সন্তান মায়ের সাথে অভিমান করে থাকতে পারেনা।(পর্ব-৩/শেষ পর্ব)
প্রিয় বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সকলে ভালো আছেন এই প্রত্যাশা করি। তো পরিবার-পরিজনকে নিয়ে দিনকাল কেমন যাচ্ছে আপনাদের? আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি আপনাদের দোয়ায়। সব সময় ভালো থাকার চেষ্টা করি। আসলে ভালো মন্দ মিলিয়েই তো মানুষের জীবন। হয়তো কিছুদিন ভালো থাকা যায়। আবার বিভিন্ন সমস্যায় কিছুদিন মন্দ থাকা যাই এই হচ্ছে বাস্তবতা। যাক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আজকেও নতুন একটি টপিকস নিয়ে চলে এসেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আশা করি আমার আজকের পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে প্রতিদিনের মতো। তো আজকে আমি শেয়ার করব সন্তান মায়ের সাথে অভিমান করে থাকতে পারেনা এর তৃতীয় ও শেষ পর্ব।
জামাল দুবাই চলে গেল তাই জয়নাল আর কিছু করতে পারল না। এরই মধ্যে জামাল যখন দুবাই চলে যাওয়ার খবর পেল জয়নাল কিন্তু অনেক রেগে গেল। সেই সাথে আত্মীয়-স্বজন সবাইকে ফোন দিয়ে যা তা বলতে লাগলো। জয়নাল বলতে লাগলো সেই আর কোনদিন দেশে ফিরতে পারবে না সেই ব্যবস্থা করবে। যদিও দেশে ফিরে কোন একদিন না একদিন তাকে দেখে ছাড়বে। সেই মামলাটা যেন জয়নাল চলমান রাখবে এবং দেশে যাতে ফিরতে না পারে সে ব্যবস্থা করবে। পলাকত আসামি হিসাবে তাকে দুবাইতে থাকতে হবে। এভাবে সে তার মাকে ফোন দিয়ে বকাঝকা করতে লাগলো।
প্রথম পর্ব পোস্ট লিংক
দ্বিতীয় পর্ব পোস্ট লিংক
তাহলে শুরু করা যাক বন্ধুরা-----
কিন্তু মা তো সেই দুঃখিনী মা। মা কিছু বলতে পারেনা শুধু ছেলের কথা শুনে আর কান্না করে। ছেলেকে বুঝাতে থাকে দোষ যখন করেছে আর রাগারাগি করার কি আছে। তুই বউকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে আয়। আমার নাতির জন্য অনেক মন কান্না করে তাকে চলে আসতে বলো। না হয় আমরা যেয়ে নিয়ে আসি। কিন্তু জয়নাল তো কোন কথাই শোনে না মাকে আরো রাগ দেখায়। এভাবে চলতে থাকে বেশ কিছুদিন। এবং কিছুদিন যাওয়ার পরে হঠাৎ করে শোনা যায় জয়নাল দেশে ফিরছে। তাও আবার সেই তার বউয়ের কাছে তার শ্বশুরবাড়িতে গেল। কিন্তু আত্মীয়-স্বজন কিংবা মায়ের সাথে তো দেখা করার কথা দূরের। মায়ের খবরও নিল না সে যে দেশে ফিরলো।
কিন্তু ভিতরে ভিতরে মা জানতে পারলো তার ছেলে দেশে ফিরেছে। এই কথা জানার পর মা বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করল। কিন্তু মা জননী তো কোন চেষ্টার ত্রুটি রাখে নাই। তার কোন ফলাফল পাওয়া গেল না বরং ঘরে থাকা জামাল তাকে বিভিন্ন ধরনের কথা শোনাতে থাকে। যেহেতু জয়নালের জন্য অস্থির তাই। জামালের বউ যেহেতু ঘরে আছে তাই ভালো মন্দ সব সময় যোগাযোগ রাখে জামাল ও ঘরের। যখন শুনে তার মা জয়নালের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছে তখন মাকে অনেক কথা শোনতে হয়। কিন্তু জয়নাল তো আর এক অন্তর খারাপ মানুষ। সেই তার ঘরে থাকার সময় তার পাশের আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে। আর সব খবরা খবর রাখে অথচ মায়ের সাথে কথা বলেনা।
কিন্তু সেই একবারও মাকে বলল না যে সেই দেশে ফিরেছে। তাছাড়া তার বোনেরা ও জানতে পারল যে সেই দেশে ফিরেছে। বোনেরা যখন চেষ্টা করে তার সাথে যোগাযোগ করার সেই কোন মতে স্বীকার করে না যে সে দেশে এসেছে। সে বলে সেই এখনো দুবাইতে আছে। সেই হয়তো কিছুদিন পরে দেশে ফিরবে। তখন মাকে সবাই বলতে লাগলো এমন ছেলের কোন দরকার নেই। কোন খবরা-খবর রাখে না খরচ পাতি দেয় না হয়তো ধরে নিতে হবে সেই ছেলে নেই। কিন্তু মাকে কি একথা বলে বুঝানো যাবে বলেন? মা কিছুতেই মানে না মা চিন্তা করতে করতে অসুস্থ হয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে গিয়ে চিকিৎসা নেই আবার অসুস্থ হয়ে যায় এই অবস্থা।
