ছোট বোনের বৌভাতে।
আসসালামু আলাইকু/আদাব। আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি।
বন্ধুরা আজকে আপনাদের মাঝে আমার মামাতো বোনের বিয়ের কিছু ভালো লাগার মুহূর্ত শেয়ার করছি।
হঠাৎ করে আমার মামাতো বোনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেল।আমাদের বাসার সকলকে নিমন্ত্রণ জানানো হলো। আমরা সকলে মিলে আমার মামাতো বোনের বিয়েতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম।
বিয়ের আগের দিন হলুদে আমরা যাওয়ার জন্য আমি আমার বর আমার শাশুড়ি আমার ননদও তার বাচ্চারা রেডি হচ্ছিলাম। আর চিন্তা করছিলাম কি সাজগোজ করব। তারপর আমরা দুজন হলুদ কালারের কাপল ড্রেস পড়লাম।
ঘরের ভেতরে আমরা দুজনে মিলে কিছু ছবি তুললাম।তারপর আমার ননদের মেয়েদেরকে সাজগোজ করলাম।
আমাদের সবার যখন সাজগোজ শেষ হলো। তখন আমরা বাসায় হালকা পাতলা কিছু খেয়ে নিলাম। হলুদের অনুষ্ঠান ছিল সন্ধ্যাবেলা। আমরা সন্ধ্যার আগ দিয়ে রওনা হলাম। আমরা সবাই মিলে একটা গাড়িতে উঠলাম।
আমরা যখন পৌছালাম। তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। আমরা গিয়ে দেখি কনেকে সাজানো হচ্ছিল। কনের সাজগোজ দেখলাম আর অনেক আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ হল সবার সাথে অনেক গল্প করলাম।
হলুদের জন্য একটি সুন্দর স্টেজ সাজানো হয়েছিল।সেখানে আত্মীয়-স্বজন পারা প্রতিবেশী সবাই ছিল।
হলুদের স্টেজে কনে নিয়ে বসানো হলো। কনে বসানোর আগে আমরা সবাই মিলে স্টেজে অনেক ছবি তুললাম।
হলুদের অনুষ্ঠানে অনেক নাচ গানের আয়োজন করেছিল। সবাই মিলে আমরা অনেক মজা করছিলাম।একে একে সবাই একটু করে হলুদ ছুঁয়ে দিচ্ছে। মিষ্টি আর ফলমূল একটু করে খাওয়াচ্ছে। আর ছবি তুলছে বউ এর সাথে।
সবাই অনেক মজা করে গান নাচে পরিবেশটাকে অনেক আনন্দময় করে তুললো। কেউ গান করে আবার অনেক সুন্দর নাচ করে।
তারপর অনুষ্ঠান শেষে আমরা রাতের খাবার শেষ করে।বাড়ির দিকে রওনা হলাম।আমরা যখন গাড়িতে করে আসছিলাম তখন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। বাচ্চারা তো তখন গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। আমার তখন একটু একটু ঘুম ঘুম লাগছিল।
আমরা যখন বাড়িতে পৌঁছালাম তখন রাত একটা আশেপাশের সবাই তখন ঘুমিয়ে পড়েছিল।কিন্তু আমাদের বাড়ির কুকুরছানাটি আমাদের জন্য অপেক্ষা করতে ছিল কারণ আমরা রাতের খাবার না দেয়া পর্যন্ত সে অবিরাম বসে থাকে।
তারপর আমরা বাসায় এসে কুকুর ছানাকে রাতের খাবার দিলাম। কারণ কুকুরছানাটি আমাদের বাড়ি পাহারা দেয়। তারপর আমরা ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। আবার সকাল সকাল উঠতে হবে বৌভাতে যাওয়ার জন্য।
পরদিন সকালে আমরা ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি নাস্তা খেয়ে নিলাম এবং বৌভাতে যাওয়ার জন্য। আমরা সাজগোজ শুরু করে দিলাম। আমি শাড়ি পরলাম ও আমার ননদকে শাড়ি পরিয়ে দিলাম। বিয়েতে যাওয়ার জন্য আমরা অনেক সাজুগুজু করলাম।বাচ্চাদের কেউ অনেক সুন্দর করে সাজুগুজু করিয়ে দিলাম। বাচ্চারা বায়না ধরল হাতে মেহেদি দেয়ার জন্য। অল্প সময়ে হাতে মেহেদী ও দিয়ে দিলাম।
তারপর আমরা সবাই মিলে আবার বৌভাতে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম। সবাই মিলে গাড়িতে উঠলাম। যখন আমরা গাড়ি দিয়ে যাচ্ছিলাম মিষ্টি রোদ এসে গাড়িতে পড়ছিল রাস্তার দুপাশে অনেক সুন্দর গাছপালা ছিল গাছের ফাঁকে ফাঁকে রোদ এসে যখন পড়ছিল গায়ে আমার অনেক ভালো লেগেছিল।
