জেনারেল রাইটিং -- 💕 " আপনার দ্বারা যদি কারো কোন উপকারই না হয়,তবে বৃথা এই মানব জীবন "
আসসালামু আলাইকুম
আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয়"আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগন,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
বন্ধুরা,আমি @shimulaktet,আমি বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।মন কিছুটা খারাপ।আসলে কাল থেকে সার্ভার ডাউনের কারনে কোন কাজই করা হয়ে উঠেনি।প্রতিদিনের কাজ সময়মতো না করা হলে আসলে ভালো থাকাটা ঠিক মতো হয়ে উঠে না।আজ চেষ্টা করছি লেখার।আজ জেনারেল রাইটিং নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। প্রতিদিন আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি পোস্টের ভিন্নতা এনে নিজের সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করতে।তাই আজ একটি জেনারেল পোস্ট শেয়ার করছি।আশাকরি আমার পোস্ট আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
আপনার দ্বারা যদি কারো কোন উপকারই না হয়,তবে বৃথা এই মানব জীবনঃ
বন্ধুরা,আমার আজকের জেনারেল রাইটিং এর বিষয়টি আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।হে বন্ধুরা,আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।আমাদের মধ্যে আছে জ্ঞান,বুদ্ধি,শক্তি।আমরা সমাজে,পরিবারে অনেক আপনজন,আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী সবাইকে নিয়ে বসবাস করি।সব সময় সবকিছু সুন্দর স্বাভাবিক থাকবে এমনটা কিন্তু নয়।আর যখনই এমন কিছু সময়ের সৃষ্টি হবে,তখনই আমাদের উচিত হবে অসহায় মানুষটির পাশে দাঁড়ানো।
আমরা তা না করে যদি অসহায় মানুষটির উপকার তো ভালো,আমরা যদি অসহায়ত্বের সুযোগ বুঝে তাকে বিপদের মুখে আরো ঢেলে দেই,তবে আমরা কেমন মানুষ হলাম?? এটা কেমন মানব জীবন? আমরা যদি প্রকৃতির মাঝে দেখি তবে দেখতে পাই,ফুল কিন্তু গাছে নিজের জন্য ফোটে না, বরং অন্যের জন্য নিজের সৌন্দর্য ও সুরভীকে উৎসর্গ করে ধন্য হয়ে যায়। আমরা মানুষ সৃষ্টির সেরা হয়ে কেন অন্যের উপকারে আসতে পারবো না।
আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছে যারা নিজেরা একা বড় হতে চায়।অন্যের উপকার করে সবাইকে নিয়ে পথ চলতে চায় না।কিন্তু এই মানুষগুলো ভুলেই বসে থাকে।কারন একা একা বড় হওয়া যায় না।আর জ্ঞান বিলি করলে জ্ঞান কিন্তু কমে না বরং বাড়ে।
ছোট একটি উদাহরন দেই শুনুন,আমি যখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি তখন একজন গরীব মেয়েকে আমার বাসায় বসে পড়াতাম। ওর কাছ থেকে কোন টিউশন ফি নিতাম না।ওর দেখাদেখি ওই মেয়েটির বান্ধবী ও পড়তে চাইলো।যদিও তারা সম্মানী হিসেবে কিছু দিতে চাইলো।আমি নিতে অস্বীকার করলেও ওর মা নিতেই হবে এমন ভাবে পড়াতে বলল।আমি ভাবলাম একই ক্লাস একসাথে পড়াতে সহজ হবে।আমি দুজনকেই আমার বাসায় বসে পড়ানো শুরু করি।
আমি ওদের দুজনকে বিকেলে পড়াতাম।কারন বিকেলে আমি কখনো নিজে পড়তাম না।তো এভাবেই কেটে যাচ্ছিল।আমি সময় ধরে কখনো পড়াতাম না।নিজের বোনের মতোই সময় নিয়ে পড়াতাম।এই যে সময় নিয়ে পড়াতাম আমার ভাইয়া রাগ করতো।এভাবে এতোটা সময় কেন তাদের আমি দেই? তেমন তো টিউশন ফি ও পাই না।আমি ভাইয়াকে তখন বোঝাতাম ওদের পড়াচ্ছি এজন্য আমার পেছনের পড়াগুলো চর্চা হচ্ছে।বেনিফিটটা আমি এভাবে পাচ্ছি তাই ভাইয়াকে বললাম।সব সময় টাকার হিসেব করলে চলে না।জ্ঞান দান করলে যে বাড়ে সেটাই ভাইয়াকে বুঝিয়ে দিলাম।এরপর ও কখনও আর এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলেনি।
এ থেকে এটাই প্রমান হয়,আমার দ্বারা কারো উপকার হয় যদি ঠিক অন্য ভাবে আমিও উপকৃত হচ্ছি।তাই অন্যের উপকারে আসাতে লাভ নিজের ও হয়।হয়তো সেই লাভটা একেক জনের কাছে একেক রকম।যার মন মানসিকতা যেমন সে তার লাভটা ও খোঁজে তেমন।মানব জীবনকে সার্থক করে তুলতে হলে অন্যের উপকারে অবশ্যই আসতে হবে।শুধু একা নিজে এগিয়ে যাব এমন মনোভাব পাল্টাতে হবে।মানব জীবন তখনই সার্থক, যখন আপনার দ্বারা পাশের মানুষটি উপকৃত হয়।
