ফুটবল খেলা দেখার অভিজ্ঞতা
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে ফুটবল খেলা দেখার অভিজ্ঞতার মুহূর্তগুলো উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
বৃষ্টির মৌসুমে আমরা বাঙালিরা ফুটবলের মৌসুম বলে থাকি। সারা বছরই ফুটবল খেলা হয় কিন্তু বৃষ্টির মৌসুমে ফুটবল খেলার আয়োজনটা বেশি দেখা যায়। আমি এখনো পর্যন্ত বর্ষাকাল আসলেই বৃষ্টির নামতেই ফুটবল নিয়ে মাঠে চলে যাই। সবাই মিলে মাঠে বৃষ্টিতে ভিজবো আর ফুটবল খেলব এর মজাটাই কিন্তু আলাদা। আমরা অনেকেই আছি ছোটবেলায় যখন বৃষ্টি পড়তো তখন আমরা ফুটবল নিয়ে মাঠে চলে যেতাম। আর যখন বাড়িতে আসতাম তখন মায়ের বকা খেতাম 😊😊😊। ছোটবেলার সেই সময়টা হয়তোবা আর কোনদিনও ফিরে পাবো না। এখনো মাঝেমধ্যে ফুটবল আমি খেলে থাকি খুব ভালো লাগে খেলতে। আর যারা খেলাধুলা প্রিয় মানুষ তারা কিন্তু খেলা দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না তারা নিজেই মাঠে নেমে পড়ে। এ ব্যাপারটা কিন্তু আমার মধ্যে হয়ে থাকে যখন একটু খারাপ খেলা দেখি তখন খুব ইচ্ছা করে তখন মাঠে নেমে যেতে। ফুটবল খেলাটা কিন্তু একটা উত্তেজনা মূলক একটি খেলা যার প্রত্যেকটা সেকেন্ডেই উত্তেজনা কাজ করতে থাকে। ফুটবল বিশ্বকাপের কথা বলি আমরা কম বেশি যে কোন দলের সাপোর্ট করে থাকি। কিন্তু আমার দেখা মতে সবাই কিন্তু আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিলের ভক্ত বেশি। একটা ঘটনা বলি আমি আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করি। আমার বন্ধু ব্রাজিলের সাপোর্ট করে। যখন বিশ্বকাপ আসে তখন আমাদের দুই বন্ধুর মিল মহব্বত কিন্তু আর থাকে না। সারা বছর দুজনে ঘুরে বেড়াবো খাওয়া দাওয়া করব সবকিছুই করব কিন্তু বিশ্বকাপের সময়টা যখন আসবে তখন দুজন দুজনকে দেখতেই পারি না। আমার মতন ঘটনা হয়তোবা অনেকেরই হয়ে থাকে।
যাই হোক একদিন আমার এক ভাগ্নে আমাকে বলল মামা ফুটবল খেলা দেখতে যাবে? আমি বললাম কোথায়? সে আমাকে ঠিকানাটা বলল আমি বললাম অবশ্যই যেতে হবে যেহেতু ফুটবল খেলা । আর মনে মনে ভাবলাম অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যেতে পারি না বৃষ্টির কারণে। তাই ভাবলাম একটু ভ্রমণও হয়ে যাবে আর খেলা দেখাও হয়ে যাবে। সেদিন ছিল সোমবার দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে চারটার দিকে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম খেলা দেখার উদ্দেশ্যে। প্রায় এক ঘন্টার পর সূর্যের তাপ ও প্রচুর ছিল কিন্তু বাইকে ছিলাম যার জন্য সূর্যের তাপটা বুঝতে পারছিলাম না। যেতে যেতে ভাগ্নেকে বললাম একটু চা খেতে হবে। আমি বাইরে গেলে বেশিরভাগ একটু চা খেয়ে থাকি কারণ আমি একটু চা প্রিয় মানুষ। চা খেতে খেতে আমাদের সঙ্গে আরো কিছু বন্ধু যোগ হল তারাও খেলা দেখতে যাচ্ছে। আমরা চা খেয়ে সবাই একসঙ্গে রওনা করলাম খেলা দেখার উদ্দেশ্যে।
শহরের রাস্তা পার করে আমরা একটি গ্রামের রাস্তায় ঢুকে পড়লাম কারণ খেলাটার আয়োজন করা হয়েছে একটি গ্রামে। যে মাঠে খেলার আয়োজন করা হয়েছে সে মাঠে আমরা অনেকবারই খেলা করেছি। যাহোক প্রায় ঘন্টাখানেকের মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম ফুটবল মাঠে। মাঠে নামতেই দেখি আমাদের আসতে আসতে খেলার শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচুর দর্শক হয়েছে মাঠে। গাড়িটা পার্কিং করিয়ে আমরা মাঠে প্রবেশ করলাম খেলা দেখার জন্য। যেহেতু ফুটবল খেলা দেখতে এসেছি শুধু যে ফুটবল খেলা দেখলে হবে তা কিন্তু নয়। যেকোনো দল যদি বাছাই করে না নেওয়া যায় তাহলে কিন্তু ফুটবল খেলা দেখার সেই উত্তেজনা পাওয়া যায় না। তাই আমরা নিজেদের পছন্দমত একটি দল বাছাই করে নিলাম। আমার ভাগ্নে ছিল আমার বিপক্ষ টিম। ভাগ্নের সাথে একটা বাজিও ধরে ফেললাম বাজিটা ছিল খাবার খাওয়া। আমি জিতলে তাহলে ভাগ্নে আমাকে খাওয়াবে আর ভাগ্নে যদি জিততে পারে আমি ভাগ্নেকে খাওয়াবো। খুব উত্তেজনা হচ্ছিল ফুটবল খেলায়। মনে হচ্ছিল বাঘ সিংহের লড়াই চলছে। আমিতো মাঝেমধ্যে উত্তেজনার বসে মাঠের ভেতর প্রবেশ করছিলাম ভাগ্নে আমাকে থামিয়ে রাখছিল 😄😄😄।
