নাটক রিভিউ -- 💕 " সেলিব্রেট " || আমার বাংলা ব্লগ
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,শুভ রাত্রি। কেমন আছেন আপনারা??
"আমার বাংলা ব্লগ" এর ভারতীয় ও বাংলাদেশী ভাই ও বোনেরা,আমি@shimulakter,আমি বাংলাদেশে ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি একজন নিয়মিত ইউজার।প্রতিদিনের মতো আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।আজ আমি নাটক রিভিউ শেয়ার করতে যাচ্ছি। বাংলা নাটক আমার খুব ভালো লাগে।আশাকরি আমার আজকের নাটকের রিভিউ পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমুহঃ
নাটক | সেলিব্রেট |
---|---|
পরিচালক | তন্ময় খান |
অভিনয়ে | ইরফান সাজ্জাদ, নিশাত প্রিয়ম,ডলি জহুর এবং আরো অনেকে |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
প্রচার | ১৪ ই ডিসেম্বর ২০২৩ |
সময় | ৫৭.৪৩ মিনিট |
কাহিনী সারসংক্ষেপঃ
এই নাটকটি খুব বাস্তব সম্মত একটি নাটক।নাটকটি ভীষণ ভালো লেগেছে আমার কাছে।সত্যি কথা বলতে নাটকটিতে বাস্তবতার ছোঁয়া পেয়েছি।নাটকের শুরুতেই দেখা যাবে ডলিজহুর তার রুমে বসে আছে। এ সময় নিশাত তার ছেলে ইরফান সাজ্জাদের বউ ডলি জহুরের রুমে আসে।কারন ছেলের বউ অফিসে যাওয়ার আগে এসে তার একমাত্র মেয়েকে শ্বাশুড়ির কাছে দিয়ে যায়। আর বলে তার মেয়ে যেনো তার সাথে পান না খায়।পান খেয়ে পানের পিক জায়গায় জায়গায় ফেলে ঘর নষ্ট করে ফেলে।তাছাড়া মেয়ের অভ্যাস ও হয়ে যাচ্ছে।এরপর,ডলি জহুর নিশাতের কাছে জানতে চায় ইরফান কোথায়, কারন ইরফানের বাবার আজ মৃত্যুবার্ষিকী।তখন নিশাত তাকে জানায় তারা দুজনই ব্যস্ত থাকে সারাদিন।তার ছেলে জব শেষ করে নিজের বিজনেসে সময় দেয়।তাই সময় হয়না তাদের অন্য কিছু করার।এ কথা শুনে ডলি জহুরের মনটা খারাপ হয়ে যায়।
এরপর দেখা যাবে ডলি জহুর পান খেতে নেয় এসময় নাতনি তার হাত থেকে পান নিয়ে দৌড়ে চলে যায়। এরপর নাতনি তার মায়ের সামনে পরে।নিশাত মেয়ের মুখে পান দেখে আবার রেগে যায়।এরপর আবার ডলি জহুরকে কথা শোনায়।নাতনি ডলি জহুরকে জড়িয়ে ধরে।
এরপর ইরফান বাসায় এলে ইরফানকে নিশাত বলে তার বাবার বাসা এটা।এতোদিন পর তার বাবা বিদেশ থেকে বাসায় আসছে।ইরফান তার মাকে কোথাও রেখে যেনো আসে।ইরফান তখন নিশাতকে জানায় তার আর কোন ভাই-বোন নেই।তবে মা কে কার কাছে রাখবে।সময় হলে মাকে দিয়ে আসবে তাই জানায়।এরপর নিশাত তার বাবা আসার আগ পর্যন্ত সময় ধরে দেয় ইরফানকে।
এরপর ইরফান রাতে তার মায়ের ঘরে এসে মাকে বলে তিনি তার বাবার কবর জিয়ারত করেছে আজ।এতিমদের খাবার দিয়েছে।আর কুরআন খতম করে দোয়া করেছে।একথা শুনে ডলি জহুর খুব খুশি হয়।তখন ইরফান বলল ডলি জহুরকে তুমি শুধু আমার মেয়েকে পান দিও না মা।আমি তোমার সবকিছু করে দেব।এই বলে মেয়েকে নিয়ে যেতে চাইলে মেয়ে দাদিকে রেখে কিছুতেই যেতে চায়না।তারপরেও জোর করে নিয়ে যায় ইরফান।এরপর রাতে সবাই ঘুমালে মেয়ে উঠে দাদির কাছে চলে আসে।
এরপর দেখা যাবে নিশাত তার মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যায়।এরপর ডলি জহুর ঘরে এসে তার পানের বাটা না পেয়ে কাজের মেয়েকে জিজ্ঞেস করে।কাজের মেয়ে জানে না তাই বলে।এরই মাঝে নিশাত ডলি জহুর কে ফোন দেয়।তখন ডলি জহুর জানতে চায় পানের বাটা বউ দেখেছে কিনা। নিশাত তখন জানায় পান খেয়ে রুম নষ্ট হয়ে যায়।তাই সে পানের বাটা ফেলে দিয়েছে।তখন ডলি জহুরের মনটা খারাপ হয়ে যায়। তখন ডলি জহুর বলে যা ভালো মনে করেছ,করো।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