তারপর আমরা বিয়ে বাড়িতে পৌঁছালাম কনের সাথে অনেক ছবি তুললাম। অনেক মজা করলাম।
আমরা সবাই বরের জন্য অপেক্ষা করলাম গেটে। তখনো আমরা অনেক মজা করছিলাম। ছোট বড় সবাই মিলে।
তারপর যখন অপেক্ষা করতে করতে বর চলে এলো তখন সবাই মিলে শুরু করলাম কিভাবে বরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যায়। একে একে আমরা টাকার অ্যামাউন্ট বলা শুরু করলাম।
বরের সাথে আসা তার আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সবাই আমাদেরকে নিয়ে মজা করছিল। অনেক তর্ক বিতর্ক হল অবশেষে গেটে টাকা দেয়া হলো এবং বরকে নিয়ে যাওয়া ও বসানো হলো।
তারপর একে একে সবাই বরের সাথে ছবি তুললো ও শুরু হলো অনেক ধরনের মজা করার কাহিনী।তারপর ধর্মীয় মোতাবেক বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলো।
বিয়েতে মেয়ের জন্য দেনমোহর যেটা করা হয়েছিল বর সেটা সাথে সাথে পরিশোধ করে দিয়ে বিয়ের কাল সম্পূর্ণ করে। তারপর শুরু হয় বর বউয়ের ছবি তোলার পর্ব। একে একে সবাই বর বউ এর সাথে ছবি তোলা শুরু করলো।
প্রথমে এই ছবি তোলা হয় ফ্যামিলি তারপর একে একে বাকি সবার। ছবি তুলাতে ছোট রাও বাদ পড়েন।
ছোটদেরও ছবি তুলতে অনেক ভালই লাগে। বড় বউ এর সাথে ছবি তুলল ছোট ছোট সব পিচ্চিরা ও ছোটরা অনেক বেশি মজা করে বিয়েতে।
তারপর শুরু হল বর বউয়ের খাওয়া দাওয়া।বরের জন্য প্লেট রেডি করতে হবে বরের জুতা চুরি করতে হবে এসব নিয়ে সবাই ব্যস্ত হয়ে গেল।
তারপর খাওয়া-দাওয়া ও বাকি সব পর্ব শেষ করে। শুরু হয়ে গেল কোনে বিদায়ের পর্ব। কনে বিদায়ের জন্য সবাই একসঙ্গে সমবেত হল। কিন্তু এই বিদায়ের যে কি যে এক করুন দৃশ্য। এই দৃশ্য দেখে আমার অনেক কষ্ট লেগেছিল।
কারণ আমি একজন মেয়ে মেয়ের জন্য বাবার বাড়ি ছেড়ে আসা অনেক কষ্টের।বিদায়ের মুহূর্তটা সবার জন্য তখন অনেক বেদনাদায়ক হয়ে উঠেছিল। যাইহোক তারপরও তো বিদায় দিতে হবে।
এটাই বিধাতার নিয়ম এ নিয়ম সবাইকেই মানতে হবে। তারপরে সবাই মিলে কনে বিদায় দিলাম। তারপর আমরা বাসায় চলে এলাম।
বন্ধুরা আজ এই পর্যন্তই থাক। আবার ও অন্য কোনদিন অন্য কিছু ভালোলাগার মুহূর্ত নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। আপনারা ভালো থাকুন
সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
বিয়ের বিষয়ে আপনার সব স্টেপ গুলো আমি পড়লাম এবং ফটোগুলো দারুণভাবে অবলোকন করলাম। সবকিছুই ভালো লাগলো। কিন্তু এই মার্ক করা স্টেপটা পড়ে মন খারাপ হয়ে গেলো।
এ কেমন এক করুন দৃশ্য। একটা মেয়ে তার স্বামীকে চেনে না, তার স্বামীর পরিবারকে চেনে না জানে না। তার স্বামীর আত্মীয় সজন, এলাকার কোন কিছুই সে চেনে না। আর সেই অজানা জায়গাতেই তাকে যেতে হচ্ছে। জ্বি এটাই নিয়ম। খিব কষ্ট হয় এমনটি ভাবলে। মেয়েটি তার মা বাবা আত্মীয় সজন, বন্ধু বান্ধব পারা প্রতিবেশি সবার সাথে জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত থাকলো, আর এখন শুধু কবুল শব্দটি বলার পরেই, সে আর মা বাবার বাড়ি নয় অজানা এক বাড়ীতে তার আস্তানা হয়। খুব ভালো লাগলো আপনার বিয়ের পোস্ট পড়ে। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
বরের গেট ঘিরে টাকা আদায়ের ব্যাপারটা বেশ মজাদার।আমি দিদির বিয়েতে আমি যদিও লজ্জায় গেট ঘিরতে পারিনি,আমার বন্ধু ঘিরেছিল এবং মোটা টাকা আদায় করেছিল।
সবটা পড়তে বেশ ভালো লেগেছে।আরো আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন❤️
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!