খেলা দেখতে দেখতে আমার এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলো। কথাবার্তা বলতে বলতে জানতে পারলাম আমার বন্ধুর টিম খেলা করছে। বন্ধু আমাকে রিকোয়েস্ট করল তার প্লেয়ারদের সঙ্গে মাঠে খেলতে। আমি তাকে না বলি কারণ গিয়েছিলাম খেলা দেখতে খেলতে না। কিন্তু বন্ধুর জোরদার দাবিতে আমার মাঠে নামতে হলো। একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না যাইহোক ড্রেসাপ করে হাফ টাইমের পরে নেমে পড়লাম মাঠে। এখানে একটা কথা বলে রাখি আমি যে টিম সাপোর্ট করতেছি আমি কিন্তু সেই টাইমেই নেমেছি। লিগাল টাইমে আমরা গোল দিতে পারলাম না যেহেতু নকআউট খেলা ছিল সেহেতু প্লাস্টিকের দ্বারাই নির্বাচন করা হবে কোন দল বিজয়ী। যাইহোক আম্পিয়ার মহোদয় দুই দলের অধিনায়ককে ডেকে টসের দ্বারা নির্বাচন করল কারা প্রথমে সুট করবে। টসে আমরা জয়ী হই আর আমরা সুট করার সিদ্ধান্ত নেই। পেনাল্টিকে বড় একটি সমস্যা এসে দাঁড়ায় সেটি হল। ফুল টাইমে মাঠে প্লেয়ারটি ভালো খেলে সেই প্লেয়ারটি যদি প্লান্টটিকে মিস করে তখন তার সেই ভালো খেলার সম্মানটা হারিয়ে যায়।
আমাদের দল প্লান্টিকে পাঁচটা গোল করে আর অন্য দল চারটি গোল করে। বিজয়ী দল হিসেবে আম্পিয়ার সিদ্ধান্ত আমাদেরকে দেয়। ম্যাচ জয়ী হওয়ার পর খুবই ভালো লাগছিল এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। যাই হোক আমি যে দল সাপোর্ট করেছিলাম সেই দল জিতেছে আর আমার ভাগ্নে হেরে গিয়েছে। তাই সঙ্গে সঙ্গে ভাগ্নিকে বললাম চলো আমাকে খাওয়াবে। ভাগ্নের কিছু করার ছিল না যেহেতু কথা দিয়েছে কথা তো রাখতেই হবে।তাই আমরা চলে গেলাম সেখান থেকে একটি রেস্টুরেন্টে। আমার ফোনে সার্চ কম থাকার কারণে প্রকৃতির ছবিগুলো তুলতে পারলাম না যেহেতু গ্রামের দিকে এসেছিলাম। গ্রামের দিকে আসলে আমার খুবই ভালো লাগে কারণ এখানে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যায়। গ্রামের মানুষ গুলো খুব শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে এজন্য আরও ভালো লাগে।
এরপর খাওয়া দাওয়া করে রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। বাড়িতে আসতে আসতে দু জায়গায় আবারও থামিয়ে চা খেয়ে নিলাম। বাড়িতে এসে রাতের খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম। কিন্তু সকালে একটা প্রবলেম হলো আমি বিছানা থেকে উঠতে পারছিলাম না। কারণ খেলার সময় আমি ব্যথা পেয়েছিলাম কিন্তু সেই ব্যাথাটা খেলার সময় আমি বুঝতে পারেনি যখন বিশ্রাম নিয়েছি তখনই এই ব্যথাটা তীব্র আকারে ধারণ করেছে। আর ফুটবল খেলায় এই বিষয়টা স্বাভাবিক। অবশেষে এটাই বলব সেদিন ফুটবল খেলা ও খেলা দেখার অভিজ্ঞতাটা খুব সুন্দর ছিল।
ফুটবল খেলা দেখতে যাওয়ার অনুভূতি আমাদের মাঝে প্রকাশ করেছেন দেখে ভালো লাগলো। বর্ষার সময় ফুটবল খেলা হয়ে থাকে। আর এই খেলা দেখার জন্য বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ ছুটে যায় উপভোগ করার জন্য। ঠিক তেমনি আপনি ছুটে গেছেন এবং খেলাও ইনজয় করেছেন। বেশ ভালো লাগলো দেখে ব্লগটা।
বাহ্ দারুণ তো,ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে মাঠে নেমে পড়লেন খেলতে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনারা পেনাল্টি তে জয়লাভ করেছেন,এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। তাছাড়া ভাগ্নে হেরেছে বলে,তার কাছ থেকে ট্রিটও পেয়ে গেলেন। সবমিলিয়ে দারুণ সময় কাটিয়েছেন। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।