|| মাদার্স হাটের স্পেশাল বুফেট ||

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

সকলকে ভালোবাসা জানিয়ে আজকে আমি আমার পোস্ট শুরু করছি।
আজকে সম্পূর্ণ একটা ভিন্নধর্মী পোস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথমেই বলে রাখি যারা আমার মতন অত্যন্ত ভোজন রসিক তাদের আশা করি আজকের পোস্টটি বেশ ভালই লাগবে। সুতরাং আপনারা হয়তো বুঝে গেছেন আমি কি নিয়ে পোস্ট করছি।

Screenshot_2022-11-30-21-20-09-286_photoeditor.layout.collagemaker.png

এই বছর দুর্গাপুজোর আগের দিন অর্থাৎ নভেম্বর মাসের ১ তারিখে আমি আর আমার দুই বন্ধু মিলে একটি ফ্যামিলি রেস্টুরেন্টে গেছিলাম, গেছিলাম একপ্রকার হঠাৎ করেই। আসলে আমার এক বন্ধু চাকরি সূত্রে গত তিন মাস আগে পুনে চলে যায়। মাঝখানে সে আর ফিরতে পারেনি, এমনকি দুর্গাপূজো সেখানেই কাটিয়েছিল। দুই মাস পর সে গত অক্টোবর মাসের ২৯ তারিখে কৃষ্ণনগর আসে। আর আমাদের এখানে জগধাত্রী পুজো ছিল নভেম্বর মাসের ২ তারিখে।

IMG-20221102-WA0005.jpg

তো জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে আমাদের কৃষ্ণনগরের একটি ফ্যামিলি রেস্টুরেন্ট,নাম 'মাদার্স হাট' এ দুর্দান্ত একটি বুফেট চালু করেছিল। খুব সংক্ষেপে আমি আপনাদের সেই বিষয়টা সম্পর্কে প্রথমে একটা ধারণা দিয়ে নিই। শুরুতেই তিন রকম ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস ছিল, তারপর ভেজ-ননভেজ মিলিয়ে ছয় থেকে সাত রকমের স্টার্টার ছিল। এবার আসি মেইন কোর্সে, ভেজ ননভেজ এর পাশাপাশি চিকেন বা ফিসের বিভিন্ন ভ্যারাইটি আইটেম মিলিয়ে ২০ থেকে ২২ রকমের মেইন কোর্স ছিল। রাইসের মধ্যে বিরিয়ানি ,পোলাও ,বাসমতি রাইস সহ মোট পাঁচ রকমের রাইস ছিল। স্যালাড ছিল টোটাল তিন রকমের। এইটুকু পড়েই হয়তো আমার মতো আপনাদের অনেকের জিভেই জল চলে এসেছে😂। তাদের জন্য বলি এখনো কিন্তু ডেজার্ট,চাট, মিষ্টি, আইসক্রিম সহ অনেক কিছুই বাকি আছে। বাকি আইটেম গুলো সংক্ষেপেই বলে দিই, এক রকম করে আচার ,পাঁপড় ও চাটনি ছিল। চাটের মধ্যে ফুচকা ,পাপরি চাট, দই বড়া, দই ফুচকা,আলু কাবলি চাট এসব ছিল, ডেজার্টের মধ্যে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি সহ মোট ৯টি আইটেম ছিল। এছাড়াও শেষ পথে ছিল আইসক্রিমের ৫-৬ ধরনের ফ্লেভার। এইখানে আপাতত মেনু শেষ হলো। এবার আপনাদের আরেকটি মজার বিষয় বলি, এই এতগুলো মেনু আমরা পেয়েছি মাত্র ৪৯৯ টাকায়। হ্যাঁ আপনি ভুল পড়েন নি,আমিও ভুল টাইপ করিনি। ঠিকই দেখছেন,৪৯৯ টাকায়😂। এবার আরও একটা ধামাকা দিই, এই আইটেমগুলোর মধ্যে আপনি যেটা খুশি যত খুশি খেতে পারেন, সর্বোচ্চ তিন থেকে চার ঘণ্টা সময়। তবে এর সাথে চিংড়ি মাছ,ইলিশ মাছ এবং খাসির মাংস আইটেম ছিল তবে সেগুলোর জন্য আপনাকে আলাদা পে করতে হবে তাও যৎসামান্য।

