SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 28]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 909.655 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ২৭


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


ধীরে ধীরে শ্মশানের খুব কাছে চলে এলেন তাঁরা । এতটা পথ উঁচু নিচু, এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা পার হয়ে এসে ক্লান্তিতে কমলাদেবীর সারা শরীর ভেঙে আসছে । পা'দুখানিতে যেন এখন মনখানেক ওজন বেঁধে দিয়েছে কেউ। মেঠো রাস্তার দু'ধারের ধান কেটে নেওয়ার পরে যে খড়ের গোছা থেকে যায় জমিতে সেই খড়ের গোড়ার ধারালো খোঁচায় দুটি পায়ের গোড়ালিই ক্ষত-বিক্ষত । তবে, কমলাদেবীর সব চাইতে বেশি ভয় করছে নরমাংসভূক শেয়ালের পাল দেখে । কী হিংস্র তাদের আগুনে চোখের রক্ত জল করা চাউনি ! মানুষকে তারা মোটেও ভয় করে না বোঝাই যাচ্ছে তা। কারণ দীর্ঘকাল ধরে মানুষের মাংসেই তারা ক্ষুন্নিবৃত্তি করে আসছে ।

মাঠ অবশেষে শেষ হয়ে এলো । একটা ছোট্ট খাল সামনে । খালের ওপর একটা নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো । তাঁরা অবশ্য সাঁকো পার হওয়ার চেষ্টা করলেন না । একে অমাবস্যার অন্ধকার রাত, তায় আবার কমলাদেবীর গর্ভিনী ভারী শরীর, তাই তাঁরা বাঁশের সাঁকোটি বাঁয়ে রেখে একটুখানি ঘুরে একটা বাঁশবনে প্রবেশ করলেন । বাশঁবনটা পার হলে এখানে খাল শুকিয়ে গিয়েছে । সহজেই পার হওয়া যাবে ।

বাঁশ বাগানে ঢোকার কথায় কমলাদেবী বেশ ভয় পেয়ে গেলেন । কী অন্ধকার ভেতরটা ! তারপরে আবার ভূত-প্রেতের যেমন ভয় আছে ঠিক তেমনই ভয় আছে সাপ-খোপ আর শেয়ালের । সাথে সাথেই ভয়ে তাই তাঁর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো । কিন্তু, এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই । বাঁশবাগানে না ঢুকে পুরো খালটা ঘুরে শ্মশানে পৌঁছতে প্রচুর পথ হাঁটতে হবে ।

একটুক্ষণ চোখ বুজে নিজেকে ধাতস্থ করে নিলেন কমলাদেবী।এরপরে মনে মনে নিজের ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করে পা বাড়ালেন অন্ধকার গা ছম ছমে বাঁশবনের গভীরে । বাঁশবনের ভিতরে অন্ধকার চাপ চাপ জমাট বেঁধে রয়েছে, সাধ্য কি সেই অন্ধকারকে ছিন্ন করে চন্ডের হাতের ছোট্ট মশালটি ! চন্ডের পেছন পেছন অন্ধের মতো অনেকটা হাতড়ে হাতড়ে সেই ভীষণ অন্ধকারময় বাঁশবন পার হতে লাগলেন কমলাদেবী ।

হু হু করে ঝোড়ো বাতাস বইছে বাঁশবনে । সেই হাওয়ার শব্দ শোঁ ওও ও.....শোঁ ওও ও..... করে অদ্ভুত একটা আওয়াজ তুলছে বাঁশের পাতায় পাতায় ঘষা লেগে । প্রচুর শেয়াল ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর থেকে থেকে খ্যাঁক খ্যাঁক করে কেমন অদ্ভুত স্বরে ডাকছে । বেশ একটা গা ছমছমে পরিবেশ । স্নায়ুর উপর যথেষ্ঠ চাপ সৃষ্টি করে ।

একটানা ঠিক কতক্ষণ ধরে বাঁশবনের মধ্যে হেঁটেছিলেন কমলাদেবী তা ঠিক ঠাওর করতে পারলেন না তিনি । অবশেষে অকস্মাৎ সামনের আঁধারটা বেশ তরল হয়ে আসছে দেখতে পেলেন । সেই সাথে বাঁশবনের সেই শোঁ শোঁ একটানা হাওয়ার শব্দটিও আর শোনা যাচ্ছে না এখন । সামনের দিকে ঘুরঘুট্টি আঁধার, তাও কমলাদেবী টের পেলেন যে তিনি শ্মশান ভূমিতে প্রবেশ লাভ করেছেন । মশালের অস্পষ্ট আলোয় ঝোপে ঝাড়ের আড়ালে একটা দু'টো ভাঙা মাটির হাঁড়ি-কলসি, মানুষের হাড়ের টুকরো আর মড়া-পোড়ানো কাঠ-কয়লা দেখা যাচ্ছে ।

সহসা কমলাদেবীর শিরদাঁড়া বেয়ে বরফ-শীতল একটা ভয়ের স্রোত নেমে গেলো । হঠাৎ, থমকে দাঁড়িয়ে পড়লেন তিনি ।

[চলবে]

Sort:  
 6 months ago 

কি ভয়ানক রাস্তা দিয়ে কমলাদেবীকে শ্মশান পর্যন্ত নিয়ে গেলো চন্ড। কমলাদেবীর জন্য আসলেই খুব খারাপ লাগছে। আর চন্ডের উপর খুবই মেজাজ খারাপ হচ্ছে। চন্ডের মনে তো দেখছি তিল পরিমাণে দয়ামায়া নেই। সব শয়তান একসাথে হলে যা হয় আর কি। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 6 months ago 

বাববাহ অবশেষে পৌঁছেছে কমলাদেবী।এই রাস্তার বর্ণনা পড়েইতো অবস্থা খারাপ আর কমলাদেবী ওখান দিয়ে গেলো। পৌছেইবা লাভ কি বেঁচে ফিরতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

 6 months ago 

এমনভাবে এসে এই পর্বটা শেষ করলেন ভাই, যেন আমি নিজেই থমকে গিয়েছি। পুরোপুরি লেখার ভিতরে ডুবে গিয়েছিলাম। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য, কৌতূহল অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।

 6 months ago 

ভয়ংকর একটা পরিবেশ তৈরী করেছে আজকের পর্বটি, পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিলো আমিও ঘামতে শুরু করেছি। গা শির শির করে উঠেছে, কিন্তু তারপর কি হলো? জানার অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

 6 months ago 

এখন ই বোধহয় সেই আসল মূহুর্তটা আসবে!যে মূহুর্তে কমলাদেবীর কোনো বড় ক্ষতি হয়তো করে দেবে!

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62589.43
ETH 2437.01
USDT 1.00
SBD 2.65