জাতীয় পিঠা উৎসবে এক সন্ধ্যা।

in আমার বাংলা ব্লগ4 months ago

সবাইকে শুভেচ্ছা।

প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা,কেমন আছেন?আশাকরি সবাই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি । প্রত্যাশা করি সবাই ভালো থাকুন সবসময়। আজ ৬ই ফাল্গুন,বসন্তকাল ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ১৯ ই ফেব্রুয়ারি,২০২৪ খ্রীস্টাব্দ।

p-2.jpg

বন্ধুরা,গত ৩/৪ দিন ধরে বাসায় শব্দদূষণের যন্ত্রনায় ভুগছি।বাড়ীর সঙ্গে লাগানো রাস্তায় সুয়ারেজ লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। এক্সেভেটর সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আওয়াজ,শ্রমিকদের চিল্লা চিল্লিতে ত্রাহি অবস্থা। আরো ২/১ দিন সহ্য করা ছাড়া উপায় দেখছি না! শব্দ নিয়ন্ত্রণ করে কাজ করার সংস্কৃতি বা পরিবেশ কবে গড়ে উঠবে সেই চিন্তা করছি। আদৌ কি সে পরিবেশ গড়ে উঠবে? হয়ত একদিন সে পরিবেশে গড়ে উঠবে। বন্ধুরা,আমার বাংলা ব্লগের নিয়মিত ব্লগিংয়ে লাইফস্টাইল বিষয়ক পোস্ট শেয়ার করবো। প্রতিদিনেই কোন না কোন বিষয়ে পোস্ট শেয়ার করি। আমি চেষ্টা করি প্রতিটি পোস্টে ভিন্নতা আনতে। কতটুকু সফল আমি তা আপনারাই ভালো বলতে পারবেন।আমার আজকের ব্লগ পিঠাপুলির আয়োজন জাতীয় পিঠা উৎসব নিয়ে। আশাকরি ভালো লাগবে আপনাদের।

p-1.jpg

সুপ্রাচীন কাল থেকেই পিঠাপুলির প্রচলন আমাদের দেশে বিদ্যমান। পিঠাপুলি পছন্দ করেন না, এমন মানুষ খুব কম খুঁজে পাওয়া যাবে। হয়ত একেক জনের একেক পিঠা পছন্দ। কিন্তু পিঠা খেতে সবাই পছন্দ করেন। শীতকাল আসলেই গ্রাম গঞ্জে পিঠাপুলির ধুম পরে যায়। শীত আর পিঠা উৎসব যেন একে অপরের পরিপূরক। গ্রাম গঞ্জে পিঠাপুলির আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা ও কদর থাকলেও নগর জীবনে তেমন একটা চল ছিল না। ফাস্টফুড কালচার প্রজন্মের কাছে পিঠাপুলি ছিল অনাদরের। কিন্তু হাল সময়ে নগর জীবনে মানুষের খাদ্যাভাসে পিঠাপুলি বড় একটা জায়গা দখল করে নিয়েছে। যার প্রমাণ শীত আসলেই অসংখ্য পিঠাপুলির ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী দোকান। যা আপনার-আমার চারপাশে তাকালে দেখতে পাই! আর্থিক বিচারে বানিজ্য মূল্য কিন্তু কম নয়।আর নগরের সেই দোকান গুলোতে ভীড় দেখলেই বুঝতে অসুবিধা হয় না কতটা জনপ্রিয় এই পিঠাপুলি। আর এই পিঠাপুলির জাতীয় উৎসব হয়ে গেল জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির মাঠে।

p-3.jpg

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, জাতীয় পিঠা উৎসব পরিষদ ও শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে দেশের প্রতিটি জেলায় পিঠা উৎসব হয়ে গেল। জেলা গুলো তে তিন দিন ব্যাপী এই উৎসবের আয়োজন করা হলেও ঢাকার শিল্পকলা মাঠের আয়োজন ছিল ১০ দিন ব্যাপী। ৩১ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি। ৫০ টির বেশি স্টল নিয়ে বাহারি সব পিঠার আয়োজন।এবারের পিঠা উৎসবের প্রতিপাদ্য ছিল, 'মাছে ভাতে বাঙালি, ঐতিহ্যমন্ডিত পিঠাপুলি, রন্ধন আর পিঠার বাহারে শিল্পী আছে ঘরে ঘরে’।

