নতুন চিন্তাভাবনা

in আমার বাংলা ব্লগlast year

20230731_162558-01.jpeg

আমার নিজের বলতে কিছু নেই, এখনো তেমন কিছুই করতে পারিনি, কবে হবে তাও জানিনা। তবে অনেকটা আশায় বুক বেঁধে থাকার মত মানুষ আমি। লেখার ছবি গুলো দেখে হয়তো ভাবতেই পারেন, নিজের জমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। তবে এমন চিন্তা যদি আপনার মাথায় আসে, তাহলে শুরুতেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

গ্রামের একদম শেষ প্রান্তের দিকে আমার শ্বশুরের শতক পাঁচেক জমি অহেতুক পরে আছে। কখনোই সেই জমিতে ঠিক সেভাবে চাষাবাদ করা হয় না। তার অবশ্য মূল কারণ হচ্ছে, জমিটা বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে আর পরিমাণে যেহেতু খুবই স্বল্প, তাই সেভাবে কখনো কেউ চাষাবাদ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

আপনারা হয়তো অনেকেই অবগত আছেন, আমি আর আমার শ্বশুর রানীগঞ্জের হাট থেকে কিছুদিন আগে গরু কিনে নিয়ে এসেছিলাম মূলত ছোট্ট খামার দেওয়ার উদ্দেশ্যে। আমাদের অবশ্য ছোট্ট খামারটা বেশ ভালই চলছে। রোজ ভালোই পয়সা খরচা হয় মূলত গরুর খাবার কেনার জন্য। বিশেষ করে ঘাস, ভুষি, খৈল ও অন্যান্য গরুর খাবার ক্রয় করতে।

কিছুদিন থেকে ইউটিউবে কৃষি চাষাবাদ সম্পৃক্ত ভিডিও দেখছিলাম, তাতেই লক্ষ্য করেছিলাম অনেকেই গৃহপালিত গবাদি পশুর জন্য ঘাসের যোগানের ব্যবস্থা মূলত নিজেদের জমিতে ঘাস চাষ করার মাধ্যমেই করে থাকে। ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ চমকপ্রদ লেগেছে। তাছাড়াও মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই ঘাসগুলো বেশ লম্বা হয় এবং গোড়া থেকে কাটলে পুনরায় আবার বীজ ফেলানোর খুব একটা দরকার হয় না। ঐ শিকড় থেকেই আবারো নতুন করে জন্মাতে থাকে।

নেপিয়ার ঘাসের গুনাগুন অনেকটাই বেশি যার কারণে যাদের গবাদি পশু আছে তারা এখন অনেকটাই এই ঘাস চাষাবাদ করে থাকে। দীর্ঘদিন হলো গ্রাম থেকে চলে এসেছি, এখন যে হুট করে যাব সেই সময়টাও করে উঠতে পারছি না। তারপরও ব্যাপারটা যেহেতু একটু আমি গুরুত্ব সহকারে ভেবেছি, তাই সেই পরিকল্পনা থেকেই হঠাৎ গ্রামের উদ্দেশ্য আজ সকালে রওনা দিয়েছিলাম।

20230814_172949-01.jpeg

20230814_171856-01.jpeg

20230814_173832-01.jpeg

20230814_173013-01.jpeg

20230814_173005-01.jpeg

20230729_183507-01.jpeg

20230729_182414-01.jpeg

যদি আমরা খামারের জন্য ঘাসের যোগান নিজেরাই করতে পারি তাহলে আমাদের বেশ ভালই পয়সা বেঁচে যাবে প্রত্যেক মাসে। অবশেষে দুপুরের ঠিক পরেই গ্রামের বাড়িতে গিয়ে হাজির, আমার শ্বশুরের সঙ্গে ব্যাপারটা নিয়ে বেশ ভালোভাবেই আলোচনা করলাম, সেও বোঝার চেষ্টা করেছে তবে সেইরকম অনাবাদি জমি তার নজরে পড়ছিল না বললেই চলে।

তবে শেষমেষ আমাকে বলল অল্প কিছু জমি আছে, অপরিত্যক্ত অবস্থায় সেটা যদি কাজে লাগানো যায়, তাহলে তার এই ব্যাপারে কোন দ্বিমত থাকবে না। যেহেতু মোটামুটি একটা সুপরামর্শ পেয়েছি, তাই আমিও মূলত আগ্রহ প্রকাশ করলাম, জমিটা দেখতে যাওয়ার জন্য।

ঘাসের বীজের দাম খুব আহামরি না , দুই-তিনটা প্যাকেট কিনলেই মোটামুটি পাঁচ শতক জমির জন্য অনায়াসেই হয়ে যাবে। তাছাড়া চাষাবাদ পদ্ধতিও বেশ সহজ আছে। আসলে জমিটা যেহেতু গ্রামের একদম শেষ প্রান্তে তাই যেতে কিছুটা অসুবিধা হয়েছিল, মানে হেঁটে হেঁটে অন্যের জমির আইল দিয়ে যেতে হয়েছিল। যদিও প্রথমের দিকে আমি অনেক কিছুই চিন্তা ভাবনা করেছিলাম, তবে বাস্তবে জমি দেখার পরে মাথার ভেতর থেকে অনেক কিছুই ছুটে গিয়েছিল।

