে ঘুম থেকে নাই উঠতে মেসেঞ্জার কল এর মাধ্যমে খুশির সংবাদ পেয়ে আপনার অনেক ভালো লেগেছিল টা পোস্টটি পড়েই বুঝতে পারলাম।আর এটা তো ভালো লাগার একটি বিষয়ও বটে।চাচা হয়েছেন আপনি।আপনার বন্ধুর বড় ভাই মানে আপনার ও ভাই।মিষ্টি বিতরন শেষ করেই ভাতিজিকে দেখতে চলে গিয়েছিলেন।নতুন অতিথি দেখতে একদম আপনার আন্টির মতো হয়েছে।ধন্যবাদ সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য ভাইয়া।
প্রথমে নতুন অতিথির জন্য রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আসলে নতুন মানুষের আগমন বলে কথা। তবে শুক্রবার হচ্ছে ছুটির দিন এই দিন আসলে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না।তবে চাচ্চু হওয়ার অনুভূতি তো আর ছুটি মানে না। যাইহোক আপনি চাচ্চু হয়েছেন জেনে অনেক ভালো লাগল। ধন্যবাদ আপনাকে।
নতুন অতিথির আগমন মানে তো পরিবারের একটা খুশির সংবাদ। আর আমার ছেলে হওয়ার পর যে সময় শুনেছি সেসময় আনন্দের ভাষা কিভাবে প্রকাশ করব সেটাই ভুলে গিয়েছি। কারণ অনেক প্রত্যাশার পর যখন কিছু পাওয়া হয় তখন এর আনন্দ বলে বোঝানো যায় না। তবে আপনি যে আপনার সাইফুল ভাইয়ের মেয়ের কথা শুনে খুশি হয়েছেন এবং তাকে দেখতে গিয়ে তার আগমনের মিষ্টি বিতরণ করে তারপর দেখেছেন সেটাতেই অনেক বেশি আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে।
একদম ঠিক বলেছেন ভাই কিছু আনন্দের অনুভূতি মুখে প্রকাশ করা বেশ মুশকিল।
আপনি ঠিক বলছেন ভাইয়া আসলে ছুটির দিনে ঘুম থেকে একদম উঠতে ইচ্ছে করে না।আমরা চাকরি না করলেও বাচ্চাদের স্কুল হাজবেন্ডের অফিস এগুলো নিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আমাদেরও ছুটির দিনে একটু বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করে।তবে সকাল সকাল এমন সুন্দর একটি খুশির সংবাদ শুনে কি ঘুমিয়ে থাকা যায় কখনো সম্ভব না।প্রথম মা বাবা হওয়ার অনুভূতিটা অন্যরকমের।তবে নতুন বেবির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা ও দোয়া রইল যাতে সুস্থ থাকে।
এই জন্যই দ্রুত সেদিন ঘুম থেকে উঠে হসপিটালে গিয়ে ছিলাম এবং সময়টা বেশ ভালোই কেটেছিল।
আসলেই ভাই পরিবারে যখন নতুন কোন সদস্য আছে যাকে দিয়ে নতুন প্রজন্ম শুরু হয় সে একটু আলাদা হয়ে থাকে। তার প্রতি পরিবারের লোকদেরও অনূভুতি অন্যরকম হয়ে থাকে। সাইফুল ভাইয়ের নবজাতক এবং তার সহধর্মিনীর জন্য শুভকামনা থাকল।
আপনার বন্ধুর বড় ভাইয়ের বাবু হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে বাসায় নতুন অতিথি এলে আনন্দটা অনেক বেড়ে যায়। তাইতো বন্ধু-বান্ধবদের ফোন করে খুশির খবর দিতে ভালো লাগে। যেমনটি আপনার ছোটবেলার বন্ধু করেছিল। সত্যি কথা বলতে কিছু কিছু অনুভূতি আছে যেগুলো সবার সাথে ভাগ করে নিতে ভালো লাগে। নতুন অতিথির জীবন যেন সুন্দর হয় এবং একজন ভালো মনের মানুষ হয় এই প্রত্যাশাই করি।
এইটা সত্য যে, তাদের বাড়িতে নতুন অতিথির আগমনে বেশ আনন্দঘন মুহূর্ত তৈরি হয়েছে আপু।
ছুটির দিনে আর ঘুমাতে পারি কই। সাহেবের অফিস যাওয়ার দৌড়ে আমাকেও ভোরেই ঘুম থেকে উঠতে হয়। তবে আপনার কাছে নতুন অতিথি আসার গল্প শুনে আমারও বেশ ভালই লাগছে। এরকম নতুন অতিথির কথা শুনলে যেন হাজারও সকাল না ঘুমিয়ে কাটানো যায়। আমার আনন্দ দেখে তো আমারও বেশ আনন্দ হচ্ছে। খুব সুন্দর একটি গল্প পড়লাম আজ ভাইয়া।
ভাইয়া আপনার ভাতিজির জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা ও দোয়া। দোয়া করি, সে যেন মানুষের মতো মানুষ হয় এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করি।