শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের নবম পর্ব
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের নবম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
পরের দিন রাতুল অফিসে যায় কিন্তু সুইটিকে সে দেখতে পায় না। এমন করে দু-তিন দিন কেটে যায়, সুইটির কোন খোঁজ পায় না রাতুল। ফোন করলে ফোনও রিসিভ করেনা। সে কিছুই বুঝতে পারে না কেন সুইটি তার ফোন রিসিভ করছে না। অবশেষে রাতুল সুইটির বাসায় চলে যায়। রাতুল সুইটিদের বাসায় যে কলিং বেল দেয়। একটু পর একজন বয়স্ক লোক দরজাটি খুলে দেয়। দরজা খুলে দিতেই বয়স্ক লোকটি রাতুলকে জিজ্ঞাসা করে সে কার কাছে এসেছে। রাতুল তার প্রশ্নের উত্তর দেয় সে সুইটির সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। বয়স্ক লোকটি তাকে আর কোন প্রশ্ন না করে তাকে সুইটির সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়। রাতুল ভিতরে প্রবেশ করে কিন্তু সুইটি কে সে খুঁজে পায় না। তারপর আবারও বয়স্ক লোকটির কাছে জিজ্ঞাসা করে সুইটি কোথায়? বয়স্ক লোকটি তাকে বলে সুইটি ছাদে আছে। কথাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাতুল সোজা চলে যায় ছাদে। ছাদে যে দেখতে পায় সুইটি আনমনে বসে রয়েছে। সুইটি হঠাৎ রাতুলকে দেখে চমকে ওঠে। কারন সে ভাবতেই পারেনি রাতুলকে তার বাড়িতে দেখতে পাবে। রাতুল সুইটির কাছে যায় আর বলে।
রাতুল: তুমি আমার ফোন রিসিভ করছ না, অফিসে আছো না কি হয়েছে তোমার?
সুইটি: আমার কি হয়েছে সেটা তোমার জেনে কি লাভ। তুমি তো খুবই ভালোই আছো তোমার ভালবাসার মানুষকে তুমি ফিরে পেয়েছো। এখন আমার খোঁজ নেওয়ার দরকার কি আছে।
রাতুল: এসব তুমি কি বলছো। তুমি আমার সুখে দুখে সব সময় পাশে থেকেছো। তুমি আমার খুব ভালো বন্ধু।
সুইটি: হ্যাঁ আমরা বন্ধ। তোমার খুশিতে আমার খুশি হওয়ার কথা কিন্তু আমি কি করবো আমি তো খুশি হতে পারছি না।
রাতুল: এসব কথা বাদ দাও আগে তুমি বলো তুমি আমার ফোন রিসিভ কেন করছো না।
সুইটি: প্রচুর কাজ ছিল এই কয়দিন যার জন্য সময় পাইনি তোমার সঙ্গে কথা বলার।
রাতুল: তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি আমার কাছ থেকে নিজেকে আড়াল করে নিচ্ছ কিন্তু কেন এমনটি করছো?
সুইটি: বাদ দাও তো এসব কথা এখন বলো তোমার ভালোবাসার মানুষটি কেমন আছে?
রাতুল: সে খুব ভালো আছে। ওর মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়েছি। এখন থেকে তো ওদেরকে আমাকেই দেখতে হবে। হয়তোবা সৃষ্টিকর্তা এটাই চেয়েছে।
সুইটি: তুমি কত হ্যাপি? তুমি তোমার ভালবাসার মানুষটিকে ফিরে পেয়েছো। কিন্তু আমি আমার ভালোবাসার মানুষটাকে হারিয়ে ফেলেছি।
রাতুল: তুমি কাকে ভালোবাসো কই আমাকে তো বলোনি কোনদিন।
সুইটি: ভেবেছি বলবো কিন্তু বলতে পারলাম না তার আগেই হারিয়ে গেল।
রাতুল: তুমি একটা বার তার নাম বল। আমি তাকে খুঁজে বের করে তোমার সামনে নিয়ে আসব।
সুইটি: যদি বলি তুমি?