ছেলে ইরফান মায়ের কাছে যখন আসেন তখন মা পান খেতে পারেন না বলে ছেলেকে জানায়।তখন ছেলে জানায় মাকে এসে, মা কে কোন এক জায়গায় নিয়ে যাবেন।যেখানে খুব ভালো থাকবেন মা।ডলি জহুর তখন জানতে চায় ছেলের কাছে পান খেতে পারবেন কিনা?? তখন ইরফান বলল তার মাকে ওখানে তার মা যা চাইবে তাই করতে পারবে।তখন ডলি জহুর ছেলেকে বলে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবে বললেই তো হয়।ডলি জহুর মন খুব খারাপ করে ফেললো।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
নিশাতের বাবা বিদেশ থেকে আসবে তাই ডলি জহুরের রুমটা রঙ করাবেন।তাই ডলি জহুরকে কর্নারের একটি রুমে থাকতে দেন।আর রুমে রঙ হয়ে যাওয়ার পর দেয়ালে সব নতুন ছবি টাঙিয়ে পুরোনো শ্বশুরের ছবিটা নিশিত ফেলে দিতে চেয়েছিল।ডলি জহুর তখন সেই ছবিটা নিজে নিয়ে নেন।এভাবে খুব কষ্ট পান ডলি জহুর। এরপর ইরফানকে বলে নিশাত ডলি জহুর কে ডেকে বলেন কিছু আইটেম রান্না করে দেয়ার জন্য তার বাবার জন্য। ডলি জহুর অনেক আইটেম রান্না করে দিলেন।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
এরপর ইরফান তার মা ডলি জহুর কে বাইরে নিয়ে গিয়ে অনেক কেনাকাটা করেন।ডলি জহুর নাতনি, ছেলের জন্য ও কিছু নেন।এরপর ছেলে মাকে নিয়ে খাবার খেতে যান।মাকে ইরফান বলেন কি খাবে মা জানতে চান।মা ছেলেকে বলেন এতো টাকা নষ্ট করার দরকার নেই বাবা তুমি আমাকে একটা স্মার্ট ফোন কিনে দিও। যাতে করে ডলি জহুর নাতনিকে দেখতে পান।ছেলে বলল,তুমি তোমার নাতনি কে দেখতে পাবে।এখন কিছু খাও।এরপর বাসায় যাওয়ার পথে ছেলে গাড়ি থেকে নেমে মায়ের জন্য পান কিনে এনে মায়ের হাতে দেন।মা খুব খুশী হয়ে যান।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
ছেলে নীচে গাড়ি নিয়ে বসে আছে মায়ের জন্য। মা ডলি জহুর নিশাতের কাছে নাতনির কথা জানতে চায়।নিশাত জানায় তাকে নাতনি তার নানার সাথে বাইরে গেছে।তখন মন খারাপ করে ডলি জহুর ছেলের সাথে খুব ভালো কোন জায়গার উদ্দেশ্য নীচে চলে যায়। গাড়িতে দুজনেরই মন খারাপ হয়ে বসে থাকে।
স্ক্রিনশর্টঃ ইউ টিউব
আমার মতামত
নাটকটি খুব সুন্দর এটা আমি বলবো।কেননা নাটকটির মাঝে বাস্তবতাকে পেয়েছি।ডলি জহুরের ছেলের বউ নিশাত বার বার জানায় এই বাড়িটি তার বাবার।আর তার বাবা বিদেশ থেকে আসাতে শ্বাশুড়ি অর্থাৎ ডলি জহুরকে যেনো বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে তার ছেলে।ছেলে মনের মাঝে রাখে তার মা কে একটি ফ্ল্যাট গিফট করার।কিন্তু মাকে জানায় না।মা ভাবে ছেলে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবে।কিন্তু শেষে ছেলের এমন কাজ দেখে ডলি জহুর খুব খুশী হোন।গাড়ির ড্রাইভারকে নিয়ে ছেলের বউ নিশাত সেই ফ্ল্যাটে চলে আসে মেয়েকে নিয়ে।কিন্তু ইরফান তাকে চলে যেতে বলে।কিন্তু ডলি জহুর ছেলের বউকে আর নাতনিকে কাছে টেনে নেয়।নিশাত তার ভুল বুঝে ক্ষমা চায় শ্বাশুড়ির কাছে।শ্বাশুড়ি ডলি জহুর তখন বলে তাদের সবাইকে নিয়েই সে থাকতে চায়।আসলে আমাদের সকলের মনে রাখতে হবে একা একা থাকার মধ্যে কোন আনন্দ নেই।সবাইকে নিয়ে থাকাতেই আনন্দ।ইরফান সত্যিকারের একজন ছেলের মতো কাজ করেছে।যাতে মায়ের মনটা ভরে গেছে।নাটকটিতে ইরফানকে একজন আদর্শ ছেলে হিসেবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আশাকরি আপনাদের কাছে এই নাটকটি ভালো লাগবে।নাটকটি দেখার জন্য নাটকের লিংকটি নীচে তুলে ধরলাম।আশাকরি নাটকটি দেখে নিবেন।
রেটিং
পরিচালনা | ১০ |
---|---|
কাহিনী | ১০ |
