জেনারেল রাইটিং ||| ছোট্ট আরাফের আনন্দের অনুভূতি।
আমি আজ আপনাদের মাঝে "ছোট্ট আরাফের আনন্দের অনুভূতি" নিয়ে হাজির হয়েছি।আরাফ ছোট্ট দুষ্টু একটি ছেলে।দুরন্ত পানা তার অনেক পছন্দ।তার মনের ভিতরে অনেক মায়া ও ভালোবাসার পরিমাণটা অনেক বেশি।কখনো কাউকে ভালবাসলে তার সম্পর্কে কোন বাজে কথা সে শুনতে পারে না।ওর চোখে অনেক স্বপ্ন।তাইতো সে তার স্বপ্নগুলোর কথা আমাকে সব সময় বলে।আসলে বাচ্চাদের স্বপ্নের কথাগুলো শুনতেও অনেক ভালো লাগে।আরাফের অনেক স্বপ্ন বাসা ভর্তি পাখি থাকবে কবুতর থাকবে।
আর বাবা মাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাবে। প্রচুর ফুলের গাছ থাকবে।মোটকথা আরাফের ভেতরে প্রকৃতির প্রতি মায়াটা আমি একটু বেশি দেখতে পাই। আরাফের ভাই যখন পড়ালেখা করে তখন আরাফ ব্যস্ত হয়ে যায় পড়ালেখা করার জন্য। প্রতিদিন যখন পড়তে বসাই তার ভাইকে তখন সে বই নিয়ে এসে অনেক আগ্রহে বইয়ের পড়াগুলো পড়তে চায়।ওর আগ্রহ দেখে চার বছরের একটি বাচ্চাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলাম।তবে স্কুলে এতটা পড়ার চাপ তারপরও মানিয়ে নিতে পারল ভাবছিলাম মানিয়ে নিতে পারবে না।এত ছোট মানুষ এত সুন্দর ভাবে সব পড়া যে কাভার করতে পারবে বুঝতেই পারিনি।ওর স্কুলে যাওয়ার আনন্দ বাসায় হোমওয়ার্ক করার আনন্দ এবং স্কুলের টিচারদের গল্পগুলো সব আমার সঙ্গে শেয়ার করে।
আসলে একটি বাচ্চার আনন্দের অনুভূতিগুলো জানতে পারলে ভালো লাগে।আর প্রতিটি বাচ্চাই তার আনন্দের বিষয় ও ভাবনাগুলো তার মা-বাবার সঙ্গে এবং প্রিয়জনদের সঙ্গে শেয়ার করে।সেদিন স্কুল থেকে যখন ছুটির পর বের হচ্ছিলাম তখন দেখি স্কুলের পাশে একটি ভাই অনেকগুলো পাখি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রীতিমতো আরাফ কান্নাকাটি শুরু করে দিল আমি পাখি কিনব। কিন্তু এর আগেও আমি টিয়া পাখি,ঘুঘু পাখি, কিনে দিয়েছিলাম।কিন্তু দুঃখের বিষয় পাখিগুলো যত্ন করার পরেও পাখি গুলো মরে গেছে।যেদিন আরাফের টিয়া পাখিটি মরে গেছে সেদিন আরাফ প্রচুর কেঁদেছে।সেদিন ওর মন এত খারাপ ছিল এবং সেই পাখিটির জন্য ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। আসলে ছোট মানুষদের ভালবাসাটা মনে হয় প্রকৃত ভালোবাসা।তারা কাউকে ভালোবাসলে মন থেকে ভালোবাসে।
বর্তমান সমাজে কিছু মানুষ আছে উপরে এক ভেতরে আরেক।কিন্তু ছোট বাচ্চারা তাদের মত নয়। প্রথমে ভেবেছিলাম পাখিগুলো নিব না কারণ এর আগে পাখিগুলো রাখতে পারিনি।তাই আরাফকে বললাম পাখি নিও না। কিন্তু আরাফ কিছুতেই কান্না থামালো না। তাইতো বাধ্য হয়ে দুটো পাখি কিনে দিয়েছি এবং এই পাখিগুলো হয়তোবা অতটা দাম না কিন্তু পাখি পেয়ে আমার ছেলের আনন্দের কোন সীমা নেই।পাখি যেখানে রেখেছি তার সাইডে একটি দোলা আছে দোলনায় বসে সারাক্ষণ পাখির সঙ্গে কথা বলে আর তার মনের কথাগুলো শেয়ার করে।
আমি আরাফের সেই গল্পগুলো মাঝে মাঝে লুকিয়ে শুনি এবং একা একাই হাসি।ও বুঝলে হয়তো বা পাখির সঙ্গে বাসার কথা স্কুলের কথা ও বাবা মার কথা শেয়ার করত না।মোটকথা ও যে পড়ালেখাগুলো করে সেটা একটু পরে গিয়ে পাখিকে গিয়ে বলে পাখি আমি এটা এখন শিখলাম তুমিও একটু লেখাপড়া করো। তাহলে তুমি অনেক বড় হবে আর মানুষের মত মানুষ হবে। আমি আরাফকে সব সময় বলি বাবা লেখাপড়া শিখলে মানুষের মত মানুষ হওয়া যায়।তাই আরাফ তার পাখির সঙ্গেও শেয়ার করে এই ধরনের কথা।
