রবিবাসরীয় সকাল থেকে সন্ধ্যা!

খানিক আগেই বাড়িতে প্রবেশ করলাম, এখন ঘড়ির কাঁটায় ভারতীয় সময় বলছে ছয়টা বেজে উনচল্লিশ মিনিট!
পায়ের পাতা সহ পায়ের তালু জ্বালা করছে! খানিক ল্যাপটপ নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি, তেমন ভাবে লেখা লিখে উঠতে পারছি না, একদিকে অপরদিকে সম্পূর্ণ দিক সামাল দিতে গিয়ে হিমসিম অবস্থা।



আজকে অনেক বছর বাদে আমি আর আমার বড় মামা একসাথে গিয়েছিলাম আমার সেই মাসতুতো দাদার নতুন বিল্ডিং তৈরির স্থানে।
অনেকবার দাদা আজকে যাবার কথা আগে থেকেই বলে রেখেছিলো, এর আগেও বহুবার যাবার কথা বললেও ইচ্ছে থাকলেও উপায় হয়নি।
আজকে নতুন বিল্ডিং এর আরেকটি ছাদ ঢালাই ছিল, সেই উপলক্ষে খাওয়া দাওয়া সাথে ঘরের বাইরে বেরোনো, পাশাপশি ঠাকুরের জন্য ফল কেনার ছিল।
বিষয়টি হলো এর আগেও আমি দাদার বিল্ডিং এর জায়গায় গিয়েছি কিন্তু প্রতিবার বাসে করেই যাওয়া হয়েছে, যেহেতু বিল্ডিং একেবারে মেইন রাস্তা লাগোয়া।
কেবলমাত্র একবার ট্রেনে করে ফিরেছিলাম। এবার মামা বলেছিল ট্রেনের কথা কাজেই ভাবলাম এবার যাত্রাপথ পরিবর্তন করা যাক।
আমাকে মামা গতকাল ফোন করে জানিয়েছিল আজকে বেলা এগারোটা চব্বিশ মিনিট এর ট্রেন ছাড়বে মামার বাসস্থান থেকে, আমি সেইমত তৈরি হয়ে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে গিয়েছিলাম।
যেই ট্রেনের কাউন্টারে টিকিট চাইলাম, ভদ্রমহিলা জানালেন ট্রেন দুপুর একটায়!
আমি মামাকে ফোন করলাম, উনি জানালেন ওখান থেকে ট্রেন অ্যানাউন্স করে দিয়েছে।
আমিও সেইমত যাওয়া আসার টিকিট কেটে নিয়ে প্ল্যাটফর্ম বদলে, মনে হলো দাদাকে ফোন করি।
যেই ফোন করলাম সেই জানলাম মামার দেওয়া তথ্য ভুল, গেলো মাথা আগুন হয়ে!
এরপর অন্য ট্রেন ধরে খানিক গিয়ে তারপর ট্রেন বদলে, এরপর দুবার আটো পাল্টে অবশেষে পৌঁছলাম গন্তব্যস্থলে।
মামা এদিকে ভয়ে বার বার করে বলছিলেন আজ রবিবার তাই ট্রেন বাতিল হয়েছে, আসলে ঠিকমতো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন নি, তার উপরে আমার থেকে খেয়েছে সেই বকুনি!
আমার দাদাও রেগে গিয়েছিল, কারণ উনি যদি দাদাকে ফোন করে বিষয়টি জানাতো, তাহলেও এই রকম সমস্যায় পড়তে হতো না।
আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্তু অতিরিক্ত সবকিছুই বিপদ বয়ে আনে!

