ছেলেবেলা -- " ছেলেবেলার একটি দুঃস্বপ্ন আজ ও মনের এক কোনে রয়েই গেছে "
আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম
হ্যালো বন্ধুরা,
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার প্রিয় "আমার বাংলা ব্লগ"এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,কেমন আছেন সবাই?আশা করি সবাই ভাল আছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্র অশেষ রহমতে বেশ ভাল আছি।আর প্রতিনিয়ত ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আপনারা ও এমনটাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন ভালো থাকার।
আমি @shimulakter,"আমার বাংলা ব্লগ"এর আমি একজন নিয়মিত ইউজার।আমি ঢাকা থেকে আপনাদের সাথে যুক্ত আছি। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে।প্রতিদিনের মত আমি আজও নতুন একটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করি নতুন নতুন কিছু নিয়ে পোস্ট শেয়ার করতে।তার ই ধারাবাহিকতায় আজ আমি আমার ছেলেবেলার একটি দুঃস্বপ্ন আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে এলাম।
ছেলেবেলার একটি দুঃস্বপ্ন আজ ও মনের এক কোনে রয়েই গেছেঃ
প্রতিটি মানুষের জীবনেই তার সর্বশ্রেষ্ঠ সময় হলো তার শৈশব কাল।তাই শৈশব কালকে সোনালী সময় বলা যায়।শৈশবের নানা রঙের দিনগুলো আমাদের মনের মাঝে সব সময়ই দোলা দিয়ে যায়। সেই সব দিনগুলো কোন না কোন ভাবেই আমাদের মনে এসে নাড়া দিয়ে যায়। হোক সেটা সুখের কিংবা দুঃখের।আজ আমি আপনাদের মাঝে সেই ছেলেবেলার একটি দুঃস্বপ্ন শেয়ার করতে চলে এলাম।যেই দুঃস্বপ্নটি আজ ও আমার মনের কোনে জায়গা করে আছে।যদিও সেই সময়ের ভয়ের বিষয়টি আজ তেমন ভাবে মনের মধ্যে নেই।
সত্যি কথা বলতে প্রতিটি মেয়েই তার বাবার প্রতি ভালোবাসাটা একটু বেশীই থাকে।তবে মা কে যে ভালো বাসে কম তেমনটা ও কিন্তু নয়।আমি আমার আব্বুকে অনেক ভালোবাসি।কিন্তু তারপরেও অনেক সময় দেখেছি আম্মুর জন্য ভালোবাসার পরিমান কোন অংশে কম নয়।তার প্রমান আমি অনেক দেখেছি।যাই হোক আম্মুর কথা বলার কারন এই দুঃস্বপ্নটা আমার আম্মুকে নিয়েই দেখা।
তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি।আমরা চার ভাই-বোন।দুই ভাই, দুই বোন।বোনের মধ্যে আমি বড় আর ভাই বোনের মধ্যে মেজো।ভাইয়া আমার বড়।আমি যখন ফাইভে পড়ি তখন ভাইয়া সেভেনে পড়ে।যেহেতু দুঃস্বপ্নটা আম্মুকে ঘিরে তাই আম্মুর বিষয়ে আমাকে আগে কিছু বলে নিতে হবে।আমার আম্মু খুবই ধার্মিক একজন মানুষ। তিনি দান-খয়রাত করতে খুবই পছন্দ করেন।ছেলেবেলা আমরা আমার আম্মুর কাছ থেকেই এই বিষয়টি খুব শিখেছি।আমি দেখেছি আমার মা দান- খয়রাত করতে কখনও পিছ পা হননি।তবে আব্বু যে দান করেন না তেমন কিন্তু নয়।দুজনেই মানুষের জন্য অন্তপ্রান।যেহেতু আম্মুকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন, তাই আম্মুর কথাই হাইলাইটস করলাম।
