ট্রাভেলিংঃ-রাঙ্গামাটির পলওয়েল পার্কে ঘোরাঘুরির পর্ব-৩।

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

সবাইকে শুভ বিকেল,

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে আপনাদের দোয়ায়। বন্ধুরা আপনাদের দিনকাল কেমন যাচ্ছে হয়তো ব্যস্ততা সকলেরই বেড়ে গেছে। যেহেতু দেখতে দেখতে রোজা শেষ হয়ে গেল আজ শেষ রোজা আমাদের। আগামিকাল সারাদেশে ঈদ উৎসব পালিত হবে। সবার ঈদের দিন ভালো কাটুক সেই প্রত্যাশা কামনা করছি। ঈদের ব্যস্ততা আমাদের সকলকে অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়। যেহেতু অনেক কিছু কেনাকাটা থাকে এবং ঈদ উপলক্ষে সবাইকে বাড়িতে ফিরতে হয় ব্যস্ততম কিছুদিন কাটাতে হয় সবার। সত্যি দিন গুলো যদিও ব্যস্ততার মধ্যে যায় তারপরও আমরা অনেক বেশি আনন্দ পেয়ে থাকি। এই আনন্দ হচ্ছে ঈদের আনন্দ। এই আনন্দ হচ্ছে খুশির আনন্দ সবার ঘরে ঘরে। সবার ঈদ আনন্দময় হোক সেই কামনা করছি।

p4.jpg

p12.jpg

বন্ধুরা আজকে আমি গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছি। গ্রামের মজাই আলাদা। যখন গ্রামে যাবো না এইবার বাচ্চাদের সেই কথা বলার সাথে সাথে অস্থির অবস্থা। তাই আজ সকালে গ্রামে চলে এসেছি। যাক অনেক কথা বলে ফেলেছি। এখন মূল বিষয়ে ফিরে আসি। আজকে আমি আবার উপস্থিত হয়েছি পলওয়েল পার্কে ঘোরাঘুরির তয় পর্ব নিয়ে। গত পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম গ্রামের মেয়েদের ঢেঁকি ব্যবহারের বিষয় নিয়ে। আজকে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে উপস্থিত হয়েছি।

p.jpg

p1.jpg

পলওয়েল পার্ক এমন একটি জায়গা সেখানকার প্রাকৃতি দৃশ্য গুলো খুবই সুন্দর ছিল। যতই ভিতরে প্রবেশ করেছিলাম ততই মুগ্ধ হয়ে গেছিলাম। এত সুন্দর করে চারপাশের পরিবেশ গুলোকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দৃশ্যের সাথে মিল রেখে সাজানো হয়েছিল। বিশেষ করে সেখানকার লেকের দৃশ্যটি আমাকে অনেক বেশি মুগ্ধ করে। যদিও আমরা দুপুরে ঘুরতে গিয়েছিলাম কিন্তু বিকেল বেলার সময়টা বেশ ভালোভাবে উপভোগ করার মত ছিল। যদিও সেই সময়ে আমরা ছিলাম না।

পলওয়েল পার্কের একটি দৃশ্য আমাকে অনেক বেশি মুগ্ধ করেছে সেটা হচ্ছে যে বিকেল বেলায় লেকের পাশে বসে খুব সুন্দর সময় কাটানো যাবে। পার্কের তত্ত্বাবধানে লেকের পাশে খুব সুন্দর একটি রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্ধুরা আপনারা অবশ্যই ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বুঝতে পারছেন কত সুন্দর একটি জায়গা। যদিও দিনের বেলায় গরমের মধ্যে বসা যাবে না। কিন্তু বিকেল বেলায় সুন্দর একটি পরিবেশ হবে। এমন জায়গায় যদি প্রিয়জনদের সাথে বসে সময় কাটানো যায় অনেক ভালো লাগবে। বিশেষ করে চা খেতে খেতে অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করা যাবে।

p3.jpg

p6.jpg

এছাড়াও পার্কের নিচের সাইডে খুব সুন্দর একটি রাস্তা করা হয়েছে। যেহেতু পার্কটি একটি পাহাড়ের উপরে স্থাপন করা হয়েছে। সেখান থেকে সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার ব্যবস্থা রয়েছে। বাচ্চারা অনেক বেশি আনন্দ করেছিল। প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে বেশ ভালোই লাগছিল। অনেক আনন্দ করে খেলাধুলা করছিল মেয়েরা। স্বল্প সময়ের মধ্যে বেশ কিছু জায়গায় আমি ঘোরাঘুরির চেষ্টা করেছিলাম। সবচেয়ে আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে লেকের পাশের রেস্টুরেন্ট। আমি আগে আপনাদেরকে শেয়ার করেছিলাম আমার ইচ্ছে ছিল এখানে বসে বিকেল বেলায় নাস্তা খাবো। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে সেখানে নাস্তা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়নি।

যখন পার্কের চারদিকে ঘোরাঘুরি করছিলাম কিছু জায়গা যেতে যেতে বেশ সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখছিলাম। বিশেষ করে বন্য পশু পাখির সুন্দর সুন্দর ভাস্কর্য তৈরি করা দেখছিলাম। হরিণের ভাস্কর্য, বাঘের ভাস্কর্য অনেক ভালো লাগছিল। তাছাড়াও গ্রামীণ দৃশ্যের কিছু ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছিল সেখানে। বিশেষ করে আমি শেয়ার করেছিলাম গ্রামের মহিলাদের ঢেঁকিতে কাজ করার দৃশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। এই পর্বে আমি শেয়ার করেছি আপনাদের সাথে গ্রামের মহিলারা কোমরে কলসি নিয়ে পানি আনতে যাচ্ছে এমন সুন্দর দৃশ্য।

p7.jpg

p8.jpg

আমাদের গ্রাম বাংলার মহিলারা অতীতে অনেক কষ্ট করেছেন খাবার পানি নিয়ে। শুধু খাবার পানি কেন তারা গোসলের পানি নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন। এখন তো আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ব্যবহার করতে পারছি। কিন্তু গ্রামের আদিবাসীরা তখন পানি ব্যবহার করতে পারেনি ভালোভাবে। কারণ তাদের কাছে পানি সম্পর্কে তেমন ধারণা ছিল না। তারা বিশেষ করে নদীর পানি, ঝর্ণার পানি ব্যবহার করতেন। এছাড়াও বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করে খাওয়া দাওয়া করতেন। তাই তাদের অসুখ-বিসুখও অনেক বেশি ছিল। কারণ ঐসব পানির সোর্স এত বেশি ভালো ছিল না। এমন দূষিত পানি খেয়ে তাদের বিভিন্ন ধরনের রোগ হয়ে যেত। যার কারণেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুবরণ পর্যন্ত হয়ে যেত।

p10.jpg

p11.jpg

এছাড়াও সেই যুগে চিকিৎসা ক্ষেত্রে তেমন উন্নত ছিল না। যদি কোন কারণে ডায়রিয়া কিংবা জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হতো তাহলে একেবারে মরে যাওয়ার মত অবস্থা হতো। সেই সুন্দর দৃশ্য ফটোগ্রাফি করেছি কোমরে কলসি নিয়ে মেয়েরা পানি আনতে যাবে এমন দৃশ্য। তাছাড়া ও আরেকটি সুন্দর দৃশ্য দেখেছি তা হচ্ছে বাঁশের তৈরি অনেক সুন্দর সুন্দর ডিজাইন। বিশেষ করে রাঙামাটি শহরে যেহেতু পর্যাপ্ত পরিমাণ বাঁশ পাওয়া যায় তাই তারা বিভিন্ন কাজে বাঁশ ব্যবহার করে থাকেন। রেস্টুরেন্টের ডেকোরেশন এর ক্ষেত্রে কিংবা অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও বাঁশের ব্যবহার অনেক বেশি দেখেছি।

p9.jpg

তাছাড়া বিভিন্ন রেসিপি ক্ষেত্রে ব্যাম্বো চিকেন কিংবা অন্যান্য যেকোন আইটেমের ক্ষেত্রে রেসিপি তৈরিতে বাঁশ ব্যবহার করা হতো। অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত ছিল। এই লেকের রেস্টুরেন্টের দৃশ্য দেখার পরে আমরা অন্য সাইডে চলে যাই। সেখানে সুন্দর সুন্দর দৃশ্য দেখতে পায়। আশা করি আপনাদের কাছে আমার আজকের পর্বটি বেশ ভালোই লাগবে বন্ধুরা। পরবর্তী পর্বে আমি আপনাদেরকে আরও সুন্দর সুন্দর বিষয় শেয়ার করবো। অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে সময় দিয়ে প্রতিনিয়ত আমার ব্লগিং গুলো ভিজিট করেন।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png


ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationরাঙ্গামাটি পলওয়েল পার্ক
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিট্রাভেলিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার লেখা পড়ার জন্য।

💘ধন্যবাদ সবাইকে💘

@samhunnahar

8DAuGnTQCLptHK3w4xbU3SMDsfFVWre2qvkWUixoMRzeeZoCuh45w2th51sZxD9m4AHXDbDbD7JGWe3gRWQNaZipS3P1MH2KAaqanaf5DUhvHCc3V1FJvDr4cvMYfB2M2Sdh6yqjU5MspgYd7CawGzHKz3TJSmUa5b5zmmxhgdL.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

Steem_Pro.png

Sort:  
 2 months ago 

রাঙ্গামাটির অচেনা সুন্দর একটি পার্ক সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলাম আপনার এই পোস্ট এর মধ্য দিয়ে। খুবই ভালো লেগেছে আপনার ভ্রমণ পোস্ট দেখে। আশা করব আরো সুন্দর সুন্দর কিছু এই জায়গা দৃশ্য আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং পাশাপাশি তার বর্ণনা তুলে ধরবেন।

 2 months ago 

জায়গাটি বেশ সুন্দর ছিল ভাইয়া ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

বাংলাদেশের অন্যতম সৌন্দর্যময় জায়গার মধ্যে রাঙ্গামাটি অন্যতম৷ আপনি রাঙ্গামাটির সেরকমই সৌন্দর্যময় একটি স্থানে ভ্রমন করে আমাদের মাঝে একের পর এক পর্বের মাধ্যমে শেয়ার করছেন৷ আজকেও এই ভ্রমণের তৃতীয় পর্বটি শেয়ার করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগছে৷ এখানে আপনি খুব সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন এবং খুব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও শেয়ার করেছেন৷ ধন্যবাদ এরকম সুন্দর একটি স্থানে ভ্রমন করে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷ পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম৷

 2 months ago 

আমি মনে করি রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করা দরকার সবার। এত সুন্দর জায়গা আমার অনেক ভালো লেগেছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 61901.34
ETH 3400.58
USDT 1.00
SBD 2.53