😥মা আমার না ফেরার দেশে চলে গেল😥।
প্রিয় বাংলা ব্লগ পরিবার,!
প্রিয় কমিউনিটির সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে আমাকে ভালো রাখছে। তবে গতকাল আমার মা না ফেরার দেশে চলে গেলেন আমাদের সবাইকে একা করে। আমাদেরকে এতিম করে চলে গেলেন সে আর কখনো ফিরে আসবে না। চিরঘুমে শুয়ে আছেন। সেই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না। আসলে একা থাকলে আমার আরো বেশি খারাপ লাগতেছে। যেহেতু গ্রামে থাকতে পারলাম না শহরে চলে এসেছি বাচ্চার পরীক্ষা তাই বাসায় চলে আসতে হল। তো এখানে একা একা মায়ের স্মৃতি মনে করে করে কান্না ছাড়া আর কিছু হচ্ছে না আমার। ভাবলাম আপনাদের সাথে যুক্ত থাকলে হয়তো মনটা ভালো থাকবে।
গতকাল আম্মু সকাল ৫ঃ৩০ এর সময় ইন্তেকাল করেন। কিন্তু এর আগের দিন ফোন করেছিলাম। বলছিল একটু খারাপ লাগছিল। এমনিতে আম্মুর উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা ছিল। উচ্চ রক্ত চাপ ওঠানামা করতো. তার জন্য সব সময় ডাক্তার দেখানো হতো। মাঝে মধ্যে ওষুধ বেশি খেয়ে ফেলত আবার খাইনি এমন বলতো। এরকম চলছিল ওষুধ খাওয়াই দিলেও আবার ওষুধ খাওয়ার জন্য অস্থির করতো এমন অবস্থা। বয়স ৬৫ ৭০ এমন হবে। তো বন্ধুরা পরশুদিন একটু খারাপ লাগছিল। আমি ফোনে কথা বলছিলাম। বলছিলাম ওষুধ খাওয়াই দিয়ে ঘুমায় যাওয়ার জন্য। দুপুর বেলায় আমি কথা বলার পরে আর কথা বলি নাই। প্রতিদিন আমার সকাল সন্ধ্যা দুইবার কথা বলতে হতো মায়ের সাথে। একদিন কথা না বললে মনে হয় আমার কি যেন একটা গ্যাপ থেকে গেছে এমন লাগতো। হয়তো ব্যস্ততার ফাঁকে রাত হলেও চেষ্টা করতাম কথা বলার জন্য।
মা ও মন খারাপ করত আমি একদিন কথা না বললে। তো সেদিন হঠাৎ মাগরিবের পরে আবার একটা কল আসে। আমার ছোট ভাইয়ের ওয়াইফ জানালো মায়ের নাকি বুক ব্যাথা করতেছে সেই জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে। তো ডক্টর দেখালো তারপর পরীক্ষা নিরীক্ষা দিল কিন্তু কোন কিছু পাই নি পরীক্ষার মধ্যে তাই বাড়িতে নিয়ে আসলো। বাড়িতে নিয়ে আসার পরে খাওয়া-দাওয়া করলো সবার সাথে ভালো মতো কথা বলল। তো রাত বারোটার পরে তাকে ওষুধ খাওয়াই দিয়ে শোয়াই দিল। যেহেতু রাত করে ডাক্তার দেখাইয়ে আসলো তাই একটু শুইতে দেরি হয়ে গেল। তারপর রাত দুইটার দিকে নাকি আমার ছোট ভাইয়ের ওয়াইফ বাথরুমে পানির আওয়াজ শুনল। সেই এসে দেখে আমার আম্মু ওযু করতেছে। তো আমার ছোট ভাইয়ের ওয়াইফ বলল ফুফু আম্মা তুমি কি করতেছ এত রাতে।
যেহেতু সেই আমার মামাতো বোন ছিল। তো আমার আম্মু বলল নাকি নামাজ পড়ার জন্য উঠছে। আমার ছোট ভাইয়ের ওয়াইফ বলল এখন তো রাত দুইটা বাজে ঘুমায় যান। তখন আমার আম্মু বলল ঠিক আছে তোমরাও ঘুমায় যাও দরজা ঠিকমত লাগাইছো কিনা। সে বললো হ্যাঁ ঘরের দরজা ঠিকমত সিটকানি লাগাইছি। তারপরে আমার মা ঘুমাই গেল আমার মা সেই ঘুম থেকে আর উঠে নাই। সেই সকালে যখন দেখলো আমার মা ঘুম থেকে উঠে নাই ডাকতে গেল আমার মার উঠলো না। আমার মা ঘুমের মধ্যে মারা গেছে। আমার মা জান্নাতি একজন মানুষ। আমার মায়ের কোন নামাজ খেলাফত হয়নি। কোন রোজা বাদ হয়নি কখনো। কোনদিন তাহাজ্জুদ নামাজ বাদ পড়েনি।
আল্লাহ আমার মাকে ঘুমের মধ্যে খুব সুন্দর করে নিয়ে গেছেন। ঈমানদার একজন বান্দা। অনেক সুখের মৃত্যুবরণ করল সেই নিজেই বুঝতে পারে নাই তার মৃত্যু কিভাবে হয়েছে। ঘুমের মধ্যে চির নিদ্রায় চলে গেলেন। হঠাৎ যখন দেখি সকাল বেলায় আমার মোবাইলে কল আসে তখন আমার বুকটা কেমন জানি করছিল। কারণ বাড়ি থেকে যখন এত সকালে কল আসে সে কলটা এত স্বাভাবিক হয় না। কারণ এত সকালে কেউ কাউকে বিরক্ত করতে চাইনা। সকালে যখন দেখি আমার মোবাইলে দুই তিনটা কল আসলো।
