খারাপ থেকেও ভালো হয় || 10% Beneficiaries shy-fox
আপনি চেষ্টা করেও পাচ্ছেন না শুনুন তাহলে ।
আজ আমার কথা গুলি একটু ব্যতিক্রম হবে। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্ট পড়বেন। আমার মায়ের হটাৎ করে ক্যান্সার ধরা পরে। যখন ডাক্টার আমাকে ফোনে এই কথা বলে আমি অবাক হয়ে যাই শুনার সাথে সাথে। ডাক্টার ছিল আমার মায়ের উকিল ভাই। আমরা অনেকেই জানি এটা মুসলিম ধর্মে বিয়ের সময় উকিল বাবা দেয়া হয় একজন কে। তার ছেলে বাংলাদেশ এর সেনাবাহিনীর একজন বড় ডাক্টার। তার নাম কর্নেল হাসান সাহেব। তিনি মায়ের চিকিৎসা করছিলেন। করোনা থাকার কারনে ফোনেই বেশি কথা বলতে হয়েছে।আংকেল আমাকে কিছু টেস্ট লিখে দিলো। বলে এগুলা করাও। টেস্ট করার পরে আমি চলে যাই বাংলাদেশ এর ধানমন্ডি ক্যান্সার জেনারেল হাস্পাতালে। রিপর্ট গুলি সব দেখাই। তারা বলল অবস্থা খারাপ একটা মেডিকেল বোর্ড বসাতে হবে অনেক গুলি ডাক্টার মিলে। আমি বলেছি ওকে স্যার তাই করেন । তারা মেডিকেল বোর্ড বসালেন ভালো টাকা নিয়েছে এর জন্য। তারা মাকে দেখে রিপোর্ট দেখে আমাকে আলাদা ডেকে নিল। বলেছে আপনি এত দেরি করেছেন কেন। আপনার মায়ের ক্যান্সার টা ব্রেস্ট থেকে ফুসফুসের বেশ কিছু জায়গাতে পৌছে গেছে। আমি বলেছি স্যার করনীয় কি? তিনি বলেছেন ফিন্যান্সিয়াল অবস্থা কী? বলেছি স্যার তেমন ভালো না। তারা আমাকে বলেন দেখেন যেই অবস্থা ৯৫% অবস্থা এমন যে সুস্থ হবে না। 2/3 বছর আপনার মা এই ভাবে বেঁচে থাকতে পারে। চাইলে চিকিৎসা করতে পারেন। এবার আপনার উপর সব কি করবেন। আমি বলেছি স্যার আপনারা চিকিৎসা শুরু করে দিন। আমায় বলেন আপনি তো অনেক ছোট আপনার আর কেউ নেই ? আমি বলেছি স্যার বাবা ছাড়া আর কেউ নেই। আর আমি যা বলবো বাবা তাই করবে। আপনারা চিকিৎসা শুরু করেন। আমার মা অনেক কষ্ট করেছে আমার জন্য আমি আমার মায়ের জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করতে চাই। এর পরে তারা আরো কিছু টেস্ট লিখে দিলো। এবার আমি বাবাকে কল দিলাম। সব বলেছি। বাবা বলেন তুই ঠিক কাজ টাই করেছিস বাবা। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আমি কান্না করছিলাম বাবাও কান্না করে দিলো🥺🥺। বলেন কাউকে জানাইস না এখন আমিও বলেছি হ্যা বাবা তাই করতে হবে। মা শুনলে সহ্য করতে পারবে না। এবার মাকে বলেছি মা তোমার ওই খানে একটু ইনফেকশন হয়েছে কিছু ট্রিটমেন্ট করলে ঠিক হয়ে যাবে।মা আর বুঝতে পারলো না কিছুই।
কিন্তু সমস্যা হয়েছে বাবাও তার কিছু দিন আগে বিদেশ থেকে চলে আসবে তাই টিকেট ও কেটে ফেলেছে।
ধানমন্ডি জেনারেল হাস্পাতালে তুলেছি ছবি টা।
