হ্যালো বন্ধুরা
কিছুদিন বিরতির পর আবার ও চলে আসলাম আপনাদের মাঝে গল্প আকারে কিছু অনুভূতি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন আমি ঈদুল আযহার ছুটিতে ঈদ করতে শ্বশুর বাড়িতে চলে এসেছি। আমার শ্বশুর বাড়ি কুমিল্লার জেলার হোমনা থানায় ।এখানের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার নিয়ে আজকে আপনাদের সাথে আমি কিছু কথা বলব বলে মনস্থির করছি। কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাবারটি হল চালের রুটি ও মাংস।
এ ঐতিহ্যবাহী চালের রুটি ও মাংস যেকোনো ধরনের মাংস দিয়েই খাওয়া যায় তবে গরুর মাংস দিয়ে চালের রুটি ওরা খুব পছন্দ করে খেয়ে থাকে। আর যাদের গরুর গোস্ত নিষিদ্ধ ওরা অন্য যেকোনো ধরনের মাংস দিয়ে এটি খেয়ে থাকে। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রত্যেকের বাড়িতেই চালের গুড়ি করা হয় এই পিঠা বানানোর জন্য ।আমার এলাকায় এটিকে চালের রুটি বলে ,আর এখানে ওরা এটিকে চালের পিঠা বলে থাকে। যতদিন বাসায় কোরবানির গোস্ত থাকবে ততদিনই এই এলাকায় সকাল ও বিকেলে চালে রুটি বানানো হয় । আর ঈদের পরদিন থেকে মেহমান আসতে শুরু করে বিশেষ করে বাসার মেয়ে সদস্যরা যাদের ইতি মধ্যেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে থাকে ওরা সপরিবারে বাবা বাড়িতে বেড়াতে আসে আর এই চালের রুটি দিয়ে উৎসবমুখর একটা পরিবেশ তৈরি করে ,সবাই মিলে একসাথে বসে খায়। একসাথে অনেকগুলো রুটি তৈরি করে কারণ সদস্য সংখ্যা বেশি তাই কয়েকজন একসাথে বসে রুটি গুলো বানিয়ে থাকে এবং একসাথে অনেকগুলো চুলার মধ্যে এই রুটিগুলো ছেঁকে নেয়।
পরিবারের পুরুষ সদস্যরা একসাথে বসে এই ঐতিহ্যবাহী খাবার খায় আর গল্পের মেতে উঠে। এদিকে পাকের ঘরে বা কিচেনে মেয়ে সদস্যরা একসাথে বসে এইঐতিহ্যবাহী খাবার সাথে গল্প জুড়িয়ে দেয় । আমার এলাকায় এই খাবারটির প্রচলন খুব একটা নেই ,তবে শবে বরাতের সময় মাকে দেখতাম মাঝে মাঝে চালের রুটি বানাতো কিন্তু ওদের মত করে ঈদকে কেন্দ্র করে এভাবে এত রুটি একসাথে বানানো আমার জন্য এগুলো প্রথম। বিয়ের পরেই আমি এই জিনিসগুলো দেখেছি এখানেএসে যা আমাকে খুব আনন্দ দেয়। আমি মন থেকে উপভোগ করি বিষয়টি ।
আরেকটি জিনিস দেখলাম আমার শ্বশুর বাড়িতে এসে ওদের পরিবারের মধ্যে বন্ধন খুব মজবুত। আমার বিয়ের ২৫ বছর চলছে এখনো আমরা যৌথ পরিবারই রয়েছি। আমাদের পরিবারে এখনো ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়নি বা একক পরিবারে পরিণত হয়নি। এমন কি আমার শশুরের জমিগুলোও এখনো পর্যন্ত ভাগ বাটোয়ারা হয়নি সব ভাইয়েরা একসাথে রয়েছে এবং ঈদ এবং বিভিন্ন উৎসবে একসাথে হয় ,যার ফলে আনন্দঘন একটি পরিবেশ তৈরি হয়। এত রান্না এত ঝামেলা তারপরও কোন ক্লান্তি নেই ।কারো মধ্যে কোন মনমালিন্য নেই। সবাই আনন্দের সাথে কন্ডিভিউশন করছে।
এই বিষয়গুলোর জন্যই আসলে ঈদ করতে আসতে আমাদের খুব ইচ্ছে করে ।যত এত কষ্ট করে আসলেও ক্লান্তি লাগেনা ছেলে-মেয়েরা উপভোগ করে বিশেষ করে আমি বেশ উপভোগ করি। তাই ভাবলাম বেশ কিছুদিন যাবত ই পোস্ট লেখা হচ্ছে না ,যেহেতু যৌথ পরিবার সবার সাথেই কন্ডিশন করতে হয় তাছাড়া সবাই যখন কাজ করে নিজে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে খারাপই লাগে ।তাই আর লেখা হচ্ছিল না এখন ভাবলাম একটু সময় বের করে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি আমার আনন্দঘন কিছু মুহূর্ত।
