*মোটিভেশনাল গল্প* আপনার নিজের জীবনের মূল্য কত
♥♥
সকলকে শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি।
বন্ধুরা, আজ একটি সুন্দর গল্পের মাধ্যমে আমরা জেনে নেব আমাদের নিজেদের মূল্য কত? আপনি নিজেও খুব ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন আসলে আপনার,, কিংবা আপনার জীবনের মূল্য কত?
বন্ধুরা এই গল্পটি আমার নিজের লেখা নয় এই মটিভেশনাল গল্পটি বহুবার আমার স্যারের মুখে শুনেছিলাম।কেন যেন আজ বারবার গল্পটি মনে পড়ছে। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেই।হয়তো অনেকের জীবনে গল্পটি নতুন রূপে নতুন ভাবে কাজে লাগতে পারে এটা আমার বিশ্বাস।কারণ আমরা নিজেরাই জানিনা আসলে আমাদের মূল্য কত? তাইতো অন্যের কথায় ব্যথিত হই।জীবনটাকে মূল্যহীন মনে হয়।অন্যের কথার উপর ভিত্তি করে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি।
আপনার হতাশা কে দূর করার জন্য আজকের এই গল্পটি খুব চমৎকারভাবে আপনার জীবনে মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করতে পারে।
দাদু বসে বসে পত্রিকা পড়ছে।ঠিক এমন সময় তার থেকে 15 বছরের নাতি এসে দাদু কে জিজ্ঞেস করছে,,,আচ্ছা দাদু বলতো আমার জীবনের মূল্য কত? আমি তো লেখাপড়া ও তেমন জানি না করতে পারি না ভালো লাগেনা।তাছাড়া এখনো অনেক ছোট আমি।এই সমাজে কি বা মূল্য আছে আমার।ও দাদু বলোনা আমার জীবনে কি কোন মূল্য আছে? তাছাড়া ওরা আমাকে বলেআমি নাকি একটা অপদার্থ। আমাকে দিয়ে নাকি কিছুই হবে না।তাই কখনো কখনো মনে প্রশ্ন জাগে আমার বেঁচে থেকে কি লাভ আমার মত মানুষের তো মৃত্যুই ভালো।যে জীবনের কোন মূল্য নেই এই জীবন রেখে লাভ কি???
এইযে দাদুভাই এটা নাও ধরো।বলে রুমালের মধ্যে পেচিয়ে একটি ছোট্ট পাথর দাদু নাতির হাতে দিলোএবং দাদু বলল তোর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এইপাথরটির মধ্যেই আছে। শুধু তোকে আবিষ্কার করতে হবে এই আর কি।নাতি বললো কিভাবে দাদু।দাদু বলল এই যে দেখছিস এটি হচ্ছে একটি ছোট্ট পাথর।এই পাথর টা নিয়ে সর্বপ্রথম তুমি সবজি মার্কেটে গিয়ে এর দাম জিজ্ঞেস করবে।দাম যাই বলুক না কেন শর্ত একটাই পাথরটি কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না।এরপর তুমি এই পাথরটি নিয়ে একটি চালের দোকানে যাবে।সেখানেও পাথরের দাম জিজ্ঞেস করবে কিন্তু পাথর বিক্রি করবে না।এরপর তুমি এই পাথরটি নিয়ে একটি জুয়েলার্সের দোকানে যাবে।তবে শর্ত একটাই এই পাথরটি কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না।মনে থাকবে দাদুভাই।নাতি বললো ঠিক আছে দাদু।তবে আমি বেরিয়ে পড়ি দাদু।দাদু বলল সাবধানে যেও পাথরটি কিন্তু হারিয়ে ফেলো না যেন।নাতি বললো ঠিক আছে দাদু।বলে নাতি বেরিয়ে পরলো।
১.এবার নাতি প্রথমে একটি বড় সবজির দোকানে গিয়ে পাথরটি দেখালো সবজিওয়ালাকে এবং জিজ্ঞেস করলো এই পাথরটি দাম কত হতে পারে??