আসলে গ্রামের লোকজন এমনিতেই কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। তারা কোনভাবেই তাদের জমি অনাবাদি রাখতে চায় না। আসলে এখানে তারা এই অল্পটুকু জমি কেন অনাবাদি রেখেছে, তা আমার জমি দেখার পরেই বোঝা হয়েছে। মূলত যাতায়াত ব্যবস্থার অবনতির কারণেই। তারপরেও আমি যখন আমার শ্বশুরকে এই ঘাস সম্পর্কে মোটামুটি কিছু কথা বলার চেষ্টা করলাম এবং ভিডিওগুলো দেখালাম, তখন সে কিছুটা হলেও আগ্রহ প্রকাশ করেছে ঘাস চাষ করতে।

এ যাত্রায় আমরা সফল হতে পারব কিনা জানিনা, তবে চেষ্টা করতে তো অসুবিধা নেই। তাছাড়া কত রকম অভিজ্ঞতাই তো প্রতিনিয়ত হচ্ছে, নতুন যদি অভিজ্ঞতা হয়েই যায়, তাহলে তা হতে তো সমস্যা নেই। আসলে ইউটিউবে ভিডিও দেখে কোন কিছু চিন্তা করে, বাস্তবে সেটা রূপান্তর করা বেশ কষ্টসাধ্য।

কই ভেবেছিলাম ছুটির দিনে একটু বাড়িতে বসে পরিবার নিয়ে সময় কাটাবো, তা তো আর হলো না । বরং দুপুর বেলা রোদের ভিতরে কাদামাখা জমির আইল দিয়ে হেঁটে হেঁটে শ্বশুর-জামাই দুজন মিলে বেশ ভালোভাবে জমি পরিদর্শন করে আসলাম। এখন শুধু চেষ্টা করে দেখার পালা,দেখি কি অপেক্ষা করছে সামনে।

Banner-16.png

ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht


20211003_112202.gif


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

গরু পালন করে আমাদের দেশে অনেকেই সাবলম্বী হয়েছে। তবে গরু পালন করলেও বেশ খরচাপাতি সাথে খাটনি তো আছেই। এই যে গরুর ঘাস, খড়, খৈল খাওয়ানো এসবের জন্য প্রতিদিনই টাকার দরকার। তবে ভালো লাগার বিষয় হলো ইউটিউব এর কল্যাণে গরুর জন্য ঘাসের পদ্ধতিটা জানতে পেরেছেন। আশা করি ঘাস চাষের প্রজেক্টটা ভালোই হবে। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছে।

 last year 

দেখি ভাই কি অপেক্ষা করছে সামনে, তবে চেষ্টা করতে তো অসুবিধা নেই। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা।

 last year 

ভাইয়া আপনি গরুর খামার করছেন জেনে ভীষণ খুশি হলাম। নেপিয়ার ঘাস গরুরা খেতে ভীষণ পছন্দ করে। পরে থাকা জমিতে নেপিয়ার ঘাস লাগিয়েছেন খুব ভালো করেছেন। নেপিয়ার ঘাস একবার লাগালে আর লাগাতে হয় না। উপরের অংশ কেটে গরুকে খাওয়ালে আবার নতুন করে ঘাস জন্মায়। শ্বশুর-জামাই দুজন মিলে বেশ ভালোভাবে জমি পরিদর্শন করে করলেন ।দোয়া করি আপনার কাজ সফল হোক।

 last year 

এক্ষেত্রে অবশ্য আমি শুধুমাত্র বিনিয়োগ করেছি আর সম্পূর্ণ কাজটাই করে যাচ্ছে আমার শ্বশুর ।

 last year 

ভাইয়া বর্তমানে বাজারে জিনিসপত্রের যেমন দাম সবকিছু কিনতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। তবে আপনি খামার করেছেন এবং গরুর ঘাস চাষ করার পরিকল্পনা করেছেন আপনার এই পরিকল্পনা যেন পরিপূর্ণভাবে হয় সে প্রত্যাশা করি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।

 last year 

ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর সাবলীল মন্তব্যের জন্য।

 last year 

ভাই আপনি চমৎকার একটি প্ল্যান করেছেন। চেষ্টা করতে দোষ নেই। প্ল্যান সাকসেস হলে তো অনেক টাকা বেঁচে যাবে প্রতি মাসে। এতে করে গরুর ফার্মে বেশ লাভ হবে। ক্ষেতের আইল দিয়ে হাঁটতে খুবই বিরক্ত লাগে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে শ্বশুরকে সুপরামর্শ দিলেন এবং নিজেও বেশ পরিশ্রম করলেন। আপনার শ্বশুর মনে মনে বেশ খুশি হয়েছে মনে হচ্ছে। প্ল্যান সাকসেস হলে তো আরো বেশি খুশি হবে। যাইহোক পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো ধারণা পেলাম। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 last year 

এটা সত্য, যদি পরিকল্পনা বাস্তবে রূপান্তরিত হয়, তাহলে আসলেই খুশির পরিমাণটা অনেকটাই বেড়ে যায় ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65725.56
ETH 2673.18
USDT 1.00
SBD 2.90