স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধান।
Hello,
My Dear Friends.
সকলের প্রতি রইলো আমার সালাম, আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই আলহামদুলিল্লাহ ভালো এবং সুস্থ আছেন। আমিও মহান আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধান সম্পর্কে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
হাইজিন এডুকেশন বা স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলতে এমন একটি পদ্ধতিকে বুঝায়, যার ফলে পানি এবং স্যানিটেশন সম্পর্কিত যাবতীয় রোগব্যাধি প্রতিরোধের ব্যবস্থা ও কৌশল আর করা যা স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক বিষয় হল বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, উন্নত নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধান। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকখানি অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা ও ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যার অভাবের কারণে এ অগ্রগতি জনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারেনি। তাই পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অতএব, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জীবনযাপন করার জন্য স্বাস্থ্যবিধান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ অস্বাস্থ্য জীবনধারণ একটিজনগোষ্ঠীকে মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত করে তোলে।
বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকার পানিবাহিত রোগ, যথা- আমাশয়, কলেরা,ডায়রিয়া ও ম্যালেরিয়া, ইত্যাদির সংক্রমণ খুব বেশি।
এখানে সাধারণ রোগ বলতে পানি, বানার্থ এবং স্যানিটেশন সম্পর্কিত রোগসমূহের নাম উল্লেখযোগ্য। যেহেতু নায়ুদূষণ বা অন্য কোন মাধ্যমের রোগ এ বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত না; অতএব, নিম্নে কিছু পানিবাহিত সাধারণ ব্যাধির উল্লেখ করা হয়েছে। রোগ বিস্তারের পথ এর উপর ভিত্তি করে এসব রোগসমূহকে পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়েছে, যথা-
গ্রুপ-১ ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশায়,টাইফয়েড, প্যারাটাইফৰোজ ।
গ্রুপ-২। হেপাটাইটিস,পোলিওমাইলিটিস
গ্রুপ-৩। পিন ওয়ার্ম , হুক ওয়ার্ম , ইত্যাদি
গ্রুপ-৪। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুজ্বর, কালাজ্বর, ইত্যাদি।
গ্রুপ-৫। চর্মরোগ, স্ক্যাবিস , চক্ষু রোগ , ইত্যাদি বিভিন্ন সংক্রামক রোগ
সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার বিভিন্ন কৌশল আয়ত্ত করা হয়। তাই স্বাস্থ্যবিজ্ঞান শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও সুবিধা অনেক বেশি। কিন্তু এখানে আলোচ্য বিষয় হল- পানি সরববাহ
(ক) পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদেরকে এ শিক্ষার মাধ্যমে প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করানো ।
(খ) পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের সুবিধাদি ভোগ করে কীভাবে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যগত উপকার অর্জন করা যায় তা অবাত হওয়া যায়।
(গ) পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার যথোপযুক্ত পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে ব্যবহারকারীদেরকে উৎসাহিত করে তোলে (খ) পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ে অর্থ বায়ে আগ্রহাসিত করে তোলে।
পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় হাইজিন এডুকেশন গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে নিয়েছে। তাই এ শিক্ষা শুরু করার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে-
কোন এলাকায় এ শিক্ষা প্রচার করার উদ্দেশ্যে প্রাথমিক পদক্ষেপ হল ঐ এলাকার স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আম আলোচনা করা এবং এ ব্যাপারে তাদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে জনসাধারণের চাহিদার কথা জেনে নেয়া।এলাকার লোকজনের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিং করতে হবে। স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো কীভাবে প্রচার ও প্রসার করা এসব ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে।একটি স্বাস্থ্য কমিটি গঠন করতে হবে। এ কমিটি এলাকার সমস্ত লোকজনের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এ সমস্ত কাজগুলোর ব্যবস্থাপনা করবে।
পানি সরবরাহ বলতে সব সময় আমরা নিরাপদ পানি সরবরাহের কথাই ধরে নিব। জনসাধারণের সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য এটি প্রয়োজন তবে শুধুমাত্র নিরাপদ পানি সরবরাহের দ্বারাই সুস্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন স্যানিটেশন ব্যবস্থা। কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষার অভাবে এবং স্বাস্থ্যগত সচেতনতার অভাবে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যক্রম সঠিক থাকলেও রোগাক্রান্ত হবার ঝুঁকি থেকেই যাবে। কাজেই রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করে উন্নত পরিবেশ তথা দূষণমুক্ত পরিবেশে বসবাস করার জন্য পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য শিক্ষার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এগুলোর মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক বিদ্যমান। এগুলোর কোনটাকে বাদ দিয়ে অন্য সবগুলোর প্রচেষ্টা সফল হতে পারে না।
কাজেই পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য শিক্ষার সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে মানুষের আচরণের যথেষ্ট পরিমাণে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সাধিত হবে। মানুষের সামগ্রিক পরিবেশের উন্নতি ঘটবে। মানুষ অর্থনৈতিকভাবেও লাভবান হবে। এর ফলে পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশনের যেকোন প্রকল্পের প্রতি সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পগুলোর উদ্দেশ্য সফল হলে পরিবেশের বিষয়ে সচেতনতার উন্নয়ন ঘটবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আবারও দেখা হবে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সাথে। সবাই ভালো এবং সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।