তখন আমি কলটা ব্যাক করলাম কল ব্যাক করার পরে দেখি ওখান থেকে কান্নার আওয়াজ। আমার মা কথা বলতেছে না আমি যেন যেয়ে দেখতাম কি হইছে। ইতিমধ্যে আমি তো বুঝতেই পেরে গেছি আমার মা চলে গেছে। মাকে এক সময় বলতাম মা তুমি হয়তো ঘুমিয়ে চলে যাবে একদিন। মা তুমি নামাজে চলে যাবে না হয়। কারণ আমার আম্মু নামাযে বেশি ঘুমাই যেত প্রায় সময়। মা ও বলতেন হ্যাঁ আমাকে তোমরা সবাই ঘুমের মধ্যে মরা পাবে। কারণ আমার ভাইয়েরা সব বাইরে ছিল প্রবাসী। আর আমরা দুই মেয়ে দুই প্রান্তে শ্বশুর বাড়িতে। হয়তো মাঝে মধ্যে বেড়াতে নিয়ে আসলেও ঘরে যাওয়ার জন্য ছটফট করত। আমার মা চলে গেল আমাদেরকে ছেড়ে। মায়ের এমন মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। শহরের চলে আসতে হল মেয়ের পরীক্ষার কারণে।
কিন্তু একা একা বাসায় কি করব কান্নাকাটি ছাড়া। তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু যুক্ত থাকি হয়তো আমার মনটা ভালো হয়ে যাবে। আপনারা সবাই আমার আম্মুর জন্য দোয়া করবেন। আমার আম্মুকে যেন সৃষ্টিকর্তা জান্নাতবাসি করেন। আমি জানি আমার মা জান্নাতী। কারন আমার আম্মু অনেক ঈমানের সাথে খুব সুন্দর ভাবে এই পৃথিবীত থেকে চলে গেলেন। আল্লাহ আমার আম্মুকে তুমি বেহেশত নসিব দান করুন আমিন।
লেখার উৎস | অনুভূতি থেকে |
---|---|
ইমেজ সোর্স | ভিক্টিজি ডট কম |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
আল্লাহ তায়ালা উনাকে জান্নাতবাসী করুন। খুবই কষ্ট পেলাম আপু পোস্টে পড়ে। আসলে উনি একজন ঈমানদার মানুষ যার কারণে ঘুমের মধ্যে আল্লাহ তাআলা উনাকে তাঁর কাছে নিয়ে গেছেন।আসলে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই তারপরও বলবো কান্নাকাটি করবেন না অপু বেশি বেশি করে দোয়া করেন উনার জন্য।
আপু বিভিন্নভাবে চেষ্টা করতেছি মনে না করার জন্য কিন্তু ঘুরেফিরে ঠিকই মনে পড়ে যাচ্ছে।
মহান আল্লাহ আপনার মা-কে জান্নাতবাসি করুক এই দোয়া করি আপু। আপনার মায়ের এভাবে চলে যাওয়াতে আমাদেরও খুব খারাপ লাগছে আপু। যাইহোক, আপনি নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করছেন, এটা খুব ভালো একটি আইডিয়া। ধৈর্য ধরুন এবং আপনার মায়ের জন্য বেশি বেশি দোয়া করুন। এটা ছাড়া আর কিছুই বলার নেই আপু।
আপু চেষ্টা করতেছি কিন্তু ধৈর্য ধরা খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মা-বাবা হচ্ছে সন্তানের সবচেয়ে বড় একটি ছায়া। যেটা না থাকলে বুঝতে পারা যায়। নিজেকে খুবই একা একা মনে হয় খুবই খারাপ লাগলো আপনার মা গতকাল মারা গিয়েছে । মানুষ মরণশীল কখন মারা যাবে কেউ জানে না শুধু রেখে যায় স্মৃতি আর ভালোবাসার বন্ধন। দোয়া করি ও পারে ভালো থাকুক সেটাই কামনা করি।
কত স্মৃতি মনে পড়তেছে বলে বোঝাতে পারবো না।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন 😥
আমি ফেসবুকে খবরটা আগেই পড়েছিলাম। সত্যিই খুব খারাপ লেগেছিল তখন। আসলে যার মা নেই একমাত্র সেই জানে মা হারানোর কষ্ট। ধৈর্য্য ধরুন আর দোয়া করুন বেশি বেশি, আল্লাহ পাক বেহেশত নসিব করুন 🤲
আর কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না 😥
মা হারানোর ব্যাথা এত যে কষ্টের হবে আগে বুঝিনাই। যে হারিয়েছে সেই বুঝে।