p-4.jpg

পিঠা কত প্রকার ও কি কি এই মেলায় না আসলে বুঝতে পারতাম না।এত এত নাম জানা আর অজনা বাহারি সব পিঠা। দেখে আমি মুগ্ধ।শুধু দেখেছি নয়,খেয়েছিও। স্টল গুলো ছিল বাঁশ ও খড়ের তৈরি দৃষ্টি নন্দন।যেন এক খন্ড গ্রাম বাংলা। প্রতিটি স্টলে ভীড় ছিল উপচে পড়া। কয়েকজন স্টল কর্মীর সাথে কথা বললে জানলাম, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে।সাপ্লাই দিতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে তাদের। আসলেই তাই। এত ভীড় যে স্টলে পৌঁছে পিঠা অর্ডার করতেই সমস্যা হচ্ছিল আমার।শুধু বাড়ী থেকে বানানো পিঠা নয়,প্রায় প্রতিটি স্টলেই পিঠা তৈরি করে গরম গরম পরিবেশন করছেন ক্রেতাদের।

p-5.jpg

শুধু পিঠা খাওয়া আর দেখা নয়! প্রতিদিনেই ছিল, পিঠা নিয়ে আলোচনা আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া আয়োজকদের বিচারে পিঠার গুণগত মান,ঐতিহ্য ও নতুনত্বের জন্য পিঠা কারিগরদের পুরস্কারের ব্যবস্থা। বেশ জমজমাট ছিল এবারের পিঠা উৎসব।খুব ভালো একটা সন্ধ্যা কাটিয়েছি সেদিন। আর হ্যাঁ পিঠি পুলি নিয়ে এই উৎসব গত ১৬/১৭ বছর ধরে নিয়মিত আয়োজন করে আসছে আমাদের জাতীয় শিল্পকলা একাডেমী। তাদের অভিবাদন।

পোস্ট বিবরণ

পোস্টবিবরণ
শ্রেণীলাইফ স্টাইল
ক্যামেরাSamsung A10
পোস্ট তৈরি@selina75
তারিখ১৯ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪
লোকেশনঢাকা,বাংলাদেশ

আমার পরিচয়

আমি সেলিনা আখতার শেলী। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী। জন্ম,বেড়ে ওঠা চট্রগ্রাম শহরে। চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স-মাস্টার্স। দীর্ঘ দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেছি। স্বামীর বাড়ী দিনাজপুরে,বর্তমানে ঢাকায় থাকি।ঘুরে বেড়ানো,বই পাড়া,অজানাকে জানা,নিত্য নতুন রান্না ও বিভিন্ন ধরণের হাতের কাজ করা আমার শখ।দেশাত্ববোধ,দেশীয় শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমার অন্যতম ভালো লাগা। এদেশে জন্মগ্রহণ করে আমি গর্বিত।

সাথে থাকের জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 4 months ago 

শীত এলেই পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায় বাঙালির ঘরে ঘরে ৷ পিঠাপুলি পছন্দ করে না এমন মানুষ আসলেই খুজে পাওয়া যাবে না ৷ জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির মাঠে বেশ ভালোই পিঠা উৎসব লেগেছে তাহলে ৷ অনেক ধরনের পিঠাপুলি নিয়ে পিঠার উৎসব , আপনি সেই মেলায় গিয়ে দারুণ কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন জেনে ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে , জাতীয় পিঠার উৎসবে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ৷

Posted using SteemPro Mobile

 4 months ago 

শীতকাল মানেই পিঠা পুলির উৎসব।জাতীয় পিঠা উৎসবে গিয়ে বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আপু।হরেক রকমের পিঠা নিয়ে হাজির হয় বাঙালিরা এই উৎসবে।দারুন লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ আপু সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 66227.96
ETH 3571.65
USDT 1.00
SBD 3.14