তবে একটি বাচ্চাকে খুশি করতে বা আনন্দ দিতে বেশি কিছু লাগে না।বাচ্চারা অল্পতেই খুশি সেটা আমি আরাফকে দেখে বুঝলাম।পাখিকে সব সময় খাবার দেয় এবং পাখির সঙ্গে খেলা করে আবার চেক করে পাখির পানি আছে কিনা।পাখির প্রতি ভালোবাসা দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো।আর এরকম ভালবাসা আরাফের যেন প্রতিটি মানুষের প্রতিও থাকে এটাই সব সময় দোয়া করি।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
বিষয়ঃ-জেনারেল রাইটিং "ছোট্ট আরাফের আনন্দের অনুভূতি"।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার হাজার ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে আমার এই পোস্টটি পড়ে এবং সুন্দর মতামত প্রদান করে সহযোগিতা করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
একদম ঠিক কথা বলেছেন আপনি। ছোট বাচ্চাদের খুশি করতে বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না। তারা তেমন কিছু দাবি করে না আমাদের কাছে। অল্পতে তারা আনন্দিত হয় এবং তাদের খুশিতে মন ভরে যায়। খুব সুন্দর একটা বিষয় আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনার এই পোস্ট পড়ে।
মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আপু,আমাদের আরাফ বাবু যে প্রকৃতিপ্রেমী তা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম। সেই সাথে বুঝতে পারলাম আমাদের আরাফ সোনা পশুপাখির প্রতি ভীষণ মায়া। খুব ভালো লাগলো তার এসব গুণের কথা শুনে। এত সব গুণ সবার মাঝে থাকে না। তবে আপু আমার ছেলেও পশুপাখি খুবই পছন্দ করে। আর তাই তো বাড়িতে রাখা খাবারগুলো কাক পাখিদের খেতে দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলে বলে, বাবা ওদের তো ক্ষুধা লেগেছে, তাই ওদেরকে খাবার দিচ্ছি। ছোট ছোট শিশুদের মন সত্যিই অনেক কোমল থাকে। যাইহোক আপু, আমাদের ছোট্ট আরাফ সোনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনার ছেলেও পশুপাখি পছন্দ করে শুনে অনেক ভালো লাগলো ভাই।
পাখিগুলো পেয়ে আপনার ছেলে অনেক খুশি হয়েছে দেখে ভালো লাগলো আপু। সত্যি আপু অনেক সময় ইচ্ছা না থাকলেও বাচ্চাদের আনন্দ দেখার জন্য আমরা অনেক কিছু করতে বাধ্য হই। যাইহোক আপনার ছেলের আনন্দটাই সবচেয়ে বড়। অনেক ভালো লাগলো আপু আপনার পোস্ট পড়ে।
দোয়া করবেন আপু আমার ছেলে যেন সব সময় এমন আনন্দেই থাকে।
আসলেই আমরা যদি কোন কিছু লালন পালন করি আর সেটা যদি মারা যায় তাহলে খুবই খারাপ লাগে। আর আপনার ছেলে যেহেতু অনেক ছোট সেহেতু তার খারাপ লাগাটা আরো বেশি। আপনি আবার নতুন পাখি কিনে দিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আপনার ছেলের আনন্দময় মুহূর্তগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ আপু।
ছোট বাচ্চারা কাউকে ভালবাসলে সেটা মন থেকেই বাসে, এটা একেবারেই ঠিক কথা আপু। তবে আপু সবথেকে বেশি ভালো লাগলো, আপনার ছেলে আরাফের মনে অনেক মায়া রয়েছে এই বিষয়টি জেনে। ছোট বাচ্চাদের কথা শুনতে বা তাদের ভেতরের কথাগুলো জানতেও অনেক বেশি ভালো লাগে। পাখির প্রতি আপনার ছেলের ভালোবাসা দেখে সত্যি আমি অনেকটাই অবাক হলাম। যাইহোক, আপনার ছেলে সুস্থ ভাবে বড় হয়ে উঠুক, এটাই কামনা করি।