engagement challenge-s7/w6 | My nostalgic childhood memories.
Hello,
Everyone
আশাকরি আপনারা প্রত্যেকেই ভীষন ভালো আছেন। আর সকলেই আজকের দিনটি অনেক ভালো ভাবে কাটিয়েছেন।
অনেকদিন বাদে আজকে আমি এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জ এ অংশগ্রহণ করতে চলেছি।মাঝখানে কিছুদিন আমি এতটাই মানসিক চাপের মধ্যে কাটিয়েছি যে, মাঝখানের কোনো প্রতিযোগিতায় আমি অংশগ্রহণ করতে পারিনি।
তবে এইবারের এনগেজমেন্ট চ্যালেঞ্জের যে বিষয়বস্তু, সেটাতে অংশগ্রহণ না করতে পারলে হয়তো,আপনাদের সাথে অনেক কথা শেয়ার করা হবে না। তাই ভাবলাম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে আমার ছেলেবেলা সম্পর্কে আপনাদের সাথে কিছু স্মৃতি শেয়ার করি। চলুন তাহলে শুরু করি আমার ছোটোবেলার গল্প।
|
---|
ছেলেবেলা শব্দটি শুনলেই আমাদের ঠোঁটের কোণে একটা হালকা হাসি ফুটে ওঠে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে অনেক আবছা মুহূর্ত।
এতো মানুষের মুখ মনে পড়ে,যাদের সাথে হয়তো বহু বছর আর কোনো যোগাযোগ নেই। কেউ কেউ হয়তো এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেও চলে গেছে। আবার কারো কারো সাথে আজও যোগাযোগ রয়ে গেছে একইভাবে।
ছেলেবেলার থেকে ভালো মুহূর্ত আমরা হয়তো জীবনে আর কখনো কাটাতে পারব না। সেই কারণে বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাদের জীবনের হয়তো একটাই চাহিদা থাকে, সেটা হচ্ছে আবার ছেলেবেলায় ফিরে যাওয়ার।
|
---|
ছোটবেলায় আমাদের এত অগুন্তি স্মৃতি থাকে যার মধ্যে থেকে কোন একটা বা দুটো স্মৃতিকে বেছে নেওয়া অসম্ভব। তবে আমি আমার ছোটবেলার একটি ঘটনা অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
ছেলেবেলা থেকেই আমার লম্বা চুল খুব একটা পছন্দ নয়। এমনকি এখনো পর্যন্ত আমার নিজের অনেক বড় চুল থাকবে, এটা আমি খুব একটা পছন্দ করি না। কিন্তু হ্যাঁ অবশ্যই অন্যের মাথায় অনেক চুল আছে সেটা দেখতে আমার খুব ভালো লাগে।
আমার খুব মনে পড়ে একটি দিনের কথা,যেদিন মা প্রথমবার আমাকে পার্লারে নিয়ে গিয়েছিল এবং আমার চুলগুলো ছেলেদের মতন করে কাটিয়ে এনেছিল। আমার মনে আছে সেদিন আমি ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। কারণ সেদিন জীবনে প্রথমবার পার্লারে গিয়ে আমি চুল কেটে ছিলাম।
আর ওইভাবে চুল কেটে যখন আমি স্কুলে গিয়েছিলাম আমার সব বান্ধবীরা এসে আমাকে অবাক চোখে দেখছিল। যেটা আমি খুব এনজয় করেছিলাম।
