ঘরোয়া ভাবেই উদযাপন করা হলো পহেলা বৈশাখ
১৪৩১ সাল সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ ও শান্তি, সেই প্রত্যাশা রেখেই আমি আমার লেখা শুরু করছি। ৩৬৫ দিনের মধ্যে সকল দিন বা ক্ষণ এরকম যায় না এটা যেরকম চিরন্তন সত্য একটি বাণী, তেমনি কিছু কিছু মুহূর্ত বা সময় আমাদের আশার চেয়েও বেশি কিছু পেয়ে থাকি ।যাকে আমরা সারপ্রাইজ বলি এমন একটি দিন আমার কাছে মনে হল আজকের দিনটি অর্থাৎ 14 এপ্রিল পহেলা বৈশাখ।
চলুন তাহলে বন্ধুরা শুরু করে ফেলি আজকের দিনটি আমি কিভাবে কাটিয়েছি। যেহেতু সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এই অনুষ্ঠানটি উদযাপন করে তাই, এই দিনটি আমাদের সবার কাছেই একটি বিশেষ বা আকাঙ্খিত দিন।
ধর্ম যার যার উৎসব সবার: |
---|
কাজেই পহেলা বৈশাখ হল আমাদের প্রাণের উৎসব এটিকে আমরা মন থেকে উদযাপন করি,তথা মনে ধারণ করি । বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকরা ও এই দিনটিকে ঘিরে হাজারো গান ,কবিতা ,গল্প, কাব্য লিখেছেন।
এর মধ্যে বহুল প্রচলিত একটি গান যা আমাদের বাঙ্গালীদের মুখেমুখে ছড়িয়ে আছে আজ অব্দি।
এসো হে বৈশাখ এসো এসো
তাপস ও নিঃশ্বাস ও বায়ে
মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক
এসো এসো -----------।
এই কালজয়ী গানের সাথেই জড়িয়ে আছে পহেলা বৈশাখের আবেগ ও অনুভূতি। তাছাড়া পহেলা বৈশাখের মূল আকর্ষণ হলো মঙ্গল শোভাযাত্রা। সকলের মঙ্গলের জন্য এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
আমার স্কুল যেহেতু বন্ধ তাই এবারের পহেলা বৈশাখ বাসায়ই উৎযাপন করেছি।
বন্ধুরা পহেলা বৈশাখ বলে কথা, তাই পহেলা বৈশাখ কিভাবে বাসায় উদযাপন করব, তা নিয়ে পূর্ব থেকে মানসিকভাবে আমার প্রস্তুতি ছিল। বাসায় ইলিশ মাছ ছিল। তবে খুব বড় সাইজের নয়। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো মাছগুলো দেখতে ছোট হলেও ভাজার পর বেশ তেল উঠে এবং খেতেও মোটামুটি ভালই লাগে। তাই আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে একটা ইলিশ বের করে পানিতে ভিজিয়ে রাখলাম খানিকটা সময়।
আর কিছু ভাত আমি গতকাল রাতেই পানিতে ভিজিয়ে রেখেছিলাম। আজ শুধু সকালে উঠে ইলিশ মাছটা ভেজে নিলাম সাথে সিঁদল শুটকির ভর্তা বানালাম। পহেলা বৈশাখে পান্তা খাব না তা কি করে হয় বন্ধুরা,তাই কিছু শুকনো মরিচ আগুনে পুড়িয়ে নিলাম। শুকনো মরিচ গুলো যদি সরাসরি আগুনে পুড়িয়ে নেই তাহলে আলাদা একটা ফ্লেভার বের হয় যা তেলে ভাজলে বা টেলে নিলে হয় না।