আজকে আড়াই হাজার স্কয়ার ফিট ছাদ ঢালাই হয়েছে, কাজেই লিফট নিয়ে আসা হয়েছিল।
আমি মামাকে বলছিলাম, এখন কত সুবিধা হয়ে গেছে, আগে কত বেশি পরিশ্রম করতে হতো এই শ্রমিকদের উঁচু বিল্ডিং এর কাজ করতে যখন এই সমস্ত যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি।

আজকে দুপুরে নিমন্ত্রিত ছিলেন মুষ্টিমেয় মানুষ, আর সাধারণ বাঙালি খাবার ছিল, যেমন, ভাত, শুক্ত, মাছের মাথা দিয়ে ডাল, বেগুনি, চিংড়ি মাছ দিয়ে পুঁইশাক, স্যালাড, কাতলা মাছের কালিয়া, কড়াই চিকেন, চাটনি, পাপড়, দই।
খাওয়া দাওয়া পৌঁছনোর অনেক পরেই করেছিলাম মামা, দাদা, আমি, দাদার ছেলে, তার বন্ধু সব একসাথে।
এরপর, উপরে গিয়ে ছাদ দেখে আসলাম, তবে পুরোটা উঠে দেখতে পারিনি কারণ ঢালাইয়ের পরে সেগুলোর ফিনিশিং এর কাজ চলছিল।
খানিক অফিস রুমে বসে অতীত রোমন্থন করে, ট্রেন এর সময় দাদা দেখে দিলো, তারপর বিদায় নিয়ে মামা আর আমি ফেরার ট্রেন ধরলাম।
ভাইরে ভাই, কি ভিড়! যাবার সময় একেবারে ফাঁকা ছিল ট্রেন, মনে মনে ভাবলাম এরা যাবার সময় কোথায় ছিল?
পুরো রাস্তা ট্রেনে দাড়িয়ে থেকে ধাক্কা গুতো খেতে খেতে ফিরতে হয়েছে, তার উপরে দাদা ফোন করেই চলেছে!
আমি লেডিস কম্পার্টমেন্টে আর মামা জেনারেল এ উঠেছিলাম।
আমার স্টেশন আসার আগের স্টেশনে ফোন করে জানালাম প্রচণ্ড ভিড় পরে কথা বলবো।
ট্রেন থেকে নেমে, মামাকে পেলাম দেখতে বিদায় জানিয়ে আমি ঠাকুরের ফল কিনলাম।
![]() | মৌসম্বী লেবু |
---|---|
কাঁঠালি কলা | ![]() |
![]() | বেদানা |
আপেল | ![]() |
![]() | শসা |
আঁশ ফল | ![]() |
![]() | পেয়ারা |
কলা, আপেল, বেদনা, শসা, পেয়ারা, মৌসম্বী লেবু, আর আঁশ ফল দেখে খানিক কিনে নিলাম, ভীষণ দাম ৪০০ টাকা কিলো!

এরপর মুদির দোকান থেকে বাসন মাজার সাবান আর ঝুড়িভাজা কিনলাম সাথে এক প্যাকেট বিস্কুট আর খানিক টাকা তুলে হেঁটে ফিরলাম।
ঘরে ঢুকে বুঝলাম আর শরীরে জোর নেই, ভীষণ ক্লান্ত লাগছে, তবে লেখা শেষ না করে বিশ্রাম নেবো না, ঠিক করেছি, তাই আজকের রবিবাসরীয় সকাল থেকে সন্ধ্যা আপনাদের মাঝে তুলে ধরে খানিক বিশ্রাম নেবো কারণ এরপর আবার কাজে লেগে পড়তে হবে।
সব মিলিয়ে দিনশেষে সবকিছু মিটিয়ে ঘরে ফিরতে পেরেছি এটাই বড় বিষয়।


😱 I have never taken a train in India, thanks for sharing what it actually looks like inside. My husband loves the fans on the ceiling, he wants to decorate our house like this 🙂
0.00 SBD,
3.19 STEEM,
3.19 SP
Thank you 🙏 Love your signature 🇮🇳
লেখাটা পড়ে মনেহলো সত্যিই আপনি আজ ক্লান্ত দিদি। শব্দগুলো ঠিক মিলেনি। প্রাঞ্জলতা কম। আপনার লেখা আমি গোগ্রাসে গিলে ফেলি। মাধুর্য থাকে। প্রাণবন্ত হয়। আজ এসবের উপস্থিতি কম মনে হলো।