ছোট গল্প |||| ভালোবাসার নীল গোলাপ পর্ব-০৩।

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আশা করি সুস্থ আছেন এবং সুন্দর সময় পার করছেন।আমিও মহান সৃষ্টি কর্তার করুনাই সুস্থ আছি এবং সুন্দর সময় অতিবাহিত করছি।

IMG_20240226_214434.jpg
Source
আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার ছোট গল্প "ভালোবাসার নীল গোলাপ পর্ব-০৩" নিয়ে হাজির হতে চলেছি।গত দুইটি পর্বে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পেয়ে গল্পটি লেখার আগ্রহ অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে আমার।চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আমি গল্পের তৃতীয় পর্বে কি লিখেছি তা দেখে নেওয়া যাক।

তারপর সে কথা মত তারা বাড়িতে এলো এবং বিয়ের কাজ কমপ্লিট করে।সেই ছেলের কাগজপত্র ঠিক করে আমেরিকায় চলে এলো। তাদের একটি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করল। মেয়েটির নাম রেখেছিল প্রিয়াঙ্কা। প্রিয়াঙ্কা দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। আমেরিকার প্রচুর বিলাসিতার মাঝে প্রিয়াঙ্কা বড় হয়েছিল।দেখতে দেখতে প্রিয়াঙ্কাও একদিন বড় হয়ে গেল সেই আমেরিকা প্রবাসে।

এদিকে সিতার দুই ছেলের এক ছেলের হঠাৎ দূর্ঘটনা ঘটে গিয়েছিল।রাতে ঘুমিয়ে ছিল তার ঘরে কিন্তু সকালে তার মা যখন দরজা নক করে তখন তার কোন কথা শুনতে পায় না। অনেকক্ষণ নক করার পরে যখন দরজা খুলল না তখন তার বাবা দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখে তার ছেলে ঘুমিয়ে আছে। কোন সারা শব্দ নেই। ডাক্তার কে ফোন করার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার চলে এলো। আর ডাক্তার দেখে বলল সে মারা গেছে। রাতে ঘুমের মধ্যেই স্টোক করেছে।সেই কথা শুনে সীতা কিছুতেই নিজেকে আর সামলে রাখতে পারছে না। কারণ তার যে ছেলেটি ভালো ছিল সেই মারা গেছে আর প্রতিবন্ধী ছেলেটি জীবিত আছে। সবই সৃষ্টিকর্তার লীলা খেলা।

এদিকে আইয়ুব চাচার তৃতীয় মেয়েটিও আমেরিকায় চলে এসেছে। আর সেই ছোট বোনটিও দুই বোনের বাসায় থেকে দিন যাপন করছে। একটি সময় সেও নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে গেল। একদিন আইয়ুব চাচা হঠাৎ অনেক অসুস্থ তার মেয়েদেরকে ফোন দেয় বলে আমি প্রচন্ড অসুস্থ মা।তোমাদের মনে হয় আর আমার দেখা হবে না। তবে একটি ইচ্ছে আমি মৃত্যুর আগে যেন তোমাদেরকে দেখে যেতে পারি। তোমরা আমাকে যে শান্তি দিয়েছো পৃথিবীর কোন সন্তানেরা তার বাবাকে এতটা শান্তিতে রেখেছে কিনা আমার জানা নেই।

তার বাবার কথা শুনে মেয়েরা আর ঠিক থাকতে পারল না। হঠাৎ একদিন চলে এলো।তার বাবা তাদেরকে বুকে নিয়ে মনে হয় সেই শান্তি পেল। হঠাৎ একদিন আইয়ুব চাচার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট উঠল এবং সেদিন ডাক্তারের পরামর্শে সে সুস্থ হয়ে গেল কিন্তু পরের দিন সুস্থ হওয়া মানুষটি হঠাৎ করেই মারা গেল। মেয়েরা সেই কষ্ট সহ্য করতে পারল না। তার মাকে অনেক সান্ত্বনা দিল।