সবজিওয়ালা বলল তুমি এই পাথরটি রেখে আমার কাছে 5 কেজি আলু নিয়ে যেতে পারো।
২. এবার নাতি পাথরটি রুমালের মধ্যে পেচিয়ে আবার একটি বড় চালের দোকানে গেল।বরাবরের মতই দাম জিজ্ঞেস করল।
এবার চালের দোকানদার বলল আমিতো এই পাথর চিনি না তবে তুমি এই পাথরটি রেখে আমার কাছে 5 বস্তা চাল নিয়ে যেতে পারো।
৩.ছেলেটি সেখান থেকে বেরিয়ে একটি বড় জুয়েলার্সের দোকানে গেল।এবং পাথরটির দাম জানতে চাইল।
এবার জুয়েলার্সের দোকানদার খুব ভালো করে পাথরটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখলো।এবং ছেলেটিকে বলল তোমার এই পাথরটি এতটাই মূল্যবান ডায়মন্ড যে আমার দোকানের যত স্বর্ণালঙ্কার আছে,,তা সব দিয়ে দিলেও এই পাথরের মূল্য পরিশোধ করা যাবে না।এই পাথরটি এতটাই মূল্যবান।
এবার ছেলেটি হতভম্ব হয়ে গেল।নতুন নতুন নানা রকমের প্রশ্ন মনে উদয় হতে লাগলো।সে তাড়াতাড়ি পাথরটিকে যত্নসহকারে নিয়ে আবার দাদুর কাছে ফিরে গেল।এবং দাদু কে সব কথা খুলে বলল।তখন দাদু একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলল।বুঝলে দাদুভাই এই পাথরটি যখন তুমি সবজিওলার কাছে নিয়ে গিয়েছিলে তখন এর দাম ছিল মাত্র পাঁচ কেজি আলুর সমান এবং যখন চালের দোকানে নিয়ে গেলে তখন এই পাথরটি দাম আরেকটু বাড়িয়ে 5 বস্তা চালের দাম হয়েছিল কিন্তু যখন এই পাথরটি তুমি সঠিক জায়গায় নিয়ে গিয়েছো সেখানে কিন্তু তার দাম অনেক গুন বেড়ে গিয়েছে।তাই তোমাকে বলবো তোমার জীবনের দাম এই পাথরটি চেয়েও বহু গুণ বেশি।শুধু অবস্থানভেদে।তুমি সঠিক জায়গায় নিজেকে প্রেজেন্ট করো দেখো সঠিক মূল্যায়ন তুমি পাবে।কিন্তু তুমি যদি সবজিওয়ালার কাছে গিয়ে নিজেকে প্রেজেন্ট করো তোমাকে তারা সবজির সাথেই তুলনা করবে এটাই বাস্তবতা।আশা করি বুঝতে পেরেছ দাদুভাই।
নাতি বললো এতো চমৎকার করে তুমি জীবনের মূল্য বুঝিয়ে দিলে যা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা হয়ে থাকবে দাদু।আজ খুব ভালো করে বুঝতে পারলাম আমাকে সেই জায়গায় প্রেজেন্ট হতে হবে যেখানে মানুষ আমার মূল্যায়ন করবে।যেখানে সেখানে যার তার কথায় আহত ও নিরাশ হওয়া যাবে না হতাশ হওয়া যাবে না।কারণ যার জ্ঞানের পরিধি যতটুকু তার বিচার বুদ্ধি ও ততটুকু।আজকে খুব ভালো করে বুঝতে পারলাম আমি নিজেই সেরা।আমাকে মূল্যায়ন করার ক্ষমতা অন্য কেউ রাখেনা।এক টুকরা পাথরের দাম যদি এতগুলো স্বর্ণালঙ্কারের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে তবে আমি তো মানুষ আমার দাম কত হতে পারে??