আজও যখন আমি পার্লারে যাই কেন জানিনা আমার ছেলেবেলার ওই দিনটার কথা ভীষণ মনে পড়ে। বিশেষ করে পার্লারে যে বিশেষ চেয়ার গুলো দেখা যায়, ছোটবেলায় ওই চেয়ার গুলোতে বসাই ছিলো আমার পার্লারে যাওয়ার মূল আকর্ষণ।☺
|
---|
ক্রাশ কথাটির সঠিক মানে যখন বুঝতাম না তখন যাদেরকে ভালো লাগতো তাদের কথা আমার খুব বেশি মনে নেই। তবে হাইস্কুলে পড়তে শুরু করলে, সব বান্ধবীদের সাথে মিশতে মিশতে কম বেশি ক্রাশ সম্পর্কে শুনতে শুরু করলাম।
সেই সময় একজনের প্রতি আমার ভালোলাগা তৈরি হয়েছিল। সবথেকে অবাক ব্যাপার তাকে আমি কখনো নিজের চোখে দেখিনি, অথচ মনে মনে তার প্রতি আমার একটা অদ্ভুত ভালো লাগা তৈরি হয়েছিল শুধুমাত্র তার গল্প শুনে শুনে।
আসলে আমার একজন কাকু ছিলেন, যেই বাড়িতে প্রায় দিনই আমাদের যাতায়াত ছিল। সেই কাকুর মেয়ে,যাকে আমি দিদি বলে ডাকতাম,সেই দিদির সাথে আমার সম্পর্ক খুব ভাল ছিল। সেই দিদির পিসির ছেলে সম্পর্কে দিদি আমার কাছে অনেক গল্প করতো। সেখান থেকেই একটা অদ্ভুত ধরনের ভালোলাগা তৈরি হয়েছিল।
যদিও সেটা আমি কখনো দিদির কাছে প্রকাশ করতে পারিনি।এরপর একটা পারিবারিক অনুষ্ঠানের প্রথম বার আমি তাকে দেখেছিলাম। কারণ আমাদের মতন তারাও সেই অনুষ্ঠানে যোগদান করতে এসেছিল। আমি দিদির কাছে ছেলেটির সম্পর্কে যে রকম গল্প শুনেছিলাম, ছেলেটি সত্যিকার অর্থে সেইরকম ছিল।
কিন্তু দুঃখের বিষয় সে বয়সে আমার থেকে অনেক বড় ছিল। তাই ভালোলাগা থাকলেও ভয়ে কোনদিনও কিছু বলতে পারিনি। আর আজকে যখন দাঁড়িয়ে সেই দিনের কথা ভাবি তখন মনে মনে নিজেরই হাসি পায়। আর মনে হয় ভাগ্যিস আমি সেই কথাটা কোনদিনও কাউকে বলিনি। তাহলে হয়তো দিদি বা তার কাছে আমি অনেক খারাপ হয়ে যেতাম।😊
|
---|
আমি খুব বেশি খেলাধুলা কোনদিনই করিনি। শুধুমাত্র বাড়ির পাশে বান্ধবীদের সাথে সকলে ছেলেবেলায় যে ধরনের খেলা খেলে সেগুলোই খেলেছি।
সেটা মাটির তৈরি করা পুতুল দিয়ে পুতুলের বিয়ে দেয়া হোক কিংবা নদীর থেকে কচুরিপানা তুলে এনে সেটা দিয়ে রান্না বাটি খেলা হোক।
তবে হ্যাঁ এই সমস্ত খেলার পাশাপাশি পড়াশোনা সম্পর্কেও যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। কারণ আমরা খুবই নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হয়ে উঠেছি। যেখানে শুরু থেকেই মা আমাদেরকে বুঝিয়ে এসেছিল পড়াশোনাই একমাত্র মাধ্যম, যার দ্বারা ভবিষ্যতে আমরা অনেক ভালো থাকতে পারি।
কারণ পড়াশোনার কোন বিকল্প নেই। আপনাদের জ্ঞানার্থে জানিয়ে রাখি,আমার মা নিজে কিন্তু নিরক্ষর ছিলেন। কিন্তু শিক্ষার সঠিক মূল্যবোধ তিনি আমাদের মধ্যে একদম ছেলেবেলা থেকেই বপন করেছিলেন।