এবার আমি একা একা খুব কান্না কাটি করি কিন্তু কেউ বুঝে নাই।নিজেকে খুব শক্ত করে নিলাম। যাতে মা না বুঝে 🥺। ডাক্টার পরে রিপোর্ট দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৭ টা কেমো থ্যারাপি দিবে। তার ভিতর প্রথমে 4 টা দিবে বাকি 3 টা দিবেন অপারেশন করার পরে। অপারেশন হবে একটা ব্রেস্ট কেটে ফেলবেন। প্রথম কেমো দেয়া শুরু, সবাই আসলো কেমো থেরাপী দিতে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। প্রথম কেমো দেয়ার পরে মা এতটা অসুস্থ হয়ে যায় যা বলার মতন না। মাথার চুল সব উঠে যায় আর শুধু বমি করতে থাকে। পরের বার যখন কেমো থেরাপী দিতে যায় তখন আর কেউ নেই শুধু আমি একাই হসপিটালে। এক এক করে চারটি কেমো থেরাপি দেয়া শেষ হলো। এরপর অপারেশন শেষ হলো। মাঝে দিয়ে আম্মু এতটা অসুস্থ হয়ে যায় যা বলার মতন না। সবচাইতে খারাপ লাগে বাবা বাংলাদেশের চলে আসার পরে এমন সময় আমার এক ব্যবসায়ে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা লস হয়ে যায়। ফ্যামেলি গতভাবে খুব প্রেসারে পরে যাই আমরা। দিন দিন অনেক বড় হতে শুরু করে বিপদ গুলি। প্রায় ছয় লাখ টাকার মতো খরচ হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় চলে আসে যে আমাদের হাতে টাকা নেই এখন কিন্তু মায়ের চিকিৎসা মাঝামাঝি অবস্থায় রয়েছে। আমি সেদিনের কথা কোনদিন ভুলতে পারবো না একটা টেস্ট করতে দিয়েছিলো যা করতে 10000 টাকা লাগতো কিন্তু আমার কাছে ছিল মাত্র 500 টাকা। আমি খুব কান্না করছিলাম আমার আত্মীয়-স্বজন আমার সামনে ছিলো কিন্তু কেউ একথা বলেনি যে আমরা তোর পাশে আছি। আমার এক বন্ধু নাম তার সোহেল সে আমাকে সেই মূহূর্তে 5000 টাকা দিয়ে বলে আমি তোর পাশে আছি তুই আগে আন্টির টেস্ট করতে দিয়ে আয়। আমি কোনদিন আমার বন্ধুর সেই ঋণ শোধ করতে পারবো না। এক এক করে চিকিৎসা শেষের দিকে আর আমি ঋণ হতে যাচ্ছিলাম। এবার শেষ পর্যায়ে ডাক্তার বলল আপনার মায়ের রেডিওথেরাপি দিতে হবে। যা দিতে প্রায় লাখের উপর খরচ হবে। আমার হাতে তখন মোটেও টাকা নেই বাবা ও 12 বছর পর বাংলাদেশে এসে তেমন কিছুই করতে পারছিল না। ঢাকায় 3 শতাংশ জায়গা কিনে ছিলাম সেখানে ও ঝামেলা। যার মাধ্যমে কিনেছিলাম অর্ধেক জায়গার পেপার ঠিক ছিল না। তাই সেখানে পারছিলাম না যেতে আর এত কম জায়গা থাকার কারণে পারছিলাম না বিক্রি করতে। এমন সময় আমি একটা সিদ্ধান্ত নিলাম আমি একটা লোন করি ব্যাংক থেকে। লোন করার পর আমি মায়ের রেডিওথেরাপি টা সম্পূর্ণ করি। আসলে বলতে গেলে অনেক কথা আছে যা একটি পোষ্টের মাধ্যমে করলে আপনারা পড়তে বিরক্তি ফিল করবেন তাই খুব সংক্ষেপে লিখছি। রেডিওথেরাপি দেওয়ার পর ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন। টেস্ট এর রিপোর্ট যখন ডাক্তার এর কাছে দেখালাম ডাক্তার অবাক হয়ে বললেন আমি নিজেই বলেছিলাম আপনাকে 95 পার্সেন্ট অবস্থা এমন ছিল যে আপনার মা সুস্থ হবে না কিন্তু আজ আমি নিজেই আপনাকে বলছি আপনার মা 95% সুস্থ অবস্থায় আছেন আলহামদুলিল্লাহ