আমাদের ইসলাম ধর্মে ও আছে, "যার প্রতিবেশী ক্ষুধার্ত থাকে সে মুমিন নয়।" এই কথা দিয়েও আমরা বুঝতে পারি আমরা শুধু নিজে খেয়ে-পরে ভালো থাকলেই হবে না।আমাদের প্রতিবেশীর ও খবর রাখতে হবে। তবেই আমরা মুমিন হতে পারবো।তবে সেই ধর্মের অনুসারী হয়ে আমরা কেন নিজের ভালোই শুধু করে যাব।অন্যের উপকারে আসব না।
আমি যতটুকু পারি অন্যের উপকার করার যথাযথ চেষ্টা করি।আসুন আমরা মানব জন্মকে সার্থক করে তুলি পরোপকারী মনোভাবকে মনের মধ্যে জাগ্রত করে।তবেই আসবে সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি।
আজ আর নয়।আশাকরি আমার আজকের লেখা জেনারেল রাইটিং পোস্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।আপনাদের ভালো লাগায় ই আমার সার্থকতা।
পোস্ট বিবরন
বিষয় | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
লেখা | @shimulakter |
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার। আমি আছি বাংলাদেশ ঢাকা থেকে।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) শেষ করি ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।আমি বিবাহিতা।আমার ভালো লাগে বই পড়তে,ফটোগ্রাফি করতে,আর নতুন নতুন রান্না করতে।আমি খেতে নয় বরং রান্না করে সবাইকে খাওয়াতে বেশী ভালোবাসি।সবুজ প্রকৃতি আর পাহাড় আমার খুব পছন্দের জায়গা।আমি নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করতে বড্ড ভালোবাসি।আমি আমার বাংলাকে ভালোবাসি।বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি বলে অনেক গর্ববোধ করি।
Twitter link
খুব ভালো কাজ করেছেন আপনি আপু। আপনার দ্বারা কেউ যদি উপকৃত হই সেটাই অনেক ভালো। কাউকে জ্ঞান দিলে কমেনা বরং বাড়ে। আমিও আমার খালাতো বোনকে পড়াতাম কেন বেশি পড়ায় এজন্য আম্মা সবসময় বলে এতক্ষণ কেন পড়ায়! কিন্তু এক ঘন্টায় একটা টপিক ভালো করে পড়ানোও যায় না।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
আসলেই আমাদের দ্বারা যদি কোন উপকার না হয়, তাহলে আমাদের এই মানব জীবন একেবারেই বৃথা। আমাদের পাশের মানুষটির যদি আমাদের দ্বারা কোন উপকার হয় তাহলে আমাদের জীবনটা সার্থক। আপনি অনেক মনোযোগ দিয়ে দুটি মেয়েকে পড়াতেন যা বুঝতেই পারছি। আপনি অনেক শিক্ষণীয় একটা বিষয় নিয়ে আজকের পোস্টটা লিখেছেন যা পড়ে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
আসলেই একদম ঠিক কথা। যে জীবন অন্যের উপকারে আসে না তা বৃথা এক জীবন। আমার কোন কথায়, কোন কাজে যদি কারো কোন উপকার হয় তাতে তো আমার কোন ক্ষতি নেই। তাহলে উপকার করতে সমস্যা কোথায়? দারুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন আপু আজ।
সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্য শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।
এরকম টপিক গুলো নিয়ে পোস্ট লিখলে সেগুলো পড়তে আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। অনেক সুন্দর করে আপনি আজকের এই পোস্টটা লিখেছেন, যেটা অনেক বেশি সুন্দর ছিল এবং লেখাটা লেখার টপিক দারুন ছিল। আসলে আমাদের দ্বারা যদি কারো উপকার হয়, তাহলে নিজেদের জীবনটা নিজের কাছেই অনেক বেশি সার্থক মনে হবে। আপনি চেষ্টা করেছেন ভালোভাবে ওদেরকে শিক্ষা দেওয়ার। এ বিষয়টা সত্যি দারুন লেগেছে।
সুন্দর একটি মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
মানুষ বলতে মানবিক মনুষত্ববোধ বোঝায় আর মনুষত্ববোধ হচ্ছে অন্যকে নিঃস্বার্থভাবে উপকার করা। যে মানুষ অন্যকে নিঃস্বার্থ ভাবে উপর করতে পারে না সে মানুষ হিসেবে ব্যর্থ। আপনি খুব সুন্দর বিষয়ে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই আপু আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মানুষ নিজে একাই বড় হতে চায়। সেটা জ্ঞানের দিক দিয়ে হোক,টাকা পয়সার দিক দিয়ে হোক বা অন্য কিছু দিয়েই হোক না কেনো। তবে এটা মানুষের ধর্ম নয়। কারণ মানুষ সামাজিক জীব এবং মানুষ একে অপরের জন্য। কিন্তু এই ব্যাপারটা কেউ মানতে চায় না। তবে আপনি টিউশন ফি নিতেন না,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।