আমার মাকে ছোটবেলায় দেখতাম পাটকাঠির মধ্যে শুকনো মরিচে ডাটা গুলো ঢুকিয়ে লাকরির চুলার আগুনে পুড়িয়ে নিতো, পুরো বাড়ি মরিচের ঝাঁজে ভরে যেত,সাথে ছিল কাঁচা পেঁয়াজ আর অল্প পরিমাণে লবণ। তবে পান্তা ভাতে লবন একটু বেশিই লাগে । সেজন্য আমিও আজকে টেবিলে একটি বেশি পরিমাণে লবণ রেখেছিলাম যদিও আমার বাসায় তোলা লবণ খুব একটা খাওয়া হয় না।
আমার পরিবারে বর্তমানে চারজন সদস্য রয়েছে। চারজন হল আমার ছেলে ও মেয়ে,আমি ও আমার সাহেব। আমার ছেলে আবার পান্তা ভাত খেতে চায় না। তাই ওর জন্য অল্প পরিমাণে ডাল ও মুরগির মাংস ভুনা করে নিলাম সাথে ছিল গরম ভাত।
আর এই পরিবেশন কৃত গ্লাস ও প্লেটটি আমি আমার স্টুডেন্টের কাছ থেকে জন্মদিনের উপহার হিসেবে পেয়েছি ,তা পূর্বেই আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম মনে আছে কি বন্ধুরা?আর এই নকশি কাঁথা টা আমার এক স্টুডেন্টই দিয়েছে গার্হস্থ্য অর্থনীতির প্রাকটিকেলে তৈরিকৃত নকশিকাঁথা থেকে।
উল্লেখ্য,আমি ২০১১ সাল থেকে শিক্ষাকতা পেশায় জড়িত আছি। আর ২০১২ সালে এই নকশি কাঁথাটা আমার এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাই। আজ ও অব্দি কাথাঁ টি আমি রেখে দিয়েছি আমি যতদিন থাকবো এই কাঁথা টা অক্ষত রাখার চেষ্টা করব ।কারণ আমার কাছে এর মূল্য অনেক। উপহারের কোন বিনিময় মূল্য নেই। এটা আবেগ দিয়ে বা মন দিয়ে গ্রহণ করতে হয়।
তারপর সবাই মিলে খুব আনন্দ করে খেলাম এভাবেই অনেকটা ঘরোয়া ভাবেই আমি পহেলা বৈশাখ উদযাপন করলাম।সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি আমার লেখার সমাপ্তি টানছি। শুভ হোক সবার জীবন।
নবনর্ষের শুভকামনা রইলো।
নববর্ষের দিনটা আপনি খুব চমৎকার ভাবে পালন করেছেন। এই গরমে পান্তা ভাত খাওয়ার আসলে মজা।যদিও আমার বাসায় হাতেগুনা দুই -একদিন খাওয়া হয়। বাড়তি লবন খেতে হয় বলে এড়িয়ে চলি।
তবে পহেলা বৈশাখ মানেই ইলিশ, পান্তা আর তার সাথে বিভিন্ন ধরনের ভর্তা।
ছোট বেলায় আপনার মায়ের মতোই আমিও
দেখেছি আমার মাকে পাটকাঠির ভেতরে
শুকনো মরিচ ঢুকিয়ে পুড়তে।আসলে মায়েরা
হয়তো একই রকম হয় অনেকটা।
আপনার নতুন বছরের প্রথম দিনটা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।
প্রথমে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানাই। শুভ নববর্ষ।
আপনি ঘরোয়াভাবে পহেলা বৈশাখ বেশ সুন্দরভাবে অতিবাহিত করেছেন। আপনার পহেলা বৈশাখের পান্তা এবং ইলিশ দেখতে অনেকটা লোভনীয় ছিল।
সুন্দর একটি দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমাদের এলাকায় পহেলা বৈশাখ টা অনেক বড় করে উদযাপন করা হয় আর এই বছর ও করা হয়েছে।আমরা বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করেছিলাম সেদিন।আর আপনার করা ঘরোয়া ভাবে বৈশাখ পালন টা ও অনেক ভালো লাগলো ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।