ছোট গল্প ||| একজন মানুষ গড়ার কারিগর পর্ব-০৪।
আসসালামু আলাইকুম।আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ভাই ও বোনেরা আশা রাখি সকলেই সুস্থ আছেন এবং সুন্দরভাবে সময় অতিবাহিত করছেন।
আজকে আমি আবারো আপনাদের মাঝে "একজন মানুষ গড়ার কারিগর পর্ব-০৪" নিয়ে হাজির হলাম। বিগত পর্বগুলোতে আপনাদের সুন্দর সুন্দর মন্তব্য পেয়ে গল্প লেখার আগ্রহ ও উৎসাহ অনেক গুনবেড়ে গেছে।ঠিক তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আজকে আমি আবারো পরবর্তী পর্ব নিয়ে হাজির হলাম।এ পর্বে কি লেখা আছে তা দেখে নেওয়া যাক।
মাস্টার মশাইয়ের এসব কথা শোনে মনটি অনেক ভেঙ্গে যায় এবং সে অনেক ভেঙে পড়ে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে।কারণ সে এতটাই চিন্তায় পড়ে যায় যে আমার ছেলেদের জন্য আমার এই ছেলে যতটুকু করছে এটা তো অন্য কেউ করে না। আর সামান্য একটু জমি আমার এই নাতিদের নামে দিব তা ছেলেরা দিতে রাজি না।এটা তো অনেক চিন্তার বিষয়, অনেক ভাবনার বিষয়,অনেক বড় একটি বিষয়।তখন মাস্টার মশাই ও মাস্টার মশাইয়ের বউ ছেলেদের সামনে অনেক রাগারাগি করে বলেন। ঠিক আছে তোমরা তোমাদের বাসায় চলে যাও আমাদের যা মনে হয় আমরা সেটাই করব।আমরা যেটা ভালো বুঝি ঠিক সেটাই করব কাকে জমি দিতে হবে আর কাকে দিতে হবে না সেটা আমাদের ব্যাপার কারণ জমিটা যেহেতু আমাদের।
এই কথা শোনার পরে সব ছেলেরা অনেক মন খারাপ করে বাবা এবং মায়ের ওপর রাগ করে নিজ নিজ বাসায় চলে যায়।কিন্তু বড় ছেলে যেতে যেতে বলে ঠিক আছে এখন আর তোমাদের সঙ্গে আমার আর কোন সম্পর্ক নেই।আমি এখন আমার মতই আমার ভবিষ্যত গড়ার চেষ্টা করব তোমরা তোমাদের সব বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেও আমাকে আর কখনো তোমাদের বাড়িতে ডাকবা না।এ কথা শুনে মাস্টার মশাই বলেন তুমি যে ধরনের বড় কথা বললে।আজ তোমার ছেলেরা চাকরি পেয়েছে তাই তুমি এই কথাটি বলতে সাহস করলে কিন্তু এ পর্যন্ত আমি তোমাকে যতটুকু সাহায্য করেছি এবং আমার ছেলে তোমাকে যতটুকু সাহায্য করেছে তার বিনিময়ে আজকে তোমার ছেলেরা চাকরি করছে।আজ যে কিছু ইনকাম তোমার বাসায় আসছে তা কিন্তু তার বিনিময়ে এটা কি তুমি ভুলে গেলে।
তখন বড় ছেলে বলছিল বাবা শোন।বাবার দায়িত্ব বাচ্চাদের মানুষ করার আর সেই দায়িত্বটাই তুমি পালন করেছে তার অতিরিক্ত কিন্তু কিছু করো নাই। আর আমার ভাইয়ের কথা বলছ আমি কি না করেছি তার জন্য।আমি অনেক কিছু করেছি সে ছোট ছিল তাকে মানুষ করেছি, তার অসময়ে আমি তাকে সাহায্য করেছি তাহলে তার বিনিময়ে সে তো আমাকে সাহায্য করবে এটাই স্বাভাবিক তাই না।এই কথাগুলো তার ছেলের মুখ থেকে শুনতে পেয়ে মাস্টার মশাই রীতি মতো অসুস্থতা বোধ করল এবং মাস্টার মশায়ের বউ তার বড় ছেলেকে বলল ঠিক আছে তুমি অনেক কিছু বোঝো আমরা বুঝিনা বাবা।তুমি তোমার বাসায় চলে যাও তোমাকে আর কখনো আমরা ডাকবো না।
এরপর মাস্টার মশাইয়ের বাসা থেকে ছেলেরা চলে যায় কারণ ছেলেদের বাসা আলাদা আলাদা জায়গায়।তখন মাস্টার মশাই বলেন দেখো আমি রিটারমেন্টে চলে এলাম আর আমার ছেলেরা আমার সামনে এত বড় বড় কথা বলে।আজকে যদি আমিমি চাকরি অবস্থায় থাকতাম তাহলে তো এ ধরনের কথা কেউ বলতে পারতো না। আসলে একটা মানুষের ইনকাম যখন কমে যায় তখন তাকে সবাই অবহেলা করে এবং তাকে মূল্যায়ন খুব কম করে এটাই স্বাভাবিক। তা ঠিক আছে তুমি কিছু মনে করো না আমি যেভাবেই হোক আমার এই ছেলেদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করব আর সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই আমাকে সেই সহযোগিতা করবেন।
এভাবে বেশ কিছুদিন দেখা গেল মাস্টার মশাইয়ের বড় ছেলে আর মাস্টার মশাইয়ের বাড়িতে আসছিল না এবং মাস্টার মশায়ের কোন খবর নিচ্ছিল না।এই বিষয়টি নিয়ে মাস্টার মশাই অনেক চিন্তা ভাবনা করল এবং গ্রামের অন্য একজন মানুষের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করলেন।তাকে বলল যে দেখো আমার বড় ছেলেকে তুমি একটু বোঝাও সে যেন আমার সঙ্গে কথা বলে এবং আমার বাসায় আসে তার সঙ্গে আমার অনেক কথা আছে।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি আবারো পরবর্তী পর্ব নিয়ে খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থিত হব সে পর্যন্ত শুভ বিদায়।
আমার পরিচয়।
আমি মোছাঃ সায়মা আক্তার। আমি একজন ব্লগার, উদ্যোক্তা।কবিতা লিখতে, নতুন কোনো রেসিপি তৈরি করতে এবং নতুন নতুন ডিজাইন সৃষ্টি করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে এবং অবহেলিত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে খুব ভালো লাগে।তাই সব সময় অবহেলিত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি এবং তাদের সহযোগিতায় নিজেকে সব সময় সম্পৃক্ত রাখি।