Better life with steem || The Diary Game || 11th October

in Incredible India11 months ago
IMG_20231012_010748.png
"সকাল থেকে রাত, আমার সারাদিন"- edited by canva

Hello,

Everyone,

গত কয়েকদিন ধরে অনেক রাত পর্যন্ত জাগা হচ্ছে। আবার সকালে সময় মতন ঘুম থেকে উঠে পড়ছি। এমনকি দুপুর বেলাতেও বিশ্রাম হচ্ছে না। তার উপরে সংসারের কাজকর্মের বাইরে, শ্বশুর মশায়ের শারীরিক অবস্থা অবনতি, সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে আজ সকাল থেকে আমার শরীরটা বেশ খারাপ।

গতকাল প্রায় রাত আড়াইটার পরে শুতে গিয়েছি। সকালে যথা সময়ে ফোনের অ্যালার্ম বেজেছে ঠিকই, কিন্তু কখন যেন ঘুমের চোখে অ্যালার্ম বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে পড়েছি। হঠাৎ করেই শুভর ফোনে অ্যালার্ম বাজার শব্দ শুনে সাথে সাথে ঘুম থেকে চমকে উঠলাম।

আসলে এই অ্যালার্মটা বাজার সময় আমি শুভকে ওপরে চা দিতে আসি। সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারছেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আমি ঠিক কতটা দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছি।

IMG_20231012_004905.jpg
"সকাল বেলার রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া"

কারণ আমার প্রতিদিনের রুটিন অনুযায়ী এতক্ষণে আমার নিচে গিয়ে শ্বশুর মশাইয়ের ব্রেকফাস্ট এর জন্য রুটি তৈরি করা হয়ে যায় এবং উনাকে খাওয়ার আগের ওষুধ দেওয়া হয়ে যায়। তারপর আমি ওনাকে চা দিয়ে, শুভর জন্য চা নিয়ে উপরে আসি, তারপর ওর ফোনে এই অ্যালার্ম বাজে।

ঘুম থেকে উঠে প্রথমে বসে রইলাম কিছুক্ষণ। শরীরটা আসলেই খুব খারাপ লাগছিল। তারপর কোনো রকমে উঠে ফ্রেশ হলাম। নিচে গিয়ে শশুর মশাইকে ওষুধ দিয়ে, ভাত বসিয়ে, শুভর জন্য চা নিয়ে উপরে এলাম।

চায়ের কাপটা টেবিলের উপরে রেখে, আমি আবার শুয়ে পড়লাম। শুভ অবশ্য বলেছিল আজকে লাঞ্চ দেওয়া লাগবে না, কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম বাড়ির সব কাজ তো করতেই হবে, তাই শুয়ে থেকে লাভ নেই। আবার উঠে নিজের প্রতিদিনের কাজ শুরু করলাম।

যথাসময়ে শুভ ব্রেকফাস্ট সেরে অফিসে বেরিয়ে গেলে আমি কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসবো। ঠিক এরকম সময়ই শশুর মশাই ডাকলেন। তখন ওনার আবার জ্বর এসেছে। তাই আবার জ্বরের ট্যাবলেট দিয়ে, কিছুক্ষণ ওয়েট করলাম। কতটা জ্বর দেখার জন্য থার্মোমিটার দিয়ে মেপে দেখলাম তখন ১০৩ জ্বর।

মাঝখানে বেশ অনেকটাই সেরে উঠেছিলেন। হঠাৎ করে গত দুইদিন ধরে শরীরটা অনেকটাই খারাপ। ডক্টর দেখানোর পরে ওষুধ দিয়েছেন, কিন্তু বুঝতে পারছি না এই জ্বরটা কেন আসছে। ওনার যখন জ্বর আসে তখন ওনার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরের তাপ অনুভব করা যায়। যাই হোক এরপর ওনাকে ওষুধ দিয়ে, কমিউনিটির কিছু কাজ সেরে, ঘরের বাকি কাজগুলো করে নিলাম।

IMG_20231012_005546.jpg
"আমাদের বাড়ির রাধাকৃষ্ণের মূর্তি"

