ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ মায়ের চলে যাওয়ার ছয় মাস পূর্ণ হতে চললো।
প্রিয় বন্ধুরা আশা করি সকলে ভালো আছেন পরিবার-পরিজনকে নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে। প্রিয় পরিবারের সকল বন্ধুরা আমি আজকে আবার উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি টপিক্স নিয়ে। সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ধারাবাহিক নিয়মে উপস্থিত হওয়ার জন্য। তাই ভিন্ন ভিন্ন টফিক্স সিলেক্ট করে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে বেশ ভালো লাগে। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং শেয়ার করবো। মাঝেমধ্যে মনের মাঝে অনেক কিছু উঁকি ঝুঁকি দেয় লিখার জন্য। কিন্তু যখন লিখতে বসবো তখন একটাও বিষয় একটাও টপিক্স মনে পড়ে না। ঠিক যেমন কবিতার মত কবিতা লিখতে যেমন আমরা আর কোন ভাষা খুঁজে পাই না লিখতে গিয়ে। ঠিক তেমনি যখন আমরা ক্রিকেট রাইটিং গুলো লিখতে যাই তখন আর মনের মধ্যে তেমন বিষয়গুলো ধরা দেই না।
তাই আমি আজকে চিন্তা করলাম যে আমার মাকে নিয়ে কিছু লিখবো। আপনারা তো জানেন অনেকেই কিছুদিন আগে আমার আম্মু না ফেরার দেশেই চলে গেলো। আগামী ২৭ তারিখ ৬ মাস পূর্ণ হতে চলেছে এই মে মাসের। আগামী ২৭ তারিখ সোবার ঠিক নভেম্বর এর ২৭ তারিখ সোমবার আমার মা চলে যাই আল্লাহর ডাকে। আমার আম্মুর মৃত্যুর ৬ মাস পূর্ণ হবে। কিন্তু একদিনও ভুলতে পারি নাই আমার আম্মুকে। কি করে ভুলি বলেন, যেখানে দীর্ঘ বছর পর্যন্ত মাকে নিয়ে কেটাইছি সেখানে হঠাৎ করে মাকে ছাড়া কিভাবে কাটায় সময় গুলো। প্রতিটি সন্তানের কাছে মা নিঃশ্বাসে বিশ্বাসে রয়ে যায় থেকে যায় সারা জীবন। প্রতিটি সন্তানের কাছে মা শব্দটি রক্তের সাথে মিশে থাকে। আমার তো এখন একটা নিশ্বাসও যাই না এবং একটা মুহূর্ত নেই প্রতিটি কদমে মায়ের কথা বেশ স্মরণ করি না।
আমি জানি আমরা সবাই জানি কোন কিছু থাকতে তার কদর একদম বুঝি না। মা বাবার কদর বুঝি না আমরা তেমন মূল্যায়ন করি না মা বাবা থাকতে। যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন আমরা হাহাকার হয়ে যাই। আমাদের মনে বিষন্নতা নেমে আসে আফসোস নেমে আসে কেন এটা করলাম না কেন ওটা করলাম না। আমরা নিজেরাই চেষ্টা করি আমাদের সাধ্যমত মা-বাবার জন্য কিছু করার। তবে এমন কিছু সন্তান আছে যারা মাকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে থাকেন। এখন আমি চিন্তা করি আমার মা যদি আরো এক বছর দুই বছর থাকতো তাহলে আমি আরো কিছু করার সুযোগ পেতাম। সৃষ্টিকর্তা আমাকে সেই সুযোগ আর দিল না।
