জেনারেল রাইটিং --- 💞 সেই স্কুলটি | | আমার বাংলা ব্লগ
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই ? আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।
আমি @shimulakter, আমি একজন বাংলাদেশী।"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার। প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।আজ ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে লিখতে চলেছি,তা আপনারা আমার ব্লগের টাইটেল দেখেই বুঝে গিয়েছেন আশাকরি।তবে চলুন কথা আর না বাড়িয়ে বিস্তারিতভাবে লিখে আপনাদের মাঝে শেয়ার করি।আশাকরি আমার আজকের ব্লগ আপনাদের কাছে খুব ভালো লাগবে।
সেই স্কুলটিঃ
Canva দিয়ে বানানো
আমার আজকের ব্লগের টাইটেলে আছেসেই স্কুলটি,আসলে সেই স্কুলটি বলতে আপনারা হয়ত বা ভাবছেন আমি কোন বিশেষ স্কুলের গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। আসলে বিশেষ স্কুল বলতে আমি আমার স্কুল জীবনের স্কুলের কথাই বলেছি।দীর্ঘ ১০ টি বছর একই স্কুলে পড়াশুনা করলে তার মায়াটা একটু আলাদাই হয়। অনেকে বিভিন্ন কারনে স্কুল চেঞ্জ করে নেন।কিন্তু আমার আসলে তেমনটা হয়নি। পুরনো ঢাকাতেই আমার বেড়ে উঠা।আর ওই এক স্কুল থেকেই আমি আমার মাধ্যমিক শেষ করি। চলুন আগে স্কুলের বিবরণ আপনাদের মাঝে তুলে ধরি।
স্কুলটি ছিল গেট দিয়ে ঢুকতে হাতের ডান দিকে পুরনো টিন শেডের দোতালা।যেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনি পর্যন্ত ছাত্রীদের জন্য অফিস রুম।আর ঠিক এর পাশেই ছিল চারতলা ভবন।যেখানে কিনা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেনি পর্যন্ত ছাত্রীদের ক্লাস নেয়া হতো। আর তারই নিচ তলাতে এক পাশে প্রিন্সিপ্যালের রুম,টিচারস রুম আর বাকি ক্লাসরুম।সে এক বিশাল বড় জায়গা।আর ঠিক মাঝখানে ছিল গোল শেপের বড় একটি বাগান। বাগানে মালি ভাই এত যত্ন করে বাগানে ফুল ফোটাতো তা দেখতে যে কারো মন খুশিতে ভরে যেত।সেই বাগানটি শুধু দূর থেকেই অবলোকন করা হত।ভেতরে যাওয়ার অনুমুতি কারোই ছিল না।আর ঠিক অন্য পাশে অর্থাৎ বাগানের পাশেই এল শেপে টিন শেডের ক্লাস রুম ছিল।যা কিনা প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনির ক্লাস হতো।
টিন শেডের ক্লাস রুমে বসে শুধুই ভাবতাম কবে প্রাইমারী লেভেল পার হয়ে সেই ভবনে ক্লাস করব।টিন শেডে খুব যে খারাপ ছিলাম,তেমন কিন্তু নয়। একটু বৃষ্টি হলে খুব আনন্দ নিয়ে কাগজ দিয়ে নৌকা করে পানিতে ছেড়ে দিয়ে খুব মজা করতাম। কিন্তু তারপরেও স্বপ্ন ছিল কবে সেই ভবনে ক্লাস করার সুযোগ হবে। যাই হোক এতো গেলো স্কুলের বিবরন।এবার আসি সেই স্কুলটি কেন বললাম। স্কুল শেষ করে আমরা কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে যাই।অনুভূতিগুলো একটু আলাদা রকমের ভাল লাগা কাজ করে। কলেজ,ইউনিভার্সিটিতে নতুন পরিবেশ,নতুন নতুন মানুষ সবকিছু মিলিয়ে অন্য রকম ভালো লাগা মনের মাঝে বিরাজ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় একটাই তখন থেকে সব সময় স্বপ্নে শুধু একটা স্বপ্নই দেখতাম লেখাপড়া নিয়ে,তা হল দেখতাম পরীক্ষার হলে পরীক্ষা দিতে গিয়েছি আর কিছুই পারছি না লিখতে। সবচেয়ে মজার বিষয় হল এটাই, পরীক্ষার হল দেখতাম আমার সেই স্কুলটিকেই।কি কলেজ,কি ইউনিভার্সিটি।
আজ পড়ালেখার পাঠ শেষ হলেও এক্সাম দেয়ার স্বপ্ন কিন্তু আজ ও দেখি। আর সেই স্বপ্ন আমার সেই স্কুলটিকে ঘিরেই। আজ আমার ছেলেকে নিয়ে তার স্কুলে যাই। আজ ছেলেকে নিয়েও স্বপ্ন দেখি তার এক্সাম কিন্তু সে দেরী করে স্কুলে যাচ্ছে,কিছুই পারে না সে।আর এক্সামের হল রুম সেটাও আমার সেই স্কুলটি।কেন সব এক্সাম হল সেই স্কুলটিকে ঘিরেই হবে ? অবচেতন মনে সেই স্কুলটি গেঁথে রয়েছে।তাইতো সবকিছুতে সেই স্কুল টিকেই স্বপ্নে দেখি।আপনাদের সাথে কি এমন কিছু হয় বা হয়েছে ? হয়ে থাকলে জানাবেন তো।
