এল নিনোর (El Nino) প্রভাবে ২০২৪ সালে পৃথিবী মুখোমখি হতে চলেছে এক ভয়াবহ কঠিন সময়ের।

in Incredible India7 months ago (edited)

pixabay

কিছুক্ষন আগেই একটা নিউজ চোখে পরলো সৌদি আরবের মক্কায় প্রচন্ডরকমের ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। আর তার বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পরছে।দেখলাম রাস্তা দিয়ে গাড়ি ভেসে চলছে।
অথচ এই শহরে আমি বড় হওয়ার সময়গুলো কাটিয়েছি।তখন হাতেগুনা কয়েকবার সামান্য বৃষ্টি হতে দেখেছি। আর তাতেই শহরবাসীর আনন্দ চোখে পরেছে বৃষ্টি দেখে,কারন এটা তাদের জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া ছিলো।
এসব নিউজ কিন্তু নতুন কিছু না এরকম নিউজ ইদানিং এমন খবর প্রায়ই চোখে পরে।মরুভূমিতে বরফ পরতেছে কিংবা ঠান্ডা দেশগুলোতে প্রচন্ডরকম গরম কিংবা বন্যা হচ্ছে। শুধু বিদেশের কথা বললে ভুল হবে আমাদের দেশেও ঘটে চলছে এমন সব ঘটেনা।

pixabay

প্রতিবছরই শীতের আগে নিন্মচাপ হয় আর এটাকে আমরা স্বাভাবিক বলে মেনে নিলেও এটাকে জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও আবহাওয়াবিদরা এটাকে অস্বাভাবিক বলেই মনে করেন। গত পঞ্চাশ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে একবছরে তিনটা ঘূর্ণিঝড়ের ঘটনা।
এসবকে জলবায়ু পরিবর্তন এর কারন হিসেবে ধরে নিলেও এগুলো আসলে এল নিনোরই প্রভাবে হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।এর ফলে সারা বছরজুড়ে গরমের আধিক্য, সমুদ্রে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি কিংবা হঠাৎ বন্যা এসব এল নিনোর প্রভাবেই হচ্ছে। বিশ্বনেতারা যতই যুদ্ধ নিয়ে আতংক ছড়াক না কেন, বিশ্ববাসীকে আসল আতংকের মুখোমুখি করতে যাচ্ছে এল নিনো।এর ফলে বিশ্বজুড়েই আবহাওয়া বিচিত্র আচরণ করবে।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং আর এল নিনো দুটো আলাদা বিষয়। তবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এল নিনোকে আরো শক্তিশালী করে।

pixabay

এল নিনো কি?

খুব সহজ করে বললে, অজ্ঞাত কোন কারনে সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং উপকূল অঞ্চলের উত্তাপ বেড়ে যাওয়াকেই এল নিনো বলা হয়।
খুব সাধারণ দৃষ্টিতে মনে হয় যে, সমুদ্রের নীলাভ জল আর উওাল ঢেউয়ের ওপর দিয়ে উড়ে যায় বিভিন্ন পাখি আর পানির নিচে হাজারো জলজ প্রানী আর উদ্ভিদ। কিন্তু বিষয়টি এমন না।এই পানি শীতল নয় টগবগ ফুটছে।
ষোল শতকে দক্ষিন আমেরিকার একদল জেলে প্রথম খেয়াল করেন এই উষ্ণ সমুদ্রের পানি।এর পর থেকে দুঃসপ্নের মতো প্রায়ই ফিরে ফিরে আসে এই এল নিনো। সাধারণত যে বছর এল নিনো দেখা দেয় তার পরের বছর বেড়ে যায় বিশ্বের উষ্ণতা।

pixabay

মার্কিন বিজ্ঞানীদের মতে এবছরই এল নিনো শুরু হয়ে গেছে। গত কয়েকমাস ধরেই বিশেষজ্ঞরা টের পাচ্ছিলেন যে, প্রশান্তমহাসাগরের একটা অঞ্চলে এল নিনো শুরু হচ্ছে।আস্তে আস্তে সেটা আরও বড় হয়ে বছরের শেষে এটা চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। এটা এক বছর স্থায়ী হতে পারে আর এই এল নিনো একা নয় , এর পরেই আসে লা নিনো আর সবশেষে আসে ENSO ।