আমার ছেলেবেলা কেটেছে ঢাকার পুরনো শহরে।তখন নীচতলার একটি বাসাতে আমরা ছিলাম।আমি একদিন রাতে স্বপ্নে দেখছিলাম একদিন দুপুরে আমাদের বাসার গেইট খোলা হঠাৎ করে একটি বৃদ্ধা দরিদ্র মহিলা হাতে কিছু একটা নিয়ে বাসার ভেতরে ঢুকতে লাগলো।আমি পেছনে পেছনে যাচ্ছিলাম।ওই দুপুর টাইম টাতে ভাই দুজন স্কুলে থাকতো।আব্বু বিজনেসের কাজে বাইরে।আমি আর আমার বোন শুধু বাসায়।বোন তো ছোট।যাই হোক আমি দেখলাম বৃদ্ধ মহিলাটি দরজা খোলা পেয়ে আম্মুকে মারার জন্য হাতে কি একটা নিয়ে মারার ভঙ্গিতে ভেতরে গেলো।আর আম্মুকে মেরে ও ফেললো।কিছু করার আগেই আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।আমি এই দুঃস্বপ্ন দেখে কিছুতেই আর রাতে ঘুমাতে পারলাম না।আম্মু পাশের ঘরে ঘুম।আম্মুকে না দেখা পর্যন্ত শান্তি ও পাচ্ছিলাম না।এভাবেই আমার দুঃস্বপ্নের রাতটি কেটে গেলো।
এই দুঃস্বপ্নটি দেখে স্বপ্ন ভেবে ভুলে গেলে ভালো হতো।কিন্তু না আমার এই ছোট মনে তখন অনেক ভীতি কাজ করে যাচ্ছিল।মাকে হারিয়ে ফেলার ভয় মনের মাঝে খুব বেশী কাজ করছিল।আম্মু,আব্বু,ভাইয়া সবাই অনেক বুঝিয়েছিল।এটা স্বপ্ন সত্যি নয়।কিন্তু সেই অবুঝ মন সেদিন কারো কথাতেই এই দুঃস্বপ্নটিকে মন থেকে ভোলাতে পারেনি।আমার মনে আছে আমি বেশ কিছুদিন স্যারের কাছে পড়তেও বসিনি।সেই প্রথম স্কুল আমার বন্ধ করেছিলাম প্রায় ৬/৭ দিনের মতো।আম্মু তখন বুঝতে পেরেছিল আমি সত্যি ই খুব ভয় পেয়েছি।যে আমি স্কুল কখনো বন্ধ করিনা। সেই আমি ভয় পেয়েছি বলেই স্কুলে যাচ্ছি না।আমার মনে আছে তখন থেকেই কেউ বাইরে গেলে আমি এলার্ট থাকতাম গেইট আটকানো হয়েছে কিনা।
দুঃস্বপ্নটা শুধু দুঃস্বপ্ন হলেই হয়তো ভালো হতো।কিন্তু না সেই স্বপ্নটি আমাকে বেশ কিছুদিন ভাবিয়ে গেছে।এতোটাই মনের গভীরে লেগেছিল।আজ ও এই স্বপ্নটির কথা ভুলিনি।আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।এই দুঃস্বপ্নটি থেকে যাবে আপনাদের মাঝে সারাজীবন। তবে ছেলেবেলার সেই অনুভুতি আর আজকের অনুভূতি আলাদা।ভয়কে অনেকটাই জয় করে নিয়েছি।তবে ভয়কে জয় করে নিলেও মা কে হারানোর ভয়টা এখনও একই রকমভাবে মনের মাঝে কাজ করে।পৃথিবীর সকল মা কে আল্লাহ নেক হায়াত দান করুন, আমিন।
পোস্ট বিবরন
শ্রেণী | আমার ছেলেবেলা |
---|---|
ক্যামেরা | SamsungA20 |
পোস্ট তৈরি | @shimulakter |
লোকেশন | ঢাকা,বাংলাদেশ |
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন লেখা নিয়ে ।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন।আমার ছেলেবেলার দুঃস্বপ্নের গল্পটি পড়ার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সবাইকে
আমার পরিচয়
আমি শিমুল আক্তার।আমি একজন বাংলাদেশী।বাংলাদেশ ঢাকা থেকে আমি আপনাদের সাথে যুক্ত আছি।আমি এম এস সি ( জিওগ্রাফি) কমপ্লিট করি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আমি বিবাহিতা।আমি একজন গৃহিণী।আমি একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। ভালোবাসি বই পড়তে, নানা রকমের রান্না করতে,আর সবাইকে নতুন নতুন রান্না করে খাওয়াতে ভীষণ ভালোবাসি।ফটোগ্রাফি করতে আমি ভীষণ পছন্দ করি।বাংলায় লিখতে আর বলতে পারার মধ্যে অনেক বেশী আনন্দ খুঁজে পাই।নিজের মধ্যে থাকা সৃজনশীলতাকে সব সময় প্রকাশ করতে পছন্দ করি।এই বাংলার মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছি বলে নিজেকে অনেক ধন্য মনে করি।
Twitter link