যেই কারণে আমি পড়াশোনার প্রতি ছোটবেলা থেকে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। স্কুল ও কলেজ লাইফে মোটামুটি ভালো রেজাল্ট করেছিলাম কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে আমি যখন একটি সরকারি চাকরি পেয়েছিলাম, সেই সময় আমার মা ভীষণ অসুস্থ থাকায়, আমি সেই চাকরিতে জয়েন করতে পারিনি। যেটা আমার কাছে একটা আফসোসের বিষয় হয়ে থাকবে আজীবন।
|
---|
ছেলেবেলা থেকে নাচ করা যদিও আমি খুব একটা পছন্দ করতাম না। তবে আমার ছোট দিদি নাচ করতে ভীষণ পছন্দ করত। কিন্তু তার যখন নাচ শেখার বয়স ছিল তখন আর্থিক কারণে সে নাচ শিখতে পারেনি।
তাই সে চেয়েছিল আমার মাধ্যমে নিজের শখটা পূরণ করতে। তাই সে যখন আমাকে নাচের স্কুলে ভর্তি করালো, আমার খুব ভালো না লাগলেও, শিখতে শুরু করার পর থেকে একটা ভালো লাগা জন্মাতে শুরু করল।
আমার মনে পড়ে স্কুল ফাংশনে আমি প্রথমবার যখন পার্টিসিপেট করেছিলাম, আমি খুবই নার্ভাস ছিলাম। স্টেজে ওঠার আগে পর্যন্ত আমি ভীষণ কান্না করেছিলাম যার ফলে আমার সাজগোজ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
কিন্তু তারপরেও আমি স্টেজে পারফর্ম করেছিলাম এবং সেইদিন আমি প্রথম স্থান অধিকার করে ছিলাম। আমার প্রাইজটি যখন দিদির হাতে তুলে দিয়েছিলাম, দিদি ভীষণ খুশি হয়েছিল। এটাকে অ্যাচিভমেন্ট বলা যায় কিনা আমি জানিনা তবুও ছোটবেলার স্মৃতিতে ওই দিনটি আমার কাছে আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে।
|
---|
আমার ছোটবেলাটা আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে কাটলেও ভীষণ আনন্দে কেটেছে। ছোটবেলা থেকে আমি কোন কিছু আর পরিবর্তন করতে চাই না। কারণ আমার মনে হয় আমার মতন এত ভালো সুন্দর ছোটবেলা অনেকেই কাটাতে পারেন না।
যেখানে মায়ের স্নেহের শাসন ছিল, বাবার কাছে আবদার করার সুযোগ ছিল,মায়ের বকুনির হাত থেকে লুকানোর মতন বড়োদিদের হাতের বাধন ছিল, এর থেকে ভালো আমি আর কিছুই চাইতে পারি না।
তবে হ্যাঁ ছেলেবেলার কোন জিনিস পরিবর্তন করতে না চাইলেও বড় বেলার একটা জিনিস আমি অবশ্যই পাল্টাতে চাই,সেটা হচ্ছে আমার মায়ের মৃত্যু। কারণ আমি জানি যদি আমার মায়ের মৃত্যুটা আমি বদলাতে পারি, তাহলে আমার জীবনের গতিপথ অনেকটা পরিবর্তন হয়ে যাবে।
তাই এটা আমি সত্যিই চাই। যদিও এটা জানি যে এটা কখনোই সম্ভব নয়,তবুও চাওয়াটা তো শুধুমাত্র নিজের, তাই এই যাওয়াটা আমার আজীবন থাকবে.
