SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 10]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 77.238 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ০৯


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষন আশ । বাঁচার চেষ্টা করতেই হবে তাঁকে, এভাবে হাত পা গুটিয়ে পড়ে থেকে অসহায়ের মতো মরার কোনো মানেই হয় না । সাহস তাঁর যথেষ্ঠই আছে । বুদ্ধিও নেহাত তাঁর কম নেই । এতো ভেঙে পড়ার কোনো মানেই হয় না । কতই বা বয়স তাঁর ? এখনো তিরিশ পেরোয়নি । সামনে গোটা জীবনটাই পড়ে আছে । বাড়িতে মা-বাবা, ভাই-বোন সবার কথা খুব মনে পড়ছে রমেশবাবুর । আরো একবার চোখ ফেটে জল চলে এলো তাঁর । জামার হাতায় চোখ মুছলেন । তারপরে আকুল হয়ে বিপদ থেকে পরিত্রাণের পথ ভাবতে লাগলেন ।

ভেবে ভেবে কোনো কুল কিনারা পেলেন না তিনি । জানালা গলিয়ে যে পালাবেন তার কোনো উপায় নেই । কারণ প্রথমত হলো জানালাগুলো মাটি থেকে অনেক উঁচুতে । এখন থেকে লাফ দিলে ঠ্যাং ভাঙবে । আর দ্বিতীয় কারণটাই সব চাইতে শক্ত বেশি । প্রতিটা জানালায় শাল কাঠের শক্ত গরাদ বসানো । মাঝে মাঝে কয়েকটা গরাদ ভাঙ্গা যে নেই তা নয়, কিন্তু গরাদ টপকালেও নিচে লাফ মারা কঠিন । হাত পা ভাঙবে ।

অর্থাৎ, দোতলা থেকে পালানো একদমই অসম্ভব । বাকি থাকে একতলার বৈঠকখানা ঘর । বুড়োটা আছে বটে, তবে রমেশবাবু যদি পা টিপে টিপে আঁধারে মিশে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান অথবা খোলা দরজা দিয়ে ভোঁ দৌড় লাগান তবে ওই বুড়োটার সাধ্যি কি তাঁকে ধরার । কিন্তু, বুড়োটা তো মানুষ নয়, ও হলো সাক্ষাৎ শয়তান । ওর সাথে কি এঁটে উঠতে পারবেন তিনি ?

তবুও একটা চেষ্টা তো করে দেখা যায় । এভাবে অসহায়ের মতো বসে বসে নিজের মৃত্যুর সময় গোনার কোনো মানেই হয় না । ভীরুর মতো, কাপুরুষের মতো না মরে বীরের মতো মরার মধ্যে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা খুঁজে পাওয়া যায় । ঝটিতি উঠে দাঁড়ালেন রমেশবাবু । মনস্থির করে ফেলেছেন তিনি । পালাতে হবে তাঁকে ।

তবে সবার আগে দেখে নিতে হবে যে পিশাচিনীটা এখনো ফোয়ারার কাছে আছে কী না ? ও যদি এখনও শিয়ালটার রক্তপান করতে থাকে তবে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না । কারণ বৈঠকখানা থেকে বেরিয়েই সিঁড়ি দিয়ে নেমে হাত দশেক দূরেই পড়ে ওই ভাঙা ফোয়ারাটা । পিশাচিনীর এতো কাছ দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চরম মূর্খামি ছাড়া আর কিছুই নয় ।

দ্রুত খোলা জানালার কাছে চলে এলেন রমেশবাবু । উঁকি দিলেন । বাইরেটা একদম নিকষ কালো আঁধার । বাতাস বইছে বেশ জোরে । ঝোড়ো হাওয়া । তারই সাথে পাল্লা দিয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি নেমেছে । বৃষ্টির ছাঁট এসে রমেশবাবুর চোখ-মুখ ভিজিয়ে দিলো । মেঘ ডাকছে ঘন ঘন । মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে । সেই ক্ষনিকের চোখ ধাঁধানো উজ্জ্বল আলোয় রমেশবাবুর চোখ আঁতি-পাঁতি করে খুঁজতে লাগলো মহুয়া নামের সেই পিশাচিনীকে ।

[চলবে]

Sort:  
 8 months ago 

বেশ জমে গেছে গল্পটা এখানে, সত্যি দারুণ একটা উত্তেজনা কাজ করছে রমেশবাবুকে নিয়ে। সত্যি কি তিনি পারবেন এখান হতে পালাতে? নাকি তার কাহিনী এখানেই শেষ। দেখা যাক কতটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে পারেন রমেশবাবু।

 8 months ago 

রমেশ বাবু ঠিকই ভেবেছে, এভাবে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকার কোনো মানেই হয় না। তার চেয়ে চেষ্টা করতে হবে এবং সেখান থেকে অবশ্যই পালাতে হবে। কারণ তার সারাটা জীবন পড়ে আছে সামনে। তবে মহুয়া এবং সেই বুড়োটা যে পরিমাণে ডেঞ্জারাস, শেষ পর্যন্ত রমেশ বাবু পালাতে সক্ষম হবে কিনা কে জানে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

 8 months ago 

যে রূপেই গত কয়েক পর্বে মোহাচ্ছন্ন হয়ে ছিলো,সে রূপ ই এখন পিশাচিনী।দারুণ দারুণ, লিখেছেন দাদা।দেখা যাক রমেশ কতদূর নিজেকে বাঁচাতে পারে।

 8 months ago 

ও রে রমেশ, তোর যে কপালে কি আছে কে জানে তা ?

যতই পড়ছি ভাই, ততই আগ্রহ বেড়ে যাচ্ছে, অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের। উত্তেজনা একদম পরিপূর্ণ।

 8 months ago 

ঠিক চিন্তা করেছেন রমেশবাবু বসে বসে মৃত্যুকে বরণ করে নেওয়ার কোন মানে হয় না। মৃত্যুর আগে একবার হলেও তো চেষ্টা করে দেখা উচিত। কিন্তু সে কি এই পিচশিনীদের থেকে মুক্তি পাবে। কঠিন কোনো উপায় বের করে এখান থেকে পালাতে হবে। পরের পর্বের জন্য আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করছে না। খুব ভালো লাগছে গল্পটি।

অসাধারণ লেখা, পরের পার্ট এর জন্য অপেক্ষায় রইলাম।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.20
JST 0.033
BTC 91905.77
ETH 3091.66
USDT 1.00
SBD 3.09