এমন দিন গিয়েছে আমি একটানা 7 দিনে হাসপাতাল। সেই দিনগুলি আজ নেই কিন্তু ভালো লাগে নিজের মায়ের জন্য এতোটুকু করতে পেরেছি। সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে আমি আপনাদেরকে এই কথাগুলি এইজন্য শেয়ার করলাম আমরা অনেকেই খুব হতাশায় দিন কাটাই। কিন্তু এটা মনে রাখবেন আপনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন কিন্তু হচ্ছেন না। আমি বলব চেষ্টাটুকু শেষ পর্যন্ত করে দেখেন হবেই হবে। আপনার চেষ্টা যদি ঠিক মতন হয়ে থাকে আমি বলতে পারি আপনার সফলতা হবেই হবে ইনশাআল্লাহ । জীবনে কোন কিছু করতে যেয়ে থেমে যাবেন না। থেমে যাবেন তো হেরে যাবেন। অনেকে আছেন আমার বাংলা ব্লগ এ কাজ করছেন। কিন্তু আপনার আশা অনুরূপ সাপোর্ট পাচ্ছেন না। বিশ্বাস করুন আপনার কোথাও না কোথাও ভুল রয়েছে আর আপনি যদি আপনার শেষ চেষ্টা অব্দি কাজ করতেই থাকেন তাহলে ঠিক একসময় নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারবেন আর তখন দুইগুণ পাবেন। যা হিসেব করলে এখন যা পেতেন তাও পেয়ে যাবেন ।
লাস্ট এটাই বলি ছেড়ে যাবেন না ইনশাআল্লাহ হেরেও যাবেন না।
আমি সাইফুল ইসলাম রাজু ।
ঢাকা মোহাম্মাদপুর থেকে কাজ করি ।
মুন্সিগঞ্জ এর ছেলে ।
বাংলাদেশের একটি ফেসবুক গ্রুপ উইমেন ই-কমার্সে কাজ করি।
ঢাকা মোহাম্মাদপুর থেকে কাজ করি ।
মুন্সিগঞ্জ এর ছেলে ।
বাংলাদেশের একটি ফেসবুক গ্রুপ উইমেন ই-কমার্সে কাজ করি।
বেদনাময় দিনগুলো খুব কাছে থেকে দেখেছি । আসলে মনের দিক থেকে এমন শক্তি সম্পন্ন মানুষ আমি কমই দেখেছি । আমি বরাবরই অবাক হতাম আপনার অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং প্রবল শক্ত মানষিকতার প্রতি ।
এবং আপনার প্রতি আমার বিশ্বাস সব সময় বহাল ছিল । I know you are the best . Lv u
ধন্যবাদ আপনাকে।
মা হলেন এমন একজন মানুষ যার শুন্যতা কেউ পুরন করতে পারবে না।আপনি খুবই কষ্ট করেছিলেন এবং আল্লাহ তার প্রতিদান আপনাকে দিয়েছে। আপনার মায়ের জন্য দোয়া তিনি যেনো এভাবে আরো অনেক দিন বেচে থাকতে পারেন।
ভাই বানান এর দিকটা একটু খেয়াল রাখবেন।
ধন্যবাদ ঠিক করে দিচ্ছি।
বিষয়টা খুবই দুঃখজনক ভাই।আমার বাবারও ফুসফুস ক্যান্সার ছিল।যদিও আমি তখন ছোট কিন্তু বিষয়টা আমি বুঝতে পেরেছি।যদিও তিনি মারা যান কিছুদিন পরেই। এবং মায়ের জন্য কিছু করতে পারে মানে অনেক বড় বিষয়।সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি আপনার মা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে যান। আপনার জন্য এবং আপনার মায়ের জন্য শুভকামনা। এবং ভালো খারাপ সময় সবার জীবনেই থাকে।।
