SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 43]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : Fulfilled


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ৪০


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


চন্ডের অবশ্য কোনদিকে খেয়াল নেই । হননেচ্ছায়, রক্তের নেশায় সে এখন উন্মত্ত প্রায়। তার দুই চক্ষু ভয়ঙ্কর জিঘাংসায় বিস্ফারিত । বিশাল খাঁড়াটা মাথার উপরে তুলে সে কমলাদেবীর ঘাড় লক্ষ্য করে গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে কোপ মারতে উদ্যত হলো । কমলাদেবী নিঃসাড় অবস্থায় হাঁড়িকাঠে গলা দিয়ে পড়ে রয়েছেন । তাঁর দুই চোখের পাতা বন্ধ । মাটিতে কাপালিক যে অবস্থায় পড়েছিলো সেই অবস্থায় ভীত চোখে চন্ডের দিকে তাকিয়ে রয়েছে । আর কাপালিকের দুই অনুচর পাথরের মতো স্থাণুবৎ দাঁড়িয়ে । তাদের মুখমন্ডলের একটি রেখাও কাঁপছে না । মুখ দেখে তাদের মনের অবস্থা কোনোভাবেই অনুমান করা যায় না ।

চন্ডের খাঁড়া সবেগে নেমে এলো কমলাদেবীর গলা লক্ষ্য করে । হঠাৎ, বাতাসে একটা শাঁই-ই-ই-ই করে শব্দ উঠলো । বাতাস কেটে কিছু একটা ছুটে এলো চন্ডের দিকে । পরমুহূর্তেই চন্ডের খাঁড়া মাঝপথেই থেমে গেলো । "আঁককক ...." করে একটা শব্দ করে খাঁড়াটা হাত থেকে ফেলে দিলো চন্ড । তারপরে দুই হাত দিয়ে নিজের গলা চেপে ধরে কাঁপতে কাঁপতে মাটিতে বসে পড়লো সে।

মশালের কাঁপা স্তিমিত আলোয় দেখা গেলো বিশাল একটা ত্রিশূল চন্ডের গলা এফোঁড় ওফোঁড় করে বিঁধে তির তির করে কাঁপছে । অন্ধকার থেকে বাতাস কেটে এই ত্রিশূলই এসে আমূল গেঁথে গিয়েছে চন্ডের গলায় । চন্ডের চক্ষুদ্বয় বিস্ফারিত, শ্বাস নিতে পারছে না সে । ত্রিশূলের ফলা বেয়ে রক্তের ধারা গড়িয়ে ধুলোর উপর পড়ছে । টপ টপ করে ফোঁটায় ফোঁটায় রক্ত পড়ে ধুলোয় জমাট বেঁধে দলা পাকিয়ে যাচ্ছে । চন্ডের দুই পা তীব্র যন্ত্রণায় ভীষণভাবে কুঁকড়ে যাচ্ছে । মৃত্যু যন্ত্রনা একেই বলে হয়তো, চন্ড বুঝতে পারছে । গলা দিয়ে মৃত্যু আর্তনাদও বেরোতে পারছে না তার, শুধু "গোঁ গোঁ" করে একটা অবরুদ্ধ বিকৃত স্বর কোনোরকমে বের হচ্ছে।

ধুলোয় বসে থাকা কাপালিক দারুন বিস্ময়ে এ কান্ড প্রত্যক্ষ করলো । একের পর এক ঘটনার অভিঘাতে তার সাধারণ বোধ-বুদ্ধি লোপ পাওয়ার পথে । আর তার দুই সঙ্গী চন্ডের অবস্থা দেখে তিলমাত্র দেরি না করে অন্ধকারে ঝাঁপ দিয়ে মিলিয়ে গেলো ।

ধীরে ধীরে জমাট বাঁধা আঁধার থেকে মশালের আলোর বৃত্তে এসে দাঁড়ালো এক দীর্ঘকায় পুরুষ । রোষকষায়িত নেত্রে সে চেয়ে আছে চন্ডের মৃত্যুযন্ত্রণাকাতর কুঁকড়ে থাকা মুখের পানে । ধুলায় বসে হতবাক হয়ে কাপালিক চেয়ে রইলো এই প্রচন্ড শক্তিমান পুরুষমূর্তির দিকে । আর চন্ড খাবি খেতে খেতে হাঁ করে তাকিয়ে রইলো সামনে দাঁড়ানো মূর্তির মুখপানে । তার দু'চোখের কোণে এখন রক্ত জমছে, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে । তবুও তার সেই প্রায়ান্ধ দৃষ্টি দিয়ে সে চিনতে পারলো সামনে দাঁড়ানো মূর্তিটাকে ।

কাপালিক প্রচন্ড ভয়ে বোবা হয়ে গেছে, গলা দিয়ে তার কোনো স্বর বেরোচ্ছে না । সে একভাবে তাকিয়ে আছে দীর্ঘকায় পুরুষটির মুখপানে । হ্যাঁ, কোনোও সন্দেহ নেই, সে যার ভেক ধরে রয়েছে ইনিই সেই শ্মশানের কাপালিক - "ভৈরব কাপালিক" !

প্রচন্ড ক্ৰোধে ভৈরব কাপালিকের মুখ আরক্ত । একটা হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন তিনি, "রে পাপিষ্ঠ নরহন্তা পাষন্ড কুক্কুরেরা ! এই তোদের দুর্মতি ? আজ দেখি কে তোদের বাঁচায় এই ভৈরব কাপালিকের হাত থেকে ? এই মুহূর্তে আমি তোদের প্রাণদণ্ড দিলাম ।"
[চলবে]

Sort:  
 2 months ago 

বাহ্! অবশেষে তাহলে কমলাদেবী বেঁচে গিয়েছে। চন্ডের অবস্থার কথা ভেবে তো হাসি পাচ্ছে। একেবারে উচিত শিক্ষা হয়েছে চন্ডের। ভৈরব কাপালিক যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছে বলেই সবকিছু সম্ভব হয়েছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

 2 months ago 

যাক, অবশেষে তাহলে কমলাদেবী বেঁচে গেল। বাহ, দারুণ উপভোগ করলাম ভাই এ পর্বটি। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য।

 2 months ago 

উফ! বেশ উৎকণ্ঠা নিয়ে আজকের পড়াটা শুরু করেছিলাম। যদিও হ্যাংআউটের সময় একটু আন্দাজ করেছিলাম, কমলাদেবী বেঁচে যাবেন। কিন্তু আন্দাজ করতে পারছিলাম না, কে আসবে কমলাদেবীকে বাঁচাতে, কে সেই ব্যক্তি? অবশেষে সেটা প্রকাশ পেলো। দারুণ লেগেছে আজকের পর্বটি দাদা।

 2 months ago 

কাপালিক তাহলে আসল ছিলো না। এ জন্যইতো প্রথমে এই ভয়ঙ্কর কাজ করতে রাজি হয়েছিলো। কিন্তু চন্ডের পরিণতি দেখে ভালো লাগলো। যাক কমলাদেবীকে তাহলে বাঁচিয়ে দিলেন দাদা। বেশ কষ্ট পেয়েছে এত দিন। আসল কাপালিক এর হাত থেকে এদের এখন কে বাঁচবে। অনেকদিন পর গল্পটি পড়ে আরো ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65733.39
ETH 3506.40
USDT 1.00
SBD 2.51