তাই বলবো পৃথিবীতে সব মানুষেই যার যার ক্ষেত্রে অনেক বেশী মূল্যবান। সব ক্ষেত্রে সবাইকে বলব মানুষের মূল্য দিতে শিখুন। মানুষকে সম্মান দিতে শিখুন।মানুষকে ভালবাসতে শিখুন।কারণ ভালোবাসা দিয়েই কেবল ভালোবাসা পাওয়া যায়।হতাশাকে দূরে ঠেলে যোগ্য হিসেবে নিজেকে তৈরি করি।কে আপনাকে বেয়াদব বলল, কে আপনাকে অযোগ্য বলল, এগুলো বিবেচনা করার দায় আপনার নয়। আপনি শুধু নিজেকে তৈরী করুন নিজের মত করে।
বন্ধুরা আমার আজকের এই মোটিভেশনাল গল্পটি আপনাদের কেমন লেগেছে? তা আপনার চমৎকার মতামতের মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দিলে -উদ্বুদ্ধ হয়ে হয়তো আরো নতুন নতুন মোটিভেশনাল গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো আমি সেলিনা সাথী।♥♥
যার জ্ঞানের পরিধি যতটুকু
তার বিচার বুদ্ধি করার সক্ষমতা ততটুকু।
আমি সেলিনা সাথী। আমার প্রফেশন, প্রেজেন্টার, ট্রেইনার ও মোটিভেটর। আমি একজন সমাজ কর্মি ও সংগঠক। এছারা ও তৃনমূল নারী নেতৃত্ব সংঘের নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ। আমি "নারীসংসদ"
এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি "সাথী পাঠাগার"। আমার লেখা মোট ১০ টি একক ও যৌথ কাব্য গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। একুশে বই মেলায় প্রতি বছর একটি করে কাব্য গ্রন্থ প্রকাশের চেস্টা করি। আমার লেখা কাব্যগ্রন্থের মধ্যে "মিস্টি প্রেম" (উপন্যাস), "অশ্রু ভেজা রাত" (কবিতা), "জীবন যখন যেমন" (কবিতা), "একুশের বুকে প্রেম" (কবিতা), "নারীকন্ঠ" (ম্যাগাজিন) অন্যতম।
চমৎকার একটি শিক্ষণীয় গল্প প্রকাশ করেছে তুমি আম্মু। সত্যি বলতে,, হ্যাঁ বিষয়টি অনেক চিন্তা করলাম এবং সর্বোপরি যেটা বুঝতে পেরেছি। আমাদের মূল্য কোথায়!! যদি আমি একটি পানির বোতলের সাথে চিন্তা করি নরমাল দোকানে হাফ লিটার পানির মূল্য ১৫ টাকা কিন্তু সেই পানি যদি ৫★ হোটেলে বিক্রি হয় তাহলে ৩০০ টাকা থেকে বুঝা যায় সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় যদি তুমি নিজেকে ভালোভাবে প্রেজেন্ট করতে পারো তাহলে তুমি সাকসেস এবং তোমার দাম সেখানে ভালো থাকবে...
বাহ!! কি চমৎকার উপলব্ধি। এত সুন্দর একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলে যা দেখে আমি অভিভূত হয়েছি। সত্যিই নিজেকে এভাবেই তৈরি করতে হবে। কারণ তোমার মুল্য অনেক বেশি। অন্য কেউ দেয়ার ক্ষমতা রাখে না।তুমি হীরের চেয়েও বেশি মূল্যবান হবে যখন সেই মূল্যবান ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে পৌঁছবে।দোয়া করি তুমি তোমার স্বপ্নকে ছাড়িয়ে যাও।আর কোন হতাশা যেন তোমাকে স্পর্শ করতে না পারে সে গুলোকে ময়লা ভেবে জাস্ট উড়িয়ে দেবে।অনেক অনেক শুভকামনা।♥♥,
চেস্টা করছি জীবনের মানে বুঝার জন্য।
♥♥
অনেক অনেক দুয়া ও শুভ কামনা
♥♥
আপু গল্পের মাধ্যমে একটি শিক্ষানীয় বিষয় আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার গল্পটি আমি অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়েছি আমার অনেক ভালো লেগেছে। আশা রাখছি এরকম গল্প আমরা আবারও পাব। অনেক ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
