মধ্যরাতের ঘটনা
অনিদ্রার সমস্যায় প্রায় অনেকটা দিন ধরেই ভুগছি, বলতে গেলে প্রায় রাতেই খুব একটা তেমন ঘুম হয় না। যদিও বিগত সময়ে ডাক্তার দেখিয়েছিলাম, বলেছিল দুশ্চিন্তা কম করতে এবং কিছু ঘুমের ওষুধ দিয়েছিল, সেগুলোই ঠিকঠাক মতো খেতে।
মোটামুটি গতরাতে নিজের কিছু কাজ শেষ করে যখন ঘুমোতে যাব, তখন হঠাৎই বুঝতে পারলাম বাসার সামনের গলির ভিতরে ট্রাক ঢুকেছে। এই মাঝরাতে ট্রাক ঢোকার ব্যাপারটা ভেবে, একটু কেমন যেন লাগছিল। কৌতূহলবশত, হালকা করে ঘরের জানালাটা খুলে বাহিরের দিকে যখন দেখার চেষ্টা করলাম, ল্যাম্পপোস্টের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম, কেউ হয়তো এই শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
এটা যদিও নতুন না, কারণ এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে । বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের জন্য, এই শহরে টিকে থাকা যেন অনেকটাই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে, এই শহরে অনেকেই বউ-বাচ্চা সহ পুরো পরিবার নিয়ে থাকতে আসে, একেকজনের চিন্তাভাবনাও যেন একেক রকম। তবে পরিস্থিতির কাছে মাঝে মাঝে, কিছু চিন্তাভাবনা হেরে যায় । একপ্রকার পরিস্থিতি বাধ্য করে, এ শহর থেকে ফিরে যেতে।
আনিস সাহেব (ছদ্মনাম) যে পয়সার বেতনে এই শহরে চাকরি করে, তা দিয়ে সে আর কোনভাবেই এই শহরে পুরো পরিবার নিয়ে থাকার মতো অবস্থাতে নেই। একদিকে বাসা ভাড়া, সংসার খরচ, বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ, আবার নিজের কিছু হাত খরচ, সব মিলিয়ে মাস শেষে খরচের তালিকাটা বড্ড লম্বা হয়ে যাচ্ছে।
হয়তো তার লম্বা খরচটা কমিয়ে নিয়ে আসার জন্যই, এমন সিদ্ধান্তটা সে হুট করে নিয়ে ফেলেছে। আনিস সাহেব একা যদি মেসে থাকে হয়তো খাওয়ার একটু কষ্ট হবে, তবে তার দিব্যি দিন কেটে যাবে। মাস শেষে এক-দুই দিনের জন্য গ্রামের বাড়িতে যাবে, বউ-বাচ্চা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে আসবে, ঠিক এরকমই চিন্তাভাবনা তার।
এ ধরনের চিন্তাভাবনাকে এক প্রকার সাধুবাদ জানানোই যায়। সামর্থ্যে যদি কুলিয়ে না উঠতে পারে, সেখানে আসলে বিলাসিতা বড্ড বেমানান। এ শহরটা বড্ড অদ্ভুত, অনেকটা আত্মকেন্দ্রিক চিন্তা সবার মাঝে। কেউ কারো খোঁজ রাখে না বললেই চলে। কে আসছে, কে যাচ্ছে, এসব নিয়ে কারো কোন মাথাব্যাথা নেই।
ভোর হওয়ার আগেই ট্রাকটা জিনিসপত্র দিয়ে ভর্তি হয়ে গেল, ট্রাকের ভিতরে আনিস সাহেব উঠে পড়ল,এবার শুধু যাওয়ার পালা। যেহেতু মাঝরাতে ব্যাপারটা স্বচক্ষে দেখেছিলাম, তাই আনিস সাহেবের মনের অবস্থা কিছুটা হলেও অনুমান করতে পেরেছিলাম, হয়তো অনেকটা তিক্ত অনুভূতি নিয়েই, তাকে এ শহরটা ছাড়তে হলো।
ডিসকর্ড লিংক
https://discord.gg/VtARrTn6ht
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
https://twitter.com/sharifShuvo11/status/1692842984403030432?t=QsaAAmkmRdyZuwPsR3QlAQ&s=19
সত্যি এই সময়ে টিকে থাকা খুব কষ্টসাধ্য। মধ্যবিত্তদের জন্য খুব খারাপ যাচ্ছে সময়গুলো। অনেক স্বপ্ন নিয়ে শহরে এলেও,আজ পরিবার নিয়ে অনেকটা ভেঙে পরেই চলে যেতে হচ্ছে শহর থেকে ।এই শহরে কেউ কারো খবর রাখেনা।তাইতো তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়েই আনিস সাহেবকে শহর ছেড়ে চলে যেতে হলো।