সৃষ্টিকর্তার ডাকে সাড়া দিয়ে চলে যেতে হলো মাকে। মায়ের ভাগ্য ভালো আর আমাদের ভাগ্য খারাপ। মায়ের ভাগ্য ভালো খুব সুন্দরভাবে চলে গেলো। আমাদের ভাগ্য খারাপ সেবা করতে পারছিনা। এখানে আপনার আমার কোন হাত নেই। একদিন আমাকে চলে যেতে হবে আপনাকেও চলে যেতে হবে। সবাইকে একদিন এই পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশেই চলে যেতে হবে। যেখান থেকে আমরা আর কখনো ফিরে আসবো না সেই অন্ধকার জগত থেকে। কিন্তু কিছু কিছু স্মৃতি আমাদেরকে খুব বেশি কষ্ট দেয় অনেক বেশি বেদনা দেই অনেক বেশি স্মৃতিচারণ করতে শেখায়।
আমি আসলে মায়ের মর্ম এতটা বুঝি নাই। আমি বুঝি নাই এত কষ্ট পাবো নিজে নিজে। আমার অনুভূতিতে এত কষ্ট কাজ করবে আমি জানতাম না। যদিও মা যখন ছিল প্রতিদিন আমি সময় করে দুই একবার মাকে ফোন দিয়ে খবর নিতাম। কিন্তু আমি ভাবি নাই যে এত আগে মা চলে যাবে আমি মনে করছিলাম মা আরো কিছুদিন আমাদের মাঝে থাকবে। হঠাৎ করে মা এভাবে ঘুমের মধ্যে চলে যাবে সেটা ভাবতে পারি নাই। হঠাৎ দেখতে দেখতে আমার মায়ের মৃত্যুর ৬ মাস হয়ে গেল। জীবন থেকে এভাবে আমাদের সময় গুলো চলে যাচ্ছে বয়স গুলো চলে যাচ্ছে আমরা নিজেরাই টের পাচ্ছিনা। আমরা নিজেরাই টের পাচ্ছি না আমরা একটু একটু করে মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যাচ্ছি।
তবে এটা ঠিক যে আমাদের মৃত্যু কখন হবে সেটা আমরা নিজেরাও জানিনা। হয়তো আমি কথা বলতেছি এখন আমার দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সৃষ্টিকর্তা আমার রূহ কবজ করে নিতে পারেন। তাই আমাদের সকলের উচিত মৃত্যুর জন্য আমাদেরকে সব সময় প্রস্তুত থাকা। কারণ মৃত্যু যখন বলে আসে না তাই যেকোনো সময় আমাদের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হওয়া ভালো। আর পৃথিবীতে মায়ের শাসন বাবার আদরের তুলনা হয় না। যার কাছে এই দুইটি জিনিস থাকে তারা খুব ভাগ্যবান। সেই মূল্যবান জিনিস মা-বাবা থেকে যদি একজনকে হারিয়ে ফেলি আমরা বুঝি সেই জিনিসের মর্মতা কত! আমরা তখন বুঝতে পারি বেশি মূল্যবান ছিল আমাদের কাছে তারা।
বিশেষ করে বাবা যখন হারিয়ে যায় মাথার থেকে ছায়া সরে যায় সাপোর্টের জায়গাটি সরে যাই। যখন মা হারিয়ে যায় তখন পুরো পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায়। আমি মনে করি যারা মা-বাবাকে নিয়ে বসবাস করতেছেন যাদের মা বাবা এখনো বেঁচে আছেন তারা সবাই চেষ্টা করবেন একটু যত্ন নেওয়ার। মায়ের মনের কথাগুলো একটু জানার চেষ্টা করবেন। তাদের মনের ইচ্ছাগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবেন যদিও কষ্ট হয়। আমি জানি প্রতিটি সন্তানের কাছে মায়ের এমন চাওয়া খুবই মূল্যবান। এছাড়া ও আমি এটাও জানি যে অনেক সময় নিজেদের অনিচ্ছার সত্ত্বেও মা-বাবাদের কথা গুলো শুনতে হয় মানতে হয় এবং বাধ্য হয়ে সেই ইচ্ছে গুলো পূরণ করতে হয়। সেটাতে এক প্রকারের মঙ্গল রয়েছে।