আজ আর নয় আজ এখানেই শেষ করছি বন্ধুরা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি এর আগে শুনেছি যে ঈদের দিন চালের রুটি আর মাংস খাই। এর আগে আমাকে অনেক বান্ধবীরা ঈদের দিনে নেমন্তন্ন করেছিল। কিন্তু আমার সেভাবে কোনদিন যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ওরা গল্প করত ঈদের দিন ওরা কিভাবে কাটায়। অনেক বান্ধবী এখনো নেমন্তন্ন করে ঈদের দিন তাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য। তবে আপনার পরিবারে যেমন সবার মধ্যে বন্ধন মজবুত। জমি জমা এখনো ভাগ করা হয়নি। আপনাদের মত আমাদের পরিবারের এখনো সবাই একসাথে রয়েছে ।আমাদেরও জমি জমা কিছুই ভাগ করা হয়নি। ভাগ করার প্রশ্নই ওঠেনা। কারণ আমরাও একসাথে থাকতে খুব ভালোবাসি। একসাথে থাকার মজাই আলাদা।
Hello,
@sairazerin,
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ-
অনুগ্রহ পূর্বক, burnsteem25 hash tag মুছে দিন।🙏 এটা আপনি তখনই ব্যবহার করতে পারবেন যখন আপনি null এ 25% বেনিফিসিয়ারি সেট করবেন।
Regards
@piya3 (Senior Moderator)
Incredible India
ঈদের আমেশ কাটিয়ে আবারও আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেখে ভালো লাগলো। প্রতিটা স্থানের এতিহ্যবাহি কিছু খাবার রয়েছে। আপনি আজ আপনার শশুরবাড়ির এলাকার কিছু জনপ্রিয় খাবার নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আটার রুটি খেয়েছি তবে চালের রুটি কখনও খাওয়া হয় নি। আপনাদের এখানে চালের রুটি ও মাংস খুব জনপ্রিয়। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ভালো থাকবেন।
কোরবানির ঈদ আসার আগে থেকেই আমাদের গ্রাম অঞ্চলে চাউলের গুড়ি তৈরি করার একটা ব্যবস্থা হয়ে যায়। বিশেষ করে নতুন ধাম দিয়ে যখন চাউল করা হয়। তখন সেই চাউল দিয়ে গুড়ি তৈরি করে, সেই গুড়ি দিয়ে পিঠা খেতে নাকি অনেক বেশি পছন্দ করে।
আসলে আটার রুটি থেকে চাউলের গুড়ি দিয়ে রুটি তৈরি করার পরে। সেই রুটি দিয়ে গরুর মাংস খেতে কিন্তু বেশ ভালোই লাগে। এটা কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাবার কিনা আমি জানিনা। তবে আমাদের এখানেও অনেকেই এটা পছন্দ করে। আর বিশেষ করে ঈদের দিন গরুর মাংস গরুর কলিজা দিয়ে চাউলের গুড়ি রুটি খাওয়ার মজাটাই অন্যরকম। ধন্যবাদ চমৎকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য। ভালো থাকবেন।
গরুর মাংস দিয়ে চালের রুটি আমাদের এদিকেও অনেক জনপ্রিয় একটি খাবার।আমার ব্যাক্তিগত দিক থেকেও এটি অনেক পছন্দ করে থাকি।মানে ঈদ আসলেই আমি এটা খাবোই খাবো।যাই হোক একটা বিষয় খুব ভালো লাগলো যে আপনার বিয়ের ২৫ বছর হয়ে গেছে,তবুও আপনি এখনো যৌথ পরিবারে বাস করেন।এমন পরিবার পাওয়া বর্তমান যুগে সত্যিই দুস্কর।
চালের গুড়া রুটি দিয়ে মাংস খেতে খুবই সুস্বাদু হয়। যদিও আমার কাছে দেশি মুরগির মাংস একটু ঝাল ঝাল করে রান্না করলে সেটা দিয়ে খেতেই বেশি ভালো লাগে।
অবশ্য আমাদের এলাকাতে এই রুটি বানানোর প্রচলন আমি ঈদের দিন আমি তেমন একটা দেখি নাই।
আমাদের এলাকাতে পোলাও, পরোটা, বিরিয়ানি কিংবা খিচুড়ি টাইপ এর জিনিসই বেশি দেখেছি।
আপনার লেখা পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন সবসময় শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।