জেনারেল রাইটিংঃকোটা বিরোধী আন্দোলন।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

শুভেচ্ছা সবাইকে

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন?এই গরমে সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন,আশাকরি। সকলে ভালো থাকেন এই প্রত্যাশা করি।আজ ২৫শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ই জুলাই ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ ।আজ আপনাদের সাথে সাম্প্রতিক বিষয়ের উপর একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করবো। আশাকরি বরাবরের মত সাথেই থাকবেন।

p.jfif

source

বন্ধুরা, আষাঢ় মাস শেষের পথে। আষাঢের যে ঘনঘোর বর্ষার রুপ গত কয়েক বছরের ব্যবধানে তা দেখা যাচ্ছে। তুলনামূলক ঢাকায় বৃষ্টিপাত একটু কম হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। বন্ধুরা, আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে প্রতি সপ্তাহে একটি জেনারেল রাইটিং শেয়ার করার চেষ্টা করি। সেই চেষ্টার প্রয়াস আজকের লেখা। জেনারেল রাইটিং গুলোতে আমি সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত ঘটনা গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করি। তাই আজকের লেখার বিষয় কোটা আনন্দোলন।

২০১৮ সালে চাকুরী ক্ষেত্রে সব ধরণের কোটা বিলোপের প্রতিবাদে সাড়াদেশে দূর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে সরকার ছাত্রদের দাবী মেনে নেয়।সব ধরণের কোটা বিলোপ হয়ে যায়। সরকারি চাকুরীতে প্রকৃত মেধাবীরা নিয়োগ পেতে শুরু করে। যদিও ভাইভায় মামা-চাচা-মুরুব্বীদের প্রভাব কাজ করে বলে প্রচলিত আছে। তার পরে ভালোই চলছিল।কিন্তু হাইকোর্টের একটি রায় ছাত্রদের আবার রাজপথে নিয়ে আসে। উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর, সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় পরিপত্র জারি করে সরকারি চাকরিতে সব ধরণের নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত কোটাপদ্ধতি বাতিল করেন। কিন্তু সরকারের এই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাতজন চাকরি প্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের বিভিন্ন পর্যায়ের পর চুড়ান্ত শুনানিতে গত ৫ জুন বিজ্ঞ আদালত সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্র স্থগিত ঘোষণা করেন।


আদালত কর্তৃক পরিপত্র স্থগিত মানে সরকারি চাকরিতে কোটা পূর্ণ বহাল। সারা দেশের শিক্ষার্থীরা কোটা বিলোপের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিভোক্ষে ফেটে পড়েন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা,মিছিল, মিটিং, অবরোধ,বাংলা ব্লকেডের নামে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে।

সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন ধরণের কোটা বিদ্যমান। চাকরির ৫৬% কোটাধারীদের জন্য ররাদ্দ। এই ৫৬% এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা ৩০%। আন্দোলনকারীরা মনে করে ৫৬% কোটা বৈষম্য। প্রকৃত মেধারীরা তাতে বঞ্চিত হচ্ছে।সর্বোচ্চ ১০% কোটা বহাল থাকতে পারে। অনেকেই আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়ে বলছেন,পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ১০/১৫% কোটা বরাদ্দ করে এর একটি যৌক্তিক সমাধান জরুরি। আশাকরি কোটা বিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান হবে এবং আন্দোকারী শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যাবেন।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টজেনারেল রাইটিং
পোস্ট তৈরিselina 75
তারিখ৯ই জুলাই, ২০২৪ইং
লোকেশনঢাকা, বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। বর্তমানে গৃহিনী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি।স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা।এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

একটি সময়োপযোগী লেখা লিখেছেন আপু। সুন্দর করে সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

আপনার পোস্ট পড়ে বাংলাদেশের রিজার্ভেশন সম্পর্কে জানলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য কোটা বিষয়টা অবাকই লাগল। পিছিয়ে পড়া মানুষ বা যারা ট্রাইবাল, তাদের অনেক ক্ষেত্রেই কোটার প্রয়োজন আছে। কারণ তাদের মধ্যেও শিক্ষার আলো পৌঁছোনো দরকার। কিন্তু সেটা পড়াশুনোর ক্ষেত্রে হলেই ভালো। চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সবটাই সমান বিচারের আওতায় ফেললে পদটি মর্যাদা পায় বলে আমার ধারণা৷ সময়োপযোগী পোস্ট করলেন আপু।

 2 months ago 

আমারও তাই মত আপু।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

কোটা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের তাদের সুযোগ ও বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে সমতা ও ন্যয্যতার ওপর চরম আঘাত করা হয়েছে। আর এ ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে বিচার বিভাগ এও প্রমাণ করেছে নীতি নৈতিকতা ও যুক্তিসিদ্ধতার চর্চা থেকে কতটা অবনমন ঘটেছে।
সত্যিই দেশ ও জাতির জন্য তা বড় দুর্ভাগ্য।
ছাত্র সমাজ ও প্রগতিশীল, বুদ্ধিবৃত্তিক বোধে উদ্বুদ্ধ মানুষের চাপে ও প্রকাশ্য আন্দোলনে এর সুরাহা হবে - এ আশা করি।
মেধাবীরা মুক্তি পাক, জাতি তার ভবিষ্যতকে কালো হাতধারীদের থেকে রেহাই দিতে সামর্থ্য হোক - এ প্রত্যাশা রাখি।
বিষয়টি সামনে আনার জন্য ধন্যবাদ।

 2 months ago 

আমিও তাই প্রত্যাশা করি।ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

এই কোটা ব্যবস্থা আমাদের সমাজের এক ক্ষতচিহ্ন। ভারতবর্ষেও বিভিন্ন চাকুরী জগতে কোটার আধিক্য বিভিন্নভাবে ক্ষতি করে এসেছে। স্বাধীনতার পর থেকেই এই ক্ষত আমরা বয়ে বেড়াচ্ছি। প্যারামিটার হওয়া উচিত মানুষের যোগ্যতা এবং আর্থিক অবস্থা। কিন্তু যেখানে চাকরির মানদন্ড জাত এবং তার স্তরে বিবেচ্য হয় তখন কখনোই আমরা সেরা ফল পাই না।

 2 months ago 

ঠিক তাই যোগ্যতাই প্যারামিটার হওয়া দরকার।ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

 2 months ago 

এই কোটা বিরোধী আন্দোলন কার্যকর হলে অনেকেই বেঁচে যেতেন। অন্তত ফার্স্ট ক্লাস ,সেকেন্ড ক্লাস জব গুলোতে কোটা না রাখাই ভালো।সেখানে যোগ্যতার বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।তাছাড়া সব চাকরিতেই কোটা না রাখলে বাঙালি বেঁচে যেত।ধন্যবাদ সমসাময়িক বিষয়টি নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপু।

 2 months ago 

কোটাবিরোধী আন্দোলন যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। কিন্তু এর কোন সঠিক ফলাফল আজ পর্যন্ত দেখলাম না। পৃথিবী ধ্বংসের আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছে এ বিষয়টি সমাধান হবে না। এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়।

 2 months ago 

অবশ‍্যই বৈষম্য আপু। এই কোঠার জন্য অনেক মেধাবী চাকরি পাচ্ছে না কিন্তু ঠিকই তার থেকে কম মেধাবী রা চাকরি পেয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন কোঠা সিস্টেম নেই। হ‍্যা কোঠা থাক তবে সেটা পরিমিত পর্যায়ে থাক একেবারে ৫৬% এটা একেবারে অযৌক্তিক মেনে নেওয়ার মতো না।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59010.30
ETH 2515.57
USDT 1.00
SBD 2.45