SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 22]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 648.187 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ২১
Copyright Free Image Source : PixaBay
ভূপতি বাবু যখন এসে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছলেন তখন সন্ধ্যে উৎরে গিয়ে রাত্রির আঁধার নেমেছে । অমাবস্যার রাত । তার ওপর মেঘ করে এসেছে, একদম নিকষ কালো আঁধার তাই চতুর্দিকে । এই আঁধারে সঙ্গে আলো না থাকলে দৃষ্টি চলে না কোনোমতেই । কিন্তু, জমিদারবাড়ি আজ আলোয় আলোকিত । চারিদিকে আলোয় ঝলমল করছে । আজ জমিদারবাড়িতে কালী পুজো । তারই কারণে এমন আলোক ঝলমলে অবস্থায় সেজে উঠেছে জমিদার বাড়ি ও তৎসংলগ্ন প্রাঙ্গন ।
জমিদারবাবুরা এসে পৌঁছতেই একদল লোক ছুটে এসে খুব সমাদর করে ভূপতিবাবুকে নিয়ে বহিঃপ্রাঙ্গণে পুজো মণ্ডপে নিয়ে গেলো । কালীমন্দিরের ঠিক সামনেই বিশাল প্রাঙ্গন জুড়ে আলো ঝলমল করছে । অনেকগুলো পেট্রোম্যাক্স জ্বলছে । জায়গাটা একদম দিনের আলোর মতো পরিষ্কার । গাঁয়ের সভ্রান্ত মানুষদের জন্য মন্দিরের ঠিক সম্মুখেই শামিয়ানা টাঙিয়ে ফরাস পেতে , তাকিয়া, গড়গড়ার ব্যবস্থা করে সে এক এলাহী সভার আয়োজন করা হয়েছে । সবার সামনে ঠিক দু'খানা প্রকান্ড আরাম কেদারা রাখা রয়েছে । বোঝাই যাচ্ছে কাদের জন্য সেগুলো ।
করালী বাবু ও ভূপতি বাবু আরাম কেদারা দু'টোয় এসে বসার পরপরই একটা চাকর এসে দু'টি গড়গড়া দিয়ে গেলো । নল মুখে দিয়েই ভূপতিবাবু টের পেলেন যে একদম পয়লা নম্বরের অম্বুরি তামাক । কী তার খোশবু ! মনটা একদম তর হয়ে গেলো জমিদার ভূপতিবাবুর । একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে তিনি চারিদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে লাগলেন ।
নাঃ বিশাল আয়োজন এদের ! সন্ধ্যে হতে না হতেই গাঁয়ের মানুষ এসে ভেঙে পড়েছে কালীমন্দিরে । বিশাল ধুমধামের সহিত পুজো করছেন জমিদারবাবু । কালীমূর্তির পরনে দামি শাড়ি, তাতে আসল সোনার জরির কাজ, মূর্তির অঙ্গে প্রায় ১০০ ভরি সোনার অলঙ্কার পরানো হয়েছে । পেট্রোম্যাক্সের আলোয় সোনার অলঙ্কার ঝলমল করছে । মন্দিরের প্রকান্ড দাওয়ায় পুজোর প্রসাদের আয়োজন চলছে । তারই একধারে ১০১ টা সেরা রক্ত জবা বেছে তা দিয়ে মালা গাঁথা চলছে । মন্দিরের পাশে প্রাচীন অশ্বথ গাছটার তলে ১০৮ টা নধরপুষ্ট কালো কুচকুচে পাঁঠা বাঁধা রয়েছে । বলির পাঁঠা । সেখানে গাঁয়ের ছেলে ছোকরাদের ভীড় ।
জমিদারবাবুর উৎসুক চোখ খুঁজে চলেছে স্বীয় পত্নী ও বাচ্চা দু'টোর জন্য । এতো মানুষের ভীড়ে তাদের ঠিক ঠাওর করে উঠতে পারছেন না তিনি । হয়তো এখনো এসে পৌঁছয়নি তারা । পুজোর তো এখনো ঢের দেরি ।
[চলবে]
কেনো জানি মনে হচ্ছে জমিদারবাবুর শেষের পালার জন্যে জাঁকজমকপূর্ণটা আরো একটু বেশি করেই করা হয়েছে।কে জানে এরপর কি আছে তার কপালে!
করালী বাবু তো কালী পূজা উপলক্ষে এককথায় দুর্দান্ত আয়োজন করেছে। ভূপতিবাবু তো একেবারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছে। হয়তো খুব শীঘ্রই তার প্রথম স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে দেখতে পাবে ভূপতিবাবু। কিন্তু ঐদিকে তো দ্বিতীয় স্ত্রী কে মেরে ফেলবে, সেটা ভেবেই খারাপ লাগছে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
হয়তো এদিকে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্যে সে ব্যস্ত থাকবে , অন্যদিকে তার বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে। এমনটাই তো ভাবছি। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই পরের পর্বের জন্য।
এত বিশাল আয়োজন তো করেছে অন্য কারণে। এই বিশাল আয়োজন ভূপ্রতি বাবুকে ব্যস্ত রাখার ফন্দি মাত্র। অপর পাশ দিয়ে যে তার বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে তা সে টেরও পাবে না। নেশা ধরে যাচ্ছে এই গল্পটি পড়তে পড়তে।