সেই স্কুলটি আজ কলেজ হয়েছে।ছাত্রীর সংখ্যা ও বেড়েছে। এত বছর পর এসে স্কুলটি নাকি অনেক উন্নত হয়েছে।বাবার বাসা আমার সেই পুরনো শহরেই। বাবার বাসায় গেলেও কখনো সেই স্কুলটিতে যাওয়ার আমার ইচ্ছে কখনও জাগেনি।তার কারন একটাই,আমার মনের মাঝে যে স্কুলটিকে আমি লালন করে আছি। আধুনিকতার ছোঁয়ার সেই স্কুলটিকে দেখলে আমার মনের মাঝে সেই যে ভাললাগা অনুভূতি গুলোর মৃত্যু ঘটবে। আসলে আমি তা চাই না। সবুজে ঘেরা সেই বাগান,টিন শেডের সেই রুমগুলো থাক না আমার ভালোলাগার কিছু অনুভূতি হয়ে।ইট পাথরের আধুনিকতায় মনের অনুভূতিকে নাই বা নষ্ট করলাম। সেই স্কুলটি মনের মাঝে একই রকম থেকে যাক শেষ পর্যন্ত অমলিন ভালোলাগায়।
আজ আর নয়।আশাকরি আমার আজকের ব্লগটি আপনাদের কাছে খুব ভালো লেগেছে।ভাল লেগে থাকলেই আমার এই ব্লগটি লেখা সার্থক হবে।সবাই সুস্থ থাকবেন,ভাল থাকবেন।আবার কোন নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হব।
আমি কিন্তু আপু আপনার গল্পের টাইটেল পড়েই বুঝে নিয়েছি যে, আপনি আপনার স্কুল জীবনের স্কুলের কথাই বলছেন। যাই হোক পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আমিই রাইট। খুব সুন্দর কিছু স্মৃতির মাধ্যমে আপনি আপনার স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার সেই স্কুলটি আজ দালান কোঠায় পরিনত হয়েছে। সেই টিন আর বেড়া দিয়ে বানানো স্কুল আজ আর নেই। তাই আপনি আপনার স্বপ্নকে ভাঙ্গতে চান না। আর এ জন্যই আপনি আপনার সেই স্কুলে যান না। ভালই লেখেছেন আপু।
অনেক ধন্যবাদ আপু ব্লগটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু, আপনার মত আমারও একই অবস্থা, আমি আমার স্কুলের পাশ দিয়ে প্রায় সময় যাতায়াত করলেও, কখনো স্কুলের ভিতর প্রবেশ করি না। কেননা আমার সেই প্রিয় স্কুলটি এখন আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক অনেক উন্নত হয়ে গেছে। কিন্তু এই আধুনিকতার ছোঁয়াতে আমার স্কুলের পুরনো সেই স্মৃতিময় বিল্ডিং, পুরনো সেই টিনশেড বারান্দা, পুরনো সেই খেলার মাঠ আজ যেন আর খুঁজে পাই না। তাই সেই স্কুলে গেলে ভালোলাগার অনুভূতিগুলো নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক আপনার মত। তবে আমি আমার প্রিয় স্কুলটিকে ভীষণ ভালোবাসি।
মন্তব্য পেয়ে অনেক ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
আপু আমি কিন্তু আপনার পুরোটাই ব্যতিক্রম কারণ আমি প্রায়ই আমাদের স্কুলের মধ্যে বসে থাকে যে গিয়ে। আমাদের বন্ধুদের সাথে সেখানে আড্ডা দিয়ে থাকি। তবে আমরা যখন স্কুলে পড়তাম তার থেকে এখন অনেকটা আধুনিকতা এসেছে স্কুলের মধ্যে। তিন থেকে চার তলা বিল্ডিং হয়েছে। সব মিলে খুবই সুন্দর মনোরমপুর পরিবেশ তৈরি করেছে স্কুলের মাঝখানে।
আপনার সুন্দর মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
নিজের প্রিয় স্কুলটাকে কখনোই ভোলা সম্ভব নয়।আর এটা ঠিক আপু যদি প্রিয় স্কুলটা আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে যায় তখন হয়তোবা পুরনো স্মৃতিটাকে লালন করে নতুন কিছু দেখলে কষ্ট হয়। কারণ যে জায়গাটায় যেভাবে অতিবাহিত করেছেন সেই জায়গাটাকে সেভাবেই দেখতে ভালো লাগবে। যাই হোক স্কুল নিয়ে সুন্দর স্মৃতি শেয়ার করেছেন। এটা ঠিক আমি নিজেও মাঝে মাঝে দেখি হয়তোবা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি কিন্তু অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগলো আপনার শেয়ার করা অনুভূতি পড়তে পেরে।