রাতুল: তুমি সব সময় মজা করো। চলো তোমাকে আজ সুলতানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব।
সুইটি: আজ নয় অন্য কোনদিন।
রাতুল: আজি যেতে হবে এবং এক্ষুনি তুমি তৈরি হয়ে নাও।
এর মধ্যেই রাতুল সুলতানা কে ফোন দিয়ে জানায় কিছু খাবার তৈরি করতে আমরা সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খাব। সুলতানা সঙ্গে সঙ্গে খাবার তৈরি করতে থাকে। খাবার তৈরি করতে করতে হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে। দরজা খুলতেই দেখতে পায় রাতুলের সঙ্গে সুইটি। সুইটিকে ভিতরে আসার জন্য বলে সুইটি একটু অবাক হয়ে যায়। কারণ সুলতানা তাকে নাম ধরে ডেকেছে। সুইটির জানামতে সুলতানার সঙ্গে তার কোন পরিচয় হয়নি তাহলে সে নাম কিভাবে জানতে পারল। তারপর সুলতানা সুইটিকে বলে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। রাতুল আমাকে তোমার কথা বলেছে। সে দিনের ভেতর যেটুকু সময় আমার সঙ্গে কথা বলে তার বেশি তোমার নাম বলে। সে তোমার ছবিও আমাকে দেখিয়েছে তাই তো তোমাকে চিনতে পারলাম। এরপর ভেতরে প্রবেশ করার জন্য অনুরোধ করলো তারপর তাদেরকে বসতে দিয়ে সে চলে গেল চা তৈরি করতে। চা খেতে খেতে সুইটি দেখতে পেল সুলতানা রান্না করছে। তাই সে চলে গেল সুলতানার কাছে সুলতানা কে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু সুলতানা তাকে বলল তুমি গেস্ট তুমি ওখানে বসে চা খেতে লাগলো। কিন্তু সুইটি স্থির ভাবে বসে থাকতে পারছিল না। কারণ সে যতই ভালো ব্যবহার করুক না কেন মনের ভিতর রাগে খোপে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল। কারণ সে কিছুতেই মানতে পারছিল না যে রাতুলের বাসাতে সে থাকছে। নিজের হাতে রান্না করে রাতুলকে খাওয়াচ্ছে। সুইটি রাগেতে হাতে থাকা চায়ের কাপটি ভেঙে পেলে। ভাঙচুরের শব্দ শুনে সুলতানা রান্নাঘর থেকে দৌড়ে আসে। এসে দেখতে পায় চায়ের কাপটি ভেঙে গেছে। সুইটি তাকে সরি বলে, সুলতানা সুইটির দিকে তাকায়। সে দেখতে পায় সুইটির মুখ লাল হয়ে গিয়েছে। সে বুঝতে পারে তার এখানে থাকাটা তার পছন্দ হচ্ছে না। কিন্তু সে না বোঝার ভাব করে চায়ের কাপের টুকরোগুলো গুছিয়ে নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সুলতানা খাবার টেবিলে খাবার পরিবেশন করতে থাকে। পরবর্তীতে সবাই মিলে তারা রাতের খাবার খাইতে থাকে আর ঠিক তখন।
এর আগের পর্ব পড়েছিলাম আর আজকের পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সুইটি রাতুলকে পছন্দ করে কিন্তু রাতুলের কথায় মনে হচ্ছে সে সুইটিকে শুধু বন্ধু হিসেবেই মানে। তাছাড়া রাতুল হয়তো এখনও সুলতানা কে ই চায় আর ভালোওবাসে। তবে দুইটির আচরণ এমন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়।
অনেক সুন্দর করে আপনি আজকে এই গল্পের নবম পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। সুইটি দেখছি সুলতানার উপর অনেক বেশি রেগে আছে, সেই সাথে রাতুলের উপরে। আর সুলতানা একপর্যায়ে বিষয়টা ভালোভাবেই বুঝতে পারে। এখন অপেক্ষায় থাকলাম আবার খেতে বসে কি হলো তা জানার জন্য।