আমার অনুভূতির গল্প ||| মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-৩।
আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনেরা আশা করি সকলে সুস্থভাবে জীবন অতিবাহিত করছেন? আমিও আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসায় এবং আললাহর রহমতে সপরিবারে ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের উৎস এবং সহযোগিতায় "মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-৩" নিয়ে হাজির হতে চলেছে।গত দুই পর্বে আপনাদের অনেক উৎসাহ এবং সহযোগিতামূলক মন্তব্য পড়ে লেখার প্রতি অনেক আগ্রহ বেড়ে গেছে।আর সেই আগ্রহ থেকে তৃতীয় পর্ব লেখা যদি আপনাদের আরও বেশি সাড়া পায় তাহলে অবশ্যই পরবর্তী পর্ব লেখার চেষ্টা করব।চলুন আর কথা না বাড়িয়ে তৃতীয় পর্বে কি লিখেছি তা দেখে নেওয়া যাক।
অফিস থেকে বাসায় আসার পর হঠাৎ করে মিরাজ উদ্দিনের বুকের ব্যথা। তাকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হলো।ডাক্তার অক্সিজেন দিতে বলল এবং অন্যান্য মেডিসিন শরিরে পুশ করলো কিন্তু মিরাজ উদ্দিন কে আর বাঁচানো গেল না। মিরাজ উদ্দিন স্টোক করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। মানুষ যখন সুখের সন্ধান পায় তখন হয়তোবা অনেকের কপালে সেই সুখ টুকু সহ্য হয় না তা হয়তোবা আজ এই মিরাজ উদ্দিনের কপালেই হয়েছে।
এরপর হসপিটাল থেকে তার মৃতদেহ বাসায় নিয়ে আসে এবং জেসমিন অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে। তার ছেলেরা তার মাকে মাথায় পানি ঢালার পর জ্ঞান ফিরে নিয়ে আসে।
বাবার মৃত্যুর কিছুদিন পর দুই ছেলেকে বিয়ে করালেন তার মা। দুই ছেলেকে বিয়ে করানোর পর অনেক টাকা পয়সা খরচ হয়েছে এবং সেই টাকা পয়সা টা ছিল মিরাজ উদ্দিনের। সে চাকুরী অবস্থায় যেহেতু মারা গিয়েছিল সেই সুবাদে মিরাজ উদ্দিনের কিছু টাকা অফিস থেকে তার পরিবারকে দিয়েছিল আর্থিক সহায়তার জন্য। তারপর একদিন তারা সেই কোয়ার্টার ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়িতে চলে আসে । ছেলে দুটো বাইরে থাকে তাদের পরিবারকে নিয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে এবং ছোট মেয়ে ভাবনাকে নিয়ে একাই গ্রামের বাড়িতে থাকে জেসমিন । প্রথমদিকে গ্রামের বাড়িতে এসে জেসমিনের আর্থিক অবস্থা ভালোই যাচ্ছিল।এক দুই বছর যাওয়ার পর জেসমিন যখন তার সংসারের খরচ জোগাতে পারছিল না তখন ছেলেদের কাছে তার আর্থিক অবস্থার কথা জানায়।
কারণ ভাবনার লেখাপড়ার খরচ । তাদেরও চলতে হয়। জেসমিন ভালো পরিবেশে ছিল তাই নরমাল ভাবে চলতে পারত না তারপরও আয় বুঝে ব্যয় করতে হয় এটা জেসমিনপর মাথায় ছিল। কারণ এখন তার মাথার উপরে ছাদ নেই তাই তো সে আগের মত সবকিছু খরচ ও চলাফেরা করতো না। সব সময় মনের মধ্যে ভয় কাজ করতো আমি অতিরিক্ত খরচ করলে যদি আমার সন্তানেরা আমাকে কিছু বলে। অথচ একটি সময় ছিল যে সন্তানের পেছনে খরচ করতে মা-বাবার কোনো দ্বিধা বোধ ছিল না ।
আজ জেসমিনের জীবন একটি চরম মুহূর্তের পর্যায় দাঁড়িয়েছে। তার মাথায় একটি চিন্তা তার ছোট মেয়েকে নিয়ে। কারণ দুটি ভাই এখন আগের মত করে তার মা ও বোনের খবর নেয় না। ভাবনার বড় বোন ভাবনাকে সঙ্গে করে নিয়ে একটি ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দেয় তার বাসায়। কারণ মায়ের ও এখন সেরকম আর্থিক অবস্থা নেই যে ভাবনাকে অনেক ধুমধাম করে বিয়ে দিবে।
তাই জেসমিন বড় মেয়ের কথায় সহমত পোষণ করলেন।জেসমিনের মাথায় থেকে যেন অনেক বড় একটি পাথর নেমে গেল। কারণ যখন মাথার উপর ছাদ থাকে না তার ঘরে যদি একটি মেয়ে থাকে তখন তার যে কতটা টেনশন সে শুধুমাত্র উপলব্ধি করতে পারে । মিরাজ উদ্দিন এর স্ত্রী জেসমিন গ্রামের বাড়িতে একাই থাকে। অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা তাকেও দিনে দিনে গ্রাস করে খাচ্ছে।
কারণ সুস্থ দেহ ও চিন্তা মুক্ত মন যদি থাকে তাহলে শরীরটাও ভালো থাকে। জেসমিনের শরীরে নানা রকম রোগের বাসা বেধেছে ডায়াবেটিস, প্রেসার , চোখের সমস্যা, ইত্যাদি। মোটামুটি এই রোগগুলোর ওষুধ খেতে তার কিছু টাকার প্রয়োজন।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা এবং শিক্ষিকা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
বিষয়ঃ- আমার অনুভূতির গল্প "মা যখন সন্তানদের ভাগের বিষয় হয় পর্ব-৩"।
কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।
আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ..........
একটি পরিবারের যখন পিতা থাকে না তখন এমনিতেই মাথার উপর ছাদ থাকে না। এদিকে মা জেসমিন তার সন্তানদের বিয়ে দিয়ে খুব ভালো কাজ করছেন। তখন মা জেসমিনের খারাপ সময়ে যদি সন্তানেরা তাকে না দেখে তাহলে এটা ভীষণ অন্যায় হবে। দেখা যাক পরের পর্বে কি হয়।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই কিন্তু মন্তব্যটি পড়ে বুঝতে পারলাম না।
হা হা 😄
বিষয়টা অনাকাঙ্ক্ষিত টাইপিং মিসটেক।
ধন্যবাদ ভাই। 🥰
আসলেই আপু কিছু কিছু মানুষ সারাজীবন কষ্ট করে যায়, কিন্তু হঠাৎ করে সুখের মুখ দেখলে, বিভিন্ন ধরনের অসুখ বিসুখ হয়ে মারা যায়। মোটকথা তাদের কপালে সুখ সহ্য হয় না। মিরাজ উদ্দিনের কপালেও সুখ সইলো না। যাইহোক জেসমিন দুই ছেলের বিয়ে করিয়েছেন,কিন্তু এতো টাকা পয়সা নষ্ট করাটা উচিত হয়নি। ভাবনার কথাও ভাবা উচিত ছিলো। কারণ বিয়ের পর অনেক ছেলে বউয়ের কথায় পরিবর্তন হয়ে যায়। যাইহোক অবশেষে ভাবনার বিয়ে হয়ে গিয়েছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
সুন্দর মন্তব্য করে সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।