এরপর চাকরির ক্ষেত্রে সবাইকে যার যার গন্তব্য স্থানে চলে যেতে হল। হীরা তার মেয়েকে আমেরিকায় লেখাপড়া শিখিয়ে। মেয়েকেও একটি জবের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। নিজের পায়ে নিজে দাঁড়ানোর মত আর পৃথিবীতে শান্তির কিছু নেই। তার মেয়েও বেশ দিব্বি আরাম আয়েসে দিন যাপন করছে। হীরার একটিমাত্র মেয়ে তার মাথায় টেনশন হল মেয়ে আমার বড় হয়েছে। তাকেও তো বিয়ে দিতে হবে তবে তার মায়ের ইচ্ছা তাকে আর আমেরিকার কোন ছেলেকে দিয়ে বিয়ে করাবে না। দেশের বাড়িতে গিয়ে ভালো ছেলে দেখে তারপর বিয়ে করাবে।

দিলারা চাচিকে তার তিন মেয়ে টাকা পাঠিয়ে দেয় ঠিকভাবে চলাফেরা করার জন্য এবং মাকে বলে মা তুমি কোন কষ্ট করবে না। তোমার যা লাগে আমরা সব পাঠিয়ে দিব। তুমি কোন কাজও করবে না প্রয়োজনে বাসায় কাজের মানুষ রেখে কাজ করাবে। তাইতো মেয়েদের কথা মতই দিলারা চাচি সব করতো।দেখতে দেখতে কিছু বছর যাওয়ার পর একটি সময় হীরা তার মেয়েকে নিয়ে দেশের বাড়িতে আসে। ঢাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনে। আর সেই ফ্ল্যাটেই তারা বসবাস করে। দীর্ঘ তিন মাস তারা বাংলাদেশে এসেছে। আত্মীয়-স্বজন যত আছে তাদের সবাইকে বলেও দিয়েছে আমার মেয়েটিকে বিয়ে দিবে ভালো একটি ছেলে দেখে দিতে হবে।

3V3rr4S3jU49uJ7YGXMfCAW8jdBAMcLpwKuDWQd3Wy8m3RekHFxfRPKJioki9L8rkjapja4Mb7D94eECZLrGjWymqaiFuhAafHyafmaKCx...Z4KvPeHqd9WSyKYLr5cUgCWeoXKYC3uzU9AG7XZCibPhjqYMguNySRGiZ2aW4KTPVTUwZ5Bo3KXN55z6Nx7BC37jdk1bfRWUEMC329RvYSZTX11rQcnAHN9idk.png

আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।

বিষয়ঃ- ছোট গল্প "ভালোবাসার নীল গোলাপ পর্ব-০৩"।

কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩

3GcRe1vqX2dJk1W2xoFiu1CmPKLbXg5xF9NQ7aeyMdZG9WCnFCoaf77HnnjtGbxvtcZCVRGcMv32JELn7yGd7yduEbShNRxvckSFu5qxWm...4DBE7bSVB6BMULGX4TiDD37LfoKG4LDay4BF3jrUv6vvtoQgQ4ehXkDbqeAwyZ67B7q88vWNYwYe5K84y94JWzcu4Af3kiuQQ3akwFfHeiCdAEkfAf6qBTacXg.png

3GcRe1vqX2dJk1W2xoFiu1CmPKLbXg5xF9NQ7aeyMdZG9WQ9FoKXR6nY3eBXCyiFUDJvfgKpLEANiBKgd7Bwzjx9dLbdyUgWA6hMA3ras9...mvabhXst56JJLqJrLgEkFMJYL2J1JjkehZ8JdUmrkYeqnLKEkC7h5MKoXUDJeoguKyAx72Ktc9j7XvAJLo3LCEogU2ZQ8wTyLQ76aXSY1SdKekLiuM5iKZAWwp.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPbqYxJcZK9JtriFPdqZV3xXxtdk9yPisUeRGZ8ozrvr2rnUXs5cagAakwsFpC...WFaaJHmXrxi5zwucUeo3mURWYKXw8Yzqstr8dvh3M1JDWxyrhGVnz8hWdG4EzTnPiDJSxmAXjGFzUJooULrkd8xDqMXzapJE9ubMNuVesQbzQucb8ksjRR8kdT.gif

Sort:  
 5 months ago 

ভালোবাসার নীল গোলাপ গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব আমি পড়েছিলাম। বেশ ভালো লেগেছিল। তবে এই পর্ব পড়ে একটু খারাপই লাগলো সীতার ছেলের জন্য এবং তাদের বাবার জন্য। পরে পর্বে কি হয় জানার আগ্রহ প্রকাশ করছি আপু। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরের পর্বটি শেয়ার করবেন।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