কিন্তু এরই মধ্যে জয়নালের দেশে এসে আবার যাওয়ার সময় হয়ে যায় দুবাইতে। হঠাৎ করে সেই একদিন তার সন্তানকে নিয়ে মাকে দেখতে আসে। যেহেতু সেই এতদিন অস্বীকার করেছিল। এখন যেহেতু যাওয়ার সময় হয়ে গেছে মাকে দেখার দায়িত্ব বলে কথা। তাই মাকে দেখতে আসলো একটু। নয়তো তার কাছে মায়ের অভিশাপ পড়বে সেই চিন্তা করে আসলো। আসলে মানবতার দিক বিবেচনা করে সেই মাকে দেখতে আসে নাই। সেই যে মায়ের থেকে অভিশাপ পাবে তার যে বিপদ আসবে সেই কথা চিন্তা করে আসলো। কিন্তু মা তো তাকে দেখে প্রায় আত্মহারা হয়ে গেল। কান্না করতে লাগলো মা তাকে দেখে। সেই যখন মাকে দেখতে আসে মায়ের জন্য বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে আসে। তখন জামালের বউ ঘরে ছিল না তার ছেলেকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিল।
কিন্তু জয়নাল তো এসে ঘরে একটু বসলো না। মাকে জিনিসগুলো দিল মায়ের সাথে দেখা করলো এবং মায়ের হাতে কিছু টাকা দিয়ে আবারও বেরিয়ে পড়ল। সোজা বের হয়ে পাশের বাড়ির এক বাড়িতে গিয়ে বসলো। তার মা ও পিছনে পিছনে তার সাথে গেল। এবং সেই বাড়িতে বসে চা নাস্তা খেয়ে জয়নাল চলে গেল। আর দুঃখিনী মা ঘরে ফিরে আসলো। মা তো কান্না করতে থাকলো ছেলে কেন থাকলো না। ছেলে কেন আসলো আবার চলে গেল এই বলে। এভাবে একদিন হঠাৎ করে শুনা গেল জয়নাল নাকি আবারও দুবাইতে চলে গেল। কিন্তু মা তো আর সহ্য করতে পারেনা ছেলের জন্য অনেক পাগল প্রায়। ছেলের জন্য কান্না করতে থাকে কেন আসলো। হইতো না আসলে ভালো হতো এভাবে কেন দেখা দিয়ে চলে গেল।
তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্ত আশা করি আমার আজকের পর্বটি আপনাদের ভালো লাগবে।
লেখার উৎস | বাস্তব অভিজ্ঞতা |
---|---|
ইমেজ সোর্স | কেনভা দিয়ে তৈরি |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
রাইটিং ক্রিয়েটিভিটি | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | জেনারেল রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
#generalwriting #prideofmotherandchild #creativity #amarbanglablog #steemit #mother #childrelationship
https://steemit.com/hive-129948/@samhunnahar/0fd1474a03806
ঠিকই বলেছেন কোন সন্তানের মায়ের সাথে অভিমান করে থাকতে পারে না। জয়নাল দেশে ফিরে এসেও কাউকে না জানিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে গেল এবং প্রথমে মাকে দেখতে আসেনি। যাইহোক যাবার আগে হলেও অভিশাপের ভয়ে মায়ের সাথে দেখা করে গিয়েছে যেন ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য।
Twitter
আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি গল্প লিখে শেয়ার করেছেন। আমি মনে করি কোন সন্তান তার মায়ের সাথে অভিমান করে থাকতে পারে না। জয়নালের মা তাকে বলছিল বৌমা এবং নাতিকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। কিন্তু তখন জয়নাল আরো রাগ দেখিয়েছিল তারপরে কিছু টাকা দিয়ে সেখান থেকে চলে এসেছিল। মা আরো কান্নায় ভেঙে পড়েছিল আসলে বিষয়টা আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছিল। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টি ভালোভাবে বুঝার জন্য।