IMG-20221031-WA0015.jpg

আসলে এই রেস্টুরেন্টটি দুর্গাপুজোর সময় এই বুফেটটি প্রথম শুরু করেছিল। যেহেতু প্রথম ছিল তাই খুব ছোট করেই শুরু করেছিল। দুর্গাপুজোর পঞ্চমী থেকে দশমি পর্যন্ত ওরা বুফেটটি রাখার কথা ভেবেছিল। কিন্তু পঞ্চমী এবং ষষ্ঠীতে পাবলিক খেয়ে এত প্রশংসা করেছে শেষের চার দিন ওরা অর্ডার কুলিয়ে উঠতে পারেনি। অবশ্য এরকম না হওয়ারও বা কিছু নেই।কারণ,প্রথমত শুধুমাত্র কৃষ্ণনগরেই নয়, কৃষ্ণনগর সহ কৃষ্ণনগরের আশপাশ এলাকায় এমনকি কলকাতা পর্যন্ত এলাকাতেও রেস্টুরেন্টটির যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তার খাওয়ার দাওয়ারের টেস্টের জন্য। দ্বিতীয়তঃ, এত কম দামে একসাথে এতগুলো খাবার সাধারণ মানুষ সহজে হাতছাড়া করতে চাইনি। তাই পুজোর কটা দিন সবাই ফ্যামিলি সহ সেখানে হামলে পড়েছিল। দুর্গাপূজা থেকে শিক্ষা নিয়ে রেস্টুরেন্ট মালিক জগধাত্রী পূজোয় বেশ বড় করে জায়গা করেছিল এবং যথেষ্ট পরিমাণে খাবার তৈরি করেছিল। প্রসঙ্গত জগদ্ধাত্রী পূজাতেও মোট পাঁচ দিন এই অফারটি চলেছিল।

PXL_20221101_150222372.jpg

PXL_20221101_152326057.jpg

PXL_20221101_152333184.jpg

তো আমার সেই বন্ধু বলছিল যেহেতু দুর্গা পূজোয় সে এই সুযোগটি মিস করেছে ,তাই জগধাত্রী পূজায় আর মিস করতে চায় না। আমাকে হঠাৎ একদিন ফোন করে বলল যে, পরের দিন সে আর আরেকটি বন্ধু যাচ্ছে সাথে আমাকেও যেতে হবে। দুর্গাপুরে যে বিভিন্ন কারণে আমিও এই সুযোগটি মিস করেছিলাম, তাই ভাবলাম এইবার আর মিস করা যাবে না তাছাড়া সেদিন গিয়ে কোন কাজও ছিল না। তাই তাকে সম্মতি জানিয়ে দিলাম। এর জন্য আমাদের কে আগে থেকে অনলাইন বুক করে যেতে হয়েছিল। তবে সাধারণ মানুষ চাইলে দিনের দিন গিয়েও বুক করতে পারতো কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছুক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করে থাকতে হতো। তো যেহেতু আমাদের আগে থেকে বুক করা ছিল এবং টাইম স্লট দেওয়া ছিল ,আমরা সেই সময় মতোই পৌঁছে যাই।সেখানে পৌঁছে আমাদের এন্ট্রি করিয়ে সরাসরি ভেতরে ঢুকে যাই।

IMG-20221102-WA0015.jpg

PXL_20221101_130928263.jpg

PXL_20221101_135111088.jpg

PXL_20221101_135104336.jpg

ভেতরে ঢুকে তো আমরা তিনজন তিন রকমের ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে প্রথমে এদিক ওদিক একটু ঘোরাঘুরি করে নিলাম। কিন্তু বেশিক্ষণ আর কেউই পারলাম না। তারপর আমরা আমাদের মেন উদ্দেশ্য দিকে এগিয়ে গেলাম। আমরা ঠিক করেছিলাম একটা আইটেম অল্প করে একজনই নেবে, বাকিরা তার কাছ থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে টেস্ট করবে ভালো লাগলে তারপরে আবার নেবে। এতে করে খাবারও বাঁচবে ,নষ্ট হবে না সাথে আমাদের সবাইকে টেস্ট করা হবে।

IMG-20221102-WA0009.jpg

IMG-20221102-WA0015.jpg

PXL_20221101_152311378.jpg

PXL_20221101_152345424.jpg

PXL_20221101_123128592.jpg

যাইহোক আমরা মোটামুটি সেখানে তিন ঘন্টা সাড়ে তিন ঘন্টার বেশি সময় ছিলাম খাওয়া-দাওয়া করেছি এবং তারপরে সেখান থেকে বেরিয়ে গেছি। আমি পোষ্টের সাথে কিছু ফটো এড করেছি, আর আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে আমি নিচে একটি ভিডিও লিংকও দিয়ে দিচ্ছি।

ভিডিও লিঙ্ক

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65236.35
ETH 3483.12
USDT 1.00
SBD 2.51