আপনার মায়ের এভাবে চলে যাওয়ার কথাটা শুনে, আমার সত্যি অনেক খারাপ লেগেছে আপু। আপনার পোস্টটা পড়ার সময় আমার তো চোখে জল চলে এসেছে। আপনার অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে আপনার আম্মুর বিষয়টা মনে করতে যা বুঝতেই পারছি। এরকম মৃত্যু আসলে কেউই আশা করেনা। আপনার আম্মুর জন্য দোয়া করি, যেন তিনি জান্নাতবাসী হয়। আল্লাহ যেন ওনাকে বেহেশত নসিব দান করে এটাই দোয়া করি প্রতিনিয়ত।
আপু দোয়া করবেন আমার আম্মুর জন্য।
সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে বুঝলাম সত্যি ওনি একজন পূর্ণবান মানুষ। অজু ও নামাজ পড়ে ঘুমের মাঝে চিরনিদ্রায় সুস্থ, স্বাভাবিক ভাবে না ফেরার দেশে চলে গেছেন।সন্তানদের তো কষ্ট হবেই কিন্তুু ধৈর্য ধারন করতে হবে।যদিও বা আমরা জানি সবাইকে চলে যেতে হবে একদিন কিন্তুু তবুও আপনজনের চলে যাওয়াটা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয়া যায় না।সৃষ্টিকর্তা আন্টিকে অবশ্যই স্বর্গবাসী করবেন।
আমার আম্মু অনেক নামাজ দোয়া পড়তেন আপু।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন 😥
আপনার মাকে আল্লাহ পাক বেহেশত নসিব করুন 🤲 আসলে আপনজন চলে যাওয়ার শোক হৃদয়ে খুব বড় ক্ষতের সৃষ্টি করে। আপনার এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরুন এবং আপনার মায়ের জন্য বেশি বেশি দোয়া করুন।
দোয়া করবেন ভাইয়া আমার মায়ের জন্য।
অবশ্যই আপু দোয়া রইলো । আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করে। আর আপনাদের পরিবারের সকলকে ধৈর্য ধারণ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করার তৌফিক দান করে, আমিন।
আপু সবাই একদিন চলে যেতে হবে এই পৃথিবী ছেড়ে। আপনার মা পৃথিবী থেকে চলে গেল সত্যি শুনি অনেক খারাপ লাগে। আসলে মা-বাবা যখন চির বিদায় নেই তখন ছেলে মেয়ের কাছে অনেক খারাপ লাগে। আপনার আম্মার মত আমার শশুর ওষুধ খেলে আবার খাবার কথা বলতো খেয়াল থাকত না। আল্লাহ যেন আপনার মাকে জান্নাতবাসি করে। আপু কান্নাকাটি না করে আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করেন।
আপু এত যে বেদনাদায়ক হবে আমি তা আগে বুঝিনি।
আপু আপনার মা পৃথিবীর থেকে বিদায় নিয়েছে শুনে অনেক খারাপ লাগলো। তবে মা বাবা এবং আমরা সবাই একদিন এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হবে। আপনি সন্তান হিসেবে আপনার মা মারা গেছে আপনার কাছে খারাপ লাগবে তারপরও তার জন্য দোয়া করবেন। আসলে যখন মানুষ বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন তারা বাচ্চার মত হয়ে যায়। যাই হোক আপনি এই প্লাটফর্মে যুক্ত আছেন সবার সাথে কথা শেয়ার করলে একটু ভালো লাগবে। আল্লাহ যেন আপনার মাকে জান্নাতবাসী করে। এবং আপনাদের সবাইকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করে।
জি ভাইয়া সাময়িকভাবে হলেও শান্তি পাওয়ার জন্য আপনাদের সাথে যুক্ত হয়েছি।।
আসলে যারা নেককার বান্দা বা বান্দী,আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে মৃত্যুর সময় তেমন কষ্ট দেন না। আপনার মা এতো রাতে ওজু করে ওজু অবস্থায় ঘুমিয়েছে, তারপর মৃত্যুবরণ করেছে,এমন মৃত্যু সবার কপালে থাকে না। আপনার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। দোয়া করি আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন। নামাজ পড়ে বেশি বেশি দোয়া করবেন আপু এবং কোনো দুশ্চিন্তা করবেন না। আমাদের সবাইকে একদিন দুনিয়া ছেড়ে চলে যেতে হবে। সবাইকে আল্লাহ তায়ালা ঈমানের সহিত মৃত্যু দিবে সেই কামনা করছি।
দোয়া করবেন ভাইয়া আমার আম্মুর জন্য। আমার আম্মু একজন জান্নাতি মানুষ।