শরীরটা সকাল থেকে ভালো লাগছিল না। তাই ভাবলাম তাড়াতাড়ি স্নান করে নিলে বোধহয়একটু ভালো লাগবে। সেই মতো ঠাকুরের বাসন গুলো মেজে নিয়ে, স্নান করে ঠাকুর পূজা দিয়ে নিলাম। স্নান করার পর সত্যিই একটু ভালো লাগছিল।

IMG_20231012_005517.jpg
"আজকের লাঞ্চের মেনু"

কিন্তু দুপুরবেলা লাঞ্চ করতে এতটুকু ইচ্ছে করছিল না। তাই আগে শশুর মশাইকে লাঞ্চ করিয়ে দিয়ে, পিকলুকেও ওর লাঞ্চ দিলাম। শাশুড়ি মা ততক্ষণে স্নান করে এলে, আমি অল্প একটু ভাত খেলাম। এরপর উঠে আমি আবার যথারীতি কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম। অন্য ঘরে বসে শাশুড়ি মা আমার ননদের সাথে ফোনে কথা বলছে শুনলাম।

তবে কথোপকথনে বুঝলাম বিকেল বেলায় আমার ননদ আমাদের বাড়িতে আসছে। আসলে নিজের শরীর ভালো না থাকলে বোধহয় কোনো কিছুই ভালো লাগে না। চুপচাপ নিজের মতন ঘরের মধ্যে কাজ করছিলাম, তার ওপর এতগুলো লোক আসবে শুনে আরো বেশি বিরক্তি লাগছিলো।

কিন্তু কিছু করার নেই, শ্বশুরমশাইকে দেখতে আসবেন। আমি সন্ধ্যা পুজো দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই কলিংবেলের আওয়াজ শুনতে পেলাম। দেখলাম আমার ননদ এবং তার দুই ছেলে এসেছে।

ওরা সকলে মিলে শশুর মশাইয়ের ঘরে কথা বলছিল। আমি নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে শুয়ে কমিউনিটির কিছু কাজ করে নিলাম। তারপর ওদের সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বললাম। আজকে সন্ধ্যা বেলায় চা আমার শাশুড়িমা করেছিলেন।

কিন্তু আমার শরীরটা এতটাই খারাপ লাগছিল যে, আমি একটু লেবু জল করে খেলাম। আসলে একটা অস্বস্থি লাগছিল শরীরের ভিতরে এবং সেটা বোধহয় পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার থেকেই। ঠিক তখনই আমি ভাবছিলাম কি করে আমাদের অ্যাডমিন ম্যাম রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে কমিউনিটির কাজ গুলো করেন।

IMG_20231012_005404.jpg
"সন্ধ্যা বেলার টিফিন,সকলের প্রিয় ফুচকা"

এইজন্য বোধহয় বলে কিছু কাজ কিছু মানুষের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। আমি হয়তো ওনার জায়গায় থাকলে এত ধৈর্য সহকারে এই কাজগুলো করে যেতে পারতাম না। যাইহোক সন্ধ্যা বেলায় সকলে মিলে ফুচকা খাবে বলে আমার ননদের বড় ছেলে স্টেশন থেকে ফুচকা নিয়ে এলো।

সকলের মিলে ফুচকা খেলো। আমার যদিও খেতে ইচ্ছে করছিল না, কিন্তু ননদ জোর করাতে তিন চারটে খেয়েছিলাম। আমরা ফুচকা খাচ্ছি এরকম সময় আবার কলিংবেলের আওয়াজ পেয়ে গেটে গিয়ে দেখলাম, বাপির(শশুররমশাই) দুজন বন্ধু এসেছেন বাপির সঙ্গে দেখা করতে।

অগত্যা আবার তাদেরকে চা করে দিলাম। ততক্ষণে শ্বশুরমশাই ওষুধের খাওয়ার সময় হয়ে গেছে বলে ওনাকে দুটো বিস্কুট দিয়ে ওষুধ দিয়ে দিলাম। রাতের খাবার অবশ্য আমার ননদই খাইয়ে ছিল। কারণ আমার শরীরটা খারাপ লাগছিল বলে আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম।