মায়ের জন্য সন্তানের অনন্ত অসীম ভালোবাসার কারণে আপনার মায়ের প্রতি আপনার এতটা ভয়, হ্যাঁ এটা হওয়া অবশ্যই স্বাভাবিক। তবে স্বপ্ন কখনো সত্য হয় কিনা জানিনা। মানুষের মুখে শুনেছি স্বপ্ন নাকি স্বপ্নই থেকে যায় তাই এরকম ভয় থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। তবে হ্যাঁ সাবধান থাকতে হবে সব সময় আপনি এই ভয় থেকে সাবধানতা অবলম্বন করছেন এটা জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো।
অনেক ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
আপু আপনার শৈশবের দুঃস্বপ্নের কথা শুনে সত্যিই খুব খারাপ লাগলো। আপনার ভয় পাওয়ারই কথা তখন আপনি খুবই ছোট ছিলেন আর এত অল্প বয়সে যদি কেউ তার মা কে নিয়ে এমন দুঃস্বপ্ন দেখে তাহলে এমনি অবস্থা হয়। আপনার মা,বাবা, ভাইয়া সবাই আপনাকে বুঝানোর পরেও আপনার অবুঝ মন মানতে পারছে না এটাই স্বাভাবিক। আপু ছোটবেলার এমন কিছু ঘটনা থাকে যা সারাজীবন মনে থাকে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আপনার ছোটবেলার দুঃস্বপ্নের গল্পটি পড়ে বেশ খারাপ লাগলো। দুঃস্বপ্ন দেখলে এখনও আমার ভয় লাগে। আর আপনি তখন অনেক ছোট আপনারতো ভয় পাওয়ার কথাই। আর মাকে নিয়ে দুঃস্বপ্ন দেখলে তাতো ভোলা বেশ কঠিন।
জি আপু, ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যি আপু আপনার লেখাটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। ছেলেবেলার দুঃস্বপ্নগুলো মনে হত যেন সত্যি ঘটনা ।যাই হোক আপনি ভীষণ ভয় পেয়েছিলেন আপনার লেখা পড়ে বুঝতে পারছি ।মাকে হারানোর ভয় সবার ভেতরেই কাজ করে যার জন্য অনেক বেশি ভয় পেয়েছিলেন।সকল মা ভালো থাকুক সেই কামনাই করি।ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে ও।সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
লেখাটা পড়ে কিছু সময়ের জন্য হারিয়ে গিয়েছিলাম। মনে মনে আমার মাকে খুঁজছিলাম। মাকে নিয়ে দেখা ছেলেবেলার দুঃস্বপ্নের বেশ দারুন স্মৃতিচারন করেছেন আপনি আমাদের সাথে। আপনার গল্প পড়ে মনে হলো দু চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। সে যাই হোক আমি হলে হয় তো এর চেয়ে বেশীই ভয় পেতাম।
ধন্যবাদ আপু, মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
মা কে হারানোর ভয় আসলে আমাদের সবার মধ্যেই সর্বদা বিরাজমান। আমি যখন মাঝেমধ্যে গভীরভাবে ভাবি, যখন আমার মা না থাকবে তখন আমি কি করবো ,সেই মা এর মুখটা মনে পড়লেই এত বড় হয়ে যাওয়ার পরেও আপনা আপনি চোখ থেকে জল পড়তে শুরু করে । বাবা এবং মা দুজনকেই আমি খুব ভালোবাসি তবে সবথেকে বেশি মনে হয় মা কে ভালোবাসি। আসলে আপু, আপনি অনেক ছোট ছিলেন আর ছোটবেলা থেকে ওই যে ভয়টা আপনার মনে ঢুকে ছিল , তাই আপনাকে ভয়টা অনেকদিন ধরেই তাড়া করে বেরিয়েছিল। স্বপ্নটা আসলেই দুঃস্বপ্ন ছিল।
দুঃস্বপ্নের এই গল্পটি পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনাকে।
এটা অবশ্য ঠিক বলেছেন আপু প্রতিটি মেয়ের বাবার জন্য একটি আলাদা সফটকর্নার থাকে। কিন্তু বাবা-মা কারো প্রতি ভালোবাসার কমতি থাকে না। আপনার ছোটবেলার দুঃস্বপ্নটি আসলেই ভয়ঙ্কর ছিল। মাঝেমধ্যে এরকম দুঃস্বপ্ন দেখলে খুব অস্থির লাগে। তখন হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলে মনে হয় যে শান্তি পাওয়া গেল। আর তখন তো আপনি ছোট ছিলেন। এরকম স্বপ্ন দেখলে ভয় পাওয়ারই কথা।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু।