ছোট গল্প ||| মা যখন অনেক দূরে পর্ব-০৫ ||| original writing by @saymaakter.
আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনেরা আশা রাখি এই গরমের ভিতরও সুস্থ এবং ভালো সময় অতিবাহিত করছেন।আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের ভালোবাসাশ ও মহান সৃষ্টিকর্তার রহমতে পরিবারেরসহ বেশ ভালো আছি।
আজকে আমি আবারো আপনাদের মাঝে ছোট গল্প নিয়ে হাজির হলাম।জানিনা আমার গল্পগুলো আপনাদের কাছে কেমন লাগে? তবে আমি বাস্তব ভিত্তিক কিছু বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করি।তবে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগে এবং লেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।আর তারই ধারাবাহিকতায় আজকে "মা যখন অনেক দূরে পর্ব-০৫" নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের পর্বে কি লিখেছি তা দেখে নেওয়া যাক।
আলো এপারমেন্ট লেটার হাতে পেয়ে চলে গেছে তার চাকরিতে জয়েন করার জন্য। এদিকে হৃদয়ের অবুঝ মন সারাক্ষণ কাঁদে তার মায়ের জন্য। এটুকু একটি বাচ্চা মায়ের জন্য কাঁদবেই তো। এমনিতেই তার মনে সারাক্ষণ আতঙ্ক কাজ করতো বাবা মার ঝগড়ার বিশৃঙ্খলা।তারপর যখন তার মা চলে যায় তখন সে অনেক নিরুপায় হয়। যেদিন প্রথম তার মাকে ছাড়া ঘুমাচ্ছিল তখন ঘুমের ভেতর বারবার মা মা বলে চিৎকার করে উঠেছিল।
নয়ন ছেলেকে মায়ের কথা কিছু বলতেও পারছে না।যেখানে মা নিজেই ছেলেকে রেখে চলে গেছে সেখানে বাবা আর কি বলবে। যখনি বাবার কাছে মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করে কখন আসবে তখন নয়ন শুধু অঝোরে অশ্রু ঝড়ায়। আর বারবার শুধু বলে আমার ভাগ্যে এই ছিল। আমি তো কোন অন্যায় করিনি খোদা তবে আমার ভাগ্যে কেন এত কষ্ট লিখলে।
নয়নকে অফিস ও ছেলে দুটোই সামলাতে হচ্ছে। কারণ অফিস না করলে এরকম ভালো একটি চাকরি হয়তো বা আর নাও জুটতে পারে। আর এই জগতে টাকা ছাড়া কারও কোন মূল্য নেই। তাইতো দুটোই একসঙ্গে সামলাচ্ছে। যদিও তাকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। তারপরও সে পরিবেশ পরিস্থিতির সবকিছু সামলে নিয়ে চেষ্টা করছে জীবন পাড়ি দেওয়ার।দিন চলে যাওয়ার পর যখন মাস এলো হৃদয় ও বুঝতে শুরু করলো। কারণ পরিবেশ পরিস্থিতি মানুষকে সবকিছু বুঝতে বাধ্য করে।
তাইতো হৃদয় তার বাবাকে এখন আর চোখে হারাতে চাই না। সব সময় তার বাবার বুকে জড়িয়ে থাকতে চায়। অফিসে গেল নানান রকমের বায়না করে আমাকে অফিসে নিয়ে যাও। আমি তোমাকে ছাড়া একা থাকবো না আর। বাসায় একা একা আমার বড্ড ভয় করে।তখন নয়ন চিন্তা ভাবনা করে দেখল আসলেই তো ছোট মানুষ একা একা কতই আর বাসাশ থাকে। তাই তাকে তার বাবার বাসায় রেখে আসে। দাদা-দাদুর সাথে বেশ ভালোই সময় কাটে হৃদয়ের।
গ্রামের লোকজনের নানান কথা শুনে হৃদয়ের মনটা ভেঙ্গে যায়। গ্রামের লোকজনদের নানান কথা তার দাদা ও দাদুর কাছে এসে আবার জিজ্ঞাসা করে। দাদু আমাকে আজ ও এটা বলেছে আমার মা অনেক খারাপ ছিল।কেন দাদু আমার মা কি করেছে নানান প্রশ্ন তখন তার মনে বাসা বাঁধে। ওভাবে প্রশ্নে প্রশ্নের তার মনের ভেতর ঘৃণার জন্ম নেয় মায়ের প্রতি। তারপর একটি সময় যাওয়ার পর নয়নও তার ছেলের দিক বিবেচনা করে তার বাবা মা তাকে আরেকটি বিয়ে করান। প্রথমে নয়ন সেই বিয়েতে রাজি ছিল না কিন্তু তার বাবা-মা যখন তাকে অনেক বুঝিয়েছে।পরে এসে বিয়েতে রাজি হয়ে গেছে। তারপর দ্বিতীয় বিয়ে করে নয়ন তার নতুন বউকে নিয়ে এলো তার বাসায়।
আমার পরিচয়।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার।আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।আমি উদ্যোক্তা জীবনে সব সময় গ্রামের অবহেলিত মহিলাদের নিয়ে কাজ করি।আর এই অবহেলিত মহিলাদের কাজ নিয়ে দেশের স্বনামধন্য কিছু প্রতিষ্ঠানে প্রোভাইড করি এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে বিদেশেও রপ্তানি করছি।আর এসব কিছুর পিছনে আমার এই অবহেলিত মহিলাদের উৎসহ এবং উদ্দীপনায় সম্ভব হয়েছে।তাই সব সময় আমি অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।এজন্যই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
আপনার গল্পের সব পর্ব আমার পড়া হয়নি। তবে এই পর্ব পড়ে বুঝতে পারলাম নয়নের বউ বাচ্চাটাকে রেখে সত্যি অনেক খারাপ করেছে। তবে নয়ন ছেলেকে নিয়ে কষ্ট হলেও বেশ ভালোই চলছিল কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করার পড়ে কি হলো তা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।
আমার গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
আলো একেবারে বাজে একটি কাজ করেছে। নয়ন এবং হৃদয়কে ছেড়ে চলে যাওয়াটা আলোর একেবারেই উচিত হয়নি। তবে আলো একদিন ঠিকই আফসোস করবে নিজের ভুলের জন্য। তখন হৃদয় কিংবা নয়নকে পাশে পাবে না আলো। তাছাড়া নয়ন তো আবার বিয়ে করেছে। নয়নের নতুন বউ হৃদয়কে কেমন আদর যত্ন করে সেটাই দেখার বিষয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। যে আমার গল্পটি আপনি পড়েছেন।