সবার খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ননদ আমাকে ডাকলো। আমি শাশুড়ি মা ও ননদ একসাথে খেতে বসলাম। আমি উঠে অল্প একটুখানি ভাত খেলাম।

এরপর শ্বশুর মশাইকে ইনসুলিন দিয়ে ওনাকে রাতের ওষুধ গুলো দিয়ে দিলাম। অন্যদিকে ননদ বাড়িতে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিলো। এরপর ওরা বাড়িতে চলে গেল এবং আমিও উপরে এসে আমার পোস্ট লিখতে বসলাম।

IMG_20231012_005622.jpg
"বিকালের আকাশ"

আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘরের প্রচুর কাজ বাকি। আশা করছি আজকে রাতে ভালোভাবে ঘুমালে কালকে শরীরটা একটু ভালো লাগবে। যাইহোক আমার আজকের দিনটা এইরকম ভাবে কাটল।

আশা করছি আপনাদের সকলের দিনটা অনেক ভালোভাবে কেটেছে। আগামী দিনগুলো আপনাদের শুভ হোক, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন,শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 11 months ago 

আসলে আমাদের শরীর যখন খুব খারাপ লাগে, তখন আমাদের কাছে কোন কিছুই ভালো লাগেনা। বিশেষ করে কোন কাজ করতে ভালো লাগে না। মনে হয় কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিলে শরীর থেকে কোন একটা জিনিস বিদায় নেবে। কিন্তু তখন যদি শুয়েও থাকি ঘুম আসে না, একটা অস্বস্তি কাজ করে।

আর প্রতিনিয়ত আপনার যে অবস্থা শুনতে পাচ্ছি, এভাবে আপনি অসুস্থ না হয়ে থাকতেই পারেন না। কেননা একজন অসুস্থ রোগীর সেবা করতে করতে একজন সুস্থ মানুষ এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। আপনি তো আজকে দীর্ঘদিন যাবত আপনার শ্বশুরের সেবা করে যাচ্ছেন। তারপরে কমিউনিটির কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন।

আপনার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি। উনি আপনাকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুক। কেননা ধৈর্য না ধরলে জীবনে বেঁচে থাকাটা অনেক বেশি কষ্টকর হয়ে যায়। মাঝে মাঝে আমিও চিন্তা করি যে এমন কিছু করে ফেলব। যেন দুনিয়া থেকে একেবারে চলে যাই। তারপর আবার চিন্তা করি আমার ছেলেদের কি হবে। আপনার শরীর সুস্থ হোক এ কামনা করছি। নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

 11 months ago 

ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য। কষ্ট আমাদের জীবনের অঙ্গ, কিন্তু কখনো কখনো এই সামান্য কথাটাই আমরা ভুলে যাই। মা হিসাবে নিজের থেকেও বেশি সন্তানদের কথা ভাবতে হয়। যেটা আপনি করে থাকেন। সন্তানদের নিয়ে ভালো থাকুন এই প্রার্থনা রইলো।

 11 months ago 

আপনার দিন লিপি পড়ে জানতে পারলাম যে, আপনার শশুরের অবস্থা এখনো তেমন ভালো হয়নি।এর মধ্যে সংসারের কাজকর্ম তো আর ফেলে রাখার উপায় নেই। আপনার পাকলুটা দেখতে বেশ সুন্দর। দুপুরের খাবার মেন্যু টাও বেশ সুস্বাদু হয়েছে মনে হচ্ছে। আপনার শরীরের প্রতি যত্ন নিবেন।নিজে সুস্থ না থাকলে অন্যের সেবা করা অনেক টাই কঠিন ব্যাপার। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন সবসময়।

আমি মাঝে মাঝে ভাবি একজন মেয়ে কতটা ধৈর্যের সাথে তার পুরো পরিবারের সেবা করে যায় নিপুণ হাতে।সে নিজে অসুস্থ হলেও অন্যদের সেবা করতে পিছপা হয় না।আপনার শ্বশুর মশায় অসুস্থ, তার সেবাও করছেন সঙ্গে রান্না বান্না ও করছেন।সঙ্গে কমিউনিটির কাজ ও নিপুন হাতে সামলাচ্ছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 58399.10
ETH 2475.73
USDT 1.00
SBD 2.38