এবং ভাই আপনার পোস্টে অনেকগুলো বানান ক্রমাগতভাবে ভুল ছিল। সেগুলো সংশোধন করে নিবেন।
জ্যানারেল=জেনারেল
বল্ল= বলল
সর্বচ্চ= সর্বোচ্চ
ফিলেন্সিয়াল= ফিন্যান্সিয়াল
ধন্যবাদ।
ভাই ভয়েস দিয়ে করার কারনে অনেক ভুল হয়েছে ঠিক করে নিয়েছি ধন্যবাদ আপনাকে।
ভয়েস দিয়ে টাইপ করলে অনেক ভুল আসে ভাই। পরবর্তীতে চেক দিবেন।
ভাইয়া,আপনার লেখাটি আমি পুরোটা পড়েছি। ভাই আপনি লেখার মধ্যে বলেছেন আমি বেশি লেখবোনা সংক্ষিপ্ত আকারে লিখব অনেকে আমার লেখা পড়তে বিরক্ত বোধ করবেন। কিন্তু ভাইয়া, সত্যি কথা বলতে আপনার লেখা যতই পড়ছি এতই ভালো লাগছে কারন একটা ছেলে তার মায়ের জন্য কিনা করতে পারে তা আপনার লেখা পড়ে বোঝা যায়।
আপনার এই লেখাটি পড়ে বুঝতে পেরেছি বিপদে কখনো হতাশ হওয়া যাবে না আল্লাহর উপরে ভরসা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।হাজার বাধা বিপত্তি আসলেও সেই বাধা-বিপত্তি ঠান্ডা মাথায় সম্মুখীন করতে হবে।
ভাইয়া, আপনার লেখার মধ্যে আমার এই লেখাটি খুবই ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু সব সময় আপনি পোস্ট পড়েই কমেন্ট করেন তা আপনার কমেন্ট পড়েই আমি বুঝতে পারি।
ভাইয়া আমি আপনার পোস্টটি যখন পড়ছিলাম তখন চোখের কোনে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। সত্যি কথা বলতে এরকম পরিস্থিতির শিকার আমি কখনো হয়নি। এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো আপনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনার মায়ের জন্য অনেক কিছু করেছেন। হয়তো সেই সময়টা খুবই কষ্টের মধ্যে দিয়ে পার করছেন কিন্তু এটা জেনে অনেক ভালো লাগলো আপনি আপনার মায়ের জন্য কিছু করতে পেরেছেন। পৃথিবীতে মা ছাড়া সবকিছু অন্ধকার লাগে। আপনাকে ধন্যবাদ জানানোর ভাষা আমার নেই তবে এটুকুই বলতে পারি আপনি জীবনে অনেক ভালো থাকবেন ও অনেক সুখী হবেন কারণ আপনার মায়ের দোয়া আপনার সাথে রয়েছে।
ধন্যবাদ ভাই পোস্ট পরেছেন।
আপনার মায়ের ক্যান্সারের বিষয়টি জেনে খুব খারাপ লাগলো।পোস্টটি পড়ার পর মন থেকে আপনার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে গেল ভাই। এতটা কঠিন সময় পার করেছেন! অন্য কেউ হলে হয়তো বা হতাশ হয়ে যেত। কিন্তু আপনি শক্ত মনোবল নিয়ে সকল প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন। এই বয়সে আপনি নিজের কাঁধে এত বড় দায়িত্ব নিয়েছেন এটাই অনেক। আপনার চলার পথ গুলো আরো মসৃণ হয়ে উঠুক।শুভকামনা রইল আপনার জন্য।