Better life with steem || The Diary Game || 16th May, 2024 ||
"আমার গতকালের সারাদিন"
Hello,
Everyone,
সুপ্রভাত সবাইকে।
আশা করছি সকলের খুব ভালো আছেন এবং আজকের দিনটি আপনাদের সকলের যেন খুব ভালো কাটে সেই প্রার্থনা করে, আজকের পোস্ট লেখা শুরু করছি। ভেবেছিলাম গতকাল রাতেই পোস্ট লিখবো, কিন্তু সেটা আর হয়ে ওঠেনি।
সত্যি বলতে কথাটা সারাটা দিন শরীরটা বেশ খারাপ ছিলো। তার মধ্যেই কমিউনিটির কয়েকটি পোস্ট ভেরিফাই করতেই হতো, সেগুলো করার পর কয়েকটি পোস্ট পড়ে শুয়ে পড়েছিলাম। তবে ঘুম পাচ্ছিলো না, আবার পোস্ট লিখতেও ইচ্ছে করছিল না।
অন্ধকারের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ফোনের দিকে তাকাতেই গতকাল অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছিলো। সেই কারণে আর পোস্ট লিখিনি।ইউটিউবে নিজের পছন্দের গান চালিয়ে শুয়ে পড়েছিলাম প্রায় দুটো নাগাদ। এরপর কখন ঘুমিয়ে ছিলাম বুঝতে পারিনি।
আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, গতকালের সারাটা দিন আমার কিভাবে কেটেছিলো। চলুন তাহলে শুরু করা যাক, -
"সকালবেলা"
গতকাল ছিল বৃহস্পতিবার। হিন্দু ধর্ম মতে এটিকে লক্ষ্মীবারও বলা হয়ে থাকে। সারা সপ্তাহব্যাপী সংসারের কাজের ব্যস্ততা যতখানি থাকে, তার তুলনায় এই দিন কাজের চাপ একটু বেশিই থাকে। কারণ যেহেতু লক্ষ্মীবার, তাই সমস্ত ঘর মোছা, ঠাকুরের বাসনা ধোঁয়া, ফুলের পাশাপাশি লক্ষীব্রত করার জন্য আমের পল্লব, বেলপাতা, দূর্বা সমস্ত কিছু জোগাড় করাটা বেশ সময় সাপেক্ষ। তাই এই বৃহস্পতিবার দিনটা আমার জন্য একটু কর্মব্যস্ততায় কাটে।
সকালে যথাসময়ে এলার্মের শব্দে ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে প্রথমে ঠাকুরের পূজার ফুল গুলো তুলেছিলাম। আমি মূলত ছাদের গাছে ফোটা ফুলগুলোই তুলে থাকি। বাইরের গাছ থেকে ফুল আমার শাশুড়িমায় তুলে আনেন। যাই হোক ফুল তোলার সম্পন্ন করে, আমি নিচে গিয়ে চা বসাই। শশুরমশাই ও শুভকে চা দিয়ে তারপর আমি মূলত রান্না শুরু করি।
বেশ কিছু খাবার ফ্রিজে থাকার জন্য আজ আর বেশি কিছু রান্না করিনি। শুধু কাঁচা আম দিয়ে টক ডাল রান্না করেছিলাম। তার সাথে শুভকে রুই মাছ ভাজা এবং আলু ভাজা করে দিয়েছিলাম। যে পরিমাণে গরম আবার পড়তে শুরু করেছে, সত্যি কথা বলতে রকমারি খাবার খেতে একদম ইচ্ছে করে না।
শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর আমি উপরের ঘর ঝাড় দিয়ে মুছতে চলে গেলাম। সত্যি কথা বলতে সকাল দশটার সময় রোদ্রের এত বেশি থাকে যে, সেই সময়ের উপরের ঘর মুছে নিচে এলেই মনে হয় যেন অনেক পরিশ্রম করে এলাম। উপরের ঘরের কাজ সম্পন্ন করে আমি ফ্রেশ হয়ে কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম। কিন্তু পোস্টের সংখ্যা একেবারেই ছিল না তাই, আমি আবার উঠে পূজোর বাসন গুলো মেজে, নিচের ঘরটাও মুছে নিলাম।