|
---|
আমার ছোটবেলার গল্প আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এইরকম অসংখ্য ছোট ছোট মুহূর্ত রয়েছে যেগুলো হয়তো একটা পোস্টে লিখে শেষ করা সম্ভব হবে না।
তবুও প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী যে সকল পয়েন্ট গুলো আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, আমি সবগুলোর উত্তর নিজের মত করে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাই আমার পোস্ট পড়ার পরে, আপনাদের মতামত অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।
সকলে খুব ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। শুভ রাত্রি।
আমি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই - @steemdoctor1 , @wahidsuman ও @deepak94 । আশাকরি আপনারা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের ছোটো বেলার কথা শেয়ার করবেন।
আসলেই আপনি ঠিকই বলেছেন। ছোটবেলার এত এত অগণিত স্মৃতি থেকে, দু একটা স্মৃতি বের করা খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার।
কিন্তু তারপরেও আপনি এমন একটা মুহূর্ত বের করেছেন। যেদিন আপনি অনেক খুশি হয়েছেন।যেদিন আপনার মা আপনাকে প্রথমবারের মতো পার্লারে নিয়ে। আপনার চুলগুলো ছোট ছোট করে কেটে দিয়েছিল। ছেলেদের চুলের মত করে এর পরে আপনি যখন স্কুলে গিয়েছিলেন। তখন আপনার বন্ধু-বান্ধবরা আপনার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল। যেটা দেখে আপনি অনেক বেশি এনজয় করেছেন।
কিন্তু আপনি তার গল্প শুনে তাকে চোখে না দেখে তার প্রতি ভালোবাসা,ভালোলাগাটা সৃষ্টি হয়েছিল। জিনিসটা আমার কাছে অবাক লাগলেও। অনেকটা ইন্টারেস্টিং লেগেছে।
যদিও আপনি খেলাধুলা খুবই কমই করেছেন। তবে আপনি আপনার মায়ের কথা সর্বদাই মেনে চলেছেন। কারণ শুরু থেকেই আপনি আপনার মায়ের কথার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ আপনার মা আপনাকে বলেছিল। আপনার যে পরিবার থেকে বড় হয়েছেন। সেই পরিবারে পড়ালেখায় একমাত্র মাধ্যম। জিনিসটা জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
আপনি আপনার পোস্টে উল্লেখ করেছেন। আপনার দিদির নাচ করার অনেক শখ ছিল। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে,আপনার দিদিকে নাচ শেখাতে পারেনি। তার পরবর্তীতে আপনাকে নাচের ক্লাসে ভর্তি করানো হয়েছিল। যদিও আপনি নাচ শেখাটা তেমন একটা পছন্দ করতেন না। কিন্তু ক্লাসে ভর্তি হওয়ার পরে আপনার ধীরে ধীরে ভালো লাগলো। এবং আপনি স্কুলে প্রথম নাচের স্টেজে গিয়ে আপনার পারফরম্যান্স দিয়েছিলেন। এবং সেখানে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। সেই উপহারটি আপনি আপনার দিদির হাতে তুলে দিয়েছেন।এর চেয়ে ভালো এচিভমেন্ট আমি মনে হয় না আর অন্য কিছু রয়েছে। আপনি আপনার প্রথম পুরস্কারের পুরস্কারটি।আপনি আপনার দিদি হাতে তুলে দিয়েছেন এটাই সবচেয়ে বড় এচিভমেন্ট।
আপনি আপনার ছোটবেলায় অনেক সুন্দর কাটিয়েছেন। আপনি আপনার ছোটবেলা থেকে কোন কিছুই পরিবর্তন করতে চান না। কিন্তু আপনি আপনার বড় বেলায় কিছুটা পরিবর্তন করতে চান।সেটা হচ্ছে আপনার মায়ের চলে যাওয়া। আসলে কি দিদি প্রত্যেকটা মানুষকেই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। কেউ আগে আর কেউ পড়ে এটাই সৃষ্টিকর্তার নিয়ম।
যাইহোক আপনার পোস্ট করে আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। তার সাথে আপনি আপনার অনেকগুলো ফটোগ্রাফি তুলে ধরেছেন। খুবই ভালো লাগলো, অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার শৈশবের এই স্মৃতিগুলো, আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনি সবসময় আমার পোস্ট পড়ে অনেক সুন্দর মন্তব্য করেন। তারজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনি খুব ভালো কাজ করছেন, এমন ভাবেই কাজ করুন। অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য। ভালো থাকবেন।