কারণ মা-বাবারা কখনো সন্তানদের খারাপ চাইনা। আপনি যেমন আপনার সন্তানকে বড় করতেছেন আপনাদের মা-বাবা ও আপনাদেরকে সেভাবে বড় করেছে। তাহলে বুঝতেই হবে একটা সন্তান বড় করার পেছনে একজন মা-বাবার কত অবদান থাকে। এখন যেহেতু সন্তান বড় করতেছি বেশ বুঝতে পারতেছি আমাদের জন্য আমাদের মা বাবা কত মূল্যবান ছিল। আমাদেরকে কত কষ্ট করে বড় করেছে মা-বাবারা। এই বিষয় যদি মনে করি সময় থাকতে যদি বুঝতে পারি আমাদের সবচেয়ে বেশি উপকারে আসবে। আগের যুগ এবং এখনের যুগের মধ্যে অনেক বেশি পার্থক্য রয়েছে। তখন সবকিছুতে অনেক বেশি কঠিন ছিল গ্রামের পরিবেশে। এখন তো দিন দিন আধুনিকতার ছোঁয়ার কারণে সবকিছু সহজ হয়ে গেছে।
তাহলে বোঝেন আমাদের মা-বাবারা কত কষ্ট করেছে আমাদের জন্য। আপনাদের কাছে এই অনুভূতিগুলো শেয়ার করতে পেরে আমার কিছুটা হলেও হালকা লাগতেছে বন্ধুরা। আগামী ২৭ তারিখ আমার আম্মুর চলে যাওয়ার ৬ মাস পূর্ণ হবে। সেদিনে আমরা মিলাদ দিয়ে খতমে কোরান পড়ায়ে দোয়ার আয়োজন করবো। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমার আম্মুর জন্য। সৃষ্টিকর্তা যেন আমার আম্মুকে বেহেস্তের সর্বোচ্চ স্থান দান করেন সেই কামনা করি । সবাই সুস্থ থাকেন ভালো থাকেন আল্লাহ হাফেজ।
লেখার উৎস | নিজের অনুভূতি থেকে |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
#feelingofmotherslove #mothersmemory-grazing #amarbanglablog #steemxclusive #shy-fox #abb-school #creativewriting
https://twitter.com/nahar_hera/status/1792079595749220499?t=lSSd7btE_pKHR59_zDd7KA&s=19
আপু বেশ খারাপ লাগলো আপনার মায়ের কথা গুলো পড়ে। আসলে মা তো মা। আমরা তো আমাদের মা কে হারিয়েছি। তবে মাকে ভুলতে পারি না আপু। ঘুরে ফিরে বারে বারে মায়ের কথাই মনে পড়ে। দারুন লিখেছেন আপু। দোয়া রইল আন্টির জন্য। তিনি যেন জান্নাত বাসী হন।
অনেক ধন্যবাদ আপু আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন।
মায়ের মত কেউ এত আপন হয় না।মা না থাকলে পুরা দুনিয়া অন্ধকার হয়ে যায়।বাড়ি এসে মা কে না পেলে খুবই খারাপ লাগে।মা হীন আমরা শূন্য।আপনার মায়ের জন্য দোয়া রইলো আপু।যেইখানে থাকুক ভালো থাকুক।পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপু।
এখন আপু মা নেই তাই প্রতিটি মুহূর্ত বেশ স্মরণ করি।
প্রত্যেকেরই একদিন মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে আপু, এটাই চিরন্তন সত্য। আপনার আম্মুর আসলেই খুব ভালো কপাল, ঘুমের মাঝে শান্তিতে চলে গিয়েছেন, এটা ভালো কাজের ই ফলাফল হিসেবে মানা হয় আমাদের। মা এর স্থান আসলে অপূরণীয়। তবে মানিয়ে নিতেই হবে আপু। আর যখন ই আম্মুকে মনে পড়বে, আম্মুর জন্য দোয়া করবেন।
অনেক অনুপ্রাণিত হলাম আপু দোয়া করবেন আমার আম্মুর জন্য।
পোস্টটা পড়তে পড়তে অনেকটা মন খারাপ হয়ে গিয়েছে আপু। সত্যি বাবা মা আমাদের জন্য কত কি করেন।দুনিয়াতে যার বাবা মা নেই সেই জানে যে সে কি হারিয়ে ফেলেছে। আপনাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমার নেই।তবুও বলবো ধৈর্য ধরুন আপু। দোয়া করি আন্টি জান্নাতবাসী হোক।
সময় গুলো খারাপ যাচ্ছে আপু দোয়া করবেন আমার আম্মুর জন্য।