শাশুড়ি মা আমাদের পাশের বাড়ি থেকে বেল পাতা ও আমের পল্লব নিয়ে এসেছিলেন। ব্রেকফাস্ট এর জন্য শাশুড়ি মা যদিও রুটি বানিয়েছিলেন, কিন্তু আমার রুটি খেতে একটুও ভালো লাগছিল না বলে, নিজের জন্য ম্যাগি বানিয়ে নিলাম এবং ব্রেকফাস্ট সম্পন্ন করলাম।
"দুপুরবেলা"
ইতিমধ্যে দুপুর হয়ে গেলো কমিউনিটির কিছুটা কাজ এগিয়ে নিয়ে আমি উঠে পড়লাম। তাড়াতাড়ি করে স্নান করে পুজো করতে বসলাম। বৃহস্পতিবারে পুজো করতে অনেকটা বেশি সময় লাগে। ঠাকুর স্নান করানো, নতুন পোশাক পরানো, মা লক্ষ্মীর ঘট তৈরি করা, সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে সর্বশেষে পাঁচালী পড়া, সব কিছু মিলিয়ে অনেকটাই সময়ের ব্যাপার।
গতকাল পাঁচালী পড়তে বসে আমি যে কতবার ঘুমিয়ে পড়েছি সেটা আমি নিজেও জানিনা। আসলে এনগেজমেন্ট চলার কারণে রাতের দিকে ঘুম হয় না প্রায় ছয় সপ্তাহ হতে চলল। দিনের বেলায় ঘুমালে রাতের ঘুমের ঘোর কাটে না। আর এমনিতেও বেশি রাত পর্যন্ত জাগা আমার কখনোই অভ্যাস ছিল না।
তারমধ্যে সদ্য স্নান করে এসে ফ্যানের নীচে পুজো করতে বসলে ঘুম পাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। যাইহোক এরকম ভাবেই পূজা সম্পন্ন করলাম। তারপর উঠে আমি পিকলুকে খেতে দিয়ে দিলাম। ইতিমধ্যে শাশুড়ি মা ও শশুর মশাইয়ের স্নান হয়ে গিয়েছিলো, তাই সমস্ত খাবার টেবিলে নিয়ে এসে আমরা একেবারে লাঞ্চ করে নিলাম।
"বিকালবেলা"
এরপর বিশ্রাম নেওয়ার জন্য শুয়ে পড়লাম, কিন্তু কখন ঘুমিয়ে পড়েছি বুঝতে পারিনি। শাশুড়ি মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো, শ্বশুরমশাইয়ের অসম্ভব কাশি হচ্ছিলো, তাই ওনাকে নিমোলাইজার দেওয়ার জন্য ডেকে তুললো এবং ঘুম ভাঙ্গার পর আমি বুঝতে পারলাম যে আমি কতখানি গভীর ঘুমাচ্ছিলাম, যে শ্বশুর মশাইয়ের কাশির আওয়াজ আমার কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
"সন্ধ্যাবেলা"
আমি উঠলাম। ফ্রেশ হয়ে এসে শশুর মশাইকে নিমোলাইজার দিয়ে দিলাম। ইতিমধ্যে সন্ধ্যা হয়ে এলো, তাই আমি সন্ধ্যা পূজো দিয়ে কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম। বুমিং সংক্রান্ত কাজটি শেষ করার পর, শরীরটা খুব একটা ভালো লাগছিল না বলে, একটুখানি চুপচাপ শুয়ে রইলাম।
তারপরে শুভ বাড়িতে এলো আসার সময় ও মোমো নিয়ে এসেছিলো, অনেকদিন বাদে খেয়ে বেশ ভালো লাগলো।পিকলু আমাদের পিছু একটু ঘোরাঘুরি করছিলে বটে, কিন্তু ওকে দেওয়া যাবে না বলে, আমি ওকে বিস্কুট দিলাম।
"রাত্রিবেলা"
শুভ ওপরে যাওয়ার পর আমি বসে কয়েকটি পোস্ট পড়লাম এবং তারপর রাতের রুটি করতে গেলাম। আজকাল রুটি শুধুমাত্র শ্বশুরমশাই এবং পিকলু খায়, তাই একটু দেরি করেই রুটি বানাতে যাই। রুটি বানানোর শেষ করে একেবারে ভাত গরম করে টেবিলে নিয়ে এলাম। তারপর পিকলুকে খাবার খাইয়ে দিয়ে আমি আমরাও সকলে ডিনার করে নিয়েছিলাম।