মন দিয়ে আপনার এই মোটিভেশন গল্পটি পড়লাম। তবে আপনার গল্পতে ফুটে উঠেছে জায়গাভেদে মূল্যায়ন। একটা পাথর সবজি দোকানের যদি ৫ কেজি আলুর দাম হয়। একটা চাউলেরর দোকানে ৫ বস্তা চালের দাম হয়। আরেকটা অলংকারের দোকানে সবগুলো অলংকার এর চেয়েও বেশি দামি হয়, তাহলে আমাদের প্রত্যেকের জীবনটা নিজের কাছে অনেক মূল্যবান। তবে সঠিক জায়গায় প্রেজেন্ট করতে হবে। এবং সেজন্য নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে বুঝতে পারলাম। তবে কে কি করল না করল কে কি বলল না বলল সেগুলো নিয়ে কান দেওয়া যাবেনা। অসাধারণ ছিল এবং খুব শিক্ষনীয় একটি মোটিভেশন গল্প আমাদের উপহার দিয়েছেন। চেষ্টা করব আপনার গল্পটি মনে রাখার জন্য, এত সুন্দর একটি গল্প উপহার দেওয়ার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম
আমার এই মোটিভেশনাল গল্প টি যদি কারো কোনো উপকারে আসে তবে আমার সার্থকতা।তবে আপনার মন্তব্য পড়ে বুঝলাম পুরো গল্পটি আপনি খুব মনোযোগ সহকারে পড়েছেন।আসলে মোটিভেশনাল গল্প গুলেোজীবন চলার পথে অনেক বেশি কাজে লাগে।যেটা আমি প্রতিটি পদক্ষেপে ফলো করি।ভালোবাসা অবিরাম প্রিয় ভাইয়া।♥♥
বাহ্ চমৎকার একটি মোটিভেশনাল গল্প লিখেছেন। আমাদের নিজেদের জীবনের মূল্য কত। যদি সেই ছোট্ট পাথরের দাম সবজিওয়ালার কাছে কম। চাউলের দোকানে আরেকটু বেশি। স্বর্ণ অলংকার এর দোকান অনেক অনেক বেশি। কারণ তারা জানে এই পাথরটি ছোট হলেও এর মূল্য অনেক বেশি। ঠিক তেমনি আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। যা আমরা বুঝিনা নিজেদেরকে ছোট্ট অশিক্ষিত মনে করি। ঠিক সেই পাথরটির মতই। আমাদের জীবনকে আমরা যদি সেরকম জায়গায় নিয়ে প্রেজেন্ট করি। তাহলে মানুষ আমাদের মূল্যায়ন করবে। চমৎকার শিক্ষনীয় একটি গল্প। যা জীবনকে পাল্টে দিতে পারে। খুবই ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
আপনার চমৎকার মন্তব্যে আমি অনেক বেশি অনুপ্রেণিত হলাম।শুভ কামনা আপনার প্রতি।
ভালোবাসা অবিরাম♥♥
সত্যি আপু আমি নিজেও অনুপ্রাণিত হলাম মোটিভেশনাল গল্পটা পড়ে। সৃষ্টিকর্তা কাউকেই মেধা বা প্রতিভা ছাড়া সৃষ্টি করে নাই। শুধু আমার প্রতিভা কোথায় আছে এবং কারা আমার প্রতিভা টাকে বুঝতে পারে সেটা খুজে বের করতে হবে। এইগুলো শুনলে যেন নতুন করে অনুপ্রাণিত হয়।
সবজি এবং চাউল বিক্রেতা যেমন ঐ ডায়মন্ডের মূল্য বুঝেনি তেমনই আমাদের মূল্য যে সবাই বুঝবে ব্যাপার টা এমন না।।
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া।গুরুত্বহীন মানুষের কাছে আপনার গুরুত্ব ঠিক ততটুকুই থাকবে।যতটুকু জ্ঞানের পরিধি আছে তার।আপনাকে মেলে ধরতে হবে ঠিক বড় জায়গায় বড় মাপের মানুষের কাছে।যার জ্ঞান এবং উপলব্ধির পরিমাণ ব্যাপক।ছোট মানুষের মন মানসিকতা সব সময় ছোটই থাকে।এটা তার দোষ নয় এটা তার পরিবেশ তার পরিস্থিতি তার জ্ঞানের পরিসীমা।♥♥
ওয়াও! আপু। আপনার গল্পটি আমার জীবনের একটা সেরা উপদেশ হয়ে থাকবে। আসলেই ঠিক বলেছেন আমাদের অবস্থানভেদে নিজেকে রিপ্রেজেন্ট করা উচিত। তবেই আমরা সঠিক মূল্যায়নটা পাবো। কথাটা মনে থাকবে আপু। ধন্যবাদ আপনাকে আপু 😍🥰
আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।আমার এই গল্প যদি কারো জীবনে এতোটুকু কাজে লাগে সেটাই আমার সার্থকতা।♥♥