অভিনয় | ১০ |
বন্ধুরা সম্পূর্ণ নাটকটি নিজের ভাষায় লিখেছি।আশা করি নাটকটি আপনাদের ভালোই লাগবে।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।আবার কথা হবে পরবর্তী ব্লগে।আজ এখানেই বিদায়।সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার। আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা। আমি একজন গৃহিণী। আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি। ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই। নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Twitter link
খুবই সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করেছেন৷ নাটকটি আমি দেখব ভেবে এখনো দেখে নিতে পারিনি৷ প্রতিনিয়ত এই নাটকটি দেখার কথা মনে পড়ে। আবার সময়ের কারণে নাটকটি দেখে নিতে পারিনা। আজকের আপনার এই নাটকের রিভিউ থেকে এই নাটক সম্পর্কে অনেক ধারণা পেয়ে গেলাম। এই নাটকের মধ্যে অনেকগুলো বাস্তবিক বিষয়বস্তু ফুটে উঠেছে যা আপনার রিভিউ দেখে বুঝতে পারলাম৷
সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
বাহ বেশ চমৎকার একটি নাটকের রিভিউ করেছেন। নায়িকাটির অভিনয় খুবই চমৎকার। আসলে মুভি বা নাটক এখন খুব কম দেখা হয়। তবুও চেষ্টা করি মাঝে মাঝে দেখার। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে রিভিউটি শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে মন্তব্য শেয়ার করে পাশে থাকার জন্য।
আপনি খুব সুন্দর করে নাটকটির রিভিউ পোস্ট সাজিয়েছেন।নাটকের কাহিনীটি আমার বেশ ভালো লাগলো।সময় করে দেখার চেষ্টা করবো নাটকটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে ও।
ইরফান সাজ্জাদ এর নাটক গুলো মাঝে মধ্যে দেখা হয়। অনেক সুন্দর অভিনয় করে থাকেন। আপু এই নাটকটি এখনো আমার দেখা হয়নি। আপনার রিভিউ দেখে দেখা হয়ে গেল। সময় করে অবশ্যই নাটকটি দেখে নিবো অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
ডলি জহুর প্রথমে মনে করেছিলেন তাকে হয়তো তার ছেলে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবে। উনার ছেলের বউ কিন্তু সবসময় চাইতো যেন তার শাশুড়িকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে। তবে ওনার ছেলে নিজের মধ্যে রেখেছিল সে তার মাকে একটা ফ্ল্যাট গিফট করবে। তার মা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল এটা দেখে। পরবর্তীতে তার বৌমা এই ভুল বুঝতে পেরেছিল দেখেই অনেক ভালো লেগেছে। তারা সবাই এখন আনন্দেই থাকবে। অনেক সুন্দর ভাবে আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি সবার মাঝে তুলে ধরেছেন। পুরো নাটকটার রিভিউ সম্পূর্ণ পড়ে অনেক ভালো লাগলো।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
এই নাটকটার রিভিউ আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। ছেলে চেয়েছিল মাকে একটা ফ্ল্যাট গিফট করবে। কিন্তু মা ভেবেছিল হয়তো ছেলে থাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসবে। যদিও ওনার বৌমা চেয়েছিল যেন উনার ছেলে উনাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে আসে। ওনার বৌমা দেখছি নিজের ভুলটা বুঝে শাশুড়ির কাছে ক্ষমা চেয়েছে। আর শাশুড়ি তাকে ক্ষমা করে দিয়ে একসাথে সবাই থাকবে বলেছে। পুরো নাটকের কাহিনী অসম্ভব দারুন ছিল। সময় পেলে নাটকটা দেখে নেওয়ার চেষ্টা করব।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। সত্যিই নাটকটি ভীষণ সুন্দর। আশাকরি দেখবেন।