আসলেই আপু, আনিস সাহেব বড্ড কষ্ট নিয়ে, এ শহর ছেড়েছে।
একদম সঠিক কথা তুলে ধরেছেন ভাইয়া,দিনদিন নিত্যপন্যের দাম এবং সব কিছুই অনেকের নাগালের বাহিরে।বিলাসিতা আজকাল অনেকের কাছে ডুমুরফুল যেখানে ঠিকে থাকার লড়াইয়ে ক্লান্ত অনেকেই।ধন্যবাদ
আপনাকে বাস্তব চলমান চিত্র তুলে ধরার জন্য।
ধন্যবাদ, আমার অনুভূতি বুঝতে পারার জন্য।
এখন যে পরিস্থিতি তাতে করে শহরের জীবনযাপন করা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।হয়তো বা আনিস সাহেব সবদিক থেকে কুলিয়ে উঠতে পারছিলো না তাই বাধ্য হয়েই বাসা ছেড়ে দিতে হয়েছে।মাঝে মাঝে মনে হয় যদি নিজের বাড়িতে থাকতে পারতাম তাহলে হয়তো বেশ ভালো হতো কিন্তু বাচ্চাদের কথা ভেবে ইটপাথরের শহরে হাজার হাজার টাকা খরচ করে থাকতে হয়।অনিদ্রা যার আছে সেই শুধু বোঝে এর কি জ্বালা।ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ ঠিকমতো খান তাহলে হয়তো একটু হলেও উপশম হবে।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।🙏
দুশ্চিন্তা যদি চাইলেই উপশম হতো, তাহলে সবাই চিন্তামুক্ত থাকতো।
সত্যি ভাইয়া বর্তমান দেশের অবস্থা না পালিয়ে উপায় কি। আসলে ভাইয়া শুধু আনিস সাহেব নয় এমন আরো কত মানুষকে যে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যেতে হয়।আসলে মধ্যবিত্তদের জন্য বেঁচে থাকা দুষ্কর। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
কতটা লজ্জায়, কতটা কষ্টে, আনিস সাহেব চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, তা আসলে বলা খুব কষ্টসাধ্য আপু। আসলেই সময়টা ভালো যাচ্ছে না।
অনেক কঠিন একটা সময় বয়ে যাচেছ। এ সময়ে যেন টিকে থাকাটাই বেশ কষ্টের । আর রইল আশেপাশের মানুষ। আরে ভাই এখন তো শহরে বাসায় কাউকে খুন করে রেখে গেলেও পাশের বাসার মানুষ বলতে পারে না। কারন সে তো দরজার ভিতরে থাকে। তার তো সময় নেই। আমরা সবাই ছুটে চলছি এক অজানার উদ্দেশ্যে । কিন্তু কেউ জানিনা কি আছে আগামী তে। সেখানে আনিস সাহেবের মত পয়ঁসা কামানো মানুষের কথা দূর কি বাত।
শহুরে জীবন তো একদম রোবটিক, কে রাখে কার খোঁজ।
ভাইয়া, আপনার মত আমারও একই অবস্থা, মানুষকে টাকা ধার দিয়ে মানসিক টেনশনে আছি, তাই রাতে ঠিকঠাক ভাবে ঘুমও হচ্ছে না। যাইহোক ভাইয়া,আনিস সাহেব কতটা কষ্ট নিয়ে তার প্রিয় শহরটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তা আপনার পোস্ট পড়ে বেশ বুঝতে পারছি। যদিও বা আনিস সাহেব তার পরিবার ছেড়ে মেসে থেকে কর্মজীবন চালানোর চিন্তা ভাবনা করেছেন। তবে এই চিন্তা ভাবনাটা তাকে কতটা কষ্ট দিবে সে হয়তো তা জানে। বর্তমান উর্ধ্বমূল্যের পরিস্থিতিতে আনিস ভাই হাপিয়ে উঠেছেন। তাইতো সে স্ত্রী সন্তানকে দূরে রেখে দিন যাপন করার চিন্তা ভাবনা করেছেন। ভাইয়া আমার তো মনে হয় শুধু আনিস সাহেব নয় আনিস সাহেবের মত আমরা অনেকেই বর্তমানের সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে পারছি না। ভাইয়া, আনিস সাহেবের পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মাঝে পোস্ট উপস্থাপন করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
কিচ্ছু করার নেই ভাই ,পরিস্থিতি অনেকটাই ঘোলাটে হয়ে গিয়েছে। এসব থেকে যে কবে মুক্তি পাবো, কে জানে?