SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 09]

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 36.332 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ০৮


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


জানালার গরাদ ধরে কতক্ষণ বেহুঁশের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন খেয়াল ছিল না রমেশবাবুর। দুটো পায়ে যেন কয়েক মন পাথর বেঁধে দিয়েছে কেউ । নাড়াতেই পারছেন না । ধীরে ধীরে ঠান্ডা বাতাসের ঝাপটে হুঁশ ফিরে এলো । মস্তিষ্ক এখনো বেশ উদভ্রান্ত, কপালের দু'পাশের শিরা দপ দপ করছে । তবে, ধীরে ধীরে এখন কিছুটা ধাতস্থ হতে পেরেছেন তিনি ।

বিশাল বিপদে পড়েছেন তিনি । এই বিপদ থেকে উদ্ধার হতে না পারলে নিজের প্রাণটাই খোয়াতে হবে তাঁকে । ভাবতেই রমেশবাবুর চোখ ফেটে জল চলে এলো । দিব্যি ছিলেন কলকাতায়, কেনো যে মরতে ব্যবসা করতে এখানে এলেন তিনি । অপঘাতে মৃত্যুই কি তাঁর একমাত্র নিয়তি ? এমনি করে বেঘোরে পড়ে শেষটায় শয়তানীর হাতে জীবনটা দিতে হবে তাঁকে ?

বাঁচার কি কোনো উপায় নেই ? মাথার ভেতর একরাশ চিন্তা কেমন যেনো জট পাকিয়ে গিয়েছে । একটু মাথা ঠান্ডা করে ভাবতে হবে তাঁকে । রমেশবাবু ধীর পায়ে হেঁটে এসে পালঙ্কের ওপর বসলেন । কিছুক্ষণ মাথা নীচু করে ভাবলেন । এখন থেকে পালানোর কোনো উপায় আছে কী ? খাট থেকে নেমে লঘু পদে বারান্দায় এলেন । রেলিং থেকে ঝুঁকে বৈঠকখানার দিকে তাকালেন তিনি । জমাটবাঁধা আঁধার বৈঠকখানার আনাচে কানাচে। শুধু টিপয়ের উপর রাখা হ্যারিকেনটা এখনো জ্বলছে । তবে আলোর চাইতে ধোঁয়াই বেশি তাতে । কালি পড়ে পড়ে হ্যারিকেনের কাঁচ ঝাপসা হয়ে গিয়েছে । সেই ঝাপসা কাঁচের ভেতর থেকে আলো খুব বেশি বের হতে পারছে না ।

সেই প্রায়ান্ধকার ঘরে টিপয়ের কাছে রাখা বেতের চেয়ারটায় ও কে বসে রয়েছে ? সেই বুড়োটা না ? একভাবে পাথরের মূর্তির মতো বসে রয়েছে । জেগে আছে ? নাকি ঘুমোচ্ছে ? ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ বুড়োটা সোজা হয়ে উঠে বসলো, আর তারপরে মাথা উঁচু করে সোজা তাকালো রেলিংয়ে ভর দিয়ে ঝুঁকে থাকা রমেশবাবুর দিকে । বুড়োটার চোখ আগুনের মতো জ্বলছে । তীব্র জিঘাংসা ফুটে বেরোচ্ছে তার দুটো নিষ্ঠুর চোখ দিয়ে ।

টুপ করে মাথা নিচু করে বসে পড়লেন রমেশবাবু । ভীষণ ভয়ে বুক কাঁপছে তার । শয়তানটা ঘাঁটি আগলে বসে আছে । এখান থেকে পালানোর কোনো পথ খোলা নেই । বারান্দা থেকে চার হাত পায়ে হামাগুঁড়ি দিয়ে অতি ধীরে ধীরে ঘরে এসে প্রথমেই কুঁজো থেকে গড়িয়ে জল খেলেন তিনি । ঢক ঢক ঢক ঢক আঃ ! বুকটা ঠান্ডা হলো তাঁর । মেঝেতেই থেবড়ে বসে পড়লেন । যে করেই হোক ভয়ানক এই বিপদ থেকে তাঁকে রক্ষা পেতেই হবে । শয়তানের হাতে কোনও রকমেই প্রাণ হারাতে চান না তিনি ।

আচ্ছা মহুয়া নামের শয়তানীটা কি জানালায় তাঁকে দেখতে পেয়েছিলো ? দেখতে না পাওয়ারই কথা । একে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার রাত তায় তিনি ছিলেন অন্ধকার ঘরের ভেতর । যতই বিদ্যুৎ চমকাক সেই আলোতে তাঁকে দেখতে পাওয়ার কথা নয় শয়তানীটার । আর বুড়ো পিশাচটার তো তাঁকে দেখতে পাওয়ার কথাই নয় । কারণ তিনি ছিলেন ঘোর কালো অন্ধকারে ।

[চলবে]

Sort:  
 7 months ago 

মনে হয় দুইজনের কেউই রমেশ বাবুকে দেখতে পায়নি। আর যদি দেখতে না পায়, তাহলে কিঞ্চিত হলেও তার বাঁচার আশা এখনো রয়েছে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।

 7 months ago 

হুম এবার শুরু হবে জীবন বাঁচানোর লড়াই শয়তানীটার সাথে। তবে যতই ঘাবড়ে যাক রমেশবাবু এখনো নিজেকে লড়াইয়ে ধরে রাখতে পেরেছেন, আমি ভাবছিলাম বেচারা বেহুশ না হয়ে যান। বেশ দারুণ লাগছে কিন্তু দাদা।

 7 months ago 

রমেশ বাবু এই বিপদ থেকে কিভাবে রক্ষা পাবে সেটাই ভাবছি। বুড়ো আর মহুয়ার চোখ ফাঁকি দিয়ে সেখান থেকে বের হওয়াটা বেশ কঠিন একটি কাজ। রমেশ বাবুর কপালটা আসলেই খারাপ। পরবর্তী পর্ব পড়ার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে দাদা। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

ভাই, যে করেই হোক রমেশ বাবুকে বাঁচানো দরকার। ওর জন্য আমার নিজেরই খারাপ লাগছে। বেচারা বড্ড বিপদে পড়েছে, কিছুতো একটা করা দরকার। এভাবে যদি প্রাণ চলে যায় তাহলে তো সব শেষ। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য ভাই।

 7 months ago 

একটু আগেও যেই মেয়েকে দেখে মনের মধ্যে শিহরণ হচ্ছিল সেই মেয়েকে দেখে এখন ভয়ে কাতরাচ্ছে রমেশ বাবু। কিন্তু এই ভয়ঙ্কর জায়গা থেকে তার বাঁচার উপায় কি। বুড়ো তো পাহারায় বসে আছে। কি বিপদে না পড়েছেন রমেশবাবু। খুব ভালো লাগছে দাদা গল্পটি। মনে হচ্ছে গল্প পড়তে পড়তে ভিতরে হারিয়ে যাচ্ছি।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62260.20
ETH 2431.98
USDT 1.00
SBD 2.64