Follow what you believe! মন সায় দিলেই সেই কাজ করা উচিত।
আজকের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছি বেশ কিছু বর্তমান অভিজ্ঞতার নিরিখে।
যেকোনো কাজ ভালো নাকি মন্দ, আমাদের অনুসরণ করলে কিছু শেখার অথবা ভবিষ্যতের জন্য সেগুলো কতখানি কার্য্যকর তার উপরে নির্ভরশীল।
আমি জীবনে যেকোনো কাজে লেগে থেকে সেখান থেকে শেখার প্রয়াস করি, এর পিছনের কারণ কেবলমাত্র উপার্জন নয়, বরং সাথে কিছু মানুষের সেই বিষয়ের প্রতি আগ্রহের কারণ জানতেও, আবার কিছুটা সুপ্ত আশা নিয়ে হয়তো একটা নতুন পথ যেখানে থেকে নিজের প্রয়োজনের কিয়দংশ মিটবে!
তবে, সত্যি বলতে বিগত একমাসে পড়ার অভ্যেসের কারণে দুটো বিষয় উপলব্ধি করেছি এবং তার নিরিখে আমি এই কাজ করা মানুষদের দুটি ভাগে বিভক্ত করেছি।
প্রথম শ্রেণী :- যারা কাজটিকে একটা ছিপে রাখা চারার মত ব্যবহার করে নিজেদের টেলিগ্রামের ইউজার বৃদ্ধি করছে, কারণটা সকলের জানা ইউটিউব তথা ফেসবুক এর মত এখানে চ্যানেল থেকে বাড়তি উপার্জন করছেন, পারস্পারিক নিজেদের ইউটিউব চ্যানেল এর উপার্জন বৃদ্ধি করে কিছু মানুষদের বোকা বানিয়ে নিজেরা উপার্জন করছেন।
দ্বিতীয় শ্রেণী:- একাধিক একাউন্ট টেলিগ্রামে খুলে, পরিচিত সকলকে উপার্জনের বিশাল স্বপ্ন দেখিয়ে এখানে রেফারেল হিসেবে ব্যবহার করে, নিজেরা তাদের মাধ্যমে টার্গেট পূরণ করছেন।
(জল পদ্ম কাদায় প্রস্ফুটিত হয়, তৎসত্ত্বেও পূজিত! নিজেদের শিক্ষাকে সঠিক পথে পরিচালিত করলে, শুরু যেখানেই হোক শেষটা সবসময় সুমধুর হয়।) |
---|
বিষয়টি বুঝে যাবার পর আমার অন্তরাত্মা সায় দেয়নি একেবারেই, কারণ যে কাজে ভবিষ্যত নেই, একপ্রকার জুয়ায় সামিল, মাসের পর মাস আশায় বুক বেঁধে অনেক সময় ব্যয় করে যে পরিণতি দেখেছি অনেক মানুষের সেটা শুধু নিরাশা ছাড়া কিছুই বয়ে নিয়ে আসে না।
আমরা সকলেই জানি সময় চলে গেলে সেটা কোনো মূল্যেই ফেরত পাওয়া যায় না, যদি সেটাই হয়, আর যদি কেবলমাত্র উপার্জন লক্ষ্য হয় তাহলে বোধহয় সেই জায়গায় কাজ করা অনেক শ্রেয়, যেখানে উপার্জন সল্প হলেও সেই সময়ের এবং উপার্জনের ভবিষ্যত আছে।
যেহেতু, ব্লকচেইন তথা ক্রিপ্টো দুটি বিষয় আমার কাছে একেবারেই নতুন তাই প্রয়োজনের পাশাপশি শেখার একটা সদিচ্ছা সবসময় আমার মাথায় কাজ করে।
তবে, আজ যে বিষয়টির কথা বলছি সেটা অনেকেই হয়তো বুঝেছেন, তবে যারা বুঝতে পারেনি তাদের জন্য জানাই, এটি একটি এমন ফাঁদ, যেখানে মানুষ না চাইলেও আসক্তিতে পড়তে বাধ্য হয় কারণ একটা কাজের সাথে অনেক জাল অন্তর্নিহিত থাকে এর ভিতরে।
গতমাসে যেহেতু আমি কিউরেশন এ ছিলাম না, সেই সময়টা এই বিষয় সম্পর্কে জানতে ভিতরে ঢুকে কিছু পড়াশুনা করে যে বিষয়টি উপলব্ধি করেছি, সেটাই আজকে লেখার মাধ্যমে তুলে ধরছি।
ধরুন আপনি একটা লটারির টিকিট কেটেছেন, ভাগ্যচক্রে সেটা আপনার একবার বেধে হয়তো একটা সাময়িক অর্থ আপনি পেয়েছেন, পরের দিন আপনার ইচ্ছে করবে, আরেকবার প্রয়াস করতে।
(নিজের আদর্শ কোনো মূল্যেই যেনো দিকভ্রান্ত না হয়, কিছু সুবিধাবাদীদের কারণে) |
---|
আর, ঠিক এই ভাবেই নিজের অজান্তে একদিন দেখবেন, আপনার আয়ের চাইতে ব্যয় অধিক হয়েছে, সেটা সময় তথা অর্থ উভয় ক্ষেত্রেই।
এখানে অনেক কাজ সম্পন্ন করতে টন নামক টোকেন কিনতে হয়, এখন একবার ভেবে দেখুন, যে পরিমাণ ব্যাক্তি এই মাইনিং আসক্তির অন্তর্ভুক্ত তাদের সামান্য পেতে বছরান্তে কত ব্যয় হয়েছে, আর যারা নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেল তথা ইউটিউব এ সেই টন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইউজার দের ভিডিও দেখতে আকর্ষিত করছেন, তাদের নিজেরা কি পরিমান উপার্জন করছেন!