আমার ছোট গল্প আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনেক ভালো লাগলো আপু।

 5 months ago 

আপনি অনেক সুন্দর করে ভালোবাসার নীল গোলাপ গল্পটার তৃতীয় পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এই গল্পটার প্রথম দুইটা পর্ব আমার পড়া হয়েছিল। যার কারণে তৃতীয় পর্বটাও খুব ভালো লেগেছে পড়তে। সীতার সুস্থ থাকা ছেলেটা মারা গিয়েছে শুনে সত্যি অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। আর তাদের বাবাও মারা গিয়েছিল এটা ভাবতে অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। এখন হীরা দেশের বাড়িতে এসে নিজের মেয়ের জন্য ভালো একটা পাত্র খুজতেছে, কারণ তাকে দেখছি সে দেশে বিয়ে করতে চায়। আর নিজের একটা ফ্ল্যাট কিনে ভালো করেছে। এখন দেখা যাক এই গল্পের পরবর্তী পর্বে কি হয়।

 5 months ago 

আসলে মানুষের মৃত্যুর কোন নির্দিষ্ট সময় নেই অনেক সময় মানুষ অসুস্থ অবস্থায় মারা যায় না আবার অনেক সময় মানুষ সুস্থ অবস্থায় মারা যায়। যেমন উপরের গল্পে আয়ুব চাচা সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরে মারা গিয়েছে।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

জি ভাই মানুষের মৃত্যুর কোন নির্দিষ্ট সময় ক্ষণ নেই।

 5 months ago 

আমার কাছে গল্প গুলো পড়তে অনেক বেশি ভালো লাগে। আর এই গল্পটা আমার পড়া হয়েছে। যার কারণে এই পর্বটা তো আরো বেশি ভালো লাগলো। কিন্তু এই পর্বটার কিছু কিছু জায়গা ছিল, যেটা অনেক বেশি কষ্টকর ছিল। বিশেষ করে সীতার ভালো ছেলেটা মারা যাওয়ার বিষয়টি শুনে প্রথমে খুব খারাপ লেগেছিল। এবং কি তাদের বাবা মারা যাওয়ার বিষয়টা শুনে তো আরো বেশি খারাপ লেগেছে। আর এখন তারা নিজেদের মায়ের পুরোপুরি দায়িত্ব নিয়েছে। এবং কি মাকে দেখাশোনা করার চেষ্টা করতেছে, দেখে ভালো লেগেছে। এখন দেখা যাক, হীরা নিজের মেয়েকে দেশে বিয়ে করাতে পারে কিনা ভালো একটা ছেলে দেখে। ঢাকাতে তারা ভালো একটা ফ্ল্যাট কিনেছে দেখে ভালো লেগেছে। পরবর্তী পর্বটা আশা করছি তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন।

 5 months ago 

আমার গল্পের প্রতিটি পর্ব আপনি পড়েছেন এটি জেনে অনেক ভালো লাগলো আপু।

 5 months ago 

আপু আপনি খুব সুন্দর গল্প লিখেছেন। আপনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। সীতার সুস্থ ছেলেটা ঘুমের ঘোরে হঠাৎ করে মারা গেছে জেনে খারাপ লেগেছে। এদিকে আবার কিছু দিন যাবার পর তাদের বাবাও মারা গিয়েছে সত্যিই দুঃখজনক। তবে বাবা মারা যাওয়ার পর তারা মা কে কোনো রকম কষ্ট দিতে চায়নি তাই সবসময়ই খুঁজখবর রাখেন জেনে ভালো লাগলো। হীরা তার মেয়েকে নিয়ে দেশে চলে আসে আর এখানে বিয়ে দেবে বলে ছেলে দেখতে শুরু করে। এরপর কি হলো জানার অপেক্ষায় রইলাম।

 5 months ago 

আমার গল্প পড়ে আপনার ভালো লেগেছে এটি আমার জন্য বড় পাওয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.13
JST 0.026
BTC 59515.78
ETH 2505.02
USDT 1.00
SBD 2.47