লা নিনোর প্রভাবে বৃষ্টিপাত বেড়ে শুরু হয় বন্যা তাপমাত্রাও স্বাভাবিক এর চেয়ে কমে যায় আর এটা তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে এল নিনো আরও শক্তিশালী হচ্ছে।বিশেষজ্ঞদের মতে এই বছর এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে আবহাওয়ার ধরণ চেন্জ হয়ে যেতে পারে। এর প্রভাব পরবে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে।

pixabay

বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই হাজার চব্বিশ সাল হতে পারে। বিশ্বের উষ্ণতম বছর। এর ফলে অস্ট্রেলিয়ায় দেখা দিতে পারে খরা,যুক্তরাস্ট্রে বাড়তে পারে আর বাংলাদেশ ও ভারতে কমে যেতে পারে বৃষ্টি। ধারনা করা হচ্ছে যে ২০২৭ সালের মাঝে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন আসবে তাপমাত্রায়। এ সময়ে তাপমাত্রা এক থেকে দেড় ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়ে পারে।এল নিনো প্রতি দুই থেকে সাত বছর পর পর ঘটে। এর আগে দুইহাজার পনের সালে দেখা দিয়েছিল এল নিনো। যার ফলে ২০১৬ সালে বিশ্বজুড়ে রেকর্ড ভাঙা তাপমাএা বেড়েছিলো।

pixabay

বিশেষজ্ঞদের মতে এবার বিশ্ববাসী হয়তোবা এমন সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চলছে যা আগে তারা কখনো দেখেনি।


◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦

image.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

আপনার পোস্টটি টি পড়ে আমার অনেক টা ভয় লাগলো। আমাদের পৃথিবীতে এতটা ভয়াবহ অবস্থা হবে শুনে আমি খুব অবাক হলাম আমার এই সব একদমই জানা ছিলো না। আমাদের সাথে এত তথ্যমূলক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।আপনার পরবর্তী আকর্ষণীয় পোস্ট এর জন্য অপেক্ষা করছি।

 7 months ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর করে কমেন্ট করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি খুব সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনি ছোট বলে সৌদি আরবে বড় হয়েছেন। বর্তমানে শুধু সৌদি আরব আর বিদেশ বললে হবে না আমাদের বাংলাদেশে এরকমটা হচ্ছে।

 7 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে

Posted using SteemPro Mobile

আসলে এ সমস্ত অস্ভাবিক ঘটনা গুলো প্রায়ই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটার আসল কারন গ্লোবাল ওরমিং অর্থাৎ বৈশ্বিক উষ্ণতা। এর কারনেই বরফ গুলো গলছে, সমুদ্রের পানি উচ্চতা বৃদ্ধি পায়তেছে।ফলে নিন্ম ভুমি পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। তাই বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আরো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে। তাই গ্ৰিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন কমাতে হবে। তাই পৃথিবীতে সকল দেশকে এগিয়ে আসতে হবে এবং তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ নিতে হবে। তবেই রক্ষা পাওয়া সম্ভব।

আপনি খুবই স্পর্শ কাতর বিষয় তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।

 7 months ago 

ধন্যবাদ এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

ম্যাম আজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লিখনি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। এল নিনো আমাদের তথা বিশ্ববাসীর জন্য বিরাট এক হুমকি। জনলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ দূষনের ফলে আমাদের এখন এই ভয়াবহতা দেখতে হচ্ছে। এর মূলে কে জানেন? আমরাই। কেননা আমরাই প্রতিনিয়ত পরিবেশ দূষণ করছি।

বর্তমান সময়ে আবহাওয়া আর আগের মতো আচরণ করছে না। দিনে দিনে আমরা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগের মুখে পতিত হচ্ছি। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, অসময়ে বন্যা, শীতের তীব্রতা, বরফ গলে যাওয়া, সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি। এখনো সময় আছে আমাদের সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত এবং পরিবেশ দূষণের হার কমানো উচিত। ভালো থাকবেন।

 7 months ago 

এল নিনোর আসল কারন এখনো জানা যায় নাই। তবে একে আরো বেশি শক্তিশালী করতে আমাদের ভূমিকা অনেক। আমরা এখনো সচেতন হলে একে কিছুটা হলেও হয়তোবা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে

Posted using SteemPro Mobile

Loading...
 7 months ago 

আপনার পোস্ট পড়লে নিত্য দিন নতুন নতুন অনেক বিষয় সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে পারি, যা আনার কাছে অনেক ভালো লাগে। আজকে এপনি ইএল নিনো সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের সাথে উপস্থাপন করছেন। বিষয় গুলো জেনে অনেকটা জ্ঞান অর্জন করতে পারলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য।

 7 months ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং পৃথিবীর ভারসাম্য নিয়ে অসাধারণ আপনার লেখায় পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার লেখা পড়ে আমার অনেক অজানা জ্ঞান অনুধাবন করতে পেরেছি

লা নিনোর প্রভাবে বৃষ্টিপাত বেড়ে শুরু হয় বন্যা তাপমাত্রাও স্বাভাবিক এর চেয়ে কমে যায় আর এটা তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

এমনটা চলতে থাকলে জানিনা সামনে কি ভয়াবহ প্রস্তুতি মোকাবেলা করতে হবে বিশেষ করে ভারত বাংলাদেশ নেপাল এসব দেশগুলোতেই এখন অনাবৃষ্টি ও প্রচুর পরিমাণ খরা চলছে।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে জ্ঞান মূলক এমন আর্টিকেল শেয়ার করার জন্য।

 7 months ago 

আসলেই ভয়ংকর সময় অপেক্ষা করছে সামনে।ধন্যবাদ এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

আমিও নিউজটা দেখেছি।। দেখে অনেকটা আশ্চর্য হয়েছিল।। আর বৃষ্টিকে সব সময় স্বাভাবিকভাবেই দেখে থাকে কিন্তু আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা এটাকে স্বাভাবিকভাবে দেখে না এটা আমার জানা নেই।।

আর হ্যাঁ বর্তমান সময়ে আবহাওয়া কখন কোন দিকে প্রভাব ফেলছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না।। অসময় বৃষ্টি হচ্ছে অসময়ের রোদ হচ্ছে যেটা অনেকটা অবাক করার মত।।

এল নিনো কি এটা আমার জানা ছিল না আপনার প্রশ্নের মাধ্যমে জেনে খুবই উপকৃত হলাম।। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য।।

 7 months ago 

এল নিনো আসলেই ভয়ংকর। এটা সম্পর্কে মানুষ সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা ভুল করে সেটা হলো একে বৈশ্বিক উষ্ণতার সাথে গুলিয়ে ফেলে।অথচ একটা বিশে্বর গড় তাপমাত্রা আর অপরটা হলো সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বাড়া।তবে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এল নিনোর ওপর প্রভাব ফেলে আর একে অনেক বেশি শক্তিশালী করে ফেলে।
ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য এর জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

এল নিনো শব্দটির সাথে এর আগে আমার পরিচয় ছিল না। তবে তাপমাত্রা বাড়ার সংবাদ বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পড়েছি। তবে এল নিনো যে ২০২৪ এ আসছে এটা জেনে এখন মনের ভেতর ভয় কাজ করছে। আসলেই যদি বৃষ্টি কমে যায় আর তাপমাত্রা বেড়ে যায় তাহলে এর ফলাফল তো অনেক ভয়াবহ হবে। আল্লাহ এই গজব থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমিন।

 7 months ago 

আমিন।হ্যা একমাএ আল্লাহই আমাদের বাচাতে পারেন।ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

 7 months ago 

এরকম নিউজ অনেক পেয়ে থাকি সত্যি সত্যি এমন টা হয়ে থাকে তাহলে আমাদের দেশে এক বিশাল ক্ষতিগ্রস্ত প্রভাব পড়বে যা আমাদের বেচে থাকা মুশকিল হয়ে যাবে ৷ আমরা লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারি জালবায়ু পরিবর্তন তারপর আবহাওয়ার পরিবর্তন একেক সময় একেক ধরনের হয়ে থাকে ৷ সময়ের টা অসময়ে হয়ে যায় আর অসময়ের টা সময়ে হয়ে যায় ৷

যাই হোক আপনার লেখাটি পড়ে অনেক তথ্য সংক্রান্ত আলোচনা জানতে পারলাম ৷ ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ৷ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

 7 months ago 

আপনাকেও ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64599.25
ETH 3467.96
USDT 1.00
SBD 2.55