সকলেই যে টন পাবেন এমন কোনো বিষয় নয়, এখানেও লটারি!
এরপর নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেল এর ইউজার থেকে মাইনিং এর নামে বাড়তি উপার্জন তো আছেই।
কাজ দুপ্রকারের হয়, একটি যেটিতে সম্মান এবং মানসিক শান্তি আছে, হয়তো একলাফে সেখানে গাছে ওঠা সম্ভব নয়, তবে ধৈর্য্যের ফল মিষ্টির মত একটা ভবিষ্যত আছে।
আরেক ধরনের কাজ যেখানে আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় আমরা আসক্তির কারণে নষ্ট করে নিজেদের মানসিক শান্তি ব্যাহত করছি, আর সেই সুযোগে একদল নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে।
পরিশেষে যে শিক্ষা নিয়ে আমি এই মাইনিং থেকে সমাপ্তি ঘোষণা করছি সেটা হলো, এমন কোনো কাজে আমি নিজেকে সামিল করতে রাজি নই, যেখানে মনের সায় নেই।
বাকিদের বিষয় জানিনা তবে, আমার নিজের শিক্ষা এবং আদর্শ যেখানে বিঘ্নিত হবে, সেখানে আমি নেই।
বিশেষ করে যখন এখানের অভ্যন্তরীণ ছল চাতুরী আমার কাছে সুস্পষ্ট।
ব্যক্তিগতভাবে লটারি কাটার অভিজ্ঞতা না থাকলেও, এরকম অনেক মানুষকে দেখেছি বা অনেক মানুষের গল্প শুনেছি, লটারি কাটার ফলে যাদের জীবন প্রায় শূন্যে এসে দাঁড়িয়েছে।
আপনি একেবারেই ঠিক বলেছেন, মাইনিংটাও এমনই একটি নেশা যেটাতে আসক্ত হওয়া খুব সহজ, কিন্তু সেই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা অনেকটাই কঠিন। বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন এই কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন তাদের জন্য।
আপনার মতন হয়তো আমি এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করিনি, তবে স্বল্প দিনের অভিজ্ঞতায় এটুকু বলতে পারি, এই কাজে সময় কোথা দিয়ে ব্যয় হয় তা বোঝা তো কঠিন বটেই, এমনকি নিজের মূল লক্ষ্য থেকে দ্রিকভ্রান্ত হবার জন্য এই ধরনের কাজ যথেষ্ট। তবে এই কাজের ফলাফল একদমই শূন্য।
অনেকের ক্ষেত্রে বিষয়টা ওই লটারি কাটার মতোই, একবার বেশ কিছু অর্থ রোজগার করে নেওয়াতেই, এই মাইনিং এর নেশা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনতে পারছেন না। তারা হিসেব করতে ভুলে যাচ্ছে যে, যে পরিমাণে সময় তারা এখানে নষ্ট করছেন, আদেও সেই পরিমাণ অর্থ কি এখান থেকে উপার্জিত হচ্ছে?
তবে এই নেশা এখনো আপনাকে ও আমাকে আসক্ত করতে পারেনি, এটাই সবথেকে বড় কথা। আপনার অভিজ্ঞতার নিরিখে লেখা কথাগুলো পড়ে আরও একবার সতর্ক হতে পারলাম, তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন ম্যাম।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Congratulations on bringing a quality content. You have earned a positive vote from team 2, and it is delivered by @starrchris.
Many Blessings...🙏🏻