SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 23]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 648.187 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ২২
Copyright Free Image Source : PixaBay
একটু পরেই গাঁয়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সবাই একে একে এসে জমিদারবাবুদ্বয়ের কুশল জিজ্ঞেস করে ফরাসের ওপর বসতে শুরু করলেন । এখন রাতের প্রথম প্রহর । পুজো শুরু হবে মাঝ রাত্রে । বলি শুরু হবে শেষ রাত্রে । গাঁয়ের সবাই আজ সারা রাত জাগবে । পুজো শেষ হতে হতে ভোর হয়ে যাবে । তারপরে পুজোর প্রসাদ বিতরণ পর্ব শুরু হবে । আর তার কিছুটা পরেই শুরু হবে মহাভোজ । জমিদার বাবুর দীঘি থেকে প্রকান্ড প্রকান্ড রুই-কাতলা ধরা হয়েছে । বলির ১০৮ টা পাঁঠার মাংস রান্না হবে। লুচি, দই-মিষ্টি সব মিলিয়ে এক এলাহী আয়োজন ।
ঠাকুরমশাই এসে গিয়েছেন এরই মধ্যে । নিজের হাতে পুজোর আয়োজনে সাহায্য করছেন । হোমের জিনিসপত্র, পুস্পাঞ্জলির ডালি সব কিছুই নিজে তদারকি করছেন । কালী পুজোয় ভুল হওয়ার জো নেই কোনো, ভুল হলেই ঘোর বিপদ ।
কিছুক্ষণ পরে অবশেষে ভূপতিবাবুর দুই উৎসুক চোখ খুঁজে পেলেন নিজের ছেলে-মেয়ে দু'টিকে আর সেই সাথে গিন্নীকেও । সাদা লাল পেড়ে গরদের শাড়ি পরেছেন তিনি । নির্মল, নিষ্কলুষ পবিত্র একটা রূপ । ভূপতিবাবু মুগ্ধ হয়ে গেলেন । ছেলেমেয়ে দু'টি বহুদিন বাদে বাপকে দেখতে পেয়ে আনন্দে ছুটতে ছুটতে এসে তাঁর কোলে ঝাঁপিয়ে পড়লো । গিন্নি এসে প্রণাম করে কুশল জিজ্ঞেস করলেন । ভূপতি বাবু বড়ই খুশি হলেন । ছেলে-মেয়ে দু'টিকে কোলে বসিয়ে পুজোর আয়োজন দেখতে লাগলেন । ওদিকে গিন্নি চলে গেলেন পুজোর সরঞ্জাম গোছানোর কাজে তদারকিতে ।
ভূপতিবাবু তো শ্যালকের বাড়িতে পুজোয় মহা আনন্দে আছেন আর এদিকে তাঁর প্রাসাদে ভয়ানক এক সর্বনাশের মেঘ ঘনিয়ে আসছে । ভূপতিবাবু বাড়ি থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর সন্ধ্যার আরতি করছেন ভূপতিবাবুর অন্তঃসত্ত্বা দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এমন সময় দাসী এসে জানালো যে কাপালিকের শিষ্য চন্ড এসেছে সিধে নিতে ।
এখানে বলে রাখি, কাপালিকের শিষ্য নিজের নাম চন্ড বলেই প্রচার করেছিল । চন্ড সব সময়ই সিধে নিতে আসে ভোরবেলায় । সন্ধ্যায় আসে শুধুমাত্র যেদিন শ্মশানে পুজো থাকে । আজকে অমবস্যা, দেবীর পুজো আছে শ্মশানে । শশব্যস্তে তাই ভূপতিবাবুর দ্বিতীয় পত্নী কমলা সিধে জোগাড়ে সচেষ্ট হলেন ।
সিধে জোগাড় করে চন্ডের নিকট উপস্থিত হওয়া মাত্রই চন্ড হঠাৎ, তাঁর দিকে জ্বলজ্বল করে অদ্ভুতভাবে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকলো । তারপরে হাতজোড় করে বললো, "মা, আপনার ললাটে আমি ভয়ঙ্কর কোনো অশুভ কিছুর ইঙ্গিত দেখতে পাচ্ছি । আপনার কক্ষে চলুন । আর কাউকে সেখানে প্রবেশ করতে দেবেন না । আমাকে জানতেই হবে কোন সর্বনাশের ইঙ্গিত এটি ? কীভাবে রক্ষা পাবেন আপনি ?"
চন্ডের মুখে এমন ভয়ানক কথা শ্রবণ করে কমলাদেবী হঠাৎ, বিমূঢ় হয়ে গেলেন । কী করবেন বুঝতে উঠতে পারছেন না তিনি । এমন সময় চন্ড উচ্চস্বরে বলে উঠলো হঠাৎ, "গিন্নিমা, এ কী দেখছি আমি ? বাবুর ভয়ানক বিপদ উপস্থিত । এখুনি এর প্রতিকার করতে হবে । না হলে তাঁর সর্বনাশ কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না । আপনার সিঁথির সিঁদুর মুছে যাবে । আপনার ললাটে ভাগ্য লিখন আমি স্পষ্ট পড়তে পারছি এখন ।"
এমন ভয়ানক কথা শুনে এবার কমলাদেবী আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন । দ্রুত তিনি তাঁর শয়নকক্ষে চন্ডকে নিয়ে প্রবেশ করলেন আর দাসীকে বলে দিলেন এই সময় কেউ যেন এদিকপানে না আসে ।
[চলবে]
ভয়ানক কিছুর গন্ধ ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে, আর অন্ধকার যেন আলো বেশী ভয়ঙ্গর ও গাঢ় হয়ে আসছে। পরের পর্বের অপেক্ষায় দাদা।
ভয়ংকর কিছুর আভাস পাওয়া যাচ্ছে। রহস্য ক্রমশ ঘনিভূত হচ্ছে।মনে হচ্ছে জমিদার পক্ষের দ্বিতীয় স্ত্রী-র ভাগ্যে ভয়ংকর কিছু ঘটতে চলেছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
এখন তো এর পরের পর্বে কি হবে সেটা আর আন্দাজ ই করতে পারছি না! একেবারে যাকে বলে টানটান উত্তেজনা!!
কাপালিকের শিষ্য রুমে নিয়েই মনে হচ্ছে ভূপতিবাবুর দ্বিতীয় স্ত্রীকে মেরে ফেলবে। একদিকে ভূপতিবাবু মহা আনন্দে রয়েছেন প্রথম স্ত্রীর বাড়িতে, আর অপরদিকে ভূপতিবাবুর গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যা করা হবে। গল্পটি বেশ জমে উঠেছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
ঘটনা এবার সত্যিই মোড় খেয়েছে, দ্বিতীয় স্ত্রী মনে হয় এবার সত্যিই বিপদে ফেঁসে গেল। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই পরের পর্বের জন্য।
দাদা এমন এমন জায়গায় এসে শেষ করেন যে এক দিন আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করে না। এই চন্দ্র মনে হয় কমলা দেবীকে মিথ্যা কথা বলে ভয়ঙ্কর কোন কাহিনী ঘটাতে যাচ্ছে। কমলা দেবী তা বুঝতেও পারছে না। ওদিকে ভূপতি বাবু বাড়ি ফিরলে কি হবে সেটা চিন্তা করছি।