তারপর যথারীতি কাজ গুছিয়ে কমিউনিটির কয়েকটি পোস্ট ভেরিফাই করেছিলাম। আসলে গতকাল ঠিক কি কারণে জানিনা শরীরটা এত বেশি খারাপ লাগছিল যে, কোনো কাজেই যেন এনার্জি পাচ্ছিলাম না।
আজও খুব একটা ভালো আছে এমনটা নয়, তবে গতকালের তুলনায় একটু ভালো লাগছে। এই কারণে ভাবলাম কমিউনিটির কাজ শুরু করার আগে অন্তত আপনাদের সাথে আজকের পোস্টটা শেয়ার করি। তাই বৃহস্পতিবারের সারাটা দিনের গল্প শেয়ার করলাম। যাইহোক আজকের পোস্ট সেখানেই শেষ করি। সকলে ভালো থাকবেন।
TEAM 2
Congratulations! This post has been voted through steemcurator05. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.Thank you so much for supporting my post @msharif & @steemcurator05.
আপনার সারাদিনের কার্যক্রম পড়ে মনে হল খুব ব্যস্ততার মাঝে দিন পার করেছেন।
আমারও ঠিক তাই মনে হয় বৃহস্পতিবারের দিনে কাজের অনেক চাপ থাকে।
সকাল থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আপনাকে অনেক কাজ করতে হয়েছে। এদিকে আপনার শশুরের আবারো কাশি বেড়ে গেছে। তাই আপনি নিমোলাইজার লাগিয়ে দিয়েছেন।
সারাদিনের খানিক মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শশুরমশাই দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কাশির কারনে ওনার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে নিমোলাইজার দিতেই হয়। বৃহস্পতিবার মানে সত্যিই অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু বেশিই ব্যস্ততা থাকে আমার। এইদিন আমার শরীরটাও বেশ খারাপ ছিলো। যাইহোক, আমি ধন্যবাদ জানাই আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আমরা হিন্দুধর্মাবলম্বীরা বৃহস্পতিবার কে লক্ষ্মীবার বলে থাকি। এদিন আমার মাও বাড়িতে লক্ষীব্রত করে থাকে। তবে বর্তমানে বাড়িতে অশৌচ থাকার কারনে করছে না।
বর্তমানে এনগেজমেন্ট চ্যালেন্জ চলার কারনে আপনার সবাই অনেক কাজের চাপের মধ্যে রয়েছেন এটা আমরা সকলেই জানি।
আপনার পোস্ট পড়তে আমার বরাবরই খুব ভালো লাগে। যদিও আজ সাপ্তাহিক এনগেজমেন্ট রিপোর্টের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার কার্যক্রম তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন।
বললেই হলো, আপনারা দুই দিদি এনগেজমেন্ট না থাকলেও অনেক রাত অব্দি জেগে থাকেন। আর অনেক রাত অব্দি জেগে থাকলে দিনের বেলা ক্লান্তি সহজে কাটতে চায় না। শরীর কিন্তু ঠিক ঘুম আদায় করে নেয়। মোমোগুলো দেখতে যথেষ্ট লোভনীয়। শুভদা কি ওয়াও মোমো থেকে কিনে এনেছে?
ঠিকই বলেছেন বৃহস্পতিবার দিন টা যারা একা হাতে পূজা করে ,রান্নাবান্না ,করে তারাই জানে যে দিনটা কিভাবে পরিশ্রম হয়। বৃহস্পতি বার দিন টা খুব ব্যস্ততায় কাটে। বৃহস্পতি বারে লক্ষ্মীর পাঁচালী থেকে শুরু করে আরো অনেক কিছু পড়তে হয়। হিন্দু ধর্মে বৃহস্পতিবারকে লক্ষীবার বলা হয়। আপনার সারাদিনে মুহূর্তগুলো বেশ ভালোই ছিল।