SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 11]
This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 115.985 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ১০
Copyright Free Image Source : PixaBay
নাহ ! অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বিদ্যুতের আলোয় খুঁজলেন পিশাচিনীটাকে, কিন্তু কোথাও তার চিহ্নমাত্র পেলেন না । তাহলে এবার পালানো যাক ।
যেই চিন্তা সেই কাজ । রমেশবাবু একবার মনে মনে বিপত্তারিণীর নাম জপ করে নিলেন । তারপর অসীম সাহসে বুক বেঁধে ঘর থেকে বেরিয়ে প্যাসেজে ঘুরে নিচের বৈঠকখানা ঘরে নামার সিঁড়ির কাছে চলে এলেন । এবার খুব সাবধানে সিঁড়ি বেয়ে নামতে হবে । এতটুকু শব্দ হয়েছে কি তিনি ধরা পড়ে যাবেন নিমেষের মধ্যে । তারপর কি দশা হবে তাঁর ভাবতেই গা শিউরে উঠলো ।
কুঁজো হয়ে অতি সাবধানে অন্ধকারে পা টিপে টিপে সিঁড়ি দিয়ে নামতে লাগলেন তিনি । বহুক্ষণ অন্ধকারে কাটানোর ফলে অন্ধকারটা তাঁর বেশ চোখ সয়ে এসেছে । ফলে সিঁড়ির ধাপগুলো আবছা দেখতে পেলেন । সমস্যা হলো কাঠের সিঁড়ি, তায় আবার বহু পুরোনো আর ভাঙাচোরা । তাই একদম নিঃশব্দে নামা অসম্ভব । প্রচুর সতর্কতা অবলম্বন সত্ত্বেও মৃদু ক্যাচঁ কোঁচ শব্দ উঠলো সিঁড়িতে ।
তবে, একটাই আশার কথা যে বাইরে ঝড় উঠেছে, বাতাসের একটানা শোঁ শোঁ গর্জন আর ঝড়ের ধাক্কায় কিছু পুরোনো কাঠের দরজা জানালার ক্যাচঁ কোঁচ শব্দে সিঁড়ির শব্দ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে । বড় আশায় বুক বেঁধে একসময় সিঁড়ির শেষ ধাপে পা রাখলেন রমেশবাবু । কিছুক্ষন সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ের সামনে গুঁড়ি মেরে নিঃশব্দে বসে রইলেন । এখান থেকে বেতের চেয়ারটার একটা পাশ একদম পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে । বুড়োটা এখনো আধ শোয়া হয়ে রয়েছে বেতের চেয়ারে । হ্যারিকেনটার শিখা দপ দপ করছে থেকে থেকে । খোলা দরজা দিয়ে ঝড়ের ঝাপটা এসে লাগছে ।
রমেশবাবু একদম দেওয়াল ঘেঁষে গুঁড়ি মেরে মেরে বুড়োর পেছন দিকে চলে এলেন । এবার আরেকটু পুবদিকে গিয়ে আবার পুবদিকের দেওয়াল ঘেঁষে উত্তর দিকে কিছুটা এগোলেই খোলা দরজা । মুক্তি ! রমেশবাবুর বুক ঢিব ঢিব করতে লাগলো । কিছুক্ষণ বসে উত্তেজনাটা একটু সামলে নিলেন । তারপরে আবার অন্ধকারে দেয়ালের সাথে মিশে পা টিপে টিপে অগ্রসর হলেন । আর এক পা, আর এক পা । ব্যাস, এসে গিয়েছেন প্রায় খোলা দরজার সম্মুখে । আর মাত্র হাত খানেক দূরেই রয়েছে মুক্তি ।
ঋজু হয়ে দাঁড়ালেন রমেশবাবু । তারপরে বুক ভরে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে খোলা দরজা লক্ষ্য করে তীরবেগে দৌড় লাগালেন ।
ধড়াম ! কিসে যেন প্রচন্ড বেগে মাথা ঠুকে উল্টে পড়ে গেলেন রমেশবাবু । বেশ ব্যাথা পেয়েছেন, তবে প্রাণের মায়া বড় মায়া । দ্রুত উঠে আবার তিনি দরোজার দিকে পা বাড়ালেন । আবার অদৃশ্য কিছুতে ঠুকে গেলো তার থুতনি, কপাল, বুক আর পায়ের আঙুল । এবার সামনে ডান হাত বাড়িয়ে দিয়ে হাঁটার কারণে চোটটা বেশিরভাগ ডান হাতের ওপর দিয়েই গেলো । দারুন বিস্ময়ে একদম হতভম্ব হয়ে মেঝের উপরেই বসে পড়লেন রমেশবাবু ।
এ কী অসম্ভব ব্যাপার !! দিব্যি দেখা যাচ্ছে খোলা দরজা । ঝোড়ো হাওয়া ঢুকছে এলোমেলো ভাবে । অথচ অদৃশ্য কোনো কিছুতে যেন ঘেরা রয়েছে দরজাটা । কাঁচের মতো অদৃশ্য কঠিন কোনো কিছুতে আটকানো রয়েছে খোলা দরজা । তাহলে, বাতাস ঢুকছে কি করে ? কাঁচের মধ্যে দিয়ে কি বাতাস ঢোকে ?
[চলবে]
ইশ ভাবছিলাম এবার মনে হয় রমেশবাবু বেঁচে যাবে। কিন্তু কিসে আবার আটকা পড়ে গেলো। এই অদৃশ্য কাঁচের দেয়ালের জন্যই এভাবে দরজা খোলা রেখেছে মনে হয়। টান টান উত্তেজনা নিয়ে পড়ছিলাম। কিন্তু শেষে এসে হতাশ হলাম। যাই হোক শেষ মেষ যেনো বেঁচে ফিরে রমেশবাবু।
ক্রমশ রহস্যময় উঠছে । কি উপায়ে নিজেকে বাঁচাবেন রমেশবাবু। আসলেই কি পারবেন নিজেকে বাঁচাতে। তার অপেক্ষায় রইলাম।
পালানোর জন্য এতো চেষ্টা করেও তাহলে শেষমেশ রমেশ বাবু পালাতে পারলেন না। রমেশ বাবু আসলেই বেশ বাজেভাবে ফেঁসে গিয়েছে। মহুয়া আর বুড়োর কাছ থেকে শেষ পর্যন্ত পালাতে পারবে কিনা কে জানে। তবে এই পর্বের শুরুতে মনে হয়েছিল যে পালাতে সক্ষম হবে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
এই বুজি বেঁচে গেলেন রমেশবাবু, এমন একটা আশা মাঝে শেষ অংশটা পড়ে মনে হচ্ছে রহস্য এখনো শেষ হয় নাই, নতুন ভাবে নতুন রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি। মনে হচ্ছে পিশাচিনীর গোলকধাঁধা আটকে গেছেন রমেশবাবু।
বুড়ো বসে রয়েছিলো ঠিক ই,কিন্তু অদৃশ্য বলয় দিয়ে দিয়েছিলো যাতে আর যাই হোক বের যেনো না হতে পারে।দারুণ এগুচ্ছে গল্পটা।মনে হচ্ছে এখন ই বুঝি বুড়ো উঠে দাঁড়াবে।
তারমানে রমেশ বাবুকে অদৃশ্য কোন কিছু দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ভাগ্যে যে কি অপেক্ষা করছে তার কে জানে তা, অপেক্ষায় রইলাম ভাই পরের পর্বের জন্য ।