সচেতন মূলক পোস্ট |||| বিশ্বাস ও সরলতা সব সময় কাম্য নয়।
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আশা করছি এই প্রচন্ড গরমে পরিবারকে নিয়ে সুস্থ ভাবে দিন যাপন করছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। তবে বেশি ভালো না প্রচন্ড গরমে আমি নিজেও শারীরিকভাবে একটু অসুস্থ হয়ে আছি। মনের দিক থেকেও তেমনটা ভালো নেই।
আমি আজ আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি বিশেষ সচেতনমুলক একটি পোষ্ট নিয়ে। আজকের পোস্টের নাম "বিশ্বাস ও সরলতা সব সময় কাম্য নয়"।আমরা মানুষকে সবসময় বিশ্বাস করি কিন্তু এমন একটি যুগ এসে গেছে এই বিশ্বাস ও সরলতার সুযোগ নিয়ে মানুষ আজ ভয়ানক কিছু করছে। একটি সময় বিশ্বাস ও সরলতা প্রতিটি মানুষের মনে মনে থাকতো। আজ মানুষের মনে ভয়ংকর বিষ ঢুকে গেছে। আর তারই সুবাদে কিছু কিছু সহজ-সরল মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। আসলে কাকে বিশ্বাস করব আর কাকে বা আমরা সহজ সরল মানুষ ভাববো এই যুগ জামানায় এসে অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।
গতকাল ছিল শুক্রবার। হঠাৎ আমার মার কাছে ফোন আসে। তার খালাতো বড় বোনের হাজবেন্ড মারা গেছে সেই সুবাদে আমার মা, খালুর শেষ দেখাটা দেখতে গিয়েছিল। কারণ মার মুখে শুনেছি সেই আঙ্কেল আমার মা দের কে জানি অনেক আদর করত এবং ভালোবাসতো। তাইতো আমার মা সেই আঙ্কেলকে দেখতে গিয়েছিল। আসলে ভালোবাসার মূল্য অনেক ছিল সেই সময়। কিন্তু এখনকার সময়ে এসে ভালোবাসার কোন মূল্যই নেই। মা সেই বাড়িতে গিয়ে কিছুক্ষণ থেকে তারপরে যখন বাসায় বেক করছিল। তখন আশেপাশে কোন যানবাহন না দেখতে পেয়ে। একটি অটোরিকশা দেখতে পেল সে অটোরিকশায় কোন প্যাসেঞ্জার ছিলনা আমার মা একাই ছিল।
তারপরও অটোরিকশাওয়ালাকে ঠিকানা বলল সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য। রীতিমতো সে রাজিও হলো।রিকশা ছাড়ার দুই মিনিটের ভেতর আরেকটি বৃদ্ধ লোক রিকশাটি থামাতে বলে। বলে সেও যাবে কিন্তু লোকটি হঠাৎ করে বলে যে আমার পায়ের নিচে একটি দশ টাকার নোট পড়ে আছে। বৃদ্ধ লোকটি টাকাটি ওঠালো এবং বলল টাকাটি কি করব মা বলল ফকিরকে দিয়ে দিয়েন। কিন্তু টাকাটি একটি সুতা দিয়ে পেঁচানো ছিল এবং টাকার ভেতরে কিছু একটা ছিল। তখন সেই টাকাটি খুলে এবং তার ভেতরে একটি কাগজ দেখতে পায়। সেই কাগজে কিছু লেখা ছিল।
এখন বৃদ্ধ লোকটি বলছে আমি তো পড়তে জানি না মা। আপনি কি পড়তে জানেন এখানে কি লেখা আছে।মা বলল সেই অটো আলা কে পড়ার জন্য কিন্তু সেই মুহূর্তে অটোওয়ালা ও বলল আমিও পড়ালেখা পারি না। কি আর করা তখন আমার মা বয়স্ক মানুষ সহজ সরল মনে তাদেরকে সেই চিরকুটটি পড়ে দেয় এবং সেই মুহূর্তে অটোওয়ালা ও সেই বৃদ্ধ লোকটির মধ্যে নিজেরাই তর্ক শুরু করে। মা কাগজটি পড়তেই মাথা ঘুরে যায় এবং তার কাছ থেকে গলার সোনার চেইন ও হাতের চুড়ি খুলে নিয়ে রাস্তার এক সাইডে রেখে যায়। এই প্রচন্ড রোদে কিছুক্ষণ থেকে তারপর আমার মায়ের সেন্স ফিরে আসে।তারপর একটি রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসে। তখন সে বুঝতে পারে কিছু একটা হয়েছিল তার।
আসলে আমাদের জীবনে নিরাপত্তা কোথায়? আমার সঠিকভাবে কোথাও এখন একা চলতেও ভয় হয়।এত প্রতারণা থাকলে কিভাবে একটি মানুষ চলতে পারবে। এই প্রতারক গুলোর জন্য আজকাল মানুষের জীবন সহজ থেকে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।আসলে আমাদের জীবন কিভাবে চলবে কিভাবে চলছে আমরা নিজেও বুঝতে পারছি না। মার এই ঘটনায় আমরা সবাই খুব দুশ্চিন্তা করছিলাম। পৃথিবীতে মায়ের মত আপন কেউ নাই।মায়ের সোনার অলংকার নিয়ে গেছে এটা বড় বিষয় না কারণ আবার এই সোনার অলংকার কেনা যাবে।
কিন্তু যদি মায়ের কিছু হতো তাহলে কি মাকে ফিরে পেতাম কোনো দিন। মাকে বোঝালাম যে আপনার জীবন তো আছে এটাই সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া।
আমার পরিচয়।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।
আপনি খুবই সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। একদম ঠিক বলেছেন আপু। সরল মানুষের কিন্তু কোন জায়গা নেই। আর সব সময় সবাইকে বিশ্বাস করতে হয় না। এদের বিপদ সৃষ্টি হয়। অনেক অনেক ভালো লাগলো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে। খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আপনার মায়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি পড়ে খারাপ লাগলো।তবে উনি স্বাভাবিকভাবে বাড়ি ফিরেছেন এটাই বড় বিষয়।আমার মনে হচ্ছে রিক্সাওয়ালার সঙ্গে ওই বৃদ্ধ লোকটি আগে থেকেই পরিচিত।তারা এভাবে মানুষ ঠকিয়ে সবকিছু হাসিল করে নেয়।আর কাগজে কি লেখা ছিল সেটা জানতে ইচ্ছে করছে??
কাগজে লেখা ছিল দয়া করে টাকাটা কাউকে দিয়ে দিবেন।
আপু এই বিষয়টা নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে আলোচনা হচ্ছে। রাস্তার মধ্যে অপরিচিত কেউ কোন চিরকুট দিলে যেন না পড়ে। কারন কাগজের মধ্যে এক প্রকারে মেডিসিন থাকে,যেটা শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে ভিতরে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তাই এই বিষয়টা নিয়ে সবাইকে সচেতন করে দিবেন। ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাই বিষয়টি এরকমই ঘটেছে।
এই ধরনের প্রতারণার কথা আজকাল অনেক বেশি শোনা যায়। তবে আপনার মায়ের যে খুব বেশি ক্ষতি হয়নি, এটা জেনে কিছুটা আশ্বস্ত হলাম। তবে ওই সময় কি আশেপাশে কেউ ছিল না, যে আপনার মাকে একটু সাহায্য করত। যাই হোক, বেশ খানিকটা সচেতন হয়ে গেলাম আপনার আজকের এই পোস্টটি পড়ে।
নাম দাদা ওইখানে ঐরকম কোন লোক ছিল না যে মাকে সাহায্য করতে পারতো।